নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ০৩ অগাস্ট, ২০২০
বেগম মতিয়া চৌধুরীকে বলা হয় অগ্নিকন্যা। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে তাঁর যে উদ্দীপ্ত ভাষণ, সেই উদ্দীপ্ত ভাষণ তাঁকে অগ্নিকন্যার রূপ দিয়েছে। ত্যাগ স্বীকার করেছেন, রাজনীতিতে সততা এবং আদর্শবাদের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন বেগম মতিয়া চৌধুরী। ছাত্র ইউনিয়ন শেষ করে তিনি ন্যাপ-এ যোগদান করেছিলেন এবং এক সংকটকালীন সময়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
আওয়ামী লীগের কঠিন সময়গুলোতে সমসময় তিনি শেখ হাসিনার পাশে থেকেছেন। কখনো তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ করেননি, রাজনীতিতে তাঁর কোন পদস্থলন নেই, নেই কোন দুর্নীতি বা অনিয়মের ইতিহাস। বেগম মতিয়া চৌধুরী মানেই বিশ্বস্ততার প্রতীক, বেগম মতিয়া চৌধুরী মানেই সততার প্রতীক, বেগম মতিয়া চৌধুরী মানেই একজন বিচক্ষণ মন্ত্রীর প্রতীক। তিনিই বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়কে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের কৃষি সাফল্য আর বেগম মতিয়া চৌধুরীর নাম পরস্পর পরিপূরক। আওয়ামী লীগের কঠিন সময়ে, বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি প্রমাণ করেছেন যে, রাজনীতিতে বিশ্বস্ততা এবং আদর্শ ধরে রাখা কত জরুরী। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যখন কোন বিশ্বস্ত, আদর্শবান নেতার কথা উচ্চারিত হয়, তখন বেগম মতিয়া চৌধুরীর নাম উচ্চারিত হয়, সঙ্কটে রুখে দাঁড়ানো কোন নেতার নাম যখন উচ্চারিত হয় তখন বেগম মতিয়া চৌধুরীর নাম উচ্চারিত হয়। কিন্তু এতকিছুর পরেও বেগম মতিয়া চৌধুরী যেন আওয়ামী লীগার নন। আওয়ামী লীগ সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরীকে বিশ্বস্ত, আদর্শবান একজন নেতা হিসেবে সম্মান করেন। শেখ হাসিনা তাঁকে সবসময় মতিয়া আপা বলে সম্বোধন করেন। কঠিন সময়ে বেগম মতিয়া চৌধুরী তাঁর পাশে থাকবেন এটা শেখ হাসিনা চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করেন। কিন্তু তারপরেও কোথাও যেন একটা দুরত্বের রেখা স্পষ্ট।
শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন ব্যক্তি তাঁর মতিয়া আপা, কিন্তু শেখ হাসিনার আপন নন। আওয়ামী লীগের আদর্শবান, পরীক্ষিত নেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, কিন্তু তারপরেও তিনি আওয়ামী লীগার নন। এখনো আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারা বেগম মতিয়া চৌধুরীকে মনে করেন কমিউনিস্ট মতিয়া চৌধুরী হিসেবে। তিনি আওয়ামী লীগে থেকেও যেন আওয়ামী লীগার নন। অথচ বেগম মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে এসেছিলেন এক কঠিন সময়ে, এক কঠিন বাস্তবতায়, ৭৫ এর পরে যখন আওয়ামী লীগ দিশেহারা, বিপর্যস্ত সেই সময়ে এসেছেন। আওয়ামী লীগের সুফলভোগী বা সুসময়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে মন্ত্রী এমপি হওয়ার জন্যে নয়, বরং প্রগতিশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে আদর্শিক চিন্তা থেকেই তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও এখনো আওয়ামী লীগের অনেকেই বেগম মতিয়া চৌধুরীকে আওয়ামী লীগার ভাবতে কষ্ট পান বা আড়ষ্টতা বোধ করে। তাঁরা মনে করেন যে, বেগম মতিয়া চৌধুরী কমিউনিস্ট। বেগম মতিয়া চৌধুরী যেন ঘরের লোক নন, বাইরের কেউ। একজন মানুষ যিনি তাঁর রাজনীতির অধিকাংশ সময় আওয়ামী লীগকে দিয়ে দিয়েছেন, তারপরেও তিনি আওয়ামী লীগার নন। এর থেকে কষ্টের বা বেদনার আর কি হতে পারে?
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যখন দলের সিনিয়র জনপ্রিয় নেতারা ষড়যন্ত্র করলেন, যখন সিনিয়র নেতারা সংস্কারবাদী হলেন তখন বেগম মতিয়া চৌধুরী যেন একাই স্রোতের বিপরীতে লড়েছিলেন। জিল্লুর রহমান আর সৈয়দ আশরাফ দলকে সমন্বিত করার ক্ষেত্রে কাজ করেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে অটুট রাখার জন্যে কাজ করেছেন, তেমনি বেগম মতিয়া চৌধুরী দলের ভেতর সংস্কারপন্থী, সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে তীব্র স্বরে প্রতিবাদ করেছেন, চিৎকার করেছেন এবং তাঁর এই প্রতিবাদই যেন তৃণমূলের কণ্ঠস্বর ছিল। বেগম মতিয়া চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা সৎ, আদর্শবান নেতা হিসেবে সম্মান করেন, কিন্তু তাঁকে আওয়ামী লীগার হিসেবে মেনে নিতে পারে না। এখানেই হয়তো রাজনীতির একটি বড় ‘টুইস্ট’ এবং এখানেই হয়তো বেগম মতিয়া চৌধুরীর রাজনীতির সবথেকে বড় ট্রাজেডি। যে দলের জন্যে তিনি সবকিছু উজাড় করলেন, যে দলে তিনি বিশ্বস্ততা এবং সততার প্রতীক, সেই দলেই তিনি আপন নন। কেন আপন নন এই প্রশ্নের উত্তরও হয়তো কখনো পাওয়া যাবে না। বেগম মতিয়া চৌধুরীকে মনে করা হবে তিনি যেন একজন কমিউনিস্ট নেত্রী, আওয়ামী লীগের পরিচয় ছাপিয়ে এই পরিচয়টাই যেন তাঁর বড় পরিচয়।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।