নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৮ পিএম, ১১ জুন, ২০১৯
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ১১ জুন হলো শেখ হাসিনার পুনরুথ্থান দিবস। এইদিন কারা মুক্তির মাধ্যমে রাজনীতিতে তার পুনর্জন্ম হয়েছিল। বাংলাদেশ পেয়েছে এক নতুন শেখ হাসিনাকে। যিনি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার রাজনীতিতে পুনর্জন্ম শুধু ১১ জুন না। ২০০৪ সালের ১১ আগষ্টকেও মনে করা হয় তার রাজনীতির পুনর্জন্ম হয়েছে। কিন্তু সেদিন ছিল তাকে হত্যার প্রচেষ্টা। আর ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনে যে মাইনাস ফর্মূলা ছিল, তা ছিল তাকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করার প্রচেষ্টা। ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলায় যেমন তাকে শারীরিকভাবে হত্যা করা সম্ভব হয়নি। ঠিক তেমনি ওয়ান ইলেভেনে তাকে কারাগারে নিয়েও রাজনৈতিকভাবে হত্যা চেষ্টা সফল হয়নি। কেন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা বারবার ব্যর্থ হয়? কেন তিনি প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলে আরো উজ্জল ভাস্কর হতে পারে? কারণ অনুসন্ধান করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন যে, শেখ হাসিনা ৫ টি কাজ কখনো করেন না। এ কারণেই রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষরা কখনো পরাজিত করতে পারে না। বারবার তিনি বিজয়ীর বেশেই ফিরে আসেন। ১১ জুন হলো রাজনৈতিকভাবে শেখ হাসিনার আরেজকটি বিজয় দিবস। আসুন দেখা যাক কোন কাজগুলো সে কখনোই করেন না।
আর্থিক অনিয়ম বা দুর্নীতি: শেখ হাসিনার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন এবং তিনি চারবারের প্রধানমন্ত্রী। কখনোই তিনি কোন আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেননি। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেটা করে, মনোনয়ন বাণিজ্য, পদ পদবি বিতরণ করার মতো কর্মে একটা অর্থ দলীয় সভাপতির ফাণ্ডে জমা পরে। যেটা অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মধ্যে দেখা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ ৩৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কখনোই নিজেকে কোন আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করেননি। ওয়ান ইলেভেনের সময় সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্বাবধায়ক সরকার যখন তাকে যেকোন মূল্যে অপরাধী বানানোর প্রানন্ত চেষ্টা করেছিল। তখন তার দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছিল, তখন তারা নিজেরাও অবাক হয়েছে। কারাগারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে বিগ্রেডিয়ার আমিন এবং ব্রিগ্রেডিয়ার বারীরা যখন দেখা করেছিলেন, তখন তারা এই কথাটি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন যে, আপনার আর্থিক ব্যাপারে আপনি সম্পূর্ণ ক্লিন। এজন্যই শেখ হাসিনা বারবার বিপদের মুখ থেকে ফিরে আসতে পারেন। এজন্যই তিনি তার রাজনৈতিক ব্যাপারে অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং স্পষ্টবাদী হতে পেরেছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
মিথ্যে আশ্বাস বা প্রলোভন: রাজনীতি মানেই হলো মিথ্যে আশ্বাস বা প্রলোভন দিয়ে মানুষকে ঠকানো-এরকম একটা ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে বদ্ধমূল রয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা হলেন তার উজ্জল ব্যতিক্রম। শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক জীবনে কাউকে মিথ্যে আশ্বাস দেননি। কাউকে প্রলোভনও দেননি তিনি। মিথ্যে আশ্বাস যেমন, একজন কেউ মনোনয়ন চাইতে গেল, তাকে মিথ্যে আশ্বাস দেওয়া হলো ঠিক আছে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এই কাজটি করেলে তোমাকে এটা দেওয়া হবে। এ ধরনের প্রলোভন বা মিথ্যে আশ্বাস শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক জীবনে কখনো দেননি। কেউ মনোনয়ন পেতে চাইলে শেখ হাসিনা হয়তো তাকে বলেন, ঠিক আছে দেখা যাবে কাজ করো। কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে মনোনয়ন দেন না বা কোন একটি পদ পদবির আশ্বাস দিয়ে তাকে দেন না। এরকম ঘটনা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনে নেই। এটা তার রাজনৈতিক অনুগামী প্রত্যেকেই স্বীকার করেন।
আদর্শের ব্যাপারে ছাড় দেন না: শেখ হাসিনা কখনো আদর্শের ব্যাপারে কখনো তিনি ছাড় দেন না। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে যখন দেশে ফিরেছেন, তখন থেকেই জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত হিসেবে বলেছেন। বিএনপিকে তিনি স্বাধীনতা বিরোধীদের দোসর বলেছেন। সেই সময় থেকেই তিনি পঁচাত্তরের পনোরো আগস্টের জন্য যুদ্ধাপরাধী একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধীদের চিহ্নিত করেছেন। এগুলো তখন ছিল অকল্পনীয়। অনেকেই তখন বলতেন, কিছুটা আপস না করলে রাজনীতিতে তিনি টিকে থাকতে পারবেন না। কিন্তু তাদেরকে ভ্রান্ত প্রমান করে আদর্শের প্রশ্নে এতটুকু ছাড় না দিয়ে শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের অবিসংবেদিত নেতা। এই আজীবন ছাড় না দেওয়াটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনে একটি বড় ইতিবাচক দিক বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
