ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জ্বালানি ও ভূ-রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সংকটে ইউরোপ

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৯ নভেম্বর, ২০২২


Thumbnail

সারাবিশ্বের ইউরোপ মহাদেশের সম্ভাবনা সম্পর্কে কী ভাবে জিজ্ঞেস করলে ইউরোপীয়রা প্রায়শই দুই ধরনের আবেগঘন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। একটি প্রশংসনীয়। চলমান কঠিন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে সহায়তা করার এবং রুশ আগ্রাসনকে প্রতিহত করার সংগ্রামে, ইউরোপ একতা, দৃঢ়তা ও অমূল্য নীতিগত ইচ্ছা পোষণ করেছে।

দ্বিতীয়টি হলো বিপৎসংকেত। ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক মন্দা ইউরোপের সক্ষমতার পরীক্ষা করবে। একটি আশঙ্কা ক্রমশই বাড়ছে আর তা হলো বৈশ্বিক জ্বালানি ব্যবস্থার পুনর্গঠন, আমেরিকার পুঁজিবাদী অর্থনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক ফাটল ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয় এমন দেশগুলোর দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতামূলক উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলছে। এটি কেবল মহাদেশের সমৃদ্ধির ঝুঁকির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং ট্রান্সআটলান্টিক জোটের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের জন্যও সুখকর নয়।

কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউরোপ থেকে সুসংবাদের ভিড়ে বোকা বনে যাওয়া উচিত নয়। ইউরোপে গ্রীষ্মকাল থেকে বিদ্যুতের দাম কিছুটা কমেছে এবং ভালো আবহাওয়ার কারণে গ্যাসের মজুত প্রায় পূর্ণ। গ্যাসের দাম যেখানে ছয়গুণ বেড়ে গিয়েছিল। গত ২২ নভেম্বর, রাশিয়া ইউরোপে শেষ অপারেশনাল পাইপলাইনটি বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছে। এ ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে ইউক্রেনজুড়ে জরুরি বিদ্যুৎব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইউরোপের গ্যাস মজুত পুনরায় পূর্ণ করতে হবে ২০২৩ সালে, শুধু তাই নয়, পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়ার সরবরাহ গ্যাস ছাড়াই।

যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য ভ্লাদিমির পুতিন ‘জ্বালানি অস্ত্র’ ব্যবহারের কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। দ্য ইকোনমিস্টের মতে, আবহাওয়া, জ্বালানি ও মৃত্যুহারের মধ্যে যদি সুষম সম্পর্ক বজায় না থাকে তাহলে পুতিনের ‘জ্বালানি অস্ত্র’ বা ‘জেনারেল উইন্টার’ ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করবে। যুদ্ধে যে পরিমাণ ইউক্রেনীয় মারা গেছেন, তার চেয়ে বেশি ইউরোপিয়ান মারা যেতে পারেন। যেখানে জ্বালানির প্রকৃত দামের ১০ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের মৃত্যু সম্পর্কিত। ফলে এবছর জ্বালানি সংকট ইউরোপজুড়ে ১ লাখ বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। যদি তাই হয়, তাহলে পুতিনের ‘জ্বালানি অস্ত্র’ ইউক্রেনের বাইরে তার আর্টিলারি, ক্ষেপণাস্ত্র ও সরাসরি ড্রোন হামলায় যত মানুষ মারা যায় তার চেয়ে বেশি প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। এটি আরও একটি বড় কারণ হলো, রাশিয়ার বিরুদ্ধে শুধু ইউক্রেনের প্রতিরোধ নয়, এটি ইউরোপেরও লড়াই।

এই যুদ্ধ তীব্র অর্থনৈতিক ঝুঁকিও তৈরি করেছে। জ্বালানি মূল্যস্ফীতি ইউরোপের বাকি অর্থনীতির খাতেও সংকট তৈরি করেছে। ফলে চরম দ্বিধান্বিত ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানোর প্রয়োজন। যদি সুদের হার খুব বেশি হয় তবে এটি ইউরো জোনের সদস্যদের অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

জ্বালানি সংকট তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, যুদ্ধ ইউরোপের ব্যবসায়িক মডেলের একটি দুর্বলতাও প্রকাশ করছে। ইউরোপের বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে জার্মানির, রাশিয়া থেকে সরবরাহ করা জ্বালানির ওপর নির্ভর করে। অনেক প্রতিষ্ঠান বিকল্প বাজার হিসেবে আরেক ‘স্বৈরাচারী’ চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। যদিও স্পষ্ট হয়েছে রাশিয়া-চীনের সম্পর্ক, ব্যয় বৃদ্ধি ও পশ্চিমা-চীনের বিচ্ছিন্নতার বিষয়গুলো।

আমেরিকার অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদের কারণে আতঙ্ক আরও বেড়েছে, যা ভর্তুকি ও সুরক্ষাবাদের ঘূর্ণিঝড়ে ট্রান্সআটলান্টিক জোটের দেশগুলোর জন্য হুমকিস্বরুপ। মেক-ইন আমেরিকার আওতায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ আইনে জ্বালানি, উৎপাদন ও পরিবহন বাবদ ৪০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। এই স্কিমটি শিল্প নীতিগুলোর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ যা চীন কয়েক দশক ধরে অনুসরণ করছে। বিশ্ব অর্থনীতির যখন অন্য দুটি স্তম্ভ আরও হস্তক্ষেপ ও সুরক্ষাবাদী হয়ে উঠছে, ইউরোপ তখন মুক্ত বাণিজ্যের বিষয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মগুলো সমুন্নত রাখতে জোর দিচ্ছে।

এরইমধ্যে, ইউরোপের কোম্পানিগুলো ভর্তুকি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। নর্থভোল্ট, একটি সুইডিশ ব্যাটারি স্টার্টআপ। আমেরিকাতে উৎপাদন প্রসারিত করতে চায় তারা। ইবারড্রোলা, একটি স্প্যানিশ জ্বালানি কোম্পানি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুলনায় আমেরিকাতে দ্বিগুণ বিনিয়োগ করছে। অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, ব্যয়বহুল জ্বালানি ও আমেরিকান ভর্তুকির সংমিশ্রণ ইউরোপকে ব্যাপকভাবে শিল্পহীনতার ঝুঁকিতে ফেলছে। বিএএসএফ, একটি জার্মান রাসায়নিক জায়ান্ট, সম্প্রতি তার ইউরোপীয় কার্যক্রমকে ‘স্থায়ীভাবে’ সঙ্কুচিত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।

বিনিয়োগ হারানো ইউরোপকে আরও দরিদ্র করে তোলে ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা হ্রাসে প্রভাব ফেলে। করোনা মহামারি পূর্বের জিডিপি পুনরুদ্ধারে ইউরোপ অন্য যে কোনো অর্থনৈতিক ব্লকের চেয়ে খারাপ করেছে। বিশ্বের ১০০টি বড় কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৪টি ইউরোপীয়। রাজনীতিবিদরা নিয়মের বাইরে গিয়ে এবং কর্পোরেটের ধারার একটি ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতায় তাদের নিজস্ব ভর্তুকি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রলুব্ধ হচ্ছেন। জার্মানির অর্থমন্ত্রী আমেরিকার ‘বিনিয়োগ বাড়ানো’ নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ‘ইউরোপীয়ান জাগরণ’ এর আহ্বান জানিয়েছেন।

