নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২১ জানুয়ারী, ২০১৯
উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনয়নে নাক গলাতে চান নতুন সাংসদরা। কিন্তু আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা বলছেন উপজেলায় প্রার্থী মনোনয়নে কোন ভূমিকা থাকবে না এমপিদের। ২০১৪ এবং ২০০৮ সালে উপজেলা চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সংসদ সদস্যদের বিরোধ ছিল প্রকাশ্য। অধিকাংশ উপজেলা চেয়ারম্যান এমপি হবার জন্য এবং দলের নিয়ন্ত্রণ নিতে এমপিদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রচারে নেমেছিলেন। অনেক সংসদ সদস্যই মনে করেন উপজেলা চেয়ারম্যানদের জন্যই তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার হয়েছিল। একারণে ২০১৪ এর এমপিরা উপজেলা চেয়ারম্যানদের তাঁদের অধীনস্ত এবং নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবী করেছিলেন। কিন্তু উপজেলা পরিষদ একটি স্বাতন্ত্র স্থানীয় সরকার কাঠামো হওয়ায় এমপিদের দাবী হালে পানি পায়নি। এবার নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শুরু থেকেই উপজেলা পরিষদকে তাঁদের অনুগত রাখতে চান। একজন এমপির নির্বাচনী এলাকার উপজেলাগুলোতে তাঁর পছন্দের প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছেন। এরাই যেন দল থেকে মনোনয়ন পান সেজন্য সংসদ সদস্যরা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ে দেন দরবারও শুরু করেছেন। এদের কেউ কেউ নিজেদের পছন্দের কথা দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককেও বলেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলে দেওয়া হয়েছে তদ্বিরে কাজ হবে না। সাবধান করে দেওয়া হয়েছে যে, এমপিরা তদ্বির করলে সেটাও অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, ‘এমপিদের কাজ আর উপজেলা পরিষদের কাজ সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দেখি এমপিরা তার পুরো নির্বাচনী এলাকায় একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চান। সবসময় খবরদারি করতে চান। এজন্যই তারা চান তাদের একান্ত অনুগতদের উপজেলা পরিষদের নেতৃত্ব দিতে। দেখা যায় যে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এবং হেভিওয়েট নেতারা তাদের একান্ত বাধ্যগতদের উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বানিয়ে এলাকায় একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করেন। আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড এই পরিস্থিতির অবসান চান। প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা বলেন,‘ এরফলে নেতৃত্বের বিকাশ এবং দলের তৃনমূলের সহজাত রাজনৈতিক বিন্যাস ক্ষুন্ন হয়। সাধারণ মানুষের কথা কেন্দ্রে আসে না।’ তিনি বলেন,‘ এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই অবস্থার অবসান চান। তিনি চান, এমপিদের পছন্দের নয়, জনগনের পছন্দের ব্যাক্তি যেন উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পায়।’
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে,‘ উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়ে আগে আওয়ামী লীগের এমপিদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করতো। তারা মনে করতেন যে, উপজেলা চেয়ারম্যানই জাতীয় সংসদে নির্বাচনে তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠবেন। তারা প্রার্থী হতে চাইবেন। এজন্যই তারা উপজেলার মনোনয়নে তৎপর থাকবেন। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি বিষয় আওয়ামী লীগ সভাপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন,‘ স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে, উপজেলা চেয়ারম্যান কাউকেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়নি। এর ফলে, এমপিদের উপজেলা নিয়ে মাথাব্যাথার কোন কারণ নেই বলেই মনে করে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। আওয়ামী লীগ সভাপতি চান, উপজেলা পরিষদ স্বাতন্ত্র্য মর্যাদায় স্থানীয় সমস্যার সমাধানে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠুক। আর এ কারণেই, এবার মনোনয়ন হবে এমপিদের মতামতের তোয়াক্কা না করেই।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।