নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৫ নভেম্বর, ২০১৯
শুদ্ধি অভিযান, আওয়ামী লীগের বহিরাগতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং সর্বপরি দলের কাউন্সিলকে ঘিরে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে দলে যারা ত্যাগী পরীক্ষিত এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে অনাদরে অবহেলায় ছিলেন। বিশেষ করে যে সমস্ত নেতাকর্মীরা দলে সুবিধাবাদীদের ভিড়ে প্রায় কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। তারা এখন সক্রিয় হয়েছেন এবং তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এটাকেই আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি বলে অবিহিত করেছেন। বাংলা ইনসাইডারের কাছে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, তৃণমূলই হলো আওয়ামী লীগের প্রাণ এবং আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। তারা যেন দলীয় কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের ত্যাগি পরীক্ষিতদের সামনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে যারা দূষিত রক্ত তাদের বের করে দিয়ে দলে সুষ্ঠু এবং সুন্দর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমেই এই কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ নতুন রুপে আত্মপ্রকাশ করবে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল যেন শক্তিশালী হয় ও ত্যাগী পরীক্ষিতরা যেন জায়গা পায় সেজন্য একাধিক বৈঠক করা হচ্ছে। তিনমাস ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ সমস্ত কাজ চলছে। এর মধ্যে যে সমস্ত ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়েছে তার হলো;
১. যারা দলের ভেতরে থেকে বিভিন্ন অপকর্ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান। যারা দুর্নীতি সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিতে করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে দলে যারা সৎ, নিষ্ঠাবান তারা সামনে চলে এসেছে।
২. ২০০৯ সালের পর যারা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে। বিশেষ করে জামাত শিবির থেকে যার আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগর একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, প্রায় পনেরোশো অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। কাউন্সিলে তাদের কোন পদ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্র প্রক্রিয়ায় তাদেরকে দল থেকে বের করে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৩. যে সমস্ত নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ওয়ানে ইলেভেনের সময় যারা দলের জন্য কাজ করেছে অথচ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর যারা দলে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে তাদেরকে সামনে নিয়ে এসে নেতৃত্ব দেওয়া হবে।
৪. স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে মন্ত্রী এমপি এবং চেয়ারম্যানদের খবরদারি বন্ধ করা এবং তারা যেন কমিটিতে না থাকে এবং কমিটি গঠনে যেন প্রভাব বিস্তার না করে সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন। যার কারণে আওয়ামী লীগে যারা মন্ত্রী এমপি বা উপজেলা চেয়ারম্যান হতে পারেননি তাদের সামনে নেতৃত্ব পাওয়ার পথ উম্মোচিত হয়ে গেছে।
৫. সারাদেশে আওয়ামী লীগে ত্যাগী পরীক্ষিত এবং সৎ নেতাদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই তালিকা প্রণয়ন করা হলে দলে যারা অবহেলিত অবস্থায় ছিলেন অথচ সৎ নিষ্ঠাবান তারা সামনে আসবেন।
আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, আওয়ামী লীগর কর্মীর অভাব নেই এবং ত্যাগী পরীক্ষিত কর্মীরাই আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি। সে কারণেই আগামী ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর কাউন্সিলের আগেই আওয়ামী লীগকে পরিচ্ছন্ন করার এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এর ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। উৎসবের আমেজ তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে এ যাবৎ যারা কিছুই পাননি বঞ্চিত বলে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছিলেন তারা এখন সক্রিয় হয়েছেন। এরফলে সাংগঠনিকভাবেও আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী হবে বলে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মনে করছে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।