এভাবে ভর্তুকির শ্রেণি আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে উত্তেজনাও বাড়াচ্ছে। ইউক্রেনের জন্য আমেরিকার আর্থিক ও সামরিক সহায়তা ব্যাপকভাবে ইউরোপকে ছাড়িয়ে গেছে। চীনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এশিয়ার দিকে অগ্রসর হওয়ায়, আমেরিকা নিরাপত্তার জন্য অর্থ প্রদানে ইউরোপের ব্যর্থতাকে দায়ী করছে। ন্যাটোর বেশিরভাগ সদস্য প্রতিরক্ষাখাতে জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় করার লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছিল অনেকটাই ‘নির্বোধ’। যদিও যুদ্ধের কারণে আমেরিকা ও ইউরোপ ট্রাম্পের সময়ের চেয়ে আরও বেশি একত্র হয়েছে। তবে বিপদ হলো একটি দীর্ঘ সংঘাত ও অর্থনৈতিক উত্তেজনা ধীরে ধীরে তাদের আবার আলাদা করে দিতে পারে। এতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং খুশি হবেন বৈকি।

বিপজ্জনক ফাটল এড়াতে, আমেরিকাকে অবশ্যই বড় পরিসরে ভাবতে হবে। বাইডেনের সুরক্ষাবাদ ইউরোপের জীবনীশক্তি হারানোর হুমকিস্বরুপ। বাইডোনোমিক্সের প্রধান লক্ষ্য হলো চীনের প্রধান শিল্পের আধিপত্য বন্ধ করা। তবে আমেরিকার ইউরোপীয় বিনিয়োগে কৌশলগত আগ্রহ নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জ্বালানি ভর্তুকির জন্য উপযুক্ত করে তুলতে হবে এবং ট্রান্সআটলান্টিক জ্বালানির বাজারগুলোকে আরও গভীরভাবে সংহত করতে হবে।

ইউরোপকে জ্বালানি সংকটের মধ্যেও অর্থনীতিকে রক্ষা করতে হবে। জার্মানির মতো ভোক্তা ও প্রতিষ্ঠানের জ্বালানির চাহিদায় ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা করে মূল্য ও চাহিদায় সামঞ্জস্য আনতে হবে। একটি নতুন নিরাপত্তা বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে অর্থাৎ প্রতিরক্ষায় আরও বেশি ব্যয় করতে হবে।

প্রশংসা ও শঙ্কার কথা উঠলেও, ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক সম্পর্ক এখন হতাশাব্যঞ্জক। তবে ইউরোপকে যুদ্ধের মাধ্যমে বিভক্ত করা উচিত নয়। ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক জোটের মানিয়ে নেওয়া ও টিকে থাকা অত্যাবশ্যক।


জ্বালানি   ভূ-রাজনীতি   ইউরোপ   সঙ্কট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজা নীতির বিরোধিতা করে মার্কিন পররাষ্ট্র মুখপাত্রের পদত্যাগ

প্রকাশ: ১০:৪০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা নিয়ে ওয়াশিংটনের নীতির বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আরবি ভাষার মুখপাত্র পদত্যাগ করেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। খবর রয়টার্স।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, হালা রাহারিত দুবাই আঞ্চলিক মিডিয়া হাবের ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন এবং ১৮ বছর আগে একজন রাজনৈতিক ও মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে স্টেট ডিপার্টমেন্টে যোগ দেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইন-এ তিনি লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতির বিরোধিতা করে ১৮ বছর মর্যাদাপূর্ণ সেবা প্রদান করার পর আমি এপ্রিল ২০২৪ সালে পদত্যাগ করেছি’।

প্রায় এক মাস আগে, পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ব্যুরোর অ্যানেল শেলাইন পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) কর্মকর্তা জোশ পল গত অক্টোবরে পদত্যাগ করেন।
 
দেশটির শিক্ষা বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা, তারিক হাবাশ, যিনি ফিলিস্তিনি-আমেরিকান, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেছিলেন। 
  
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তেল আবিব। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। এছাড়াও সেখানে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। 
 
এর মধ্যে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা ও গণহত্যার প্রতি সরাসরি এবং নির্লজ্জ সমর্থনের জন্য ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিকভাবে এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর কাছে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

গাজা নীতি   মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতের নির্বাচন: মোদির ম্যাজিক কি ফুরিয়ে যাচ্ছে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৭ ধাপে। আজ দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ জুন পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল জানা যাবে। বিশ্বের বৃহত্তম এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভোটের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব। 

নির্বাচনের আগে ভারতের নির্বাচন নিয়ে যে সমস্ত জরিপ হয়েছে তার সবগুলোতেই নরেন্দ্র মোদির বিপুল বিজয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ জোটের ভোটপ্রাপ্তি সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ। সেখানে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের ভোট প্রাপ্তির হার সবচেয়ে বেশি হলে ৪২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন হলে ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আসনের হিসেবে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অবস্থান ৪১১ থেকে ৩৭৩ এর মধ্যে এবং ইন্ডিয়া জোট ১৫৫ থেকে ১০৫ এর মধ্যে উঠানামা করবে বলে বিভিন্ন জরিপের হিসেবে বলা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের পর অনেকেই ভারতের এই জরিপ শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। 

অনেকেই মনে করছেন যে, এই নির্বাচনে কতগুলি ইস্যু বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক সময়ে মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য ভারতের মুসলমান ভোটারদেরকে একাট্টা করেছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি তা বুঝতে পেরেছে। আর এ কারণে এবার মুসলিম ভোটারদেরকে ভোট দানে বাধা দেওয়া হচ্ছে-এমন অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণে ট্রেন বন্ধ রেখে মুসলিম ভোটারদেরকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। 

নরেন্দ্র মোদি ইন্ডিয়াকে যে ক্ষমতাবান এবং উন্নয়নের রোল মডেলের নীতি নিয়ে টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আছেন সেটি এখন উগ্র হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে অনেকে মনে করেন। তাছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে কৃষকদের নাজুক পরিস্থিতি নরেন্দ্র মোদি ম্যাজিককে ফিকে করে দিয়েছে। অনেকেই এই নির্বাচনে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেই পূর্বাভাস শেষ পর্যন্ত সফল হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। 

অনেকে মনে করছেন যে, ২০০৪ সালে ভারতের চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ম্যাজিক দেখিয়েছিল। সে সময় বিজেপির ইন্ডিয়ার সাইনিং স্লোগানের আড়ালে সকলে জয়ের সম্ভাবনা দেখেছিল অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপি জোটের। কিন্তু সেই নির্বাচনে সকল জরিপকে মিথ্যে প্রমাণ করে কংগ্রেস বিজয়ী হয়েছিল। এবার নির্বাচনে তেমন কোন ফলাফল হবে কিনা তা নিয়ে নানা রকম জল্পনা কল্পনা চলছে। 

তবে নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা তেমন কোন সম্ভাবনা দেখছেন না। বরং তারা মনে করছেন যে, ভারতে শেষ পর্যন্ত বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জোটই বিজয়ী হবে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি এবং তার নেতৃত্বে জোট যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ট আশা করেছিল সে সংখ্যাগরিষ্ট অনেকটাই কমে যাবে। তবে এই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জোট বিজয়ী হলেও নরেন্দ্র মোদির ম্যাজিক অনেকটাই ফিকে হয়ে যাকে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারতের নির্বাচন: নরেন্দ্র মোদি   কংগ্রেস   বিজেপি   ইন্ডিয়া জোট   এনডিএ জোট   লোকসভা ভোট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮:১১ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশিসহ ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। চলছে গণগ্রেপ্তার। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শৃঙ্খলা ভঙের কারণে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা। এরই মধ্যে দেশটির কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশিসহ ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মায়মুনা ইসলাম নুহার রুমমেটসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
চট্টগ্রাম জেলার সদ্বীপ উপজেলা বাসিন্দা মনির হোসেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছে। এই বিক্ষোভের জেরে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৮ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে তার মেয়ে মায়মুনা ইসলাম নুহাও রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মুখ সারির প্রতিবাদী হিসেবে কাজ করছেন তার মেয়ে নুহা। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নুহার রুমমেট ও মিনেসোটার কংগ্রেসওমেন ইলহান আবদুল্লাহি ওমরের মেয়ে ইসরা হিরসিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নুহা ফুল স্কলারশিপ নিয়ে নিউরো সায়েন্সের তৃতীয় সেমিস্টারে পড়াশোনার পাশাপাশি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিও করছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে নুহা লুকিয়ে ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তার বাবা। তিনি আরও জানান, মেয়ে নুহা এবং তার সহপাঠীরা আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ইসরায়েলের ফান্ড প্রত্যাখানের দাবি জানাচ্ছেন। তারা অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধেরও দাবি জানাচ্ছেন। ইহুদি সম্প্রদায়ের অনেকেও তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

মনির হোসেন বলেন, নুহা ও তার সঙ্গীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড, এমআইটিসহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানবতার পক্ষের আন্দোলনে ক্রমশ যুক্ত হতে শুরু করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   গাজা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতীয় তিন কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০৭:৩৫ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতীয় তিন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকায় এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে যেসব ড্রোন পেয়েছে তা গোপনে বিক্রিতে সহায়তা করেছে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোম্পানিগুলো। ইরানের এ বাণিজ্যিক কাজকে সামনে থেকে সমর্থন দিয়েছে ইরানি কোম্পানি সাহারা থান্ডার। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনটি ভারতীয় কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

সাহারা থান্ডারকে এই প্রচেষ্টার সমর্থনে ইরানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের তদারকিকারী প্রধান ফ্রন্ট কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সাহারা থান্ডারকে সমর্থন করার জন্য ভারত-ভিত্তিক তিনটি কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তারা হল জেন শিপিং, পোর্ট ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং সি আর্ট। শিপ ম্যানেজমেন্ট (ওপিসি) প্রাইভেট লিমিটেড।

চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে তিনশত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এরপর ইরানের ওপর প্রথম দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ড্রোন প্রযুক্তি ও উৎপাদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কোম্পানিকে লক্ষ্য করে ১৯ এপ্রিল এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   নিষেধাজ্ঞা   ইরান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্ক জাকারবার্গকে টপকে তৃতীয় শীর্ষ ধনীর আসনে ইলন মাস্ক

প্রকাশ: ০৬:৩৩ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মার্ক জাকারবার্গ টপকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনীর অবস্থানে উঠে এসেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ফলে বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় ধনীর জায়গা দখল করতে চলেছেন তিনি। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেটার শেয়ার বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ১১ শতাংশ কমেছে। প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে নিজেদের বিক্রয় প্রত্যাশার চেয়ে কমতে পারে এমন পূর্বাভাসের পর এ পতন হয়েছে।

ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার সূচক অনুসারে, মেটার শেয়ার পতনের ফলে মার্ক জাকারবার্গের সম্পত্তি কমে এখন ১৫৭ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। অন্যদিকে ইলন মাস্কের সম্পদ ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ১৮৪ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে এ দুই বিলিয়নিয়ার নিজেদের অবস্থান থেকে ছিটকে যান। গত তিন মাসে টেসলার গাড়ি সরবরাহ কমে যাওয়ায় ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো জাকারবার্গ মাস্ককে ছাড়িয়ে যান।

এর আগে ফোর্বস প্রকাশিত ২০২৪ সালের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দেখা গেছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর স্থান দখল করে নিয়েছেন ফ্রান্সের বিলাসবহুল পোশাক ও দ্রব্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান লুই ভুতোঁ মালিক বার্নার্ড আর্নল্ট ও তার পরিবার। তার সর্বমোট সম্পদমূল্য ২৩৩ বিলিয়ন ডলার।

এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ১৯৫ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজস। গত বছরের তুলনায় এবার তার সম্পদমূল্য বেড়েছে প্রায় ৮৫ বিলিয়ন ডলার। তার মোট সম্পদমূল্য ১৯৪ বিলিয়ন ডলার।

১৭৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। গতবার সম্পদমূল্য ছিল ৬৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।


মার্ক জাকারবার্গ   ইলন মাস্ক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন