ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলি সেনাদের ৫ ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে: যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১০:১৩ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্র মন্তব্য করেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫টি ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের বাইরে ইসরায়েলি সেনাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনা ঘটেছে এবং এর সবগুলোই ঘটেছে গাজায় চলমান যুদ্ধের আগে। 

এদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরও মার্কিন সামরিক সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথক ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী বলে প্রমাণ পেয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে তারা বলেছে, তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে মার্কিন সামরিক সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখবে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই সমস্ত ঘটনা বর্তমান যুদ্ধের আগে গাজার বাইরে সংঘটিত হয়েছিল।

ইসরায়েল চারটি ইউনিটে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে এবং পঞ্চমটির বিষয়ে 'অতিরিক্ত তথ্য' দিয়েছে বলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে। এর অর্থ হচ্ছে- সমস্ত ইউনিটই মার্কিন সামরিক সহায়তা পাওয়ার জন্য যোগ্য থাকবে।

ইসরায়েলের প্রধান সামরিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রতি বছর ইসরায়েলকে ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করে থাকে।

বিবিসি বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যে কোনও ইউনিটের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের এই ধরনের ঘোষণা এটিই প্রথম। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করেছে।

তিনি বলেছেন, 'এই ইউনিটগুলোর মধ্যে চারটি কার্যকরভাবে এই লঙ্ঘনের প্রতিকার করেছে, যা আমরা অংশীদারদের কাছ থেকে আশা করি। বাকি একটি ইউনিটের বিষয়ে আমরা ইসরায়েল সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি; তারা সেই ইউনিটের সাথে সম্পর্কিত অতিরিক্ত তথ্য জমা দিয়েছে।'

অবশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনায় কোনো জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে কি না তা বলতে না পারলেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এসব ইউনিটে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা তথা রাজনৈতিক চাপে (কঠোর অবস্থান নেওয়া থেকে) যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে গেছে বলে ওঠা দাবিকে অস্বীকার করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ।

বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, 'আমরা এখন একটি প্রক্রিয়ায় তাদের সাথে জড়িত আছি, এবং যখন সেই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হবে তখন আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।'

বিবিসি বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন সরকার বলেছে, তারা নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, জোরপূর্বক গুম এবং ধর্ষণকে এই ধরনের লঙ্ঘন হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এমনকি যখন এমন একটি সন্ধান পাওয়া যায়, রাষ্ট্র বিভাগ সন্তুষ্ট হলে সামরিক সহায়তা কমানোর একটি ব্যতিক্রম রয়েছে যদি মামলাগুলি মোকাবেলা করা হয়েছে এবং সরকার জড়িতদের দ্বারা ন্যায়বিচার অনুসরণ করে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী হলেও অভিযুক্ত ইউনিটগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে দ্বিচারিতা আছে কিনা জানতে চাইলে প্যাটেল বলেন, ইসরায়েলকে 'বিশেষ সুবিধা' বা নীতি নিয়ে 'দ্বিচারিতা' বলে কিছু নেই এবং তাদের এসব স্ট্যান্ডার্ড 'সমস্ত দেশে সমানভাবে' প্রয়োগ করা হয়। 

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে বলে মধ্যেই পররষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে জানিয়েছেন কিছু ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি অভ্যন্তরীণ মেমো পর্যালোচনা করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে ব্যবহার করার বিষয়ে যে আশ্বাস ইসরায়েল দিয়েছে, সেটিকে 'বিশ্বাসযোগ্য বা নির্ভরযোগ্য' বলে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে কিছু ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে জানিয়েছেন। 


ইসরায়েল   সেনাবাহিনী   মানবাধিকার লঙ্ঘন   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েও পায়নি ইরান

প্রকাশ: ০১:১৫ পিএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান ও উচ্চপদস্থ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর দীর্ঘ তল্লাশি অভিযান শেষে পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর তাদের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল ইরান। যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এই তথ্য সামনে এনেছে।

তবে 'কোনও কারণে' ইরানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে সেই সহায়তা করতে পারেনি। মঙ্গলবার (২১ মে) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। 

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত বলছেন না। তবে ইরান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মূলত ব্যবস্থাপনাগত কারণে তারা সেটা দিতে পারেননি।

ম্যাথু মিলার ইঙ্গিত দেন, রবিবার দুপুরে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেটিকে খুঁজে পেতে দ্রুত সাহায্য চেয়েছিল ইরান। 

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার চেষ্টার পর বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি উদ্ধার করে ইরান। ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ঘটনায় আনুষ্ঠানিক শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওয়াশিংটন বলেছে, রাইসির হাতে 'রক্ত' লেগে আছে। 

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তা সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যে কীভাবে যোগাযোগ হলো, তা বলতে অস্বীকৃতি জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।

ম্যাথু মিলার শুধু বলেন, রবিবার কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে বলে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিদেশি সরকারের অনুরোধে তারা সাড়া দেয়। এ ক্ষেত্রেও তারা ইরানকে সাহায্য করত। তবে মূলত ব্যবস্থাপনাগত কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের শোকবার্তায় বলা হয়েছে, ইরান এখন নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিচ্ছে। এ অবস্থায় ইরানের জনগণ ও তাদের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আবার তার সমর্থন জানাচ্ছে।

মার্কিন প্রশাসন বলেছে, এটি একটি রেওয়াজমাফিক শোকবার্তা। এটি রাইসির প্রতি কোনো রকম সমর্থন প্রকাশ করছে না। রাইসি সেই ব্যক্তি, যিনি বিচারক থাকাকালে গণহারে রাজবন্দীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে কর্তৃপক্ষ নারীদের গণ–আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করেছে।

এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে তাদের কোনো হাত নেই বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত নিয়ে ইরান এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেনি।


যুক্তরাষ্ট্র   ইরান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে না: বাইডেন

প্রকাশ: ১১:৫৪ এএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোরালোভাবে ইসরায়েলের পক্ষে তার অবস্থান পূনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা করছে না এবং গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা নয়।

সোমবার (২১ মে) হোয়াইট হাউসে ইহুদিদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।রয়টার্সের খবর 

হোয়াইট হাউসে ইহুদি আমেরিকান হেরিটেজ মান্থ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, 'আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিপরীতে আমি বলতে চাই, গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়। আমরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করি।'  

এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ আরও দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার সিদ্ধান্তও প্রত্যাখ্যান করেন।

এদিকে গাজায় চলমান যুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। 


গাজা   ইসরায়েল   গণহত্যা   জো বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তাবরিজ শহরে রাইসির মরদেহ, দাফন হবে মাশাহাদে

প্রকাশ: ১১:১৫ এএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তার নিজের শহর মাশহাদের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি এই মাশহাদ ছেড়ে গিয়েছিলেন। তার আগে বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয় আয়োজনে তাকে চিরবিদায় জানাবে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান। 

নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ এখনো দেশটির রাজধানী তেহরানে নেওয়া হয়নি। রাইসিসহ নিহত সবার মরদেহ সোমবার থেকে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরেই রাখা হয়েছে। তাবরিজ শহরেই প্রথম জানাজা হবে। এরপর রাইসির মরদেহ নেওয়া হবে তেহরান শহরে।  

ইরানের ইসলামিক প্রোপাগেশন অর্গানাইজেশনের তাবরিজ দপ্তরের পরিচালক হোজ্জাতোলেসলাম মাহমুদ হোসেইনি এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাবরিজের কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ বাকিদের মরদেহ রাখা হবে। মঙ্গলবার সেখানে জানাজা হবে। এরপর তাবরিজের মানুষ প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাবেন। তার মরদেহ তেহরানের উদ্দেশে স্থানীয় বিমানবন্দরে নেওয়া হবে।

এই কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার তেহরানে রাইসির জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি তাতে অংশ নেবেন। এর একদিন পর জন্মশহর মাশাহাদে রাইসিকে দাফন করা হতে পারে। 

এদিকে তেহরানের শহরতলিতে রাইসির স্মরণে একটি আয়োজন চলছে। সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে স্মরণ করছেন, শোক জানাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, রবিবার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সোমবার ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে বলা হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির জনগণের জন্য তার দায়িত্ব পালন করার সময় একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি শহীদ হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ বাকিরাও নিহত হয়েছেন।


তাবরিজ   ইব্রাহিম রাইসি   মরদেহ   দাফন   মাশাহাদ   নিহত   ইরান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৯:২৭ এএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ জুন।

সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা।

দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শুন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রধান ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা আগামী ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত প্রার্থীদের নিবন্ধন করা হবে; আর প্রচার-প্রচারণা চলবে ১২ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত।

রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানে একটি বাঁধ উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফার পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার টানা অভিযান শেষে সোমবার তাদের হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায় উদ্ধার দল। তবে এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন।

ইরানের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান মোহাম্মদ নামি বলেছেন, নিহত আরোহীদের শনাক্ত করার জন্য কোনো ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ফ্লাইট ক্রুসহ মোট ৯ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এসব দেশের তালিকায় ইরান যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে পাকিস্তানের মতো দেশ। এ ছাড়া রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা শোক প্রকাশ করেছেন। ইরানের এই বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে পাঁচদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এ ছাড়া ইরানের প্রিয় জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাইসির মৃত্যুতে ইরাক, লেবানন, সিরিয়া, পাকিস্তানও রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। 


ইরান   প্রেসিডেন্ট নির্বাচন   ইব্রাহিম রাইসি   পররাষ্ট্রমন্ত্রী   হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ কি সমাপ্তির পথে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

১৯৭৯ সালে ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ সংঘটিত হয়েছিল। রেজা শাহ পাহলভির রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে যে ‘ইসলামি বিপ্লব’ ঘটানো হয়েছিল, সেটিকে বলা হয় ফরাসি এবং বলশেভিক বিপ্লবের পর ইতিহাসের তৃতীয় মহা জাগরণ, যেখানে জনগণ এককাট্টা হয়ে রেজা শাহ পাহলভির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল। এই সময় নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি এবং খোমেনির নেতৃত্বে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্রে রূপ গ্রহণ করে। কঠোর শরিয়া আইন অনুসারে ইরান পরিচালিত হতে থাকে।

ইরানি বিপ্লবের পঁয়তাল্লিশ বছর পেরিয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে নানারকম ঘটনা ইরানে ঘটেছে। এই ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানকে ধর্মান্ধ মৌলবাদী কট্টর অবস্থান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য ঘরের ভেতরে বাইরে ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু ইরান কট্টর মৌলবাদী অবস্থান থেকে ফিরে আসেনি। 

ইসলামী বিপ্লবের পর কেবল সেখানে শরিয়া আইন কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়নি, পর্দাপ্রথা সহ নারী স্বাধীনতা খর্ব করা, নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করে ইসলামকে কঠোরভাবে প্রতিপালনের কিছু রেওয়াজ চালু হয়েছিল এই দেশটিতে। কিন্তু গত কয়েক বছরে ইরানের ভেতর ভিন্নমতালম্বীদের সংখ্যা বাড়ছিল। বিশেষ করে ইরানের বুদ্ধিজীবী এবং তরুণ সম্প্রদায় কট্টর ইসলামপন্থি অবস্থা থেকে বেরিয়ে উদার এবং একটি গণতান্ত্রিক আবহ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে চলছিল। ইরানের ভেতর হিজাব বাধ্যতামূলক করা নিয়ে যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে সে দেশের নারীরা সোচ্চার হয়েছিল। ইরানে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী ব্যক্তিরা শিক্ষিত স্বজন এবং তরুণরা বদ্ধ দুয়ার খুলে দেওয়ার দাবি করছিল। আর এ ক্ষেত্রে ইরানে ‘ইসলামি বিপ্লবী’ সরকার একটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। আর গতকাল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ কতটুকু স্থায়ী হবে এবং আদৌ শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

১৯৭৯ সালে ইরানের জনগণের মধ্যে রেজা শাহ পাহলভির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ বিক্ষোভ ছিল এবং আয়াতুল্লাহ খোমেনির যে জনপ্রিয়তা ছিল এখন সেটা অনেকটাই কেটে গেছে। অনেকে বলে ‘মোহমুক্তি ঘটেছে।’ বিশেষ করে তরুণ সমাজ পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চায়। তারা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়। কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সভ্যতায় ইরান নানাভাবে এগিয়ে। কিন্তু ইসলামি অনুশাসনের কারণে সেখানে মুক্তবুদ্ধির চর্চা যেমন বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে ঠিক তেমনি যারা মুক্তবুদ্ধির চিন্তা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাজা এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নজীর সেদেশের তরুণ প্রজন্মকে অনেকটাই বিপ্লবী সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এরকম একটি বাস্তবতায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যু নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তাহলে কি ইরানে ইসলামি বিপ্লবী শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনা কি নতুন বাক তৈরি করবে, যেখান থেকে ইরান আবার একটি গণতান্ত্রিক পন্থায় ফিরে আসবে?

অনেকেই বলতে পারেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ভেতর কাজ করছে এবং যে সমস্ত বিক্ষোভের ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছে সেগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পিত। কিন্তু এটা অস্বীকার করার উপায় নাই যে, ইরানের তরুণ সমাজ এখন মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে চায়, দুয়ার খুলে দিতে চায়। তাই রাইসির মৃত্যু ইরানের কট্টরপন্থিদের বিদায় ঘণ্টা বাজাল কি না সেটি নিয়েও জল্পনা কল্পনা চলছে।

ইরান   ইসলামি বিপ্লব   ইব্রাহিম রাইসি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন