নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ১৮ জানুয়ারী, ২০২০
অবশেষে নির্বাচন কমিশন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে অনেক জলঘোলা করেই নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত পিছটান দিলো। যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল তখন থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আপত্তি জানিয়েছিল। তারা বলেছিল সরস্বতী পূজার কারণে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সেই সময় নির্বাচন কমিশন বিষয়টি আমলেই নেয়নি। গুরুত্ব না দিয়ে তারা একগুয়েমির পথেই হেঁটেছে। এরপর বিষয়টি আদালতে গড়ালে তারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেছে পূজা এবং ভোট একসঙ্গে চলবে। যদিও বাস্তবে সেটা কতটা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এই ছোট একটি তারিখ নির্ধারণের ঘটনায় যে নির্বাচন কমিশন সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে না, বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ করতে পারে না এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সকল পক্ষকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে পারে না সেই নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন কিভাবে দেবে সে নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
নির্বাচন কমিশনের একগুয়েমির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করে। যার প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি ঐক্যমতও প্রতিষ্ঠিত হয়। সবকটি রাজনৈতিক দলই সরস্বতী পূজার দিনে নির্বাচন না করার অনুরোধ করে। এমনকি দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান ও বড় দুই দলের চার মেয়র প্রার্থী নির্বাচন পেছানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেন। শেষ পর্যন্ত আজ নির্বাচন কমিশন এক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন পিছিয়ে দিল। এই নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে অভিযোগ অন্তহীন। নির্বাচন কমিশনের একগুয়েমি আচরণ, হঠকারী সিদ্ধান্তসহ তাদের যোগ্যতা নিয়ে জনমনে নানা রকম প্রশ্ন রয়েছে।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে জনমনে যেমন প্রশ্ন রয়েছে তেমনি নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের আচরণ ও কথাবার্তা নিয়েও জনমনে নানা রকম বিরক্তি ও আপত্তি রয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনাররা যে ধরণের মন্তব্য করেছেন তা রীতিমত হাস্যকর ও আপত্তিকর।
এমনকি ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের পরও বিভিন্ন উপনির্বাচন নিয়েও নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের অতিকথন এবং নির্বাচন কমিশনারদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য, কোন রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য এই নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এই নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারবে কিনা সেই প্রশ্ন আবার উঠেছে।
এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন একটি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচার প্রচারণায় ঢাকার শহর একটি উৎসবের আমেজ পেয়েছে। বহুদিন পর একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে ঢাকা শহর হাটছে। আর এরকম সময় নির্বাচন কমিশন অনাকাঙ্খিত, অনভিপ্রেত এবং অযৌক্তিক একটি বিতর্ক তৈরী করে পুরো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করলো। এই উৎসবের মধ্যে নির্বাচন কমিশন নিজেরাই একটি ছেদরেখা একে দিলো। যার ফলে এই নির্বাচন নিয়ে একটি অস্বস্তি থেকেই গেল। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্বের প্রতি কতটুকু দায়িত্ববান থাকতে পারবেন এবং কতটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন জনমনে এই প্রশ্ন রয়েছে।
এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী পহেলা ফ্রেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা সে প্রশ্ন জনমনে রয়েছে। আমরা আশা করবো নির্বাচন কমিশন তার অতিকথন, একগুয়েমি থেকে সরে আসবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, নির্মোহ এবং বস্তুনিষ্ঠ নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রয়োজন সেটিই করবে। না হলে এই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের শেষ বিন্দুটিকেও উপড়ে ফেলবে। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে শুধুমাত্র একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই প্রত্যাশা করি, অন্য কিছু নয়।
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।