দেশের প্রশ্নে তিনি কখনো আপোস করেন না: দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার উদাহরণ এখন তৃতীয় বিশ্বে হরহামেশাই দেখা যায়। যেকোন মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে হবে। এমনকি দেশের স্বার্থ যদি জলাঞ্জলি দিতে হয় তাতেও আপত্তি নেই। ২০০১ সালে এভাবেই বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা এটুকু আপোস করতে রাজি নন। গ্যাস বিক্রী করে তিনি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে তিনি ক্ষমতায় থাকতে রাজি হননি। এটি তার তার জন্য আরেকটি ইতিবাচক দিক।
উপকারীদের তিনি কখনো ভুলে যান না: শেখ হাসিনার জন্য সামান্য যারা উপকার করেন তিনি তাদের সবসময় মনে রাখেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে তিনি কাপর্ণ্য করেন না। কেউ একচুল করলে তার জন্য নিজের সবকিছু উজাড় করে দিতেও শেখ হাসিনা কার্পণ্য করেন না।
এগুলোই শেখ হাসিনার বৈশিষ্ঠ্য। এটা শুধু শেখ হাসিনার নয়। এটা বঙ্গবন্ধু পরিবারের বৈশিষ্ট্য। যেজন্যই শেখ হাসিনার জন্য তৃনমূলের নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করতে এতটুকু কার্পণ্য করেন না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা যে অমরত্ব পেয়েছেন, তার জন্য এই ৫ টি কারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি তারেক জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে হীন মনোবৃত্তির পরিচয় দিচ্ছে তারা।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি ও উচ্চতা, এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ লজ্জিত হন। পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝাই উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপির শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।
বিশ্বে চলমান যুদ্ধ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও এ যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।
বিএনপি আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
প্রায় ৩ মাস পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট
আংশিক কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল
কবির রিজভী সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওলামা দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে আলহাজ্ব মাওলানা
মো. সেলিম রেজা এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা কাজী আবুল হোসেন। কমিটির অন্যারা
হলেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব
মাওলানা ক্বারী গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেইন।
প্রসঙ্গ, গত ২৫ জানুয়ারি বিএনপির অনুমতি না নিয়েই ওলামা দলের সিনিয়র
যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. সেলিম রেজাকে কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব করাসহ
১৬ জনকে বিভিন্ন পদে রদবদল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে মাওলানা মো. নেছারুল হককের নেতৃত্বাধীন
কমিটির বিরুদ্ধে। পরে গত পহেলা ফেব্রুয়ারি ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
করে বিএনপি।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হককে আহ্বায়ক
এবং মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারকে সদস্য সচিব করে ওলামা দলের ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক
কমিটি ঘোষণা করেছিল বিএনপি।
এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মো. সেলিম রেজা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি তা পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি অবিলম্বে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের
অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলের ভোটমুখী
নেতাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। বহিষ্কারের মতো সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তির পরও দলটির তৃণমূলে
বাড়ছে নেতাদের ভোটমুখী প্রবণতা। কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জনের ঘোষণা দিলেও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনেও দল এবং দল-সংশ্লিষ্ট অনেক নেতা ভোটে রয়েছেন।
অবশ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের পেছনে পারিবারিক
ধারা, আঞ্চলিকতার হিসাবনিকাশ, দীর্ঘদিনের জনবিচ্ছিন্নতা কাটানোসহ নানা যুক্তির কথা
বলা হচ্ছে। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মতে, ক্ষমতাসীনদের চাপ ও ফাঁদে পড়ে দলের কেউ
কেউ প্রার্থী হয়েছেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে
কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, যে কোনো মূল্যে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা
হবে।
দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধান্ত
অমান্য করে জাতীয়সহ স্থানীয় সরকারের ভোট করায় গত কয়েক বছরে দল ও অঙ্গসংগঠনের পদধারী
চারশ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এর মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা শতাধিক
নেতা রয়েছেন। বাকিরা সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে অংশ
নিয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন।
এ ছাড়া সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে
বিভিন্ন সময় দলটির আরও কিছু নেতাকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে তাদের মধ্যে দলে ফিরতে
