নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২১
করোনায় এখন সারাদেশে লকডাউন চলছে। তবে সবচেয়ে বেশি লকডাউন লক্ষণীয় রাজনীতির মাঠে। রাজনীতি শূন্য বাংলাদেশে করোনার প্রকোপের কারণে রাজনীতি আরো নির্বাসিত হয়েছে। এই নির্বাসিত রাজনীতিতে শুধুমাত্র মূল্যায়ন, সমালোচনা, অতীতাশ্রয়ী চিন্তা ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাই শোনা যাচ্ছে। আর এ সমস্ত আলাপ-আলোচনায় মুখ্য হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ সংগঠন হিসেবে শক্তিশালী করা না করা, আওয়ামী লীগের অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ আলোচনা। এসব আলোচনায় সবচেয়ে বেশি যেটি এসেছে তা হলো আওয়ামী লীগ সংগঠন হিসেবে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই দুর্বলতার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে নানা মুনির নানা মত যেমন পাওয়া যাচ্ছে তেমনি একটি বিষয় সকলে ঐক্যমত। তা হলো আওয়ামী লীগের জন্য একজন পূর্ণকালীন কার্যকর সাধারণ সম্পাদক প্রয়োজন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সে কারণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি সবসময় স্পর্শকাতর, আবেগময় এবং গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তা নয়, দলকে শক্তিশালী করার জন্য, দল গোছাতে তিনি মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে দলের সাধারণ সম্পাদক পদকে শ্রেয়তর মনে করেছিলেন। সে থেকে আওয়ামী লীগের মধ্যে দল এবং সরকারকে আলাদা করার একটি নৈতিক ভিত্তি তৈরি হয়েছে, যেটি সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুসরণ করার চেষ্টা করছেন। যদিও এটি পুরোপুরি করতে পারেননি তারপরও দলের সিংহভাগ নেতাকে তিনি মন্ত্রিত্বের বাইরে রেখেছেন। কিন্তু ভাগ্যবান কয়েকজন আছেন যারা মন্ত্রী এবং দলের নেতাও হয়েছেন। তাঁদের দুই একজন ছাড়া কেউই দুটো দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারছেন না বলেই মনে করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের যেই সংকট সেই সংকটগুলো নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নানারকম মুখরোচক আলোচনা হচ্ছে। এইসব আলোচনায় যেমন দলের চেইন অব কমান্ড নষ্ট হওয়া, দলের পাতি নেতাদের জাতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা ইত্যাদি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে তেমনি সংগঠন গোছানোর একটি রূপকল্প নেতাকর্মীদের আলাপ-আলোচনায় ভেসে আসছে।
নেতাকর্মীরা অধিকাংশই মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগের মতো একটি ব্যাপক বিস্তৃত সংগঠনে একজন পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদক দরকার। যেই সাধারণ সম্পাদক কর্মঠ হবেন এবং তিনি এলাকার সব মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। সকলে তার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন এবং যিনি হবেন আসলে দলের প্রাণকেন্দ্র। যাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কর্মী বাহিনীর সঙ্গে যিনি হবেন একটি সেতুর মতো, যার মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীরা তাদের অভাব, অভিযোগ, অনুভূতি, আবেগ ইত্যাদি দলের সভাপতির কাছে জানাতে পারবেন। যিনি দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিতদেরকে চিহ্নিত করতে পারবেন এবং তাদেরকে প্রকৃত মর্যাদার জায়গা দিতে পারবেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমন একজন সাধারণ সম্পাদক চান যিনি দলের অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে শুধু কথাই বলবেন না, কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমন একজন সাধারণ সম্পাদক চান যিনি দলের সংগঠনের ভেতর বিভক্তি নিজে উস্কে দেবেন না বরং বিভক্তিকে তিনি দমন করার জন্য নির্মোহ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমন একজন সাধারণ সম্পাদক চান যার কথার কথাগুলো মানুষ গ্রহণ করবে, বিশ্বাস করবে, আস্থায় নিবে এবং যে সমস্ত কথাবার্তাগুলো নিয়ে হাস্যরস হবে না, জনগণের তামাশার বিষয়ে পরিণত হবে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমন একজন সাধারণ সম্পাদক চান যিনি দলের কর্মীদেরকে শাসন করবেন, আবার আদর করবেন, পক্ষপাত করবেন না, নিজের আত্মীয়-অনাত্মীয় বিবেচনা করে কর্মীদের প্রতি আচার-আচরণের পার্থক্য করবেন না।
আর এরকম একজন সাধারণ সম্পাদকের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অপেক্ষা করতে চান না। তারা মনে করেন যে, করোনার প্রকোপের পরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন হওয়া উচিত এবং এটি হওয়া উচিৎ চলতি বছরেই। একজন তরুণ, প্রতিশ্রুতিশীল, সম্ভাবনাময় এবং যোগ্য সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগে দরকার। যিনি শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবেন তেমনি দলকেও গুছিয়ে নিবেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।