নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৪ মার্চ, ২০১৯
ডাকসু নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। বলপ্রয়োগ নয়, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে বলে সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সিনিয়র দুই নেতা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও বাম ফ্রন্টের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার উপায় বের করার জন্য তাদেরকে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, সরকার অবস্থাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মামলা বা বল প্রয়োগের পথে যেতে চায় না। এর ফলে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে বলে সরকার আশঙ্কা করছে। এজন্য সরকার আলাপ আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। আজ সকাল থেকেই এ উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়েছে। আজ সকালে জাহাঙ্গীর কবীর নানক ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূরের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যান্য নেতার সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বাহাউদ্দিন নাছিম বাম ফ্রন্ট সমর্থিত প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গেছে। তারা মনে করছে, এদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করলে সমস্যার সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, আমরা কোন অবস্থাতেই শিক্ষকদের এটার মধ্যে জড়াবো না। এখান থেকে কেউ যেন রাজনৈতিক ফায়দা নিতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি উসকে দেয়ার জন্য একটি মহল তৎপর রয়েছে। সে ফাঁদে যেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা পা না দেয়, সেজন্য সমঝোতার এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, নির্বাচনের পরে এরকম ক্ষোভ, বিক্ষোভ, অসন্তোষ এগুলো সাধারণ ঘটনা। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আমরা মনে করি যে, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করা যাবে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সরকার ৫টি লক্ষ্যকে সামনে রেখে সমঝোতার চেষ্টা করছে:
১. ডাকসু নির্বাচন কোনভাবেই বাতিল না করা এবং নির্বাচনে যে ফলাফল হয়েছে তার আলোকেই সমাধান খোঁজা;
২. যে সব শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং তাদেরকে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া;
৩. আবেগপ্রবণ যে সব শিক্ষার্থী অনশন করছে, তাদেরকে অনশন থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা;
৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন, প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও ছাত্রলীগের সহাবস্থান নিশ্চিত করা এবং ছাত্রদলকে একঘরে করা;
৫. বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা, খাদ্যের মানোন্নয়ন, পরিবহন সমস্যাসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিত করা।
সরকার মনে করছে, এই ৫টি বিষয় নিয়ে কোটা সংস্কারপন্থী এবং বাম ফ্রন্টের ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে সমঝোতা হবে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, কোন অবস্থাতেই ছাত্রদলের সঙ্গে কোন সমঝোতা সরকার করবে না। এরকম তথ্য আছে যে, ছাত্রদলই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অন্য খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
একাধিক সূত্র বলছে, নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূর যখন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করছেন তখন তাকে অনেক সহনশীল, সংযত ও নমনীয় মনে হচ্ছে এবং তিনি শপথ নেয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানাচ্ছেন। কিন্তু যখন তিনি আবার যখন তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যান্য নেতার সঙ্গে বসছেন তখন তাকে আবার উস্কে দেয়া হচ্ছে।
এজন্য আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জাহাঙ্গীর কবীর নানক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের যারা মূল নেতা, যারা নূরের পিছন থেকে সব সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করছে তাদের সঙ্গে বসা হবে এবং বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হবে। নানক মনে করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের যে প্ল্যাটফর্ম, সেই প্ল্যাটফর্মই এবার নির্বাচনে ছাত্রলীগের পরে দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাদেরকে যদি আন্দোলন থেকে সরিয়ে নেয়া যায় এবং ডাকসুতে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ নেয়ানো যায় তাহলেই পরিস্থিতি সহনীয় হয়ে উঠবে। অন্যান্য ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তেমন কোন প্রভাব নেই। তখন পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। সে লক্ষ্য নিয়েই সরকার এগুচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি সরকার কোন অবস্থাতেই উত্তপ্ত বা অন্যধাপে প্রবাহিদত হতে দিতে চায় না এবং তা করা হবেও না।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।