নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
১৮ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর এবং লন্ডন হয়ে দেশে ফিরেছেন বিএনপি মহাসচিব। কিন্তু গত দুইদিনে তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে। দলের নেতা-কর্মীদের সাক্ষাৎ দেননি। কোনো কর্মসূচিতেও যোগ দেননি। কোন্দলে বিপর্যস্ত বিএনপিতে তাকে নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কি স্বেচ্ছায় সরে যাচ্ছেন বিএনপি মহাসচিবের পদ থেকে? নাকি তাকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এসব প্রশ্ন এখন বিএনপি নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে। অবশ্য বিএনপি মহাসচিবের ঘনিষ্ঠরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে বিশ্রামে আছেন মির্জা ফখরুল। কাল একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরিতে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন। যদিও তার প্রতিপক্ষরা বলছেন, বিএনপিতে মহাসচিব পরিবর্তন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বিএনপি মহাসচিব পদ নিয়ে বিএনপিতে তিনটি চিরন্তন সত্য প্রচলিত আছে। এগুলো হলো-
১. কোনো মহাসচিবই সম্মান নিয়ে বিদায় নিতে পারেননি।
২. মহাসচিবদের ক্ষমতা সামান্য থাকলেও দলের সব ব্যর্থতার দায় তাকেই নিতে হয়েছে।
৩. দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে সখ্যতা ছাড়া কেউ মহাসচিব থাকতে পারেননি।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর মির্জা ফখরুল দলের সিনিয়র নেতাদের তোপের মুখে। দলে তার কোন কর্তৃত্ব এবং নিয়ন্ত্রণ নেই। দলের সিনিয়র নেতারা একযোগে মহাসচিবকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন নাকি সিনিয়র নেতাদের দাবির সঙ্গে একমত। কিন্তু নতুন মহাসচিব কে হবেন, এ নিয়ে দলের সিনিয়ররা একমত নন। কারাবন্দী বেগম জিয়া মহাসচিব বদল চাইলেও মহাসচিব পরিবর্তনে আগ্রহী নন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টকে গতিশীল রাখতেই তারেক মির্জা ফখরুলকে মহাসচিব হিসেবে রাখতে চান। এ কারণেই তারেক মির্জা ফখরুলকে লন্ডনে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। কিন্তু দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল লন্ডনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে মুখ খোলেননি। তিনি এটা স্বীকারও করেননি, অস্বীকারও করেননি।
একটি সূত্র বলছে, মির্জা ফখরুল দল পুনর্গঠনের একটা শেষ চেষ্টা করতে চান। এজন্য তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে তুলতে চান। ২০ দল নয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারেই আন্দোলনে আগ্রহী ফখরুল। আগামী কয়েকটা দিন এই পথেই এগিয়ে দেখতে চান বিএনপি মহাসচিব। কিন্তু এতে যদি দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা সায় না দেন, তাহলে নিজেই দলের মহাসচিব পদ ছেড়ে দেবেন, এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। রাজনীতি নিয়ে একরকম হতাশ এই বিএনপি নেতা মহাসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করলে অন্য কোনো দল করবেন না। একেবারে অবসরে চলে যাবেন।
মির্জা ফখরুলের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, বর্তমান ধারার রাজনীতির জন্য মানানসই নন ফখরুল। নির্বাচনের পরপরই তিনি রাজনীতি ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু দলের চেয়ারপারসন বন্দী, তারেক জিয়া বাইরে- এ অবস্থায় দল ছাড়া বা অবসরকে একরকম ‘বেঈমানী’ মনে করেন ফখরুল। এজন্যই দলে তীব্র অসহযোগিতার মুখেও তিনি দায়িত্ব নিয়ে আছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।