নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৭ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২১
‘না… আমার সন্তানদের আমি এই বাংলাদেশ দিয়ে যেতে চাই না। আমি সেই আগের বাংলাদেশ চাই। কি করবো, কিভাবে হবে জানিনা- কিন্তু করতে হবে… কিছু একটা করতে-ই হবে…’
সম্প্রতি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক অস্থিরতাকে কেন্দ্র করেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি দেয়া একটি স্ট্যাটাসে এই কথা বলেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
পাঠকদের জন্য মেহের আফরোজ শাওনের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
মুসলিম পরিবারে জন্ম আমার। ছোটবেলায় হুজুর রেখে সিপারা, আমপারা, কুরআন পড়িয়েছেন মা-বাবা। ‘আলিফ বে তে’ পড়ার সময় ‘আঈন’ এবং ‘গাঈন’ অথবা ‘কাফ’ এবং ‘ক্বাফ’ এর উচ্চারণ নিয়ে একটু হিমশিম খেলেও বারবার পড়তে পড়তে শিখে গেলাম।
স্কুলেও ‘ইসলাম শিক্ষা’ নামক একটি বিষয় ছিল। সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীদের সেই ক্লাস বাধ্যতামূলক না থাকলেও দু’একজন বন্ধু সেই ক্লাসও করতো। কখনও তাকে আলাদা চোখে দেখতে শেখাননি আমাদের শিক্ষকেরা। তাই ‘সাহা, চক্রবর্তী কিংবা সেন’ কে ‘আহমেদ, রহমান কিংবা হোসেন’ এর সাথে পার্থক্য করিনি কখনও।
নাচ শিখতাম শুক্লা সরকারের কাছে। আমি মুসলিম বলে আমার এই নৃত্য গুরু নিজ কন্যাদের চেয়ে এক বিন্দু আলাদা করে দেখেননি কোনোদিন। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশ্রয়ই পেয়েছি!
শিল্পী হিসেবে সেই শৈশব থেকেই নাচ গান করেছি ঈদের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পূজার উৎসবেও। আমার সনাতন বন্ধুটিকে যেমন ঈদের সেমাই খেতে আমার বাড়িতে ডেকেছি তেমনি আমিও গিয়েছি নাড়ু খেতে। বাক্সো ভরে নিয়েও এসেছি তার মা’কে বলে। কোনোদিন কোনো সাম্প্রদায়িক চিন্তা মাথায় তো আসেনি! সত্যি বলতে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ শব্দটিই বোঝার দরকার হয়নি আমাদের কখনও।
কিন্তু আজ এ কোন বাংলাদেশে আছি আমরা!
কি শিখাচ্ছি আমাদের সন্তানদের!!
কোন বাংলাদেশ দিয়ে যাচ্ছি পরবর্তী প্রজন্মের হাতে!!!
যে বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী ‘ঈদ মুবারক’ লিখলে সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলেন কিন্তু একজন মুসলিম ‘শুভ বিজয়া’ লিখলেই তার গুষ্টি উদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন শত শত মানুষ! যে বাংলাদেশে অন্য ধর্মের অনুসারীদের নিজ ধর্মীয় উৎসব পালনের কোনো স্বাধীনতা নেই!! যে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসবে ভেঙে দেয়া হয় তাদের দেবী মূর্তি, লুটপাট করা হয় হিন্দুদের দোকানপাট, রাতের আঁধারে পুড়িয়ে দেয়া হয় হিন্দু জেলেপল্লী আর কিছুই করতে পারিনা আমরা!!!
