নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ৩০ অক্টোবর, ২০২১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, অর্জন বড় হয় যখন সীমাবদ্ধতা বেশি থাকে। সে বিচারে বাংলাদেশে সংবাদপত্রগুলোর অর্জন অনেক বড়। তারপরেও এ দেশের সংবাদপত্রগুলো সত্য প্রকাশে কতটা বস্তুনিষ্ঠ তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
আজ শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে `৫০ বছরের বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের অর্জন ও আগামীর চ্যালেঞ্জ` শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের মুদ্রিত সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপকের ভাষ্য, কোনো ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী স্বার্থ সংরক্ষণের দায়িত্ব সংবাদপত্রের নয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশের সংবাদপত্রগুলোকে জনস্বার্থ, ন্যায়বিচার, সুশিক্ষা, পরিবেশ, নারী সুরক্ষা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার মতো বিষয়গুলোতে সচেতনতা তৈরির কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোর মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় প্রেস কাউন্সিলকে সক্রিয় করে তোলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে মত প্রকাশের জন্য একজন সাংবাদিককে আদালতে যেতে হবে, সেটা কখনও কাম্য নয়। এর সমাধান হতে পারে প্রেস কাউন্সিলকে সক্রিয় করা। এটা এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে এর ওপর সবার আস্থা থাকে। যারা অন্য কিছুতে প্রভাবিত হবেন না।
সংবাদপত্র, অনলাইন সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের তুলনামূলক অবস্থান নিয়ে অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম বলেন, সংবাদপত্র ও অনলাইনের মধ্যে বিরোধ থাকার কথা না। আমাদের দেশের সংবাদপত্রের সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। সংবাদপত্র টেলিভিশনের সঙ্গেও টিকে থাকছে। তরুণদের ভেতর সংবাদপত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উৎসাহ তৈরি হচ্ছে।
সাংবাদিকতায় দলীয় রাজনীতির প্রভাবের বিষয়ে মনজুরুল ইসলাম বলেন , সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্যের অভাব দেখতে পাচ্ছি। অনেকটা রাজনৈতিক দলের মতোই বিভাজন। যে কারণে দাবি আদায়সহ সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়গুলো অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে না। অনেক পত্রিকা বিকল্প প্রতিনিধির ভূমিকা নিয়ে নিচ্ছে।
অধ্যাপক মনজুরুল ইসলামের কামনা করে বলেন, সাংবাদিকতা কখনো যেন হলুদ রঙ ধারণ না করে। বিদ্বেষ যেন প্রকাশিত না হয়।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বক্তব্যের পর সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অনারারি অধ্যাপক সাখাওয়াত আলী খান বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে কোনো বিভাজন থাকা উচিত না। সাংবাদিকতা করতে এসে কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখা যাবে না।
অধ্যাপক সাখাওয়াত আরো বলেন, টিকে থাকারও একটা সংগ্রাম আছে। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। সবাই মিলে সত্যিকারের গণতন্ত্র তৈরি করতে হবে। তাহলেই সংবাদপত্র টিকে থাকবে।
সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজ এর সম্পাদক নুরুল কবীর, ভোরের কাগজ এর সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করছেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সঞ্চালনা করছে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। সভার শুরুতে সম্পাদক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গোলাম সারওয়ারসহ প্রয়াত অন্য সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ প্রতিদিন ক্রিয়েটিভ মিডিয়া
মন্তব্য করুন
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বর্তমান দ্রুততার প্রতিযোগিতার মধ্যে ঠিক সাংবাদিকতা, ঠিক সংবাদ পরিবেশন এবং একটি সংবাদপত্রকে গণমানুষের সংবাদপত্র হিসেবে গড়ে তোলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
তিনি বলেন, ‘দেশে গত ১৪ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ বা এক্সপোনেন্সিয়াল গ্রোথের পাশাপাশি অনেকগুলো চ্যালেঞ্জও যুক্ত হয়েছে। শুরু হয়েছে সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ দেওয়ার প্রতিযোগিতা। আর এটি করতে গিয়ে দেখা যায় এমন অনেক সংবাদ পরিবেশিত হয় যেগুলো আসলে ঠিক নয় এবং বিভ্রান্তিকর। অনলাইনের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে। এ কারণেই স্বাধীনতার পাশাপাশি প্রয়োজন দায়িত্বশীলতা।’
রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার নবরূপে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পত্রিকা বা যে কোনো গণমাধ্যম শুধুমাত্র সংবাদ পরিবেশন কিম্বা বিনোদনের জন্য নয়। একটি পত্রিকা মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়, অনুন্মোচিত বিষয়গুলোকে উন্মোচিত করতে পারে। সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার যে দিকে দৃষ্টিপাত করছে না, সে দিকে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে এবং করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারে।’
মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা একটি বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক বিতর্কভিত্তিক সমাজে বসবাস করি। এই গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অবশ্যই প্রয়োজন। বাংলাদেশে গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে, যেভাবে অবাধে সবকিছু লিখতে পারে পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশে সেটি পারে না। অনেক উন্নত দেশেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন আছে একইভাবে তাদের কাজ ও প্রকাশ সম্পর্কে দায়িত্বশীলও থাকতে হয়। সেখানে ভুল বা অসত্য সংবাদের জন্য জরিমানা গুণতে হয়, শাস্তি পেতে হয়। আমাদের দেশে এমন নজির এখনো হয়নি। মাঝে মধ্যে প্রেস কাউন্সিল থেকে তিরস্কার করা হয়েছে। কারণ তিরস্কার করা ছাড়া কাউন্সিলের আর কোনো ক্ষমতা নাই। সুতরাং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
একই সাথে একটি সংবাদপত্র শিশু-কিশোর, তরুণ ও যুব সমাজের মনন তৈরিতে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমার ছেলেবেলায় অনেক দৈনিক পত্রিকায় ছোটদের পাতা থাকতো, সেখানে আমিও লিখেছি, সেটি অনেক আনন্দের। কিন্তু এখন আর ছোটদের পাতা নেই, হারিয়ে গেছে। রূপচর্চার পাতা আছে, রান্নাবান্নার পাতা আছে কিন্তু ছোটদের পাতা অনেক ক্ষেত্রে হারিয়ে গেছে। দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো, যেন সপ্তাহে না হোক, অন্তত ১৫ দিনে ছোটদের একটা পাতা থাকে। এটি আমাদের কিশোর-তরুণদের মনন তৈরি এবং প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
সম্প্রচারমন্ত্রী এ সময় পত্রিকায় সমাজের অনুন্মোচিত বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘রাস্তায় যে পাগলটা বিড়বিড় করে কথা আওড়ায় তার পাগল হওয়ার পেছনে একটা গল্প আছে। কিন্তু কেউ তা শোনে না, শোনার প্রয়োজনও মনে করে না। যে মানুষটি নদী ভাঙ্গনে কিম্বা অন্য কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে শহরের ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছে তাদের স্বপ্নের কথা কেউ লেখে না। যে মেয়েটি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়তো নিষিদ্ধ কোনো জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, তার বেদনার কথা কেউ ভাবে না, লেখে না। সেগুলোও উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যমের বিকাশের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, কাজ করে যাচ্ছে। সে কারণে ২০০৯ সালে যেখানে দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল মাত্র সাড়ে ৪শ’ এটি এখন সাড়ে ১২শ’র বেশি। টেলিভিশনের সংখ্যা ছিল ১০টি এখন সম্প্রচারে আছে ৩৬টি, আরো কয়েকটি খুব সহসা সম্প্রচারে আসবে। বেসরকারি রেডিও লাইসেন্স দেওয়া আছে ২৪টি, ১৪-১৫টি সম্প্রচারে আছে। কমিউনিটি রেডিও’র লাইসেন্স দেওয়া আছে প্রায় ৩ ডজনের কাছাকাছি এবং বেশির ভাগই সম্প্রচারে আছে। একই সাথে গত ১৪ বছরে অনলাইন গণমাধ্যমেরও ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে, হাজার হাজার অনলাইন প্রকাশিত হয়, আমাদের কাছে ৫ হাজারের বেশি আবেদন আছে রেজিস্ট্রেশনের জন্য। ইতিমধ্যে কয়েকশ’ রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে।’
দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাসিরুদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা এবং ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এস এম জমির উদ্দিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, সিনিয়র সাংবাদিক শাহিন উল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তৃতাপর্ব শেষে কেক কেটে পত্রিকার নবরূপে প্রকাশ উদ্বোধন করেন অতিথি ও আয়োজকবৃন্দ।
তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পত্রিকা বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেছেন, ‘সিন্ডিকেট রিপোর্ট সাংবাদিকতার জন্য খারাপ। ঢাকার সাংবাদিকতার মান খুবই নিম্ন। একজন একটা রিপোর্ট করলে ওই একই রিপোর্ট আরও তিন চারজন করে। ফলে সিন্ডিকেট সাংবাদিকতা তৈরি হয়েছে।’
শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুর দুইটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে 'তারুণ্যের বোঝাপড়ায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতা' শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবি'র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, আমাদের দেশে প্রেসক্লাবে অনেক লোক আছে যারা কলম চালাতে জানে না। আমরা অনেক মিডিয়া তৈরি করেছি কিন্তু সাংবাদিক তৈরি করতে পারিনি। আমরা প্রেস ইন্সটিটিউট নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি কিন্তু সাংবাদিকরা সেভাবে কাজ করে না। আবার অনেক জেলার সাংবাদিক আছে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে খুবই ভালো কাজ করে।
জাফর ওয়াজেদ বলেছেন, আমাদের দেশে অনেকে আছে যাদেরকে বলা হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক। কিন্তু তাদের লেখা খুঁজে পাওয়া যায় না। কেউ না লিখলে সে সাংবাদিক হয় কীভাবে? আমাদের দেশে সাংবাদিক বাড়লেও সাংবাদিকতার মান বাড়েনি। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগ রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকতার মান বাড়েনি। আমাদের দেশে এখন অজস্র গণমাধ্যম কিন্তু এমন কোনো রিপোর্টার নেই যার রিপোর্ট পড়ার জন্য পাঠক অপেক্ষায় থাকে। আর বর্তমানে প্রযুক্তির এমন বিকাশ ঘটেছে যে এই সাংবাদিকতা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এখনই স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে 'তারুণ্যের বোঝাপড়ায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতা' শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবি'র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, আমাদের দেশে প্রেসক্লাবে অনেক লোক আছে যারা কলম চালাতে জানে না। আমরা অনেক মিডিয়া তৈরি করেছি কিন্তু সাংবাদিক তৈরি করতে পারিনি। আমরা প্রেস ইন্সটিটিউট নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি কিন্তু সাংবাদিকরা সেভাবে কাজ করে না। আবার অনেক জেলার সাংবাদিক আছে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে খুবই ভালো কাজ করে।
জাফর ওয়াজেদ বলেছেন, আমাদের দেশে অনেকে আছে যাদেরকে বলা হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক। কিন্তু তাদের লেখা খুঁজে পাওয়া যায় না। কেউ না লিখলে সে সাংবাদিক হয় কীভাবে? আমাদের দেশে সাংবাদিক বাড়লেও সাংবাদিকতার মান বাড়েনি। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগ রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকতার মান বাড়েনি। আমাদের দেশে এখন অজস্র গণমাধ্যম কিন্তু এমন কোনো রিপোর্টার নেই যার রিপোর্ট পড়ার জন্য পাঠক অপেক্ষায় থাকে। আর বর্তমানে প্রযুক্তির এমন বিকাশ ঘটেছে যে এই সাংবাদিকতা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এখনই স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না।
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ সাংবাদিকতা
মন্তব্য করুন
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, ‘বাঙালি জাতি গুণিদের সম্মান দিতে জানে বলেই এ ভূখণ্ডে বঙ্গবন্ধুর মতো মহান ব্যক্তিত্বের জন্ম হয়েছে। যাঁর সুমহান নেতৃত্বে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। যে দেশে গুণীর কদর নেই, সে দেশে গুণী জন্মায় না।’
শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা ভবন মিলনায়তনে পুষ্পকলির কথা পত্রিকা ও পুষ্পকলি শিশু সংগঠনের ৫ম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষ্যে ‘পুষ্পকলি সাহিত্য সম্মেলন’ ও ‘কবি কুসুমকুমারী দাশ পদক ২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, লেখক ও জার্মান বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান লিটন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রূপা চক্রবর্তী, একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণিজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (প্রশাসন) আতিকা ইসলাম পিপিএম, এনডিসি ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু সাহিত্যিক রহিম শাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন পুষ্পকলির কথা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং পুষ্পকলি শিশুসাহিত্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শামীমা সুলতানা।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বরেণ্য ব্যক্তিদের সম্মান জানানোর মহতী উদ্যোগ নেয়ায় অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সাধুবাদ জানান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার আশ্বাস প্রদান করেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি পুষ্পকলি সাহিত্য সম্মেলন কবি কুসুমকুমারী দাশ পদক ২০২২
মন্তব্য করুন
সুপ্রিম কোর্ট
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ঘিরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের বেপরোয়া
হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।
সাংবাদিকদের
ওপর লাঠিচার্জ ও মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
তিনি বলেছেন, এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত। দায়িত্ব পালনের সময় সবার সতর্ক হওয়া উচিত। এসময়
তিনি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে প্রধান বিচারপতির দপ্তরে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতির নেতৃত্বে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি এ আশ্বাস দেন। এসময় প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকার, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সারওয়ার ভুঞা, সহ-সভাপতি দিদারুল আলম দিদার, সাবেক সভাপতি এম বদিজ্জামান ও সাবেক সভাপতি ওয়াকিল আহমেদ হিরন।
প্রধান বিচারপতির
সঙ্গে সাংবাদিকদের সাক্ষাতের সময় আপিল বিভাগের সব বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। এদিন দুপুর
সোয়া ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়
সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ ও মারধর করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক আহত
হয়েছেন। লাঠিচার্জে আহত হন এটিএন নিউজের রিপোর্টার জাবেদ আক্তার, আজকের পত্রিকার
রিপোর্টার এস এম নূর মোহাম্মদ, জাগো নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার ফজলুল হক মৃধা, মানবজমিনের
মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল মারুফ, এটিএন বাংলার ক্যামেরাপার্সন হুমায়ুন
কবির, সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসির ক্যামেরাপার্সন মেহেদী হাসান
মিম ও বৈশাখী টিভির ক্যামেরাপার্সন ইব্রাহিম।
এটিএন নিউজের
জাবেদ আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও পুলিশ আমাকে পায়ের নিচে
ফেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নির্যাতন করেছে।’ প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন সাংবাদিক গণমাধ্যমকে
জানান, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত অডিটোরিয়ামে
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।’ তাদের অডিটোরিয়াম
থেকে বের করে দেওয়ার জন্য সেখানে প্রবেশ করেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য। তারা সেখানে
ঢুকেই বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন
সাংবাদিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অতর্কিতভাবে সাংবাদিকদের মারধর ও লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ।
সুপ্রিম-কোর্ট সাংবাদিক গণমাধ্যম পুলিশ হামলা প্রধান বিচারপতি
মন্তব্য করুন