নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৯ পিএম, ২৬ মার্চ, ২০১৮
বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ এই দুই সরকারের আমলেই দুটি রাষ্ট্রীয় পদক জিতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন শাইখ সিরাজ। কৃষি সাংবাদিকতায় তিনি ১৯৯৫ সালে একুশে পদক পান এবং এ বছর স্বাধীনতা পদক পেলেন।
এ বছর প্রথমে ১৬ জনকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ১২ জন,চিকিৎসা, সমাজসেবা,সাহিত্য ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাকী চার জন। পরে সংস্কৃতিতে আসাদুজ্জামান নূর এবং কৃষি সাংবাদিকতায় শাইখ সিরাজকে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে ১৯৯৫ সালে শাইখ সিরাজকে কৃষি সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একুশে পদক তুলে দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯৪ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ টেলিভিশনে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের চারটি পর্বে জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। উপস্থাপক শাইখ সিরাজ খাল কাটার ফলে কৃষিতে যে বিপ্লব হয়েছে তা তুলে ধরে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান। আর এবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে স্বাধীনতা পুরস্কার নিলেন।
স্বাধীনতা পদক অনুষ্ঠান শেষে শাইখ সিরাজ বলেন, রাষ্ট্র সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। কখনো এক সরকার আসে এক সরকার যায়। এভাবেই হয় জিনিসগুলো।কিন্তু জনগণ তাঁর কাজের জন্য রাষ্ট্র তাঁকে পুরস্কৃত করে। উভয়ের কাছে হয়তো এই কাজের জন্য সমানভাবে সবার কাছে সমাদৃত। সেটা হয়ত বড় কারণ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
শাইখ সিরাজ ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের কৃষি ভিত্তিক অনুষ্ঠান মাটি ও মানুষের সঙ্গে কাজ শুরু করেন।
এই প্রসঙ্গে একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু বলেন, একই বছর কৃষি খাতের পুরস্কারটিকে খণ্ডিত করে তাকে বলা হলো খাদ্য নিরাপত্তা এবং কৃষি সাংবাদিকতায় পুরস্কার দেওয়া হলো। কৃষি সাংবাদিকতায় পুরস্কার পেলেন শাইখ সিরাজ। বিশেষ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দুজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যার একজন শাইখ সিরাজ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আজ গর্বিত হওয়ার কথা একজন সাংবাদিক পুরস্কার পেলেন, কিন্তু আমরা হতে পারছি না একারণেই তাঁর (শাইখ সিরাজ) নিজের বক্তব্যেই। তাঁর বক্তব্যই ঔদ্ধত্যপূর্ণ। জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচিকে যিনি গ্লোরিফাই করেছেন। একইভাবে তিনি কৃষকের বঙ্গবন্ধু নামে অনুষ্ঠান করেছেন। পুরোটাই যে তাঁর মন থেকে নয়, দুটোই যে তোষামোদির উদ্দেশ্যে করা এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। আমি তাঁকে বিশেষভাবে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য না হলেও উভয় রাজনৈতিক দলকে সমভাবে তোষামোদ ও সন্তুষ্ট করতে পারার জন্য আমি তাঁকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে অভিনন্দন করতে চাই। জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচি যদি গৌরবান্বিত হয় এবং বঙ্গবন্ধু ও কৃষি একইভাবে কীভাবে গৌরবান্বিত হতে পারে। শুধু তাই নয়, তিনি একটি কথা বলছিলেন যা আমার কাছে অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ মনে হয়েছে, রাষ্ট্র তো রাষ্ট্র সরকার আসবে যাবে। কুখ্যাত ওয়ান ইলেভেনের সময় চ্যানেল আইতে স্ক্রল চলছিল এভাবে, কৃষি ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। সেখানেও তাঁর লবিং চলছিল। এই যে লবিং করার মাধ্যমে এই পুরস্কারগুলো গ্রহণ করা, আমি নিশ্চিত, শাইখ সিরাজের মুখ থেকে কোনোদিন বঙ্গবন্ধু, কোনোদিন স্বাধীনতার চেতনা আওয়ামী লীগ সরকার আসার আগ পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধু বলেছেন কিনা। চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে যাঁরা আছেন তাঁদের প্রশ্ন করেন, সাগর ভাইয়ের দায়িত্ব আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা। শাইখ সিরাজের দায়িত্ব হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা। এটা ডিক্লেয়ারড, তাঁরা অস্বীকারও করেনা। সবচেয়ে দু:খ লাগে এখানে বাংলাদেশে তারেক রহমান একজন কনভিকটেড আসামি, কদিন আগেই লন্ডনে চ্যানেল আইয়ের উদ্যোগে তারেক রহমানকে দেশনেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তার দায়িত্ব শাইখ সিরাজের। সেটি চ্যানেল আই লন্ডন লাইভ প্রচার করে। একজন দাগী আসামিকে দেশনেতা হিসেবে আখ্যায়িত করার পর কেন কমিটি এই ভদ্রলোককে (শাইখ সিরাজ) স্বাধীনতার ক্ষেত্রে পুরস্কারের জন্য মনোনীয়ত করল। আপনি তাঁকে (শাইখ সিরাজকে) সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দেন আমার কোনো দু:খ নেই, কিন্তু তাঁকে স্বাধীনতা পদক। স্বাধীনতা যার বুকের মধ্যে চিহ্নমাত্র নেই, বঙ্গবন্ধু যাঁরা চেতনায় চিহ্নমাত্র নাই, তাঁকে পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এভাবে ভুলন্ঠিত করলে বাংলার অসংখ্য মানুষের বুকে কষ্ট লাগে।
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, সিপিডি এবং চ্যানেল আই মিলে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী আন্দোলন নামে সারাদেশে ঘুরে বলল, বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিবিদ ভালো না। একটা বিরাজনীতিকরণের ক্ষেত্র তৈরি করে, তার খেসারত হিসেবে, তাঁকে ২১ পদক দেওয়া খালেদা জিয়াকে জেল খাটতে হয়, এবং যিনি স্বাধীনতা পুরস্কার দিলেন তাঁকেও বন্দী থাকতে হয়। এমন অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী মানুষ, তারপরও কোনো সরকারের কমিটিই তাঁকে পুরস্কার দিতে ভুল করে নাই। চ্যানেল আইয়ের যে কাউকে জিঙ্গেস করেন বলবে রাত ১২ টার পরে শাইখ সিরাজের আওয়ার সেখানে সরকারের বিষোদগার করাই হচ্ছে মূল কাজ।
বাংলা ইনসাইডার/ এএফ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।