ভুল স্বীকার করে শতাধিক নেতা আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ১৫-২০ জনের বহিষ্কারাদেশ
প্রত্যাহার হয়েছে। এ ছাড়া খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও ২৫
নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির।
জানা গেছে, দলের বহিষ্কৃত অন্য নেতাদের
জন্য সহসাই খুলছে না বিএনপির দরজা। বরং এ সংখ্যা আরও বাড়ছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য
করে পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় সম্প্রতি দলের আট নেতাকে বহিষ্কার
করেছে বিএনপি। আর দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান,
ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়া ৬৩ নেতাকে ইতোমধ্যে ৪৮ ঘণ্টা
সময় দিয়ে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে কিংবা কেউ জবাব না দিলে তাদের
দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছে দলটি। প্রথম
ধাপের নির্বাচনে ১৫২টি উপজেলার মধ্যে ৩৪টিতে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির পদধারী নেতারা
মাঠে আছেন।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয়
ধাপে ভোট করতে বিএনপি ও দল-সংশ্লিষ্ট অন্তত ৩৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই ধাপে
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২১ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল।
নির্বাচন থেকে সরে আসতে কেন্দ্রীয় এবং জেলা নেতাদের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ
করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তির বার্তাও। প্রার্থিতা
প্রত্যাহার না করলে সাংগঠনিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ৩০ এপ্রিলের পর প্রথমে তাদের শোকজ
নোটিশ দেওয়া হবে।
তৃতীয় ধাপের তপশিল অনুযায়ী, মনোনয়ন
ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। চতুর্থ ধাপের
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন। শেষ ধাপের এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯
মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১৯ মে পর্যন্ত।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে
থাকা বিএনপি নেতাদের বিষয়ে করণীয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা
রহমান বলেন, ‘এই নির্বাচন নিয়ে দলে তো আগেই সিদ্ধান্ত ছিল এবং সেটিই বহাল আছে। সুতরাং
সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ নির্বাচন করলে দল তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দল থেকে বিভিন্ন সময় বহিষ্কৃতদের ব্যাপারে আমরা এখনো
চিন্তা করিনি’।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন
বর্জন করলেও ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির স্থানীয় নেতারা
অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে
প্রথম দিকে অংশ নিলেও ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় সব স্থানীয় নির্বাচন
বর্জন করে আসছে বিএনপি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় কুমিল্লার মনিরুল
হক সাক্কু, নারায়ণগঞ্জের তৈমূর আলম খন্দকারসহ অনেককে দলীয় পদ-পদবি থেকে বহিষ্কার করেছে
বিএনপি।
এদিকে দ্বাদশ সংসদের মতো উপজেলা নির্বাচনেও
ভোটারদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করতে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নরসিংদী
সদর উপজেলা থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জেলার কর্মিসভা শেষে
জনগণের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয়
সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ।
এসময় তিনি বলেন, জনগণকে আমরা বিগত জাতীয়
নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদের নির্বাচনও বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ লক্ষ্যে আমরা
নরসিংদীতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেছি। এই কার্যক্রম অব্যাহত
থাকবে। আমাদের প্রত্যাশা, ভোটাররা জাতীয় নির্বাচনের মতো উপজেলার ভোটও বর্জন করবে।
বিএনপির কুমিল্লার (সাংগঠনিক) বিভাগীয়
সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, কুমিল্লা উত্তর জেলার মেঘনা উপজেলায় আজ
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) কর্মিসভা ও লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান
জানানো হবে।
এর মধ্য দিয়ে কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগে
জনগণকে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করার কার্যক্রম শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে বিভাগের সব উপজেলায়
লিফলেট বিতরণ করা হবে।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে হীন মনোবৃত্তির পরিচয় দিচ্ছে তারা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলের ভোটমুখী নেতাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। বহিষ্কারের মতো সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তির পরও দলটির তৃণমূলে বাড়ছে নেতাদের ভোটমুখী প্রবণতা। কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জনের ঘোষণা দিলেও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও দল এবং দল-সংশ্লিষ্ট অনেক নেতা ভোটে রয়েছেন।