না… আমার সন্তানদের আমি এই বাংলাদেশ দিয়ে যেতে চাই না। আমি সেই আগের বাংলাদেশ চাই। কি করবো, কিভাবে হবে জানিনা- কিন্তু করতে হবে… কিছু একটা করতে-ই হবে…
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
মন্তব্য করুন
যে জীবনটি আমি যাপন করছি,
সে জীবনটি আমার দ্বিতীয় জীবন।
আমার প্রথম যে জীবন ছিল
সেটির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু এমনিতে হয়নি। মৃত্যুকে ডেকে আনা হয়েছে।
পরিকল্পনায় ছিল একটি লোক
আর তার দুই সহকর্মী।
তিনটে মাত্র লোক, জিহাদিরা এতকাল
ধরে যা পারেনি, তা
পেরেছে। জিহাদিরা যদি আমাকে হত্যা
করতো, তাহলে আমার এতটা দুঃখ
হতো না। কারণ দীর্ঘকাল
থেকেই জানি তারাই আমার
আততায়ী। দুঃখ বেশি হচ্ছে
কারণ হত্যাকারীরা জিহাদি নয়। কী কারণ
তাদের ছিল তবে আমাকে
হত্যা করার? এর মধ্যে বড়
দু’টো কারণ আপাতত
যা মনে হচ্ছে তা
হলো ম্যাল প্র্যাকটিস, মার্কেটিং ও মানি।
অনেকে
বলছে হত্যাকারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে। আমার মতো নিরীহ,
নির্বোধ কী করে বড়
বড় শক্তিমান মানুষের বিরুদ্ধে আদালত অবধি যাবে! সেই
ক্ষমতা তো আমার নেই।
শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কোনও
শক্তিও আমার নেই। এই
দ্বিতীয় জীবনটি সম্পূর্ণই অন্যরকম। আমার প্রথম জীবনের
মতো দুরন্ত, দুর্বিনীত নয়। এই দ্বিতীয়
জীবনটি অনেকটা রিহ্যাবের পঁচানব্বই বছর বয়সী জরাগ্রস্ত
নারীদের মতো। এই জীবনটি
আমার জন্য নয়। কিন্তু
এই জীবনটিই এখন আমার জন্য
বরাদ্দ করেছে আমার হত্যাকারীরা। যতই
প্রাণপণে আমি মনের শক্তি
অর্জন করতে চাইছি দু'বেলা করে, ততই
ব্যর্থ হচ্ছি।
আমার
কী হয়েছিল? আমার শরীরের ওপর
দিয়ে কি কোনও ট্রাক
বা ট্রেন চলে গিয়েছিল? হাড়গোড় গুঁড়ো
হয়ে গিয়েছিল? না। আমার শরীরের
কোনও হাড় কোথাও বাজেভাবে
ভেঙেছিল? না। ডিসলোকেশান
হয়েছিল? না। ডিসপ্লেসড হয়েছিল?
না। আমি কি হাঁটতে
পারছিলাম? আমি অন্তত কাউকে
ধরে মেঝে থেকে বিছানা
অবধি হেঁটে
এসেছিলাম। আমি
কি বসতে পারছিলাম? আমি
বসতে পারছিলাম। আমার কি হিপ
জয়েন্ট ফুলে উঠেছিল? না।
জয়েন্টে ব্যথা ছিল? না। আমার
কি কোনও জয়েন্ট ডিজিজ
ছিল? না। কী ছিল
আমার তবে? শুরুতে হাঁটুতে
ব্যথা ছিল, পরে সে
ব্যথাও ছিল না। অকারণ
উদ্বেগ ছাড়া কিছুই ছিল
না আমার। উদ্বেগটি আমার ভেতরে তৈরি
হয়নি। সিরিঞ্জে ভরে ভরে ইঞ্জেক্ট
করা হয়েছে। আর আমার উদ্বেগই
ছিল ম্যাল প্র্যাকটিসের জন্য চমৎকার পুঁজি।
ডাক্তার হিসেবে কী করা উচিত
ছিল তাদের? উচিত ছিল আমাকে
রেস্টে থাকতে বলা কিছুদিন। এক
সপ্তাহ, দু'সপ্তাহ, তিন
সপ্তাহ। অথবা তারও চেয়ে
কিছু বেশি। তারা কি ট্রিটমেন্টের
কোনও গাইডলাইন ফলো করেছে? করেনি।
তারা ডাক্তারের কাজ নয়, করেছে
কসাইয়ের কাজ।
আমার
প্রথম জীবনটি আমার কাছ থেকে
কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই দ্বিতীয় জীবনটির
দিকে তাকালে আমার শ্বাসকষ্ট হয়,
বড় অসহায় বোধ করি। দ্বিতীয়
জীবনটি আমার প্রাপ্য ছিল
না। আমার প্রথম জীবনটির
নাম ছিল জীবন, আমার
দ্বিতীয় জীবনটির নাম ‘মৃত্যু’।
আমি বেশ কিছুদিন হলো
মৃত্যু যাপন করছি। আমাকে
হয়তো আরও বহুদিন মৃত্যুযাপন
করতে হবে।
(ফেসবুক
থেকে সংগৃহীত)
মন্তব্য করুন
সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হঠাৎ কিছুটা ‘অস্বাভাবিক’ পোস্ট করছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ‘আমার মৃত্যু হয়েছে’ ও ‘দেহ হাসপাতালে
দান করেছি’ প্রসঙ্গ নিয়ে দুটি পোস্ট করে ভক্তদের মনে কৌতূহল জাগানোর পর এবার হাসপাতালের
বিছানায় শুয়ে থাকার একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে এ ছবিটি পোস্ট করেন তসলিমা নাসরিন। তবে পোস্টে কোনো ক্যাপশন লেখেননি তসলিমা নাসরিন। ফলে ডালপালা ছড়াচ্ছে, তসলিমা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কি না?
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা ছবিতে দেখা যাচ্ছে- তার দুই পাশে পাঁচজন দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী। বাকি চারজন পুরুষ। তবে তারা কারা সে বিষয়েও তসলিমা কিছু লেখেননি।
এদিকে, তসলিমার এ পোস্টের নিচে চিন্তিত তাঁর ভক্তকুলরা। নন্দিতা নামের একজন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে করেছেন, ‘সেকি! কি হয়েছে, কেউ কি জানাবে দয়া করে? আমি তো ভেবেই বসলাম যে, নিশ্চয়ই তোমার ফেসবুক হ্যাক হয়েছে! তোমাকে এরকম মোটেও মানায় না। যদিও মাঝে-মধ্যে অসুখ-বিসুখ মানুষকে কিছুটা বিশ্রামের অবকাশ দিয়ে দেয়। তাড়াতাড়ি সেরে ওঠো প্লিজ। উৎকণ্ঠা নিয়ে বেশ কিছু মেসেজ করে ফেলেছি কিন্তু তোমাকে। সবকটার উত্তর চাই!’
রাজা চ্যাটার্জী নামে আরেকজন মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘এমন ছবি দেখতে ইচ্ছে করে না। এখনও অনেক কাজ বাকি। দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’
পার্থ বল লিখেছেন, ‘দিদি, এবার আমাদের সত্যিই আপনি টেনশনে ফেললেন। কী হয়েছে প্লিজ আমাদেরকে জানান। রক্তের সম্পর্ক নেই বলে ভাববেন না যে আপনি আমাদের দূরের লোক। কিচ্ছু হবে না আপনার।
এর আগে বাংলাদেশ সময় শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দিনগত রাতে তসলিমা নাসরিন তার ফেসবুকে লেখেন, ‘গতকাল ঠিক এই সময় মৃত্যু হয়েছে আমার। এখন ফিউনারেল (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া) চলছে।’ এ পোস্টে তার ভক্তদের বেশ হইচই পড়ে যায়। অনেকেই তার খোঁজ-খবর জানতে চেয়ে মন্তব্যও করেন। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি এ লেখিকা।
মৃত্যু নিয়ে দেওয়া পোস্টের প্রায় ১৭ ঘণ্টার পর আরেকটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। সেখানে তসলিমা লেখেন, ‘আমার মরণোত্তর দেহ হাসপাতালে দান করা হয়েছে।’
পরপর তার এমন কয়েকটি পোস্টে নেটিজেনদের মধ্যেও কৌতূহল জেগেছে। আসলে কী হয়েছে তসলিমা নাসরিনের? লেখিকা কী অসুস্থ? তবে এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আমাদের ফিল্মমেকার এবং শিল্পীদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা মহাকালের কাছে নিজেদের কোনো পরিচয় রেখে যেতে চাই। আমরা কি চাই ভবিষ্যত আমাদের চিহ্নিত করুক এই পরিচয়ে যে, ইহারা ছিলেন একদল ফিল্মমেকার যাহারা নিরাপদ বিপ্লব চাহিয়াছিল? যদি তা না চাই, তাহলে আমাদেরকে যার যার জায়গা থেকে বলতে হবে, গল্প বলার স্বাধীনতা চাই। কথা বলার স্বাধীনতা চাই। কোনো কিছুর বিনিময়েই এটা নেগোশিয়েট করা যাবে না...
বাবাকে একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি,এখন যখন তোমাকে কেউ চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনে,তোমার কেমন লাগে? বাবা কোন উত্তর না দিয়ে আমার দিকে শুধু ভেঁজা চোখে কিছুক্ষন তাঁকিয়ে ছিল। তার সেই গর্বিত মুখটা দেখে,আমার চোখ দুটোও ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। সন্তানের সকল সফলতায় বাবা মায়ের যে কি শান্তি,কি আনন্দ...