ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি; মাথা উঁচু করে থাকবে ইরান!

প্রকাশ: ১১:১৪ এএম, ২৪ মে, ২০২৩


Thumbnail

পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মারক্রিন যুক্তরাষ্ট্র। যদিও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নতুন কিছু নয় এবং ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরান নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করে আসছে। 

আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্ষমতা ও প্রভাবকে খর্ব করতে চায় এবং এ  লক্ষ্যে তারা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। মোট কথা, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইরানকে এ অঞ্চলের রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলোর মতো একটি অনুগত দেশে পরিণত করার পায়তারা করছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পরমাণু ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইরান বিরোধী সব নিষেধাজ্ঞা ফের বলবত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই অংশ হিসেবে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ইরানের বেশ ক'জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী ও কয়েকটি কোম্পানির কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর আগে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর তারা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরানের আরো পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে গত ৪০ বছর ধরে আমেরিকা এভাবে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এসেছে। এসব নিষেধাজ্ঞা ও চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে আমেরিকা ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা এবং দেশটিকে নতজানু করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে এতো ষড়যন্ত্র ও শত্রুতা করেও আমেরিকা আজ পর্যন্ত কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি।

আমেরিকায় যখন যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা সবাই নিষেধাজ্ঞাকে সবসময়ই ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। আজকে এটা সবাই দেখতে পাচ্ছে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী কেউই টিকে নেই কিন্তু ইসলামি ইরান আগের মতোই নিজ অবস্থানে অটল রয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সম্প্রতি শিক্ষক সপ্তাহ উপলক্ষে হাজার হাজার ছাত্র ও শিক্ষকের এক সমাবেশে ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর দশকের পর দশক ধরে মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরামহীন শত্রুতা ও ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, যারাই ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করেছে তাদের অনেকের হাড়গোড় আজ কবরের মধ্যে কিন্তু ইসলামি ইরান ঠিকই টিকে আছে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শরীরও একদিন মাটির নীচে চাপা পড়বে কিন্তু তখনও ইরান মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে।

ইরানের জনগণের প্রতি আমেরিকার ক্ষোভ ও বিদ্বেষের কারণ হচ্ছে গত ৪০ বছর ধরে এই জাতির প্রতিরোধ ও আত্ম সম্মানবোধ নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা। আমেরিকার শত নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বিজ্ঞান, সামরিক ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান অভাবনীয় উন্নতি সাধন করেছে। পরমাণু সমঝোতা থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেরিয়ে যাওয়া থেকে ইরানের অবিশ্বাস্য উন্নতি ও অগ্রগতিতে তার ক্ষোভের প্রমাণ পাওয়া যায়।

২০১৮ সালে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হওয়ার পর ইরানের তেল রপ্তানি দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটির তেলমন্ত্রী জাভেদ ওজি রবিবার এ কথা বলেছেন। আধাসরকারি তাসনিম বার্তা সংস্থার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তেলমন্ত্রী বলেছেন, ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ইরানি বছরের তুলনায় গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৮৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল বেশি রপ্তানি হয়েছে।

সে হিসাবে দুই বছর আগের তুলনায় ১৯০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল বেশি রপ্তানি হয়েছে।

এ ছাড়াও তেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২২-২৩ সালে আগের ইরানি বছরের তুলনায় দেশটির গ্যাস রপ্তানি ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান এবং ২০১৮ সালে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হওয়ার পর ইরানের তেল রপ্তানি এবং রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি দেশ ইরানের অপরিশোধিত তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে, যেখানে চীনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যতিক্রম ছিল।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার (১৮মে) সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং হংকংভিত্তিক অনেকগুলোসহ ৩৯টি সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থায় ইরানের প্রবেশাধিকার সহজতর করে। এ ছাড়াও তাদের ‘ছায়া ব্যাংকিং’ নেটওয়ার্ক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা বিলিয়ন ডলার স্থানান্তর করে।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিঙ্গাপুরে প্রতিরক্ষা প্রধানদের বৈঠকে মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল চীন

