নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
আওয়ামী লীগের সদ্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন মেয়র সাঈদ খোকন। ঢাকা দক্ষিণের ২০১৫ সালের নির্বাচনে তাকে আওয়ামী লীগে মনোনয়ন দিয়েছিল। কিন্তু ২০২০- এর নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তার বদলে শেখ ফজলে নূর তাপসকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার কারণে তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে নগদে। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পরপরই তাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সেখানে তাকে কাজ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু সাঈদ খোকনের যেন তর সইলো না। আজ তার একজন ব্যক্তিগত স্টাফের মাধ্যমে ঢাকা ১০ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।
একজন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য একজন বর্তমান মেয়র এ ধরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের হাইকমান্ডের কারো সাথে কথা না বলেই। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এ ব্যাপারে তিনি কোন কথাই বলেননি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।
সাঈদ খোকন নিজেও স্বীকার করেছেন যে, ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি, কারণ গত দুইদিন তিনি ঢাকার বাইরে ছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণের মূল কেন্দ্রে যিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সঙ্গেও তিনি এ ব্যাপারে কোন পরামর্শ করেননি।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তিনি একজন কেন্দ্রীয় নেতা। যিনি একজন মন্ত্রীর মর্যাদায় মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। তার এমন আচরণ দলের জন্য এক ধরণের অস্বস্তি এবং বিব্রতকর। কারণ আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা ইতিমধ্যেই এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল মহিউদ্দীনকে ঢাকা ১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য মোটামুটি চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। সেই অবস্থায় সাঈদ খোকন কারো সঙ্গে পরামর্শ না করে কেন মনোনয়ন কিনলেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকজনই হতবাক এবং বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন।
তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন কেনা যেকোন রাজনৈতিক নেতার গণতান্ত্রিক অধিকার, মনোনয়ন তিনি চাইতেই পারেন। তবে ঐ নেতাই বলেন যে, সাঈদ খোকন কখনই ধানমন্ডির রাজনীতি করেননি, তিনি সূত্রাপুর-কোতোয়ালিতে থেকে ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং সেই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। এরপর ২০১৫ সালে তিনি মেয়র নির্বাচন করেন এবং সেটাও ঢাকা দক্ষিণে এবং তিনি সূত্রাপুর-কোতোয়ালি এলাকারই ভোটার। সাঈদ খোকনের ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বিরক্ত এবং এবারে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় শেখ ফজলে নূর তাপস মনোনয়ন চাওয়ায় দলের নীতিনির্ধাকরা এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা নড়েচড়ে বসেন এবং তাঁরা সাঈদ খোকনের বদলে শেখ ফজলে নূর তাপসকে মনোনয়ন দেবার জন্য দলের সভাপতির কাছে রীতিমত একপ্রকার চাপ সৃষ্টি করে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, সাঈদ খোকন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের পুত্র- এটাই তাঁর একমাত্র পরিচয়। এছাড়া তিনি রাজনীতিতে নিজের স্বক্রিয়তা, যোগ্যতা দিয়ে নিজেকে উদ্ভাসিত করতে পারেননি। দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মপন্থা নিরূপণের ক্ষেত্রেও তিনি যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেননি। এবারের মনোনয়ন চাওয়া তাঁর একটি বড় প্রমাণ।
তাঁরা মনে করছেন যে, এই মনোনয়ন যখন তিনি পাবেন না, তখন আওয়ামী লীগের জন্য এটা কোন ক্ষতির বিষয় হবেনা কিন্তু সাঈদ খোকনের রাজনীতির জন্য এটা অবশ্যই একটি নেতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য যখন মনোনয়ন চেয়ে মনোনয়ন পাবেন না তখন ঐ সদস্যের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তাঁর নেতা-কর্মীদের মাঝে অবশ্যই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।