নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে আওয়ামী লীগের ভিতরে শুদ্ধি অভিযান চলছে। বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন স্তরের আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগি সংগঠনের নেতাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তার সর্বশেষ উদাহরণ হলো শামীমা নূর পাপিয়া। এই সমস্ত গ্রেপ্তারগুলোকে সুশাসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে মনে করা হচ্ছে, পাশাপাশি মনে করা হচ্ছে যে এরা কাদের পৃষ্ঠপোষকতায়, কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়েছে সেটাও খুঁজে বের করা দরকার।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, এখন পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের পিছনে যারা গডফাদার, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়নি বা তাদের পরিচয়ও জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। যার ফলে এই ধরনের অভিযানের সফলতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন যে, একা পাপিয়া কিংবা সম্রাট অপরাধী হয়ে উঠতে পারে না। তারা একক প্রচেষ্টায় এরকম ক্ষমতাধর হতে পারে না। বরং তাদেরকে কোনো না কোনো প্রভাবশালী মহল আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এভাবে দুর্বৃত্তায়ন সম্ভব না বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন।
কিন্তু যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের পিছনে মদদদাতা যারা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, যাদের কারণে তারা দুর্বৃত্ত হয়ে উঠেছে, তারাই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছিল শোভন এবং রাব্বানীকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে। ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে, ফলে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু শোভন-রাব্বানিকে দুর্বৃত্তায়ন করার ক্ষেত্রে কারা প্ররোচিত করেছিল, সে ব্যাপারে কোনো অনুসন্ধান হয়নি। এমনকি মোভন-রাব্বানির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো মামলাও করা হয়নি।
ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট
ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি মতিঝিল, পল্টন এলাকার একচ্ছত্র অধিপতি বনে গিয়েছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যারা তাকে ‘সম্রাট’ বানিয়েছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হয়নি।
খালেদ হোসেন ভূইয়া
একসময় ফ্রিডম পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে এসেছিলেন এবং সম্রাটের সহযোগী ছিলেন খালেদ হোসেন ভূইয়া। খালেদ হোসেন ভূইয়ারও গডফাদার কারা, তা এখনো উদঘাটন করা হয়নি।
সেলিম প্রধান
অনলাইন ক্যাসিনো বাণিজ্যের প্রধান, যিনি তারেক জিয়ারও ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন, তাকেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের পর তার দুর্বৃত্তায়নের অনেক চাঞ্চল্যকর কাহিনী বেরিয়েছে। পাপিয়ার মতো তিনিও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের জড়িয়ে তাদেরকে ব্লাকমেইল করতেন। সেসময় সেলিম প্রধানের ব্যবসায়িক পার্টনার যে সমস্ত প্রভাবশালী মহল ছিল, তাদের কথা আলোচনায় এলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হয়নি।
জি কে শামীম
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের টেন্ডারবাণিজ্যের একচ্ছত্র মাফিয়া ছিলেন জি কে শামীম। সেও যুবলীগের পরিচয় ব্যবহার করে টেন্ডারবাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আরো অনেক গডফাদার ছিল এবং গ্রেপ্তার হবার পর বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে তাঁর ছবিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু জি কে শামীম গ্রেপ্তার হয়েছে, তাঁর টেন্ডারগুলো সরকার বাতিল করেছে। কিন্তু তাঁর পেছনের মদদদাতা এবং পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারীদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়নি কিংবা তাদের পরিচয় উন্মোচন করা হয়নি। সবশেষ পাপিয়ার উত্থানের পেছনেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ যেমন ছিল, তেমনি ছিল জাতীয় রাজনীতির প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তিরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাপিয়ার গডফাদারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাওয়া যায়নি এবং তাদের নাম-ও আলোচনায় আসেনি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, সম্রাট, পাপিয়া, সেলিম প্রধান কিংবা জি কে শামীমদের গডফাদারদের যদি না উদ্ধার করা হয় তাহলে আগামীতে নতুন সম্রাট, নতুন পাপিয়া কিংবা নতুন জি কে শামীমের উত্থান হবে। এইজন্য মূলোৎপাটন করতে হবে, এসব গডফাদারদেরকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে, তাহলেই শুদ্ধি অভিযান সফল হবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।