নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একটা সাংঘাতিক ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলেছেন। তিনি যা বলেছেন সেটা এমন যে, একা কোন রাজনীতিবিদ বা ঠিকাদার টেন্ডার বা কেনাকাটায় দুর্নীতি করতে পারে না, সাথে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গোয়েন্দাদের যোগসাজশ যদি না থাকে। এটা সম্ভব নয়। এটা নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিকগণের অনেকেই লিখেছে আবার ইউটিউব চ্যানেলে তাঁর পর্যবেক্ষণেও সেই কথার একটু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। আমি এই দুজনের বা অনেকের কথা স্বপক্ষে কিছু তথ্য গল্পের ঢঙ্গয়ে তুলে ধরতে চাই।
সেটা ১৯৮৮ সালের দিকের কথা। তখন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে শুল্ক মুক্ত গাড়ি আর প্রকল্পের যন্ত্রপাতি আনার নিয়ম ছিল। প্রকল্প শেষে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সরকারী দপ্তর বা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ট্যাক্স দিয়ে দিতেন যা আগে থেকে ডিপিপি তে উল্লেখ করা থাকতো। লম্বা সময়ের প্রকল্প হলে অনেক সময় ঝামেলাও হতো আমদানি শুল্ক দেওয়া নিয়ে। তখন চরম আকারে সংখ্যা দুর্নীতির প্রচলন ছিল। কেন না সে সময় ঋণ প্রকল্পের সংখ্যা ছিল খুব কম, কিন্তু টেকনিক্যাল কো-অপারেশন প্রকল্পের সংখ্যা ছিল বেশি। এসব প্রকল্পের উপাদান ছিল ৩ টি। এক- বিদেশী বিশেষজ্ঞ, দুই- যন্ত্রপাতি, তিন- প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের জন্য বৈদেশিক প্রশিক্ষণ।
মূল দুর্নীতি হতো প্রকল্পের যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার কৌশল। ধরণ ভেদে বিভিন্ন প্রকল্পে ৩ বা ৫টা শুল্ক মুক্ত গাড়ি, কিছু এসি, একটা বা দুইটা রেফ্রিজারেটর, কালার টিভি আর অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানি করা হতো। আমদানির জন্য আসা ইনভয়েস আর বিল ও লেডিং এ হতো টেম্পারিং। ১ কে কোন সময় ১০ আর ৩ কে ১৩ বা ৫ কে ১৫ বানিয়ে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে গাড়ি, এসি, রেফ্রিজারেটর, কালার টিভির সাথে অন্যান্য যন্ত্রপাতি খালাস করা হতো পোর্ট থেকে। খালাস হয়ে গেলে অরিজিনাল ইনভয়েস আর বিল ও লেডিংএ সীল সাক্ষর মেরে কাস্টমস হাউজের মূল ফাইলে রেখে দেওয়া হতো যাতে পরে তদন্তে ধরা না পড়ে। এসি, রেফ্রিজারেটর, কালার টিভির সাথে অন্যান্য যন্ত্রপাতি নিয়ে কোন ঝামেলা হতো না, ডিপিপিতে উল্লেখিত সংখ্যা অনুযায়ী প্রকল্প শেষে আমদানি শুল্ক পরিশোধ করে দেওয়া হতো। খেলা জমতো শুল্কমুক্ত আমদানি করা গাড়ি নিয়ে। কারণ তখন প্রায় সব প্রকল্পেই মিটসুবিশি পাজেরো আনার ঝিক ছিল খুব বেশি। পাজেরো তখন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক।
এবার আসি আমদানি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা গাড়ি রেজিস্ট্রেশন প্রসঙ্গে। রেজিস্ট্রেশনের যে সব কাগজ জোগাড় করা দরকার তা করা হতো বিআরটিএ মিরপুর অফিসের অসাধু কর্মীদের সহায়তায়। জাল কাগজ তৈরি করে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় কোন কোন সময় ৬০ হাজার টাকায় রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হতো। রেজিস্ট্রেশন দেওয়া রেজিস্টারে প্রতিটি মডেলের গাড়ির জন্য ১৫/২০ টা ঘর ফাঁকা রাখা হতো বছর শেষেও, যাতে ঐ মডেলের গাড়ি এলে রেজিস্ট্রেশনের সেই সিরিয়ালে নাম্বার দেওয়া যায়। রেজিস্ট্রেশন দেবার পরে বছর না ঘুরতেই বিআরটিএ মিরপুর অফিসের স্টোর রুমে সর্ট সার্কিটে আগুণ লাগতো বা উইপকার আক্রমন হতো। পুড়ে যেতো, নষ্ট হতো অনেক প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট। রেজিস্ট্রেশন দেওয়া রেজিস্টারে ধরে ইস্যু করা হতো ডুপ্লিকেট ব্লু বুক বা রেজিস্ট্রেশন বই। কাস্টমস ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে এটা জানাজানি হয়ে যায় এরশাদ সরকারের আমলের শেষ দিকে। এরশাদ সরকারের আমলে বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রকল্পের শুল্কমুক্ত আমদানি। ইতোমধ্যে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কয়েক শ’ লোক রাতারাতি কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যান। গাড়ির এই ভুয়া রেজিস্ট্রেশন এখনো চালু আছে কিন্তু অন্য ফর্মে। সেটা পরে বলা যাবে। পাঠকদের বলি আপনারা দয়া করে একটু এনবিআরএর আইন ঘেঁটে দেখুন কবে থেকে বিভিন্ন সরকারী উন্নয়ন প্রকল্পে (ঠিকাদারি সুবিধা বাদে) শুল্ক মুক্ত আমদানি বন্ধ হয়েছে। আর ২০০৭ -৮ আত্ম স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের তালিকায় বিআরটিএ’র কত জনের নাম আছে। দলিল দিয়ে প্রমাণ করা লাগবে না।
সাম্প্রতিক কালের বালিশ পর্দা, বই কেনায় দুর্নীতিতেও আছে এই সংখ্যা তত্ত্বের কারসাজি। ২৭০০ টাকার বালিশের দামের ডান দিকে একটা শূন্য বসিয়ে দিলেই তা ২৭,০০০ হয়ে যায়। এভাবেই ৬০০ টাকার বালিশ তোলার লেবার খরচ ৬০০০ হয়ে যায়। কিংবা ৮০০ টাকার বালিশের কভারের ডান দিকে একটা শূন্য আর বাম দিকে ২ বসালে বালিশের কভারের দাম ২৮,০০০ হতে সময় লাগে না। বিভিন্ন প্রকল্পের বড়রা স্যুটটা নিলে নীচের ছোটরা টাইটা নিয়ে যান এভাবে- মিটিং এ দেওয়া নাস্তার ৩০ টাকার সন্দেশের দামের মানি রিসিটে ডান দিকে একটা শূন্য বসালেই ৩০০ হয়ে যায়, ৩৫০ টাকার লাঞ্চ হয়ে যায় ৩,৫০০ টাকা, ইত্যাদি ইত্যাদি।
এর আগের একটা লেখায় বলেছিলাম যে, বিভিন্ন ধরণের প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতির চিত্র ভিন্ন। আমরা একটা অবকাঠামো তৈরির প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির খণ্ড চিত্র বা কিছু ইঙ্গিত দিতে পারি। মনে করি কোন এলাকায় ২টা ব্রিজ হবে সাথে ব্রিজের এপ্রোচ রোডের জন্য কিছু নতুন রাস্তা হবে, তাই জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এই কথা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দপ্তরের মাধ্যমে চলে যার সংশ্লিষ্ট ডিসি অফিসে, এসি ল্যাণ্ড অফিসে। প্রকল্প অনুমোদনের নিশ্চয়তা পেলে এসি ল্যাণ্ড (যদি অসৎ হন) আর তার দালালেরা রাতারাতি সম্ভাব্য অধিগ্রহণ এলাকায় টিন সেড বাড়ি তরী করে, কাঁচা বাড়ি তৈরি করে সয়লাব করে ফেলে। পরে আবার ৩০ টা বাড়ি একটা শূন্য বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়। কারণ ক্ষতিপূরণ ৩০০%। কিন্তু সেই টাকার প্রায় সিংহভাগ চলে যায় এসি ল্যাণ্ড আর তার বস ও দালালের কাছে।
আবার, মনে করুন রাস্তা বা ব্রিজের ডিজাইন করার জন্য মাটি পরীক্ষা করা দরকার। মনে করুন ১০ পয়েন্টে সয়েল টেস্ট করতে হবে। সেখানে ১ টা শূন্য বাড়ালেই হবে ১০০ টি। যে কোম্পানি কাজ পেলো তাকে বেছে বেছে ১০ টি বোরিং করে সয়েল টেস্ট রিপোর্ট দিতে বাধ্য করা হয় বাকীগুলোর জন্য। সরকারী ভবন তৈরির ক্ষেত্রেও একই ধরনের দুর্নীতির মাধ্যমে রপড এর মত দামী উপাদানে নিম্ন মানের উপাদান ব্যবহার করা। যদিও ফাইলে এইচবিআরআই বা বুয়েটের প্রকল্প বাস্তবায়নে যার প্রভাব পড়ে, তখন একই ধরণের বেসরকারী বা বিদেশী স্থাপনার খরচ আরও বেড়ে যায়। টাকা চলে যায় বিদেশে।
এভাবেই শুধু সংখ্যার হেরফের করে চলে সীমাহীন দুর্নীতি যাকে অনেকে ঠাট্টা করে বলে ‘সংখ্যা দুর্নীতির স্যুট টাই খেলা’।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।