নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২৭ নভেম্বর, ২০২০
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কোন্দলে টালমাটাল বিএনপি। একদিকে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবস্থান অস্পষ্ট, অন্যদিকে তারেক জিয়াকে নিয়ে দলের ভেতর অশান্তি। এর মধ্যেই বিএনপির তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ নতুন করে সংঘবদ্ধ হচ্ছেন, তারা দল কে বাঁচানোর জন্য দলের ত্যাগী প্রবীণ একজনকে চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এই প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে কি না- তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে বিএনপি যে বিভক্ত এবং নেতৃত্বশূন্য সেটি তৃণমূল পর্যন্ত উচ্চারিত হচ্ছে। আর সে কারণেই তারা মনে করছেন এমন একজন ব্যক্তিকে এখন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া উচিত, যিনি সার্বক্ষণিক ভাবে দলের দেখভাল করবেন, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং দল গুছিয়ে নতুন নেতৃত্বকে এনে, দলকে আবার সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করবেন।
সে রকম নেতা কে? এ নিয়ে বিএনপিতে নানামুখী আলোচনা চলছে। আর সবচেয়ে যে নামটি বেশি উচ্চারিত হচ্ছে তাহলো বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠা থেকেই এ দলের সঙ্গে জড়িত। তিনি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন, খালেদা জিয়ার অন্যতম বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার কারণে বিএনপিতে তার সম্মান এবং মর্যাদা বেশি। বিশেষ করে ছাত্র রাজনীতি থেকে আসা নেতৃবৃন্দ খন্দকার মোশারফ এর ব্যাপারে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাচ্ছে। যদিও বিএনপিতে তারেক জিয়ার আধিপত্যের যুগে ড. খন্দকার মোশাররফ একটু কোণঠাসা। কিন্তু তারপরেও প্রবীণ এবং অভিভাবক হিসেবে তাঁর সুনাম এবং গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আর এ কারণেই বিএনপিতে আপৎকালীন চেয়ারম্যান হিসেবে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নাম বার বার করে উঠে আসে।
বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন গত মার্চে। এরপর তিনি ফিরোজায় নিজ বাসভবনে থাকছেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। তার জামিনের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে এবং খালেদা জিয়ার আপাতত জেলে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই। আর এ কারণেই সম্ভবত তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থান এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বিএনপির মধ্যে অস্পষ্টতা রয়েছে। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে ইতি ঘটেছে, তিনি আসলে কার্যত কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন তাহলে কে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করছেন, লন্ডনে পলাতক বিএনপি`র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়াই হলেন এখন বিএনপির মূল নেতা।
তিনি বিভিন্ন সভায় যুক্ত হচ্ছেন, নেতা-কর্মীদের নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন, এমনকি স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে সভাপতিত্ব করছেন। এ কারণেই এখন তারেক বিরোধী অবস্থানে চলে গেছে। বিশেষ করে তারেক জিয়ার একের পর এক হঠকারি ভুল বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত, তার মনোনয়ন বাণিজ্য, কমিটি বাণিজ্য এবং লন্ডন থেকে রাজনীতি করার ভ্রান্ত নীতি দলের ভিতর সমালোচিত হয়েছে। এ কারণে তারা মনে করেন, লন্ডনে থেকে বিএনপির মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলকে পরিচালনা করা সম্ভব না। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন যে, বিএনপিতে একজন আপৎকালীন চেয়ারম্যান দরকার। যিনি দলকে সংগঠিত করবেন এবং সাংগঠনিক শূন্যতা গুলো পূরণ করবেন।
বিএনপি এখন সংগঠন হিসেবে নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই দলটির স্থায়ী কমিটির অনেকগুলো পদ শূন্য। অধিকাংশ জেলায় কোন কমিটি নাই। ঢাকা মহানগরীর ওয়ার্ডগুলোতে কমিটি নাই, অন্য সহযোগী সংগঠনগুলোর বেহাল অবস্থা। নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক নজরদারির কারণে এটি বলে অনেকে মনে করছে। এই বাস্তবতায় বিএনপির তৃণমূলের আকাঙ্ক্ষা হলো একজন কেয়ারটেকার নিয়োগ করা, যিনি এই জঞ্জালগুলো পরিষ্কার করে বিএনপিকে একটি সাংগঠনিক অবস্থায় দাড় করাবেন। কিন্তু পরিবার তন্ত্রের কারণে সেটি শেষ পর্যন্ত সম্ভব হবে কি না- এ নিয়েও সংশয় রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।