নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ০২ মার্চ, ২০২০
পাপিয়া কেলেঙ্কারির পর এখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা নারী নেত্রীদেরকে এড়িয়ে চলছেন। দেখা হলেও এমনভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন যে তাদেরকে চেনেন না। অনেক এমপির কাছে নারী নেত্রীরা বিভিন্ন তদবির, সুপারিশ ইত্যাদি নিয়ে প্রায়ই যেতেন, খুব আপ্যায়নও পেতেন। কিন্তু এখন নারী নেত্রীদের দর্শনে অরুচি দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগের এমপিদেরও।
আজ (সোমবার) মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক ছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। বৈঠক শেষে মন্ত্রীরা একে একে সচিবালয়ে আসতে থাকেন। এইসময় তিনজন নারী নেত্রী একটি মন্ত্রণালয়ের লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের বিশেষ দরকার ছিল। দরকারটা খুব সাদামাটা। একটি অনুষ্ঠানের জন্য তাঁরা মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাবেন, ব্যাস এইটুকুই। কিন্তু মন্ত্রী লিফটের গোঁড়ায় তিন নারী নেত্রীকে দেখে যেন ভূত দেখার মতো চমকে উঠলেন। মন্ত্রী অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। নেত্রীরা একটু এগিয়ে এসে সালাম দিলেন। তবে মন্ত্রী যেন এর উত্তরে রীতিমত আর্তনাদ করে উঠলেন, ‘প্লিজ, এখানে না!’ নারী নেতৃবৃন্দ তো রীতিমত অবাক। মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা পুলিশ প্রোটোকলের লোক নারী নেত্রীদেরকে চলে যেতে বললেন।
এসময় হতাশ তিন নারী নেত্রী দুঃখ করে বললেন যে, এই পাপিয়া কাণ্ডের পর তাঁদেরকে এরকম অপমান হতে হচ্ছে, তাঁদের মানসম্মান নিয়ে প্রশ্ন। এসময় আওয়ামী লীগের একজন কর্মী বলেন যে, আপনারা সচিবালয়ে না আসলেই পারেন। সেসময় একজন ক্ষুদ্ধ্ব নারী নেত্রী বলেন, সচিবালয়ে আসবো না কেন? অন্যের পাপের ভার আমরা নিবো কেন? আর সচিবালয়ে না আসলে মন্ত্রীদের পাওয়া যাবে কোথায়?
একই দৃশ্য দেখা যায় আরেকটি মন্ত্রণালয়ে। সেই মন্ত্রণালয়ে একজন মন্ত্রীর একান্ত সচিবের কাছে দুজন স্থানীয় পর্যায়ের নারী নেত্রী এসেছিলেন বদলি তদবিরের জন্য। কিন্তু সচিব জানিয়ে দেয় যে কোন রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে কোন নারী নেত্রী মন্ত্রণালয়ে আসলে তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিবেননা মন্ত্রী। এই ব্যাপারে তাকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন নারী নেত্রীর তদবরিরে কাগজ যেন গ্রহণ না করা হয়।
অন্যদিকে একজন সচিব মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে এসেই জানিয়ে দেন যে, রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে যদি কোন নারী নেত্রী আসেন, তাহলে তাদেরকে যেন কোনপ্রকার আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া না হয় এবং রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের কোনরকম তদবির গ্রহণ করা হবেনা।
আজ সারাদিনই এরকম চিত্র ছিল সচিবালয়ে। জানা গেছে যে, পাপিয়ার ঘটনার পর বিভিন্ন প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গে পাপিয়ার ছবি নিয়ে লজ্জায় পড়েছেন অনেক মন্ত্রী এবং এরপরেই প্রধানমন্ত্রী যার তার সাথে ছবি না তোলার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে এখন নারী নেতৃত্বকে সর্বত্র এড়িয়ে চলছেন মন্ত্রীরা।
শুধু মন্ত্রী বলে নয়, এমপিরাও এখন নারী কর্মী, নারী নেত্রী, স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নারী নেতৃত্বের সঙ্গেও দেখা-সাক্ষাৎ করতে চাচ্ছেন না। বিভিন্ন এমপিরা তাঁদের নিজস্ব অফিস পরিচালনা করেন এবং এইসমস্ত অফিসে সাধারণত স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন আবেদন, নিবেদন, সুপারিশ দেখা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সব এমপির পক্ষ থেকেই এইসব নারী নেত্রীদের এড়িয়ে যাবার প্রবণতা দেখা গেছে।
একাধিক এমপির সাথে বললে তাঁরা এই প্রতিবেদককে বলেন যে, ‘পাপিয়ার ঘটনার পর আমাদেরকে সতর্ক হতেই হচ্ছে, কারণ কার মনে কি আছে জানিনা। অপরিচিত কারও সাথে ছবি তুলে বিপদে পড়তে চাই না। কারণ কে কাকে কখন কিভাবে ফাসিয়ে দেয় তা বোঝা যায় না। এইজন্য খুব আতঙ্ক আছি।’
এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরে। এই আতঙ্কের কারণে যারা ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং নিষ্ঠাবান নারী কর্মী, তাঁরাও নানাভাবে প্রত্যেক্ষ-পরোক্ষভাবে অপমানিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।