প্রকাশ: ০১:১৪ পিএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail

সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠেয় নিরাপত্তা সম্মেলনে বৈঠকে চীন ও মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রধানের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করেছে চীন। বিষয়টিকে শক্তিধর দেশ দুটির মধ্যে সংঘাতের নতুন ইঙ্গিত হিসেবে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৩০ মে) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন এই সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে শাংরি-লা ডায়ালগ সিকিউরিটি ফোরামে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফুর সাথে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের প্রস্তাবিত বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেছে। গত আগস্টে প্রাক্তন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ানে সফরের পরে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবেদনশীল মার্কিন সামরিক স্থাপনাগুলির উপর দিয়ে যাওয়া একটি চীনা গুপ্তচর বেলুনকে গুলি করার ভূপাতিত করার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মাঝখানে এ ধরনের বৈঠকে চীনের বিরোধিতা এল।

বিবৃতিতে, পেন্টাগন বলেছে যে চীন মে মাসের শুরুতে একটি বৈঠকের জন্য একটি আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে। এর জবাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চীনা দূতাবাস এ আমন্ত্রণের আন্তরিকতা এবং তাৎপর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। চীনা কর্মকর্তা, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিতও করেছে দূতাবাস।

এদিকে মঙ্গলবার এমন সিদ্ধান্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সামরিক যোগাযোগের ঘাটতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘ভালো মতো অবগত’ বলে দাবি চীনের।

সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘মার্কিনিদের উচিত অবিলম্বে নিজেদের ভুল চর্চার সংশোধন ও আন্তরিকতা প্রদর্শন করে দুই পক্ষের সামরিক যোগাযোগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা।’

অস্টিনকে এড়িয়ে যেতে চীনের এমন সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইয়ান স্টোরে। তিনি বলেন, ‘মার্কিন-চীন সম্পর্কে উত্তেজনার মধ্যে অস্টিনের সঙ্গে জেনারেল লি-এর আলোচনা প্রত্যাখ্যান আঞ্চলিক সম্পর্কে আরও ফাটল তৈরি করবে।’

গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছিলেন, চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে অস্টিনের আলোচনা হতে পারে।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মণিপুর ও মিজোরামের জন্য আরও বড় সমস্যা হয়ে উঠবে মায়ানমারের 'গৃহযুদ্ধ'

প্রকাশ: ১০:৫৪ এএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail

ভারতের মণিপুরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যে জাতিগত হিংসা চলছে, তা উত্তর-পূর্ব ভারতের অসংখ্য সমস্যার  একটি মাত্র। এই হিংসা নানান সমস্যার একটা ফল— কারণ নয় এমনটাও বলা যেতে পারে এক্ষেত্রে। আগামী দিনে একটা বড় বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বস্তুত, অঞ্চলটি ইতিমধ্যেই সমস্যায় আক্রান্ত। এই বিপদ হল মায়ানমারের গৃহযুদ্ধ।

মায়ানমারের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৬৫০ কিলোমিটারের সীমান্ত। এই সীমান্তের প্রায় ৪০০ কিলোমিটার মণিপুরের সঙ্গে। মণিপুর-লাগোয়া মায়ানমারের দু’টি প্রদেশ হল সাগাইং এবং চিন। এই দুই প্রদেশেই গণতন্ত্রকামী বাহিনীর সঙ্গে মায়ানমারের সামরিক বাহিনী টাটমাডো'র লড়াই চলছে। লড়াই তীব্র হয়েছে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পরে। মাঝে মাঝেই টাটমাডো সাগাইং এবং চিনে বোমা ফেলছে। বছর ছয়েক আগে চিনের দক্ষিণে রাখাইন থেকে যখন লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন, তখন ভারত এ নিয়ে মাথা ঘামায়নি। রোহিঙ্গারা মুসলমান বলে তাঁদের ‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারী’ বলে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এখন বিপদ অন্য ধরনের। চিন প্রদেশ থেকে যাঁরা গত দু’বছর ধরে ঢুকছেন, তাঁদের সঙ্গে জাতিগত (এথনিক) সম্পর্ক রয়েছে মিজোরাম এবং মণিপুরের জনজাতি সমাজের। ফলে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা অতীতে স্পষ্ট জানিয়েছেন, চিন প্রদেশ থেকে শরণার্থী আসতে দিতে হবে। সমস্যা হল, ভারত নানা কারণে আন্তর্জাতিক শরণার্থী চুক্তিতে (১৯৫১) সই করেনি। ফলে, শরণার্থী বলে কিছু ভারতে হয় না— যেটা হয়, তার নাম ‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারী’।

এখন জ্ঞাতিভাইদের ‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারী’ বলতে নারাজ মিজোরাম। ফলে মিজোরামে ভারতের নীতি হচ্ছে চুপচাপ থাকা। মিজোরামের মানুষ চিন প্রদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের তাঁদের সামর্থ্য মতো খাবারদাবার, জায়গা দিয়ে বসিয়েছেন। শিশুদের পড়াশোনার ব্যবস্থাও করেছেন। আন্তর্জাতিক শরণার্থী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা মিজোদের মানবিকতার প্রশংসা করেছেন। শুধু ‘এথনিক’ সম্পর্ক নয়, মিজোরামে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ অনেক কম। এর কারণ, মিজোরামের ৯৫% মানুষ জনজাতি সম্প্রদায়ের। প্রায় ৮৮% খ্রিস্টান। বিরোধের ক্ষেত্র সীমিত।

অন্যদিকে, মণিপুরের চিত্র আলাদা। সেখানেও কুকি সমাজের (এখানে বোঝার সুবিধার জন্য জনজাতি সমাজের কুকি-চিন-মিজো-যোমি-হামর জনজাতিদের কুকি বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। মণিপুরেও তা-ই করা হয়) মানুষ অরণ্য ও পাহাড় অঞ্চলে শরণার্থীদের বসিয়েছেন। গত বছরের মে মাসে এক প্রতিবেদনে ইম্ফল ফ্রি প্রেস জানিয়েছিল, ৯৬৬টি নতুন বসতি গড়ে উঠেছে মণিপুরের অরণ্য-পাহাড়ে। তারা সরকারি স্বীকৃতির আবেদন জানিয়েছিল।

কিন্তু মণিপুরে জনসংখ্যার ৪০% জনজাতি, যার মধ্যে প্রধান কুকিরা। এই ৪০% মানুষ রাজ্যের ৯০% পাহাড়-অরণ্য অঞ্চলে রয়েছেন বলে দাবি সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের, যাঁরা জনজাতিভুক্ত নন। তাঁদের বক্তব্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তাঁরা রয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ অঞ্চলে। এর উপরে মায়ানমার থেকে শরণার্থী প্রবেশের ফলে তাঁদের জায়গা আরও কমবে। ভবিষ্যতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার আশঙ্কা। সেই কারণেই তাঁরা জনজাতি হিসাবে সংরক্ষণ চেয়েছেন, যার পরিণতি গোষ্ঠী সংঘাত। আগামী দিনে মায়ানমারের ‘যুদ্ধ’ মণিপুর ও মিজোরামের জন্য আরও বড় সমস্যা হয়ে উঠবে বলেই আশঙ্কা।

দ্বিতীয় সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির। দীর্ঘ সময় ধরে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রবক্তাদের একটা বড় অংশ উত্তর-পূর্ব ভারতে হিন্দুত্বের চর্চা করছেন। শুধু উত্তর-পূর্বেই নয়, গোটা ভারতেই জনজাতি অঞ্চলে দীর্ঘ দিন ধরে হিন্দুত্বের চর্চা হচ্ছে। সম্প্রতি এ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিস্তর গবেষণা হচ্ছে। এই গবেষকদের অন্যতম অর্কটং লংকুমের। উত্তর-পূর্ব নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে চর্চিত নাম তিনি। উত্তর-পূর্বে হিন্দুত্বের প্রসার নিয়ে তাঁর বই দ্য গ্রেটার ইন্ডিয়া এক্সপেরিমেন্ট: হিন্দুত্ব অ্যান্ড দ্য নর্থ-ইস্ট-এ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) কাজকর্মের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। “আমি যখন পিএইচ ডি-র ফিল্ডওয়ার্ক (২০০৪-০৫) করতে অসমের ডিমা হাসাও জেলার হাফলং এবং লাইসং-এ ছিলাম, তখনই সেখানে বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে কঠোর পরিশ্রম করতে দেখেছিলাম। তাঁদের ‘কমিটমেন্ট’ দেখে অবাক হয়েছিলাম। তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বুঝেছিলাম যে, তাঁরা গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে তাঁদের কাজকর্ম ছড়াতে চান,” অধ্যাপক লংকুমের লিখেছেন তাঁর বইয়ের মুখবন্ধে।

এই ছড়ানোর কাজ আরএসএস উত্তর-পূর্বে খুব ভাল ভাবে করেছে গত বিশ-ত্রিশ বছরে। উত্তর-পূর্বে সাতটির মধ্যে এখন ছ’টি রাজ্যে বিজেপি সরকারে রয়েছে। যেখানে নেই— অর্থাৎ মিজোরামে— সেখানেও ক্ষমতাসীন দল (মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট) পরোক্ষভাবে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স-এ রয়েছে। নানা ভাবে আরএসএস উত্তর-পূর্ব ভারতে ঢুকেছে। এই প্রবেশের একটা প্রধান দিক হল, উত্তর-পূর্ব ভারতের ধর্মীয় বিশ্বাস ‘অ্যানিমিজম’ (নির্জীব বস্তু, উদ্ভিদ, প্রাকৃতিক ঘটনা, সব কিছুর মধ্যে প্রাণের দর্শন) এবং ‘শ্যামিনিজম’-কে (ভিন্ন ধরনের প্রাণের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক) বোঝা। অঞ্চলে পড়ে থেকে হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ দীর্ঘদিন এ কাজ করেছেন, এক ধরনের ‘মিশনারি’ প্রতিজ্ঞা নিয়ে। চিন-ভারত যুদ্ধের পরে, চিনের থেকে অরুণাচল প্রদেশকে সুরক্ষিত করতে কংগ্রেসও সেখানে হিন্দু জাতীয়তাবাদী চেতনাকে মদত দিয়েছে।

হিন্দুত্ববাদীদের গবেষণার যে অংশটা এখন সামনে আসছে, সেটা তাৎপর্যপূর্ণ। অরুণাচল প্রদেশে ‘ডনি-পোলো’ সম্পর্কে হিন্দুত্ববাদীদের নির্দিষ্ট মতামত রয়েছে। ‘ডনি-পোলো’ হল সূর্য এবং চাঁদ এবং সংশ্লিষ্ট ধর্ম। যেহেতু হিন্দু ধর্মে চন্দ্র-সূর্য দেবতা, ‘ডনি পোলো’তে বিশ্বাসীদের বলা হচ্ছে যে, হিন্দু ধর্মের সঙ্গে তাঁদের ধর্মের ‘ওভারল্যাপ’ রয়েছে। নাগাল্যান্ডে রয়েছে আরও চমকপ্রদ এক আধুনিক ধর্মীয় আন্দোলন, যার নাম হেরাকা। লংকুমেরের এ নিয়েও একটি বই রয়েছে। এর পাশাপাশি আরও একাধিক 'অ্যানিমিস্ট' বা 'শ্যামিনিস্ট' ধর্মীয় আন্দোলন রয়েছে উত্তর-পূর্বে (আমিক মাতাই, রংফ্রা প্রভৃতি), যা প্রধানত খ্রিস্টধর্ম আসার পরে চাপা পড়ে যায়। এখানেই রাজনৈতিক খেলা— হিন্দু ধর্মের পাশাপাশি যেহেতু উত্তর-পূর্বের অন্যতম প্রধান খ্রিস্ট ধর্ম, তাই খ্রিস্টানদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে লোকজ ধর্মকে বোঝানো হচ্ছে যে, তাঁরা চাপা পড়ে গিয়েছেন খ্রিস্টানদের জন্য।

এর ফলে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে উত্তর-পূর্বে। কারণ উত্তর-পূর্বে তিন রাজ্যে (মেঘালয়, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ড) খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। অরুণাচল প্রদেশে দু’পক্ষই সমান, প্রায় ৩০ শতাংশ। মণিপুরেও তাই, দুই পক্ষই ৪১ শতাংশ। সমসংখ্যক হিন্দু এবং খ্রিস্টান থাকার ফলে মণিপুরে কী হয়েছে, সে সম্পর্কে পাঠক হয়তো অবগত। ‘গুডউইল মিশন’ নামে মণিপুরের গির্জাসমূহের সংগঠন জানায়, সাম্প্রতিক সংঘাতের দুই সপ্তাহে ২৯৩টি গির্জা বা গির্জা সংলগ্ন অফিস আংশিক বা পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। এখানে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, যাঁরা লোকজ ধর্মের মধ্যে রয়েছেন, তাঁরা আবার সংগঠিত ধর্মের মধ্যেও থাকতে পারেন। তাছাড়া, জনজাতি সমাজের বড় অংশ এখনও খ্রিস্টান। ফলে সংঘাত আরও জোরালো হতে পারে। খ্রিস্টান সম্প্রদায় যে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, তা সম্প্রতি বুঝতে পারলাম শিলঙে। শিলঙের এক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মন্তব্য করলেন, “এর পরের টার্গেট তবে আমরাই।” তার এই মন্তব্যের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা এবং আতঙ্ক স্পষ্ট। নিরাপত্তাহীনতা যে কোনও সমাজকেই অস্থির করে। আর সেটাই সত্যি। চূড়ান্ত অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটছে উত্তর-পূর্বের একাংশের।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ, এবার মেডেল গঙ্গায় ঘোষণা ভারতের রেসলাররা

প্রকাশ: ০৬:০৫ পিএম, ৩০ মে, ২০২৩


Thumbnail

ভারতীয় রেসলিং ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজভূষণ স্মরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে টানা এক মাসের বেশি সময় ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন ভারতের শীর্ষ রেসলাররা। রোববার তারা ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনের দিকে পদযাত্রা নিয়ে অগ্রসর হলে পুলিশি নিপীড়নের শিকার হন। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার মামলাও করেছে পুলিশ।

এবার রাষ্ট্রের এমন আচরণের প্রতিবাদে নিজেদের অর্জিত মেডেল গঙ্গায় ছুড়ে ফেলার ঘোষণা দিয়েছেন রেসলাররা। তারা উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের গঙ্গায় নিজেদের মেডেল ছুড়ে ফেলবেন। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তারা মেডেল গঙ্গায় ফেলে দেওয়া কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। এছাড়াও ইন্ডিয়া গেটে আমরণ অনশনে বসবেন তারা।

তারা বলেছেন, মেডেল ছুড়ে ফেলার পর তাদের জীবনের কোনো মানে নেই। তারা আর নিজেদের আত্মমর্যাদাও ধরে রাখতে পারবেন না।

তারা এক চিঠিতে বলেছেন, ‌‘এই পরিস্থিতিতে এসব মেডেল গলায় ঝুলিয়ে সুসজ্জিত করে রাখার কোনো অর্থ নেই।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দিকেও তারা অভিযোগের তীর ছুড়েছেন।

গত এপ্রিল মাস থেকে দিল্লিতে আন্দোলন করে আসছে ভারতের শীর্ষ রেসলাররা।

যৌন হয়রানি   গঙ্গা   রেসলার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এরদোয়ানের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয়

প্রকাশ: ০১:৩৮ পিএম, ৩০ মে, ২০২৩


Thumbnail এরদোয়ানের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয়।

তুরস্কে গত রবিবার অনুষ্ঠিত হয় শত বছরের সবচেয়ে গুরুত্ব নির্বাচন। এতে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, কামাল কিলিচদারোগলু ও সিনান ওগান। তুরস্কের এই নির্বাচন শুধু তুর্কি জনগণের জন্য নয়, বরং বিশ্বের প্রধান পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। সকল জল্পনা ছাপিয়ে ভোটে বিজয়ী হন বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তুরি দিয়ে নিজের জয় ছিনিয়ে আনলেন এরদোয়ান। দেশি-বিদেশি নানা ধরনের পাহাড়সম চাপকে মোকাবিলা করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফা নির্বাচনে শীর্ষে থেকেই শেষ করলেন। ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে না পারলেও দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে থেকে শুরু করবেন।

নির্বাচনের আগেই অভিযোগ উঠেছে, তুরস্কে কিলিচদারোগলু নেতৃত্বাধীন রিরোধী শিবিরকে সমর্থন দিচ্ছে আমেরিকা। সুতরাং তুরস্কের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের জয় বা পরাজয় যুক্তরাষ্ট্র ও এর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মাথাব্যথারও কারণ ছিলো। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিশ্বের যে কয়েকজন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান নিজ দেশের রাজনীতিতে ‘একনায়ক’ হিসেবে চিত্রিত করতে পেরেছেন, এরদোয়ান তাদের একজন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে বড় এক ধাঁধাঁর নাম এরদোয়ান। 

তুর্কি নির্বাচন নিয়েপায়তারা করে মার্কিন কর্মকর্তারা। এরদোয়ান যেনো ক্ষমতায় না আসে সে জন্য সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা কওরে বাইডেন প্রশাসন। পশ্চিমের দেশগুলোর বহু কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা তুরস্কের এরদোয়ানের ওপর বিরক্ত। তাকে নিয়ে তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন যে, পশ্চিমের সঙ্গে তুরস্কের দূরত্ব বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ এরদোয়ান। তিনি সবকিছু ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে সস্তা জনপ্রিয়তার পথে হেঁটেছেন।'

পশ্চিমা নেতারা এরদোগানের বিদায় দেখে খুশি হবেন। পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ অনুসারে, এরদোগান রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অর্জনের মাধ্যমে ন্যাটোর নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ করেছেন, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের সদস্যপদ অবরুদ্ধ করে ন্যাটো জোটকে হতাশ করেছেন, বারবার শরণার্থী দিয়ে ইউরোপকে প্লাবিত করার হুমকি দিয়েছেন এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গ্রিসের দিকে ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক বক্তব্য ছুড়েছেন। ওয়াশিংটনের সাথে আঙ্কারার সম্পর্ক এমন পর্যায়ে উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে যেখানে শীর্ষ তুর্কি কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এরদোগানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন।

কিন্তু এরদোয়ান আমেরিকাকে তুরি মেরে তার নিজয় ধজা উড়িয়েছেন। এটাকি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির আরও একটা পরাজয়। আমেরিয়া যা চায় বিশ্ব এখন তা হয় না। এই তুরস্ক নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা বলেছে তারা গণতন্ত্র দেখতে চায়। বিরোধী পার্টিগুলোকে একত্রিত করতে মিটিং, প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছে। যখন প্রথম দফা ভোট হয়য়ে গেলো তাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় এরদোয়ানের, পরাজয় মার্কিন কূটনীতির।

এসবের কারণ, দু্ই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান একাধারে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মিত্র ও শত্রু, যুক্তরাষ্ট্রের পর ন্যাটোর সামরিক শক্তির সবচেয়ে বড় স্তম্ভ তুরস্ক এরদোয়ানের নেতৃত্বে বলকান, ভূমধ্যসাগর, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে এক অনন্য নীতি নিয়ে এগিয়েছে, যা বাইডেন প্রশাসনের নীতিকে বারবারই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। অন্যদিকে, এরদোয়ান যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর অন্যতম নেতা হলেও তিনি এই জোটের মূল শত্রু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সখ্য বজায় রাখছেন। 

আবার যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পররাষ্ট্র নীতিতে চিহ্নিত সবচেয়ে বড় ‘সংকট’ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও রয়েছে এরদোয়ানোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। শুধু তা-ই নয়, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েলের সঙ্গে চাপান-উতোর সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে চিহ্নিত ইরানের সঙ্গেও এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নীতি বদলানোর বিষয়েও চাপ দিয়ে যাচ্ছেন এরদোয়ান। সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র হিসেবে পরিচিত কুর্দিদের উপর সামরিক অভিযান চালাচ্ছেন, আবার প্রতিবেশী আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংকটেও মধ্যস্ততা করছেন, যেখানে মস্কোর প্রভাবও রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায়ই প্রতীয়মান হয়, এরদোয়ান যেন যুক্তরাষ্ট্রের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।


এরদোয়ান   বিজয়   বিশ্ব রাজনীতি   যুক্তরাষ্ট্র   পরাজয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ইউক্রেন

প্রকাশ: ১২:৫৬ পিএম, ৩০ মে, ২০২৩


Thumbnail

ইরানের ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনায় রাশিয়ার হামলা চালানোর বিষয়টি প্রথম দিকে অস্বীকার করলেও গত বছর তা স্বীকার করে নেয় ইরান। এর জবাবে রাশিয়ার মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে এবার একটি নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে ইউক্রেনের পার্লামেন্ট।

এক দিন আগেই ইউক্রেন বলেছিল, আগ্রাসন শুরুর পর রাজধানী কিয়েভে এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলায় ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করেছে মস্কো।

নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ অনুমোদনের বিষয়টি ইউক্রেনের পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্যাকেজটিতে ইরানের সঙ্গে সামরিক ও দ্বৈত–ব্যবহারযোগ্য (সামরিক-বেসামরিক) পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ইউক্রেনের পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়া বিলটিতে এখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সই করতে হবে। এটি একটি আনুষ্ঠানিকতা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নিজেই বিলটি পার্লামেন্টে জমা দিয়েছিলেন।

জেলেনস্কি গত সপ্তাহে ইরানিদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেছিলেন, তারা কেন রাশিয়ার সন্ত্রাসের সহযোগী হতে চান?

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক গত রোববার বলেছিলেন, তার দেশের রাজধানী কিয়েভে ডজন ডজন শাহেদ ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। তিনি ইরান সরকারকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দেন।

মাইখাইলো পোডোলিয়াক টুইটারে বলেন, এই যুদ্ধে মস্কোর একটি প্রধান মিত্র হয়ে উঠেছে তেহরান। ইউক্রেনের বেসামরিক শহরগুলোতে হামলার জন্য ইরান জেনেশুনে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করছে।

তেহরান তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, পশ্চিমা সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য এটা জেলেনস্কির একটা প্রচেষ্টামাত্র।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন