সোশ্যাল থট

সবাই বুঝতে পারছে বেগম জিয়া ভালো নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:৫৮ পিএম, ২৬ অক্টোবর, ২০২১


Thumbnail

রেডিও, টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায় জোর প্রচার, খালেদা জিয়া বিদেশে চলে যাচ্ছেন। এক-এগারোর জামানা তখন। তিনি তখন ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ মইনুল রোডে শহীদ জিয়াউর রহমানের স্মৃতিমাখা বাড়িটিতে কার্যত গৃহবন্দী। বহির্জগতের সংগে প্রায় সব রকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।খুব প্রভাবশালী একজন স্বজন এক সন্ধ্যায় কম্পিউটারে কম্পোজ করা একটা বিবৃতি পাঠালেন আমার কাছে বিশ্বস্ত লোক মারফত। সেই সাথে হাতে লেখা একটা চিরকুট। ওই বিবৃতিটি যেন আমার কাছে রেখে দিই। ম্যাডাম দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাবার পর আমি যেন সই করে তাঁর নামে এটি মিডিয়ায় পাঠাবার ব্যবস্থা করি।

আমার মাথার ভেতরে তখন ঘূর্ণিঝড় বইছে। ম্যাডামের সরাসরি নির্দেশ ছাড়া এ কাজ আমি করতে পারি না। কিন্তু তাঁকে ফোনে জিজ্ঞেস করা আর মাইক্রোফোনে ঘোষণা করে দেয়ার মধ্যে তো কোনো তফাত নেই। সিভিলিয়ানদের কারো হাতে তখন কোনো ক্ষমতা নেই। আমার খুব ভালো জানাশোনা এমন তিনজন মেজর জেনারেলকে পরপর ফোন করলাম। তিন জনই খুব গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন তখন। প্রথম জন খুব গম্ভীর হয়ে আমার কথা শুনলেন। তারপর বললেন, "দেখি যদি আমি কিছু করতে পারি তবে জানাবো।" দ্বিতীয় জন পরিহাস তরল কণ্ঠে বললেন, "জ্বী ভাই এক্স পিএম-এর সঙ্গে আপনার দেখা করার ব্যবস্থা অবশ্যই করে দিতে পারবো। তবে এই দেখা করার পর আপনার নিজের নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা দেয়া কিন্তু আমার পক্ষে সম্ভব হবে না।" তৃতীয় জন বললেন, "দেখুন, আপনার একজন ওয়েল উইশার হিসেবে আমি অনুরোধ করছি উনার সঙ্গে এখন ভুলেও দেখা করার চেষ্টা করবেন না। বিপদে পড়ে যাবেন।"

তবুও ঝুঁকি নিয়েই গিয়েছিলাম। আড়াই ঘণ্টা গেটে বসিয়ে রাখলো। বহু দেন-দরবার হলো প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার কর্তাদের সাথে। বললাম, উনার অধীনে কাজ করেছি। জীবনে আর কোনো দিন দেখা হবে কিনা জানি না। উনি তো চলেই যাচ্ছেন। একটু দেখা করে বিদায় জানাবার সুযোগ পাবো না?
অবশেষে দেখা করে কয়েক মিনিটের মধ্যে ফেরার শর্তে মিললো অনুমতি সন্ধ্যা পেরিয়ে যাবার পর।

খবর পেয়ে ম্যাডাম ড্রইং রুমে এসে প্রথমে আমাকে ভর্ৎসনা করেছিলেন। "আপনি কেন এসেছেন? কী-করে এলেন? বিপদে পড়ে যাবেন তো। ঠিক করেননি। জলদি চলে যান।" ম্যাডামের সামনে বসেই সেদিন উনার এক আত্মীয়ের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। বলেছিলাম, "বেগম জিয়ার পরিচয় কেবল তিনি কার কী আত্মীয় সেটা নয়। তিনি কোটি কোটি মানুষের নেত্রী। তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার উৎস। তিনি জাতির সম্পদ। তাঁর ওপর অগণিত মানুষের আস্থা। তাদের আবেগ-অনুভূতির বিপরীতে ম্যাডামের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার কারুর নেই। তিনি স্বজন বা নেতা যাই-ই হোন।"

ম্যাডাম সেদিন দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে জানিয়ে দিয়েছিলেন, "কোথাও যাবো না আমি। এ দেশেই থাকবো। তাতে যা-হবার হবে।" তার পর কতো ইতিহাসই তো হয়ে গেলো। দেড় দশক পেরিয়ে গেছে। অকুতোভয়চিত্ত ম্যাডামের সেই মনোবল ও সেই দৃঢ়তা এখনো রোগকাতরতা সত্বেও অটুট আছে বলেই বিশ্বাস করি। তবে আমার নিজের সেই সাহস ও অধিকার এখন অতীতের অন্তর্গত।

ম্যাডামের ব্যাপারে উনার অসংখ্য অনুসারীর মতন অন্ধকারে ও দূরে থেকে আমি আজ বেদনার্ত কণ্ঠে আবারও সেই বাক্যটি উচ্চারণ করতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া কিন্তু এখনো অগণিত নেতা-কর্মীসহ কোটি কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার উৎস। কাজেই উনার যে-কোনো ব্যাপার লুকিয়ে চুরিয়ে, গোপন করে, কুক্ষিগত করে রাখার চিন্তা ছাড়ুন। সবাই না জানলেও বেমালুম বুঝতে পাচ্ছে, তিনি ভালো নেই। তাঁর দেহ থেকে `ম্যালিগন্যান্ট` বলে সন্দেহভাজন লাম্প অপারেশন করে অপসারণ করা হয়েছে। এটা খুবই গুরুতর ব্যাপার। এই সার্জারির সিদ্ধান্ত হুট করে একদিনে নেয়া হয়নি। কিন্তু তা গোপন রাখা হয়েছিল। অপারেশনের পরেও সবকিছু স্বাভাবিক ও খুব হালকা করে দেখানো হচ্ছে। এর পেছনে কী যুক্তি আমার মাথায় আসে না।

যারা সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক তাদের প্রতি আমার সবিনয় নিবেদন পর্দার অন্তরালে রেখে উনাকে বিস্মৃতি ও অকার্যকারিতার দিকে ঠেলে দেবেন না দয়া করে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা অসংখ্য মানুষের উদ্বেগের বিষয়। তাই স্বচ্ছতার সঙ্গে সবকিছু রাখুন পাদপ্রদীপের আলোয়। কেবল নিজেরা ইতিহাসের দায় না নিয়ে।

ম্যাডামের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের দিয়ে নিয়মিত বুলেটিন প্রচারের ব্যবস্থা রাখুন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বেদনার্ত হওয়া ও দোয়া করা ছাড়া আমার তেমন কিছু করার নেই। সেই সাথে সকলের কাছে মিনতি করি উনার জন্য অন্তরের সকল আকুতি ঢেলে প্রার্থনা করার।

লেখক: বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব।



মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

‘নিঃসন্দেহে একজন কর্মজীবী মহিলা একজন দায়িত্বশীল স্ত্রী’

প্রকাশ: ০৭:৩৭ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail লেখক ও কলামিস্ট সোনিয়া তাসনিম ও নারী উদ্যোক্তা তাহমিনা আক্তার পিংকি

সম্প্রতি তরুণ ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিবের নারীদের নিয়ে তার একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয় এবং এর পরই তীব্র সমালোচনার মুখে পরেন এই ক্রিকেটার। 

নারীদের নিয়ে তার এমন অসম্মাজনক পোস্টটিতে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।

তানজিম হাসান সাকিবের এমন অসম্মাজনক পোস্টকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক নারী তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। 

তার এই পোষ্ট নিয়ে বাংলাইসাডারের সাথে বুধবার ( ২০ সেপ্টেম্বর) কথা বলেছেন দুইজন নারী। তাদের মধ্যে একজন হলেন লেখক ও কলামিস্ট সোনিয়া তাসনিম এবং অন্য আরেকজন হলেন চারুকল্প'পের প্রতিষ্ঠাতা একজন নারী উদ্যোক্তা তাহমিনা আক্তার পিংকি।

লেখক ও কলামিস্ট সোনিয়া তাসনিম সাকিবের পোস্ট প্রসঙ্গে বলেন, বস্তুত ইসলাম প্রচার এবং প্রসারের সমৃদ্ধকাল থেকেই মুসলিম নারীরা ধর্মীয় বিধান মেনেই বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে অংশ নিয়ে এসেছে। এমনকি প্রাক শিল্পায়িত সমাজেও মুসলিম নারীরা নানা অর্থনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। 

সুতরাং ধর্মীয় দিক থেকে নারীদের আসলে শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে অংশ নেবার বিষয়ে কোন বাধা নেই একথা নিশ্চিত। আমি মনে করি, একজন নারী যখন কর্মক্ষেত্র অবতীর্ণ হয় তখন তার মাঝে দায়িত্ব বোধ এবং চেতনার এক সুষম মিশ্রণ হয়। নিঃসন্দেহে একজন কর্মজীবী মহিলা একজন দায়িত্বশীল স্ত্রী, মা, বোন হিসেবেও নিজেকে শতভাগ প্রমাণ করতে সক্ষম।

তিনি বলেন, আমার নিজের মা একজন শিক্ষিকা ছিলেন। মায়ের কাছ থেকে সবসময় আমরা সহনশীলতা আর দায়িত্ববোধ, নৈতিকতার শিক্ষা পেয়েছি। নিজেরাও পড়াশোনা করেছি ভবিষ্যতে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য। আলহামদুলিল্লাহ। তেমনটা করছিও। এমনকি আমার মেয়ে দুটোকেও লেখা পড়া শিখাচ্ছি যেন পরবর্তী জীবনে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে। আর এটাই একটা প্রগতিশীল সমাজের বাস্তব চিত্র। আদৌ আমরা অবশ্যই প্রগতীশীল হব এবং সেটা অবশ্যই ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি সম্মান রেখেই। 

ক্রিকেটার তানজিম তানিমের বক্তব্য সম্পর্কে বলতে গেলে বলব, ওনার এই মতামত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। স্বাধীন দেশে মত প্রকাশের অধিকার যেহেতু সবার আছে, সেহেতু নিজের বক্তব্য উনি রাখতেই পারেন। সেই হিসেবে এটাকে তার নিজস্ব ভাবনা বলেই মনে করছি। তবে হ্যাঁ, দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলকেই মন্তব্য প্রদানের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া জরুরী।

এদিকে নারী উদ্যোক্তা তাহমিনা আক্তার পিংকি বলেন, একজন পুরুষ যদি চায় তার সন্তান ভবিষ্যতে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বা মেজিট্রট হবে নিজের একটি ভালো জায়গা তৈরি করবে, একজন ভালো মানুষ হবে তাহলে অবশ্যই তার স্ত্রীকে শিক্ষিত হতে হবে। আর একজন শিক্ষিত নারীর অবশ্যই চাকরি করেতে চাইবে এটা একটা নারীর অধিকারই বলা যায়। 

তিনি বলেন, একটা নারী যদি কর্মজীবি হয় তাহলে স্বামীর হক আদায় হয় না ,সংসারে শান্তি থাকে না এই যে কথাটা বলেছেন ক্রিকেটার তানজিম শাকিব, এই কথাটার সাথে আমি একমত হতে পারলাম না। কারণ আমাদের দেশের বাহিরের কথা যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে দেখা যায় বিশ্বের সকল দেশেই স্বামী-স্ত্রী দুজনে চাকরি করছে। তবে তারা যদি চাকরি করে সংসারে শান্তি রাখতে পারে, স্বামী-স্ত্রীর সর্ম্পক ভালো রাখতে পারে, পরিবারে সকল দায়িত্ব একজন স্ত্রী সঠিকভাবে পালন করতে পারে, তাহলে আমাদের দেশের নারীরা কেন পারবে না। আমি মনে করি যে নারী ঘর সামলাতে পারে, সে নারী  চাকরিও সামলাতে পারবে।  

এখন আসি পর্দা করার কথায়, আসলে চাকরি - বিজনেস  করেও পর্দা মেনে চলা যায়। আবার অনেকে হচ্ছে চাকরি করেনা, শুধু গৃহিনী তারা কিন্তু পর্দা মেনে চলে না। তো পর্দা করারটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, সেটা চাকরি করা না করার সাথে সর্ম্পক নেই।


কর্মজীবী মহিলা   দায়িত্বশীল স্ত্রী   তানজিম হাসান সাকিব  


মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

‘যে নারী চাকরি সামলায়, সে ঘরও সামলাতে জানে’

প্রকাশ: ০৯:০৯ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail ফাতেমা ইসলাম অংকন ও আফরোজা আদিবা

তরুণ ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে সবার নজরে আসেন এবং ব্যাপক প্রশংসিত হন। কিন্তু এর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারীদের নিয়ে তার একটি পোস্ট ভাইরাল হয় এবং এর পরই তীব্র সমালোচনার মুখে পরেন এই ক্রিকেটার। 

নারীদের নিয়ে তার এমন অসম্মাজনক পোস্টটিতে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।

তানজিম হাসান সাকিবের এমন অসম্মাজনক পোস্টকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক নারী তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। 

তার এই পোষ্ট নিয়ে বাংলাইসাডারের সাথে আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কথা বলেছেন প্রাইভেট কোম্পানির দুইজন কর্মজীবী নারী। তাদের মধ্যে একজন হলেন ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের ফাতেমা ইসলাম অংকন এবং অন্য আরেকজন হলেন আমেরিকান ভিত্তিক নিউজ চ্যানেল টিবিএন টোয়েন্টিফোরের নিউজ প্রেজেন্টার আফরোজা আদিবা।

প্রথমে ফাতেমা ইসলাম অংকন সাকিবে এই পোষ্ট নিয়ে বাংলাইনসাইডারকে বলেন, অবশ্যই শিক্ষিত ও কর্মজীবী মা একজন ভালা সন্তান গড়তে যথেষ্ট ভূমিকা রাখেন বলে আমি মনে করি। কারণ আমার মা একজন শিক্ষিকা ছিলেন, তিনি নিজেও পড়াশোনা করেছেন এবং আমাদের ভাই-বোনদেরকেও পড়াশোনা করিয়েছেন। একইসাথে আমাদের প্রতি প্রত্যকটি দ্বায়িত্ব তিনি সঠিক ভাবে পালন করেছেন। কেন আমরাতো আমাদের মায়ের থেকে কখন অবহেলিত হয়নি, আদর স্নেহ যত্নে আমার মা'তো আমাদের কখনো কমতি রাখেননি। তিনিতো একজন চাকরিজীবী স্ত্রী'ই ছিলেন।

তিনি বলেন, আমি নিজেও এখন চাকরি করছি, ফলে পরিবারে কন্ট্রিবিউট করতে পারি সে ক্ষেত্রে আমার পরিবারও খুবই উপকৃত হচ্ছে। আমি বলবো একটি মেয়ে চাকরি করার জন্য কখনো পারিবার ধ্বংস হয় না বরং আরও স্টং হয়। আমি মনে করি চাকরির জন্য একজন স্ত্রী, একজন মা, একজন নারীর 'দায়িত্ববোধ আরও বাড়ে। আমি তানজিম হাসান সাকিবে এই কথার সাথে একমত হতে পারলাম না এবং বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরে এমন কারো থেকে এ ধরণের মন্তব্য মোটেও আসা করা যায় না। 

এদিকে তরুণ এই ক্রিকেটারের পোষ্ট ক্ষিপ্ত হয়ে টিবিএন টোয়েন্টিফোরের নিউজ প্রেজেন্টার আফরোজা আদিবা বলেন, ‘আমার মনে হয় সে এটা সম্পূর্ণ না ভেবেই বলেছেন। চাকরি করলে কখনোই স্বামীর হক নষ্ট হয় না, চাকরি করেও বিভিন্ন ভাবেই স্বামীর হক আদায় করা যায়। যে নারী চাকরি সামলায়, সে ঘরও সামলাতে জানে। তানজিম হাসান সাকিবের এই কথায় কোনো যুক্তি এবং ভিত্তি নেই।‘

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে হাজার হাজার মেয়ে আছে যারা চাকরি করেও ঘর সংসার সবকিছুই সমানতালে সামলায়। এছাড়া যে পর্দায় থাকতে চায় সে পর্দায় থেকেও চাকরি করতে পারে। আর যে পর্দায় থাকতে চায় না সে চাকরি না করেও পর্দা করেনা। আর চাকরিজীবী স্ত্রীদের জন্য সমাজ পরিবার দুটোই উন্নত হচ্ছে। একজন তারকা একজন তারকা হয়ে স্ত্রীদের নিয়ে এই ধরনের পোষ্ট তিনি করতে পারেনা।‘

তানজিম সাকিবের পোস্ট নিয়ে নেটিজেনরা এখন আলোচনা-সমালোচনায় ব্যস্ত। অনেকে তরুণ এই ক্রিকেটারকে দল থেকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে অনেকে তার পক্ষেও মতামত দিয়েছে।


তানজিম হাসান সাকিব   নারী   চাকরি   স্ত্রী চাকরি  


মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

যতীন সরকার বলেছেন, ‘নাস্তিকতা মুরতাবাদ!’

প্রকাশ: ০৩:৪৭ পিএম, ২০ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail যতীন সরকার বলেছেন, ‘নাস্তিকতা মুরতাবাদ!’

সম্প্রতি প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকাকে একটি ভিডিও ইন্টারভিউ দিয়েছেন অধ্যাপক যতীন সরকার। সেই ভিডিও ইন্টারভিউয়ের প্রতিক্রিয়ায় নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন তার ‘সুষুপ্ত পাঠক’ নামক ফেসবুক পেইজে অধ্যাপন যতীন সরকারের ইন্টারভিউয়ে বলা বক্তব্য নিয়ে লিখেছেন নিজের মন্তব্য। অধ্যাপক যতীন সরকারকে নিয়ে তসলিমা নাসরিনের লেখাটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

‘সুষুপ্ত পাঠক’ -পেইজে তসলিমা নাসরিনের লেখা: 

লেখক অধ্যাপক মার্কসবাদী যতীন সরকার ‘প্রতিদিনের বাংলাদেশ’ পত্রিকায় ভিডিও ইন্টারভিউতে বলেছেন, নাস্তিকতা মুরতাবাদ!... ইসলামের জন্ম না হলে পৃথিবী এক হাজার বছর পিছিয়ে থাকতো...

যতীন সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি করা প্রগতিশীল মানুষদের সংখ্যা অনেক। আমার মধ্যে কোন ভক্তি শ্রদ্ধা নেই। ফলে যত বড় মানুষ হোন তাকে সমালোচনা করতে আমার দ্বিধা হয় না। ব্লগার কিলিংয়ের সময় ইস্টিশন ব্লগে যতীন সরকারের একটি ইন্টারভিউ বের হয়েছিলো, সেখানেও তিনি ‘নাস্তিকতার আস্ফলন’ বলে ব্লগারদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছিলেন। তখন তাকে ‘বুড়ো মানুষ’ বলে অনেকে এড়িয়ে যেতে বলেছিলেন। যতীন সরকার পাকিস্তান শাসনের বিরুদ্ধে বলা ও মার্কিসবাদ প্রচার ছাড়া তাদের চিন্তা চেতনা এই সমাজে একজন মানুষকেও ভাবতে সাহায্য করেনি। যিনি মনে করেন ইসলামের জন্ম হয়েছিলো বলে পৃথিবী এক হাজার বছর এগিয়ে গেছে, নাস্তিকতা বর্জনীয়- তিনি কট্টর মৌলবাদীদের কাছে কতখানি সন্মান পাবেন ভেবে দেখুন। এখন হুমুয়ূন আজাদকে রেখে কি তাকে কেউ কোপাতে আসবে? তসলিমা নাসরিন দেশ ছাড়বে না তো কি যতীন সরকার দেশ ছাড়বে? ব্লগাররা মরবে নাকি যতীন সরকার মরবে?

'প্রতিদিনের বাংলাদেশ' পত্রিকা ইসলামের প্রগতীশীল ভূমিকা নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, ইসলাম নিয়ে তিনি অনেক পড়েছেন।... যদিও তিনি এক জায়গায় স্বীকার করেছেন তিনি ধর্মকে জেনেছেন মার্কসবাদ পড়ে! তিনি যে ইসলাম পড়েননি সেটা স্পষ্ট। ইসলাম জানতে হলে মাদ্রাসায় হায়ার ক্লাশে যেভাবে পড়ানো হয় সেভাবে জানতে হয়। যতীন খুড়ো সেভাবে পড়েননি তাতে কোন সন্দেহ নেই। যাই হোক, তিনি বলছেন খ্রিস্টান ধর্মের ক্যাথলিকরা গ্রীক জ্ঞান-বিজ্ঞানকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছে। আর মুসলমানরা সেই গ্রীক জ্ঞানবিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এটা পুরোপুরি মিথ্যাচার ছিলো যতীন খুড়োর! কেন? বাগদাদের ‘মুতাজিলাদের’ ঠিক একইভাবে ইসলামের মোল্লাতন্ত্র হত্যা করেছে। দেশান্তরিন করেছে। কারাগারে আমৃত্যু বন্দি করে রেখেছে তখনকার বিজ্ঞানী দার্শনিকদের। কেন? কারণ গ্রীক জ্ঞানবিজ্ঞানের সঙ্গে ইসলামের সাংঘর্ষিকতা দেখতে পেয়েছে ইমাম গাজ্জালির মত আলেমরা। ইবনে সিনা, আল বেরুণীরা কাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতেন? যতীন খুড়ো সেটা বেমালুম ভুলে গেলেন নাকি গোপন করলেন?

নাস্তিকতা নিয়ে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিলেট থেকে ‘যুক্তি’ নামের একটা পত্রিকা বের হতো। এক লোক তার কাছে লেখা চাইলে তিনি ‘নাস্তিকতা মুরতাবাদ’ লেখাটা দেন। সম্পাদক লেখার শিরোনামটা বদলের অনুরোধ করলে তিনি অনড় থাকেন... বলে হা হা হা করে হাসেন যতীন সরকার। কেন, উনি কি জানেন না সেই সম্পাদকটি অনন্ত বিজয় দাস? যাকে কুপিয়ে খুন করেছে খুড়ো যাদের জন্ম না হলে পৃথিবী এক হাজার বছর পিছিয়ে যেতো বলে দাবী করেছেন! পত্রিকার নাম যুক্তি মনে আছে কিন্তু অনন্ত বিজয় দাসের নাম মনে নেই? অনন্ত বিজয় দাস এদেশের বুদ্ধির মুক্তির জন্য প্রাণ দিয়েছেন। মার্কসবাদী যতীন খুড়োদের কাছে তিনি চক্ষুশূল হবেনই। তাই অবাক হইনি। আমার রাগ বা বিরক্তি আসলে বিজয়দের উপরই! বেঁচে থাকতে তিনি এই মার্কসবাদী যতীন সরকারদের মনে করতেন চিন্তা ভাবনায় সমগোত্র! অভিজিত রায়ও তাই। 'মুসলিম লীগ নাস্তিকদের' সঙ্গে গলায় গলায় মিলতেন। অভিজিত মারা যাবার পর তার ব্লগের মুসলিম লীগ নাস্তিকরা তাদের আসল চেহারা দেখিয়ে দিয়েছে। আমার চাইতে সেটা কে আর বেশি জানে?

যতীন সরকার কোন মুক্তচিন্তার লেখক নন। তিনি এদেশে চিরদিন নিরাপদে লেখালেখি করে গেছেন। তার সময়ে তিনি সন্তুষ্ঠ ছিলেন। তার লেখায় একটি কিশোর কিশোরীও তাদের পঁচাগলা চিন্তা বিশ্বাস ধারণা থেকে বের হবার কোন পথ পাবে না। তিনি একজন সাধারণ লেখক। তাকে নিয়ে আমার আর কোন ভাবনা নেই।


যতীন সরকার   নাস্তিকতা   মুরতাবাদ   তসলিমা নাসরিন  


মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে : সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ১৯ জুলাই, ২০২৩


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী ও উগ্রপন্থীদের সহিংস থাবা মোকাবিলা করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা লেখেন তিনি।

সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‌‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনার পর বাংলাদেশ আরও অনেক বছর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশে পাকিস্তানি ধাচের স্বৈরাচার শুরু হয়।

মোশতাক, জিয়া ও এরশাদ তাদের দুঃশাসনকে বৈধতা দিতে আইয়ুব-ইয়াহিয়ার পদ্ধতি অবলম্বন করে দেশের গণতন্ত্রকে বিভ্রান্ত করেছেন।’

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামীকে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের সমর্থনে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন জয়। 

যত দিন যাচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণ গোলামী করার আকাঙ্খা থেকে দেশকে শুদ্ধ করেছে।’



মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

'আমার প্রথম যে জীবন ছিল সেটির মৃত্যু হয়েছে'

প্রকাশ: ১২:২৩ পিএম, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

যে জীবনটি আমি যাপন করছি, সে জীবনটি আমার দ্বিতীয় জীবন। আমার প্রথম যে জীবন ছিল সেটির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু এমনিতে হয়নি। মৃত্যুকে ডেকে আনা হয়েছে। পরিকল্পনায় ছিল একটি লোক আর তার দুই সহকর্মী। তিনটে মাত্র লোক, জিহাদিরা এতকাল ধরে যা পারেনি, তা পেরেছে। জিহাদিরা যদি আমাকে হত্যা করতো, তাহলে আমার এতটা দুঃখ হতো না। কারণ দীর্ঘকাল থেকেই জানি তারাই আমার আততায়ী। দুঃখ বেশি হচ্ছে কারণ হত্যাকারীরা জিহাদি নয়। কী কারণ তাদের ছিল তবে আমাকে হত্যা করার? এর মধ্যে বড় দু’টো কারণ আপাতত যা মনে হচ্ছে তা হলো ম্যাল প্র্যাকটিস, মার্কেটিং ও মানি।

অনেকে বলছে হত্যাকারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে। আমার মতো নিরীহ, নির্বোধ কী করে বড় বড় শক্তিমান মানুষের বিরুদ্ধে আদালত অবধি যাবে! সেই ক্ষমতা তো আমার নেই। শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কোনও শক্তিও আমার নেই। এই দ্বিতীয় জীবনটি সম্পূর্ণই অন্যরকম। আমার প্রথম জীবনের মতো দুরন্ত, দুর্বিনীত নয়। এই দ্বিতীয় জীবনটি অনেকটা রিহ্যাবের পঁচানব্বই বছর বয়সী জরাগ্রস্ত নারীদের মতো। এই জীবনটি আমার জন্য নয়। কিন্তু এই জীবনটিই এখন আমার জন্য বরাদ্দ করেছে আমার হত্যাকারীরা। যতই প্রাণপণে আমি মনের শক্তি অর্জন করতে চাইছি দু'বেলা করে, ততই ব্যর্থ হচ্ছি।

আমার কী হয়েছিল? আমার শরীরের ওপর দিয়ে কি কোনও ট্রাক বা ট্রেন চলে গিয়েছিল? হাড়গোড়  গুঁড়ো হয়ে গিয়েছিল? না। আমার শরীরের কোনও হাড় কোথাও বাজেভাবে ভেঙেছিল? না।  ডিসলোকেশান হয়েছিল? না। ডিসপ্লেসড হয়েছিল? না। আমি কি হাঁটতে পারছিলাম? আমি অন্তত কাউকে ধরে মেঝে থেকে বিছানা অবধি  হেঁটে এসেছিলাম।  আমি কি বসতে পারছিলাম? আমি বসতে পারছিলাম। আমার কি হিপ জয়েন্ট ফুলে উঠেছিল? না। জয়েন্টে ব্যথা ছিল? না। আমার কি কোনও জয়েন্ট ডিজিজ ছিল? না। কী ছিল আমার তবে? শুরুতে হাঁটুতে ব্যথা ছিল, পরে সে ব্যথাও ছিল না। অকারণ উদ্বেগ ছাড়া কিছুই ছিল না আমার। উদ্বেগটি আমার ভেতরে তৈরি হয়নি। সিরিঞ্জে ভরে ভরে ইঞ্জেক্ট করা হয়েছে। আর আমার উদ্বেগই ছিল ম্যাল প্র্যাকটিসের জন্য চমৎকার পুঁজি। ডাক্তার হিসেবে কী করা উচিত ছিল তাদের? উচিত ছিল আমাকে রেস্টে থাকতে বলা কিছুদিন। এক সপ্তাহ, দু'সপ্তাহ, তিন সপ্তাহ। অথবা তারও চেয়ে কিছু বেশি। তারা কি ট্রিটমেন্টের কোনও গাইডলাইন ফলো করেছে? করেনি। তারা ডাক্তারের কাজ নয়, করেছে কসাইয়ের কাজ।

আমার প্রথম জীবনটি আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই দ্বিতীয় জীবনটির দিকে তাকালে আমার শ্বাসকষ্ট হয়, বড় অসহায় বোধ করি। দ্বিতীয় জীবনটি আমার প্রাপ্য ছিল না। আমার প্রথম জীবনটির নাম ছিল জীবন, আমার দ্বিতীয় জীবনটির নাম ‘মৃত্যু’। আমি বেশ কিছুদিন হলো মৃত্যু যাপন করছি। আমাকে হয়তো আরও বহুদিন মৃত্যুযাপন করতে হবে।

 

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন