ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বালিশ যুদ্ধও এখন দেখানো হবে টেলিভিশনে

প্রকাশ: ০৯:০৩ এএম, ২৯ নভেম্বর, ২০২১


Thumbnail বালিশ যুদ্ধও এখন দেখানো হবে টেলিভিশনে

শৈশব-কৈশোরের আমাদের সকলের প্রিয় বালিশ খেলা এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের মঞ্চে আবির্ভূত। সাধারণ বালিশ খেলা থেকে এখন তা বালিশ যুদ্ধে রুপ নিয়েছে। আর এই খেলা এখন দেখা যাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টেলিভিশনের পর্দায়।

২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিশ্বের প্রথম বালিশ যুদ্ধের চ্যাম্পিয়নশিপ। শুধু তাই নয়, পিএফসি বা পিল ফাইট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচগুলো দেখা যাবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন টেলিভিশনেও।

বালিশ খেলাকে পেশাদার খেলার মর্যাদা দেবার স্বপ্ন দেখেছিলেন স্টিভ উইলিয়ামস। উইলিয়ামসের ভাবনায় চালু হতে চলা এই চ্যাম্পিয়নশিপে বালিশ যুদ্ধের কেরামতির সাথে মেশানো হবে বিভিন্ন মার্শাল আর্টসের কায়দা।

পিএফসি'র প্রধান উইলিয়ামস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘এই প্রতিযোগিতা কিন্তু তেমন নয় যে আপনি হাসতে হাসতে বালিশের লড়াইয়ে নামবেন আর চারদিকে পাখির পালক উড়বে। এটা খুবই সিরিয়াস একটা খেলা। বিশেষ কায়দায় তৈরি করা বালিশ নিয়ে লড়ার বিশেষ কৌশলের লড়াই।’’

জানুয়ারি মাসের আসন্ন প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছেন যেসব নারী ও পুরুষ, তারা সকলেই অ্যামেরিকার বক্সিং ও মার্শাল আর্টসের জগতের পোড় খাওয়া খেলোয়াড়। কিন্তু এই খেলায় কারো আঘাত পাওয়ার সুযোগ নেই, নিশ্চিত করেন স্টিভ উইলিয়ামস।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘খেলোয়াড়রা কেউ চোট পেতে চায় না কিন্তু দর্শকরা চায় জোরদার লড়াই হোক, প্রয়োজনে রক্তপাতও। মূলত দর্শকরা একটা ভালো লড়াই দেখতে চায়। শুধু মারামারি কারো ভালো লাগে না।’’

খেলা আরও বেশি করে জনগণকে আকর্ষণ করবে কারণ সবাই এই খেলা শৈশবে নিজেদের ভাইবোন অথবা বন্ধুদের সাথে খেলেছে, জানান উইলিয়ামস। তিনি বলেন, ‘‘ধরে নিন এটা মূলধারার খেলাধুলার চেয়ে একটু বাইরে। কিন্তু তাতে মূলধারার দর্শককেও টানা যাবে। ঠিক যেভাবে দেশের লোকগানের সাথে আজকাল অন্যান্য র‍্যাপ গান মিশিয়ে গাইলেও জনগণের তা ভালো লাগে। ঠিক সেরকমই।’’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খেলার জন্য পরিচিত বিশেষ টেলিভিশন চ্যানেল এফআইটিই-তে দেখা যাবে এই বালিশ যুদ্ধের চ্যাম্পিয়নশিপ। সূত্র: ডয়চে ভেলে



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের কোটা আন্দোলন

প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

জুলাইয়ের প্রথম দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলেও ১৬ জুলাই এই আন্দোলন নতুন মাত্রা লাভ করে। এরপর থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ করে আসছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো। সর্বভারতীয় ইংরেজি ও হিন্দি গণমাধ্যমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সহিংস হয়ে ওঠার খবর। আনন্দবাজারের শিরোনাম হলো, ‘আটক মৈত্রী (এক্সপ্রেস), ছাত্র সংঘর্ষে বাংলাদেশজুড়ে নিহত ৬’। সঙ্গে রয়টার্সের পাঠানো ঢাকার রাস্তায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের ছবি। একই খবর ছাপা হলো ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য গণমাধ্যমেও।

১৭ জুলাই সর্বভারতীয় ইংরেজি ও হিন্দি গণমাধ্যমে ছাপা হলো ছয়জনের মৃত্যু, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সহিংস হয়ে ওঠার খবর। আনন্দবাজারের হেডিং হলো, ‘আটক মৈত্রী (এক্সপ্রেস), ছাত্র সংঘর্ষে বাংলাদেশজুড়ে নিহত ৬’।

১৮ জুলাই টাইমস অব ইন্ডিয়ার শিরোনাম, ‘বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাইটার্স অ্যাট দ্য রিসিভিং এন্ড অব কোটা ব্যাকল্যাশ’। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে তিন কলাম শিরোনাম, ‘ভায়োলেন্স ওভার গভর্নমেন্ট জব কোটা: বাংলাদেশ আর্জেস অল ইউনিভার্সিটিজ টু ক্লোজ’। প্রতিবেদনের সঙ্গে ছাপা হয় এপির পাঠানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জমায়েতের ছবি। নিহত ব্যক্তিদের ছয়টি কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের প্রতীকী জানাজার ছবি।

১৯ জুলাই থেকে পশ্চিমবঙ্গের কাগজগুলোয় বাংলাদেশ চলে আসে প্রথম পৃষ্ঠায়। সর্বভারতীয় দৈনিকে বের হতে থাকে একাধিক স্টোরি। টানা পাঁচ দিন সেই অবস্থান অপরিবর্তিত থাকে। ১৯ জুলাই আনন্দবাজারের লিড, পাঁচ কলামজুড়ে শিরোনাম, ‘ছাত্র–পুলিশ সংঘর্ষ তুঙ্গে, আলোচনার প্রস্তাব খারিজ, বন্ধ ইন্টারনেট’। মূল শিরোনাম ‘বাংলাদেশে হত ৩২’। পঞ্চম কলামে ঢাকার মর্গে নিহত ছেলেকে দেখে মায়ের আহাজারির হিউম্যান স্টোরির হেডিং, ‘চাকরি না হয় না দিবি, কিন্তু ছেলেটাকে মারলি কেন?’

পরের দিন ২০ জুলাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ‘এক্সপ্লেন্ড’ সেকশনের অর্ধেকজুড়ে কোটা বিশ্লেষণ। বাংলাদেশে কোটার ইতিহাস, আদালতের নির্দেশ, সংবিধানের বৈধতা ও কোটা নিয়ে বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, দেশের অর্থনীতির হাল ও বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদন। নিবন্ধের একেবারে শেষে ‘রাজাকার’ বৃত্তান্ত। কোনো রকম অভিমতের মধ্যে না গিয়ে কোটা আন্দোলনের ইতিবৃত্ত তারা তুলে ধরে।

২০, ২১ ও ২২ জুলাই দেশের সব ভাষাভাষী কাগজের প্রথম পৃষ্ঠা বাংলাদেশের দখলে ছিল। নিহত মানুষের সংখ্যা ৩২ থেকে বেড়ে ৭৫, তারপর ১২৩ হয়ে যাওয়া, সেনা নামানো, কারফিউ, দেখামাত্র গুলির নির্দেশের খবরের পাশাপাশি ভারতীয় শিক্ষার্থী ও অন্যদের উদ্ধারের কাহিনি সর্বত্র। বাংলা কাগজে সেই সঙ্গে ছাপা হতে থাকে প্রাণ হাতে পালিয়ে আসা ও উদ্ধার পাওয়া মানুষের রোমহর্ষ কাহিনি।

হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে ছাপা হতে থাকে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের খণ্ড খণ্ড সংঘর্ষের ছবি, সেনা টহল, আটকে পড়া ভারতীয়দের জন্য সরকারি উদ্বেগ ও উদ্ধারের খবর।

এই এত দিন ধরে ভারত সরকারের তরফ থেকে একটিও মন্তব্য করা হয়নি। একবারের জন্যও মৃত্যুহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি। ভারত যে চিন্তিত, সেটুকু পর্যন্ত বলা হয়নি। স্বাভাবিক কারণেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে উঠে আসে একাধিক প্রশ্ন। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালের একটিই জবাব, বাংলাদেশে যা চলছে, তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

স্পষ্টতই বোঝা যায়, নানা কারণে ভারত অতিরিক্ত সতর্ক। দুই দেশের ‘সোনালি সম্পর্ক’ সত্ত্বেও বাংলাদেশে ভারতবিরোধিতার বহর, ব্যাপ্তি ও প্রবণতা বেড়ে যাওয়া, কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে ভারতবিরোধী স্লোগান ওঠা নিয়ে ভারত বিব্রত। অতি সতর্কতার কারণও তা–ই।

২০, ২১ ও ২২ জুলাই দেশের সব ভাষাভাষী কাগজের প্রথম পৃষ্ঠা বাংলাদেশের দখলে ছিল। নিহত মানুষের সংখ্যা ৩২ থেকে বেড়ে ৭৫, তারপর ১২৩ হয়ে যাওয়া, সেনা নামানো, কারফিউ, দেখামাত্র গুলির নির্দেশের খবরের পাশাপাশি ভারতীয়দের পড়ুয়া ও অন্যদের উদ্ধারের কাহিনি সর্বত্র।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সুপ্রিম কোর্ট কোটার পরিমাণ ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত জানানোর সময় থেকে। ২২ জুলাই সেই খবর স্থান পায় সব কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায়। সেদিনই দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় কে ভরদ্বাজ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে উপসম্পাকদীয় নিবন্ধে কোটা ইতিবৃত্ত বর্ণনা করে লেখেন, ‘হাসিনা সরকার মনে করে তাদের উচ্ছেদ করাই এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য। কিন্তু এটাও ঠিক, বেকারত্ব সে দেশে উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে রাজনৈতিক মতপার্থক্য প্রকাশের জন্য সহিংসতার আশ্রয় গ্রহণ দেশের স্থিতিশীলতাকেই নষ্ট করবে। হাসিনার উপর্যুপরি চতুর্থ জয় বাংলাদেশকে তুলনামূলকভাবে রাজনৈতিক নিরাপত্তা জুগিয়েছে এবং এর ফলে অর্থনৈতিক সুরাহাও পাওয়া গেছে। ২০২৬ সালে তারা মধ্য আয়ের দেশ হতে চলেছে। এই সন্ধিক্ষণে বেকারত্বের সমস্যা সতর্কভাবে মেটানো দরকার। সংস্কারের রাস্তায় হাঁটতে গেলে দেশকে বৃহত্তর সংলাপের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।’

একই দিনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সম্পাকদীয় শিরোনাম, ‘ঢাকা’স গ্রিম টেস্ট’। তাতে আদালতের রায়কে নিরাময় স্পর্শের ছোঁয়ার জন্য ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। লেখা হয়, ‘বিরোধীদের সমালোচনা করলেও হাসিনা সরকার সাম্প্রতিক কালের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিচ্যুতিগুলো উপেক্ষা করতে পারে না। বিশেষ করে ছাত্রসমাজের অসন্তোষ।’

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য সংরক্ষণ ‘বিতর্কিত’ জানিয়ে সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘হাসিনা সরকার পরিস্থিতির মোকাবিলা ঠিকমতো করতে পারেনি। ক্ষোভ তাতে বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ এশিয়ার দ্রুততম অর্থনীতি। কিন্তু তা আকাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থান দিতে পারেনি। দুর্নীতির অভিযোগ ও হাসিনার কর্তৃত্ববাদী চরিত্রও ক্ষোভ বাড়িয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মৌলবাদীদের যোগদান ভারতের পক্ষে বিশেষ উদ্বেগের। সে দেশে ভারতবিরোধী মনোভাব নতুন নয়। কিন্তু তা কখনো সীমা ছাড়ায়নি। এই জনরোষ যাতে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে না ছড়ায়, সে জন্য নরেন্দ্র মোদিকে সচেষ্ট হতে হবে।’

২২ জুলাই টাইমস অব ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয়ও বাংলাদেশ নিয়ে। ‘ডিস্টার্বিং ইন ঢাকা’ শিরোনামে বলা হয়, ‘হাসিনার বাইরেও ভারতকে চিন্তা করতে হবে’।





মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে দ্য হিন্দু’কে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার

প্রকাশ: ০৫:৩৩ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

কোটা আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ভারতের দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’কে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ মনোযোগের আহ্বান জানিয়েছেন।

২৬ জুলাই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে তিনি সাক্ষাৎকারটি দেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ‘দ্য হিন্দু’র খ্যাতনামা কূটনৈতিক সংবাদদাতা সুহাসিনী হায়দার, যিনি ব্যক্তিগতভাবে বহুলালোচিত বিজেপি নেতা সুব্রাহ্মণিয়াম স্বামীর মেয়ে এবং ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব সালমান হায়দারের পুত্রবধূ।

সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, বিশেষ করে ভারতের কাছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শান্ত করার আহ্বান জানান ড. ইউনূস। সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ভারত-বিরোধী সুর বহন করার আশঙ্কাও নাকচ করে দেন।

নিচে সুহাসিনীর সেই সাক্ষাৎকারের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হল-

সুহাসিনী হায়দার: বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনি কী শুনেছেন? সে সম্পর্কে আমাদের একটি ধারণা দিন। আপিল আদালতের নতুন রায়ের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে হচ্ছে...?

ড. ইউনূস: আমি এখানে [অলিম্পিক অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে প্যারিসে] আসার পর এমন কিছু ঘটেনি। আমি সেখানে ছিলাম। কারফিউয়ের মধ্য দিয়ে এয়ারপোর্টে গেলাম। বাংলাদেশে যে ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে এবং এ পরিস্থিতিতে আমি বিশ্বনেতাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা যায় কি না তা দেখার জন্য আবেদন করছি। আমি এটা দেখে সহ্য করতে পারি না, লাখ লাখ বাংলাদেশি সন্ত্রাসের মধ্যে বসবাস করছে তা আমি দেখতে পারি না। গণতন্ত্র মানুষের জীবনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। গণতন্ত্র হল- ধর্ম, রাজনৈতিক মতামত বা মতের অন্য কোনও পার্থক্য নির্বিশেষে মানুষকে, সব মানুষকে রক্ষা করা। কোনও নাগরিক যদি অন্য কোনও ব্যক্তিকে হত্যা করতে চায়, তাহলে রাষ্ট্রের প্রথম দায়িত্ব হল আক্রমণের শিকার ব্যক্তিকে রক্ষা করা। আক্রমণকারীকে হত্যা করা সর্বশেষ বিকল্প, প্রথম বিকল্প নয়, আর বাংলাদেশ সরকার শেষ বিকল্পেই সাড়া দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা কাউকে হত্যা করার জন্য বাইরে বের হয়নি। তাদের দাবি সরকারের কাছে অপ্রীতিকর হতে পারে, কিন্তু এটি সরকারকে তাদের হত্যা করার জন্য গুলি করার সুযোগ দেয় না।

সুহাসিনী: আপনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন, জাতিসংঘকে এর সাথে জড়িত হওয়ার জন্য বলেছেন। আপনি ঠিক কিভাবে তাদের ভূমিকা পালন দেখতে চান?

ড. ইউনূস: আমি কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া চাচ্ছি না। আমি আশা করছিলাম যে তারা তাদের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক এবং অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলগুলো ব্যবহার করে আমাদের নেতাদের সংযত করতে, গণতন্ত্রের আদর্শ থেকে গুরুতর প্রস্থান সম্পর্কে সচেতন করতে পারে। একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে, ফোন তুলে বলতে পারে, সেখানে কী হচ্ছে? বন্ধুরা বন্ধুদের জন্য যে ধরনের কাজ করে, সেটি ঠান্ডা করার কিছু উপায়, যা মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়ক হবে। নেতাদের মধ্যে বন্ধুত্ব আছে। বন্ধু হিসেবে কিছু করা যায়। সংকটের সময়ে ভালো উপদেশ না দিলে বন্ধু কিসের?

সুহাসিনী: ভারত ও বাংলাদেশ ঐতিহাসিক বন্ধু। তবে ভারত আগেই বিবৃতি দিয়ে বলেছে- এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

ড. ইউনূস: আপনি একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে জনসমক্ষে এটি বলতে পারেন, তবে আপনি এখনও আপনার বন্ধুত্বকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীরা হয়তো একে অপরের সাথে কথা বলতে পারেন যদি তারা দেখেন যে কিছু ভুল হচ্ছে। আমাদের এখনো সার্কের স্বপ্ন আছে। আমরা একে অপরকে সাহায্য করি। আমরা একে অপরের জন্য সম্পর্ককে সহজ করি। আমাদের মধ্যে প্রাকৃতিক বন্ধন আছে। এক দেশে কিছু ঘটলে অন্য দেশে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আমরা যা দেখছি তা হল- নিরীহ মানুষ নিহত হচ্ছে। এটা খুবই অদ্ভুত পরিস্থিতি। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মোকাবিলায় নিরাপত্তা বাহিনীকে আনতে হবে কেন? এখন আপনি বলেন, ভিতরে কিছু শত্রু আছে। কারা সেই শত্রু? তাদের চিহ্নিত করুন এবং তাদের মোকাবিলা করুন, ছাত্রদের হত্যা করে সেটি নয়। একটি গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন যেভাবে চলবে সেটি এরকম নয়।

সুহাসিনী: ভারতে, বিশেষ করে ১৯৭১ সালের কোটা নিয়ে বিক্ষোভের বিষয়ে উদ্বেগ হল যে, এটি ভারতবিরোধী মনোভাবকে উসকে দিচ্ছে। আপনি এটি কতদূর সত্য বলে মনে করেন?

ড. ইউনূস: এটি চিন্তা করাটা কল্পনাকে অনেক দূরে প্রসারিত করা হবে। কোটা আন্দোলনের সামান্যতম ছোঁয়াও নেই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নিয়ে। সমস্যা হল গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, বিচার বিভাগের ভূমিকা। জনগণের মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে এবং তাদের মতামতের জন্য তাদের হত্যা করার অধিকার সরকারের নেই।

সুহাসিনী: প্রতিবাদগুলোকে যেভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে তাতে আপনি আপত্তি করছেন। হাসিনা সরকার বলছে- বিক্ষোভকারীরা নিজেরাই হিংস্র হয়ে উঠেছে, তারা পুলিশ পোস্টে আক্রমণ করেছে...

ড. ইউনূস: যারা আইন ভঙ্গ করেন তাদের সাথে আপনি কিভাবে মোকাবিলা করবেন তার একটি পদ্ধতি রয়েছে। কিছুই বলে না যে আপনাকে এলোমেলোভাবে হত্যা করতে হবে। বিশ্বে এটিই প্রথম নয় যেখানে কোনও সরকারকে বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমরা দেখি পুলিশ নিরপরাধ ছাত্রদের প্রতি হাত তুলে গুলি করছে এবং খুব কাছ থেকে গুলি করছে কারণ তাদের গুলি করার ক্ষমতা আছে। এটাই আমরা দেখতে পাই।

যদি বিক্ষোভকারীরা উচ্ছৃখল হয় তবে এই ধরনের পরিস্থিতি পরিচালনা করার জন্য অনুসরণীয় পদ্ধতি রয়েছে। বাংলাদেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের চর্চায় মারাত্মক কিছু ভুল আছে। আসুন আমরা আমাদের নিজেদের সুবিধার জন্য এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিই। আমরা সার্কের সদস্য। আমরা প্রতিবেশী। সব মিডিয়ার এসে দেখা উচিত এখানে কী হচ্ছে। তারা [বাংলাদেশ সরকার] প্রথম যে কাজটি করেছিল, তা হল- সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া, যাতে তারা অন্ধকারের আড়ালে এমন কিছু করতে পারে যাতে কেউ বাইরে থেকে না দেখে, এমনকি ভিতরে থেকেও তা দেখতে না পারে। কেন তারা নিজেদের মানুষকে ভয় পায়?

সুহাসিনী: শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং মন্ত্রীদের পদত্যাগসহ তাদের দাবির তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

ড. ইউনূস: এগুলো ছাত্রদের দাবি এবং পদ্ধতিটি হল সরকারের সেই জিনিসগুলোতে সাড়া দেওয়া। কিন্তু যেভাবে কাজ করছে সেটি কাঙ্ক্ষিত নয়।

সুহাসিনী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবেমাত্র নির্বাচনে জিতেছেন [২০২৪ সালের জানুয়ারিতে]। পদত্যাগের আহ্বান কি অগণতান্ত্রিক নয়?

ড. ইউনূস: আমরা গণতন্ত্রের জন্য এবং গণতন্ত্রের সাথে থাকার জন্য নিজেদেরকে অঙ্গীকারবদ্ধ করেছি। আপনি সদ্য নির্বাচিত হন বা আপনি নির্বাচিত না হন, অথবা আপনি জনগণের সম্মতি ছাড়া আপনার পদের অপব্যবহার করেন, গণতন্ত্রে কিছু যায় আসে না। জনগণকে রক্ষার দায়িত্ব সরকারের, মানুষ হত্যা নয়। আপনি কাউকে তুলে নিতে পারবেন না, কোনও ব্যক্তি বিরোধী দলের সদস্য বলে তাকে গ্রেফতার করা হবে তা হতে পারে না। সরকার তাকে কাল্পনিক অপরাধে অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করতে পারে। এজন্য তাকে জেলে থাকতে হবে। এটা আইনের শাসন নয়। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কিছু পদ্ধতি অবশ্যই থাকতে হবে।

সুহাসিনী: এর বাইরে এসব বিক্ষোভের ভবিষ্যৎ কী?

ড. ইউনূস: গণতন্ত্র যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে আপনি জনগণের ম্যান্ডেট নিন, জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা পেতে আবার জনগণের কাছে ফিরে যান, এই মুহূর্তে সরকারের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা অবশিষ্ট নেই।

সুহাসিনী: আপনি কি মনে করেন সরকারের পদত্যাগ করা উচিত?

ড. ইউনূস: গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে উদ্ভূত এই ধরনের পরিস্থিতিতে যা আদর্শ তা করতে হবে। গণতন্ত্র সব সমাধান দিয়েছে। আমাকে নতুন করে রায় দিতে হবে না।

সুহাসিনী: পরিস্থিতির উন্নতিতে আপনি কি কোনও ভূমিকা পালন করতে পারেন?

ড. ইউনূস: [বাংলাদেশে] গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করছি, আমি এই মুহূর্তে এই ভূমিকাই পালন করছি।

সুহাসিনী: সরকার আপনার বিরুদ্ধে প্রায় ২০০টি অভিযোগ দায়ের করেছে। শ্রম আইনে মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দু’টি নতুন মামলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এই লড়াই কি ব্যক্তিগত?

ড. ইউনূস: এসব মামলাও আইনের শাসনের ব্যর্থতা। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আত্মসাৎ, জালিয়াতি এবং অর্থপাচার সংক্রান্ত। বলা হচ্ছে- আমি আমার নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা চুরি করেছি। এগুলো সরকারের অভিযোগ। এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট গল্প, সবই বানানো। অনেক মানবাধিকার সংস্থা এগুলোকে ভিত্তিহীন বলেছে। এটা আমাকে হয়রানি করার জন্য। শ্রম আইন লঙ্ঘনের একটি মামলায় আমি ইতোমধ্যেই ছয় মাসের কারাদণ্ড পেয়েছি যা আরেকটি বানানো মামলা।

সুহাসিনী: আপনি কি মনে করেন যে বাংলাদেশকে এই বিন্দু থেকে গণতন্ত্রের নিয়মে আবার ফিরিয়ে আনা যেতে পারে, যা আপনি ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন?

ড. ইউনূস: অবাধে এবং ন্যায্যভাবে জনগণের ম্যান্ডেট নিন। সমাধান এটাই। জনগণের নির্দেশনাই সমস্যার সমাধান করে, কারণ রাষ্ট্র জনগণের, সরকারের কিছু লোকের নয়।

সুহাসিনী: আপনি কি আরেকটি নির্বাচনের পরামর্শ দিচ্ছেন?

ড. ইউনূস: অবশ্য নির্বাচনই সব রাজনৈতিক সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান। যখন কিছু কাজ করে না, আপনি লোকদের কাছে ফিরে যান তাদের নির্দেশনা চাইতে। তারাই দেশের চূড়ান্ত মালিক। নিশ্চিত করুন যে এটি একটি সত্যিকারের নির্বাচন হবে, জাদুকরের নির্বাচন নয়।

সুহাসিনী: আপনি কি মনে করেন যে সহিংসতার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে এবং আপিল আদালত কোটা কমিয়ে দেওয়ার পরও কি বিক্ষোভ ফিরে আসতে পারে?

ড. ইউনূস: সরকার দাবি করছে [পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে]। এমনকি এটি থামলেও এর অর্থ এই নয় যে মৌলিক রাজনৈতিক সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়েছে। এটি সাময়িকভাবে থামতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক ইঞ্জিন চলতে থাকবে, মুহূর্তের বিজ্ঞপ্তিতে তা আবার ফিরে আসতে পারে। আজ বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা ভারতেও ঘটতে পারে। আপনি যদি আজ কথা না বলেন, আপনি এই দিনটিকে ভারত, নেপাল, পাকিস্তান বা অন্যান্য সার্ক দেশগুলোর জন্য সহজেই কাছে নিয়ে আসবেন। 

সূত্র: দ্য হিন্দু

কোটা আন্দোলন   ড. ইউনূস  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রোববার এর আগে স্বাভাবিক হচ্ছে না ফ্রান্সের রেল যোগাযোগ

প্রকাশ: ০৩:৪৬ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসর অলিম্পিক উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সের রেল নেটয়ার্ককে লক্ষ্য করে যে ভয়াবহ হামলা ঘটেছে, তার জের থাকবে অন্তত রোবববার পর্যন্ত। মেরামতের কাজ ইতোমধ্যে অনেকটা এগিয়ে গেলেও শিগগিরই রেল যোগাযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে না বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি রেল চলাচল কর্তৃপক্ষ এসএনসিএফ।

গতকাল শুক্রবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অলিম্পিক আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, বৃহস্পতিবার রাতে নজিরবিহীন হামলা ঘটে ফ্রান্সের বিভিন্ন উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্কে। দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি স্টেশন ও রেলগাড়িতে আগুন দেয় দুষ্কৃতিকারীরা, বিভিন্ন স্থানে উপড়ে ফেলা হয় রেল লাইন।

আকস্মিক এই হামলার কারণে রাজধানীর সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের রেল যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েন সাধারণ লোকজন; কারণ ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ফ্রান্সও যাতায়াতের জন্য রেলের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

দুষ্কিৃতিকারীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আটলান্টিক (দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল), পূর্বাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চল থেকে প্যারিসগামী লাইন ও রেলগাড়িগুলো। নজিরবিহীন এ ঘটনায় ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েন সাধারণ লোকজন। কারণ ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ফ্রান্সের যাতায়াতও রেলনির্ভর।

শনিবার এক বিবৃতিতে এসএনসিএফ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর ৬ টা থেকে পূর্বাঞ্চল থেকে প্যারিসগামী ট্রেনগুলো স্বাভাবিকভাবে চলা শুরু করেছে, উত্তরাঞ্চল থেকে প্যারিসের উদ্দেশে আসা-যাওয়া ট্রেনগুলোর ৮০ শতাংশ চলতে শুরু করেছে, তবে এক থেকে দুই ঘণ্টা বিলম্ব হচ্ছে। আর আটলান্টিক বা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে প্যারিসগামী আপ-ডাউন ট্রেনের চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে রোববার পেরিয়ে যাবে।

ফ্রান্সের বৃহত্তম রেল কোম্পানি ইউরোস্টার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রেল নেটওয়ার্কে হামলার কারণে আগামী রোববার পর্যন্ত রেল চলাচল স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে এক পঞ্চমাংশ হ্রাস পাবে। এদিকে, দেশজুড়ে রেল নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক করতে ১ হাজারেরও বেশি কর্মী দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। ফ্রান্সের পরিবহন বিষয়ক জুনিয়র মন্ত্রী প্যাট্রিস ভারগ্রিয়েটে এক বার্তায় জানিয়েছেন, রেল নেটওয়ার্কের বিপর্যয়ের কারণে শুক্রবার অন্তত আড়াই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

পরিবহনমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল রেল যোগাযোগব্যবস্থায় হামলার ঘটনাকে ‘নাশকতা’ উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, অলিম্পিকের আসরে বিঘ্ন সৃষ্টির উদ্দেশে এই ঘটনা ঘটিয়েছে দুষ্কিৃতিকারীরা।

ফ্রান্সের রেল দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে বিভিন্ন স্টেশনে আগুন দেওয়া ও লাইন উপড়ানোর পাশাপাশি নাশকতাকারীরা রেলের স্পেশালাইজড ফাইবার অপটিক ক্যাবলস জ্বালিয়ে দিয়েছে। এই ক্যাবলস ব্যাতীত উচ্চগতির ট্রেন চলাচল সম্ভব নয় এবং এটি মেরামতেই সময় লাগছে।


ফ্রান্স   রেল যোগাযোগ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

শকুন কমে যাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া বেড়ে ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৩:২০ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে শকুনের সংখ্যা কমার ফলে মানুষের মৃত্যুর হারও বেড়েছে বলে দাবি গবেষকদের। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে বিবেচিত এই পাখি না থাকায় মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ২০০০-২০০৫ সালের মধ্যে অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছেন। তাই উপকারী এ পাখিগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মত দিয়েছেন গবেষকরা।

আমেরিকান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, এসব পাখি কমে যাওয়ায় খুব সহজেই মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটছে। ফলে এ সময় অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতে একসময় ৫০ মিলিয়ন শকুন ছিল। কিন্তু ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি এ সংখ্যা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। এর কারণ গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ডাইক্লোফেনাক নামে ব্যথানাশক একটি ওষুধ। সস্তা এই ওষুধ শকুনের জন্য প্রাণনাশক ছিল। এ ওষুধ খাওয়ানো গবাদিপশুর মৃতদেহ খেয়ে কিডনি নষ্ট হয়ে বহু শকুন মারা যায়। স্টেট অব ইন্ডিয়াস-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৬ সালে পশুর চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ফলে কিছু এলাকায় শকুনের মৃত্যু কমতে থাকে। তবে শকুনের তিনটি প্রজাতি (সাদা শকুন, ভারতীয় শকুন, লাল মাথার শকুন) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের জনসংখ্যা ৯১ থেকে ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। আর শকুন কমে যাওয়ায় দেশটিতে মানুষের মৃত্যুর হারও বেড়েছে বলে জানান গবেষকরা।

গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের যেসব জেলায় শকুনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমেছে, সেসব জেলায় মানুষের মৃত্যুর হারও আগের তুলনায় চার শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া যেসব শহরে মৃত গবাদিপশু ভাগাড়ে ফেলা হতো, সেখানে মানুষের মৃত্যুর হারও বেশি।

গবেষকদের ধারণা, শকুন কমে যাওয়ায় পাঁচ বছরে (২০০০-২০০৫ সাল) রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় প্রতি বছর অতিরিক্ত এক লাখ মানুষ মারা গেছেন।

গবেষণার সহলেখক ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোস হ্যারিস স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহকারী অধ্যাপক আইয়াল ফ্র্যাঙ্ক। তিনি বলেন, পরিবেশ থেকে ব্যাকটেরিয়া ও রোগ-জীবাণুযুক্ত মৃত প্রাণীগুলো অপসারণে শকুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এসব পাখিকে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলা হয়। তারা না থাকলে অসুখ ছড়াতে পারে।


শকুন   ভারত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেন্দ্রীয় সরকারকে পাল্টা জবাব মমতার

প্রকাশ: ০২:৫৮ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক থামছেই না। ঢাকার আপত্তির পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ে মমতাকে সতর্ক করেছিল। তবে কেন্দ্রীয় সরকারকে পাল্টা জবাবে মমতা বলেছেন, পররাষ্ট্রনীতি আমি অনেকের চেয়ে ভালো জানি।

ধর্মতলায় গত ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন অশান্ত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মমতা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ থেকে কেউ পশ্চিমবঙ্গের দরজায় এলে তিনি ফেরাবেন না। বিষয়ে জাতিসংঘের একটি সনদের কথাও উল্লেখ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারবেন না। কারণ বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র দেশ। নিয়ে কিছু বলার থাকলে ভারত সরকারই বলবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে আমরা একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছি। আপনারা রিপোর্টে যেমনটা দেখেছেন, খানিকটা সে রকমই।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সংবিধানের সপ্তম তফসিলের প্রথম তালিকার ১০ নম্বর অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, বিদেশ সংক্রান্ত সব বিষয় এবং অন্য কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিষয়ের এখতিয়ার একমাত্র ভারত সরকারের। বিষয়টি যৌথ তালিকায় নেই। আর অবশ্যই রাজ্যের তালিকায় নেই। আমাদের অবস্থানটা স্পষ্ট, সাংবিধানিক এখতিয়ারের বাইরের কোনো বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।

এবার সেই বিতর্কের জবাব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দিল্লিতে দলীয় সাংসদের সঙ্গে বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বাংলাদেশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আমি খুব ভালো জানি। আমি সাতবারের সাংসদ, দুবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। পররাষ্ট্রনীতি অন্য কারও চেয়ে আমি ভালো জানি। তাদের আমাকে শেখানো উচিত নয়। বরং সঠিক নিয়মগুলো তাদেরই শেখা উচিত।


ভারত   বাংলাদেশ   পাল্টা   জবাব   মমতা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন