নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ১২ জুন, ২০২১
দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়া। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বেগম জিয়া। করোনা থেকে মুক্ত হলেও এখন নানা জটিলতায় ভুগছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বেগম জিয়ার হার্টের অবস্থা ভালো নয়, তার কিডনির সমস্যা প্রকট হয়েছে, লিভার বেশ ভাল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এভারকেয়ার হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন যে, তার কিডনির অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে আর একটু অবনতি হলে তাকে ডায়ালায়সিস দিতে হবে। বেগম জিয়ার লিভারের অবস্থাও বেশ খারাপ। চিকিৎসকরা তার লিভার প্রতিস্থাপনের সুপারিশ করেছে। এরকম পরিস্থিতিতে বেগম জিয়াকে নিয়ে কি করবে সরকার। বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা যদি আরও অবনতি হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে তার স্বাস্থ্যগত বিষয়টিকে একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত পরিণত হবে এবং সরকার কি বিএনপিকে সেই সুযোগ দিবে?
বেগম জিয়া যখন অসুস্থ হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে গিয়েছিলেন তখনই তার পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় সেই আবেদনটি গ্রহণ করেনি। আইন মন্ত্রণালয় বলছে যে, খালেদা জিয়া যেহেতু সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত আছেন এবং নির্বাহী আদেশটি ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে অর্থাৎ কর্মসম্পাদন হয়েছে কাজেই তাকে নতুন করে ওই একই ধারায় বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। দ্বিতীয় যুক্তি হিসেবে আইন মন্ত্রণালয় বলেছে, তাহলো খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত বন্দী। কাজেই সাজাপ্রাপ্ত বন্দিকে বিদেশে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর বেগম জিয়া হাসপাতালে চিকিত্সা নিচ্ছেন। কিন্তু এখন তার পরিস্থিতি যেহেতু অবনতি হচ্ছে তাই বিভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে এটি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, সরকার বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি রাজনৈতিক এবং আইনগত বিবেচনায়। আইনগত বিবেচনায় বিষয়টি খুব সুস্পষ্ট। একজন দণ্ডিত আসামিকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলে সেটি আইন এবং বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ। বরং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বেগম জিয়া যদি বিদেশ যেতে চান তাহলে পরে তিনি আদালতে আবেদন করতে পারেন এবং আদালতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর রাজনৈতিক বিষয়টি হচ্ছে যে, সরকার মনে করে তারেক জিয়া এখনও নানারকম অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন এবং বেগম খালেদা জিয়াকে যদি লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে সেখানে বসে তিনি সরকার এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরো বড় ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবেন এবং সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন। এই সুযোগটি সরকার দিতে চাননি।
এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয় হলো যে, বেগম খালেদা জিয়া যদি সত্যি সত্যিই অসুস্থ হন এবং তার অবস্থা যদি গুরুতর হয় এবং শেষ পর্যন্ত যদি তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দেয়া হয় তাহলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি হবে? খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না, সরকারের কঠোরতার কারণে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ ইত্যাদি কথাবার্তা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে বলা শুরু হয়েছে। সরকার কি এই বিষয়টি দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করবে নাকি সরকার রাজনৈতিক দায় এড়ানোর জন্য বেগম জিয়ার দায়-দায়িত্ব না নেয়ার জন্য তাকে বিশেষ বিবেচনায় বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেবে, এটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় প্রশ্ন। দুটি সিদ্ধান্তেরই ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক রয়েছে। সরকার নিশ্চয়ই দুই বিষয়টি বিবেচনা করে যেটি কৌশলগত দিক থেকে সরকারের জন্য সুবিধাজনক সেটি বাস্তবায়ন করবে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।