নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৭ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
দলে তীব্র অভ্যন্তরীণ কোন্দল চেইন অফ কমান্ড ভেঙে যাওয়া ইত্যাদি নানা বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ তার নির্ধারিত কাউন্সিল অধিবেশনের আগেই করে ফেলতে পারে। এরকম আগে গুঞ্জন ছিল এখন এ নিয়ে রীতিমতো আলাপ আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই এখন মনে করছেন যে, একটি আগাম কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যে অন্তঃকলহ বিরোধ তা মেটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে, করোনার কারণে যে প্রায় এক বছর রাজনৈতিক তৎপরতা স্থবির হয়ে পড়েছিল সেই প্রেক্ষাপটে সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন কাউন্সিল এর বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তৃণমূল বিভক্তি ,দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের ফ্রিস্টাইল কথা বার্তা, অনুপ্রবেশকারীদের দাপট, এবং নানা রকম অপ তৎপরতার কারণে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আকস্মিকভাবে দলের কাউন্সিল করতে পারেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর ভূমিকা নিয়ে দলের ভেতরে নানারকম আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে তার ছোটভাই কাদের মির্জা দলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই ক্ষেত্রে দলের সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা নিয়েও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা প্রশ্ন করছেন। ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে আছেন এবং আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই মনে করছেন এটিই তার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শেষ মেয়াদ। এরপর হয়তো আওয়ামী লীগ একজন সাধারণ সম্পাদক বেছে নেবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের মাধ্যমেই একজন সাধারণ সম্পাদক চূড়ান্ত করবেন। ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীর ঘটনা, দলের ভেতর নানা রকম কোন্দল, বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি, এবং সাধারণ সম্পাদকের ভাইয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে একজন নতুন সাধারণ সম্পাদক নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে জোর আলোচনা এবং গুঞ্জন চলছে । সেটি হলো কে হতে পারেন আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক? কাউন্সিল আগেই হোক বা আর পরে হোক আগামী বছর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যে একজন নতুন সাধারণ সম্পাদক পাবে এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয় নেই। আর সেজন্য এখন থেকেই এ নিয়ে নানারকম তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে । আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তির নাম আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে আলোচনায় আছে এবং এদের মধ্যে দু`জন প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ৩ জন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এর নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক: ওবায়দুল কাদের এর পরে কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হবে এরকম আলোচনায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদের প্রথম পছন্দ হলো জাহাঙ্গীর কবির নানক। জাহাঙ্গীর কবির নানক ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, যুবলীগের নেতা ছিলেন, ২০১৮ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন না পেয়েও তিনি দলের সভাপতির প্রতি আস্থা রেখেই কাজ করছেন এবং তার জন্য তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে । তিনি প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি কর্তৃক। দলের বিশ্বস্ত নেতাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক অন্যতম । সারাদেশের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জনসংযোগ যোগাযোগ এবং শেখ হাসিনা আস্থার কারণে জাহাঙ্গীর কবির এর নাম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় এসেছে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক: আরেকজন প্রেসিডিয়ামের সদস্য ড: আব্দুর রাজ্জাকের নামও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছে। আব্দুর রাজ্জাক একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। শিক্ষিত, ভদ্র, এবং তার দলের বাইরেও একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু দলের তৃণমূলের মধ্যে তার অবস্থান ওতটা সংগত নয় বলেই আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন।
মাহবুব-উল-আলম হানিফ: মাহবুব-উল -আলম হানিফ দীর্ঘদিন ধরে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । তার সঙ্গে দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের দূরত্বের কথা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মহলে শোনা যায়। মাহবুবুল আলম হানিফ আওয়ামী লীগ সভাপতির আস্থা ভাজন হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সারাদেশে তৃণমূল এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা, জনসংযোগ ইত্যাদি নিয়ে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে এবং তিনি তৃণমূল থেকে ধাপে ধাপে বেড়ে ওঠা নেতা কিনা এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিতর্ক আছে।
ডা. দীপু মনি: ডা. দীপু মনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের অনেকেই মনে করেন যে, অনেকদিন পর আওয়ামী লীগ হয়তো একজন নারী সাধারণ সম্পাদক পেতে পারে। ডা. দীপু মনির দল এবং দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তবে আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় সংগঠন কে যে সংগঠনটি এখন নানা রকম বিভক্তি এবং কোন্দলে জর্জরিত সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এখন তিনি কতটা কার্যকরী এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।
আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম: আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম তৃণমূল থেকে ধাপে ধাপে বেড়ে ওঠা একজন রাজনীতিবিদ। দলের কর্মীদের সঙ্গে তার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। একসময় তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির ব্যক্তিগত স্টাফ ছিলেন। সেই জন্য সারাদেশে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তার সুস্পষ্ট একটি ধারণা রয়েছে। বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হলেও তিনি গত নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এবং ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। সংগঠনের ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতা হিসেবে তার সুনামও রয়েছে। কিন্তু বাহাউদ্দিন নাছিমের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন যে, তিনি বদমেজাজি, মাঝে মাঝে রেগে যান, উত্তেজিত হন।
এই পাঁচ জনের মধ্যে থেকে নাকি এ পাঁচজনের বাইরে কেউ আগামীতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হবেন সেটি নিশ্চিত নয়। কারণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেষ পর্যন্ত হবেন আওয়ামী লীগ সভাপতির পছন্দের ব্যক্তি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।