নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১১ অক্টোবর, ২০১৮
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল জিয়া পরিবারের পারিবারিক সিদ্ধান্ত। পারিবারিক বৈঠকেই শেখ হাসিনাকে ‘চিরতরে বিতাড়িত’ করার প্রসঙ্গটি আলোচনা হয়। খাবার টেবিলে তারেক জিয়া ‘শেখ হাসিনা তাঁর পিতার পরিণতিই বরণ করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছিলেন। ঐ পারিবারিক বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়া তাঁর বড় ভাই প্রয়াত শামীম ইস্কান্দার, বেগম জিয়ার বড় বোন খুরশীদ জাহান চকলেট, ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো এবং তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু, ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দীন আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। মামুন বর্তমানে একাধিক দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারান্তরীণ রয়েছেন। ২০০৭ সালে ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামুনকে গ্রেপ্তার করে। ১২ এপ্রিল ২০০৭ সালে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দাদের কাছে মামুন তার দুর্নীতি, তারেক জিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এবং বিএনপির রাজনীতি সম্পর্কে দীর্ঘ জবানবন্দী দেয়। ঐ জবানবন্দিতেই আওয়ামী লীগ সভাপতিকে হত্যার পরিকল্পনার কথাও জানান মামুন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গোয়েন্দাদের কাছে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন যে বর্ণনা দিয়েছিলেন, তাতে তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তারেক জিয়া শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে পারতেন না। ‘হাওয়া ভবন’ গড়ে ওঠার পর তারেক জিয়া রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে চিরতরে সরিয়ে ফেলার চিন্তাভাবনা শুরু করেন।’ মামুন সেনা গোয়েন্দাদের কাছে প্রদত্ত ওই জবানবন্দিতে অবশ্য দাবি করেন যে, ‘আমি তাঁকে বলি, এটা খারাপ নজির হবে। বরং তুমি রাজনীতি দিয়েই তাঁকে পরাজিত কর।’
মামুন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, ২০০১ আমলে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর, শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ফেলার চিন্তা তাঁর মাথায় আবার আসে। এসময়ই রাতে খাবার টেবিলে তারেক তাঁর চিন্তার কথা বলেন। বেগম জিয়াসহ সবাই অন্য কাউকে দিয়ে এই কাজ করানোর পরামর্শ দেন।’ মামুন দাবি করেন যে, এই কাজ করার জন্যই আব্দুস সালাম পিন্টুকে উপমন্ত্রী করা হয়।’ রিমান্ড অবস্থায় দেওয়া ঐ জবানবন্দিতে মামুন বলেছেন, ‘তারেকের ইচ্ছা ছিলো ধানমণ্ডি ‘সুধা সদনে’ এ ধরনের হামলা ঘটানো। কারণ ঐ বাড়িটি একেবারে ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জঙ্গিরা এটা বাস্তব সম্মত নয় বলেই তারেককে জানায়। তারেক জিয়া শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলারও পরিকল্পনা করেছিল। তিনি যশোর যাবার পথে তাঁর গাড়ি বহরে হামলা করে এর মহড়াও দেওয়া হয়। তবে, শেষ পর্যন্ত জনসভায় গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনাই চূড়ান্ত করা হয়।’ মামুন ঐ জবানবন্দিতে বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ফেলতে পারলেই, বিএনপির ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা সম্ভব। এর বিকল্প কোনো চিন্তা তাঁর মাথায় ছিল না।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার; মামুনের এই জবানবন্দির ভিত্তিতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পুন: তদন্ত শুরু করে। সেই সূত্র ধরেই তৎকালীন সরকার গ্রেপ্তার করে, আবদুস সালাম পিন্টুকে। তারপর বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। ঐ জবানবন্দির সূত্রেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় হলো গত ১০ অক্টোবর।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।