নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১২ মে, ২০১৯
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বেগম খালেদা জিয়াকে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা, তা যদি তিনি মানতেন, তাহলে আজ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস অন্যরকম হতো। হয়তো, এখন জেলে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হতো না বেগম জিয়াকে।
২৭ অক্টোবর ১৯৮৭। স্বৈরাচার বিরোধি আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দিতে উদ্যোগ নেয়া হলো দুই নেত্রীর বৈঠক। দুই নেত্রীর বৈঠকের মূল উদ্যোক্তা বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা। সংগঠন এবং নেতৃত্বে শেখ হাসিনা অনেক এগিয়ে। দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ রাজনীতিতে ভারসাম্যের তত্ব নিয়ে উপস্থিত হলেন। তারাই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেন যে, দুই নেত্রীর বৈঠক না হলে যেন স্বৈরাচারের পতন হবে না। এর সংগে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও সায় দিলেন। অগত্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি রাজী হলেন বৈঠকে। বৈঠকের স্থান ঠিক হলো ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর, বঙ্গবন্ধু ভবন। কিন্তু বেকে বসলেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ৩২ নম্বরে যাবেন না। বেগম জিয়া বৈঠক চান ‘নিরপেক্ষ ভেন্যুতে’। অবাক আওয়ামী লীগ সভাপতি, ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ীতে বৈঠকে যার আপত্তি, তার সঙ্গে কিসের বৈঠক? তারপরও গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজী হলেন শেখ হাসিনা। পরদিন ২৮ অক্টোবর বৈঠকের সময় নির্ধারিত হলো রাত ৯ টায়। মহাখালিতে, এ্যাটোমকি এনার্জি কমিশনের কোয়ার্টারের রেস্ট হাইসে। বেগম জিয়া সেখানে পৌঁছলেন ৯টা ৫ মিনিটে। আমীর হোসেন আমু এবং প্রয়াত ওয়াজেদ মিয়া তাঁকে রিসিভ করে রেস্ট হাউসে নিয়ে যান। ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর থেকে রওনা দিয়ে শেখ হাসিনাও মহাখালীতে পৌছেন কিছুক্ষণের মধ্যে। ৯টা ১৭ মিনিট থেকে ৯টা ২৫ মিনিটে দুই নেত্রী প্রথমে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন। এরপর তাঁদের চা দেয়া হয়। এসময় কয়েক মিনিট দুই নেতার রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক মিনিটের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর দুই দলের নেতৃবৃন্দের বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দুই নেতা। রাত পৌনে এগারোটায় একটি যুক্ত বিবৃতি পাঠ করেন দুই দলের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব কে. এম. ওবায়দুর রহমান।
কিন্তু শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে ৯টা ১৭ থেকে ৯টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত একান্তে কি কথা হয়েছিল? দুজনই বিভিন্ন সময়ে এ প্রসঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠদের কিছু জানিয়েছেন। বিভিন্ন জনের কাছে দেওয়া দুই নেতার বয়ানের আলোকে তাদের কথোপকথনটি ছিল অনেকটা এরকম।
শেখ হাসিনা: কি খবর? ভালো?
বেগম জিয়া: এইতো।
শেখ হাসিনা: ৩২ নম্বরে মিটিং করলে কি অসুবিধা হতো?
বেগম জিয়া: না এমনই।
শেখ হাসিনা: খুনীদের বিচার বাংলার মাটিতে হবে ইনশাআল্লাহ। যারা খুনীদের মদদ দেয় তাদেরও। বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার না করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে না। জাতির পিতাকে স্বীকৃতি দেন, ১৫ আগস্ট হত্যার বিচারের অঙ্গীকার করুন। তারপর আসুন একসঙ্গে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি। এটা না হলে ‘গণতন্ত্র’ অর্থহীন হবে।
বেগম জিয়া: চলুন ওরা অপেক্ষা করছে।
এরপর দুজন বেরিয়ে আসেন এবং নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু করেন। শেখ হাসিনার ঐ প্রস্তাব গ্রহণ করলে কি বাংলাদেশে রাজনীতি আঁচ এরকম থাকতো?
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।