নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৭ পিএম, ২৬ মার্চ, ২০১৮
১৯৮৪ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান মাটি ও মানুষের উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন কৃষিবিদ রেজাউল করিম। একই বছরের শেষে অনুষ্ঠানটিতে উপস্থাপক হিসেবে যোগ দেন শাইখ সিরাজ। শুরু থেকে অনুষ্ঠানটি দর্শকপ্রিয় হয়, পায় নানা পুরষ্কার। কিন্তু পুরো অনুষ্ঠানের অর্জনকে নিজের কৃতিত্ব বলে জাহির করে নানা রকম ব্যক্তিগত সুবিধা নেন শাইখ সিরাজ। এমন অভিযোগ করেন রেজাউল করিম।
রেজাউল করিম বলেন, যেটি অনুষ্ঠানের অর্জন সেটি ব্যক্তিগত ভাবে হাইজ্যাক করা হয়েছে। মৎস্য মেলায় পদক পেয়েছে মাটি ও মানুষ সেটি গ্রহণ করেছেন শাইখ সিরাজ, কৃষি মেলায় পদক পেয়েছে মাটি ও মানুষ সেটি গ্রহণ করেছেন শাইখ সিরাজ। তাতে হয়েছে কি মাটি ও মানুষের কৃতিত্ব চাঁপা পড়ে গেছে ব্যক্তির কৃতিত্ব বড় হয়ে উঠেছে।
এই কৃষিবিদ আরও বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচীর প্রশংসায় ব্যস্ত ছিলেন শাইখ সিরাজ। এভাবেই তোষামোদি করে ১৯৯৫ সালে বাগিয়ে নেন একুশে পদক।
রেজাউল করিম প্রশ্ন তোলেন, একুশে পদক কে পায়? একজন সংস্কৃতি কর্মী পায়, একুশে পদক একজন সাহিত্যিক পায়, একজন শিক্ষক পায়। কৃষি সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে কেউ একুশে পদক পায় এটি কিন্তু এযাবৎ কালে আর হয়নি। ওই একটি মাত্র হয়েছিল। তাতে বোঝা যায় এটির পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব, ব্যক্তিগত সম্পর্ক এগুলি কাজ করেছে। তার মানে ব্যক্তিগত সম্পর্ক দিয়ে যদি পদক আনতে হয়ে তবে সে পদকের মূল্য কতখানি?
চলতি বছর স্বাধীনতা পদকের প্রাথমিক তালিকায় না থাকলেও চূড়ান্ত তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সমর্থ হন শাইখ সিরাজ। অবশ্য এ নিয়ে শাইখ সিরাজ বলেন ভিন্ন কথা। পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকার তো সরকার। রাষ্ট্র সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। কখনো এক সরকার আসে আরেক সরকার যায়। এভাবেই তো হয় জিনিসগুলো। এখন জনগণ তার কাজের জন্যে রাষ্ট্র তাকে পুরস্কৃত করে। সেই জায়গা থেকে প্রশ্নটি আপনি করেছেন আমি উভয়ের কাছেই হয়তোবা কাজটির জন্য সবার কাছে সমাদৃত, সেটা হয়তো একটা বড় কারণ হতে পারত।
ডিবিসি নিউজ প্রধান সম্পাদক মঞ্জরুল ইসলাম একটি টকশোতে এ বিষয়ে বলেন, শাইখ সিরাজ সাহেবকে তিনটি কারণে অভিনন্দন জানাতে চাই। প্রথমে হচ্ছে তিনি একটি পুরষ্কার পেয়েছেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার। দ্বিতীয় হচ্ছে একটি ক্যাটাগরি প্রবর্তন করে পুরস্কার পাবার সৌভাগ্যবান ব্যক্তি তিনি। অর্থাৎ ক্যাটাগরি কৃষি সাংবাদিকতা বলে বাংলাদেশের কিছু ছিল না স্বাধীনতা পুরস্কারে সেটি। আর তৃতীয় হচ্ছে অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব এটি আমরাও রিপোর্ট করেছি বাংলাদেশের ৪৭ বছরের ইতিহাসে দেখা যায় একটি সরকারের ক্ষেত্রেও যাঁকে রিকগনাইজ করা হয় পড়ে তাদের এক ধরণের নীতি আদর্শ মতের কাছাকাছি মানুষকে পরবর্তী সরকারের কাছে উনি পুরষ্কার পান এরকম নজিরবিহীন। শাইখ সিরাজ অনন্য সাধারণ দৃষ্টান্ত। ১৯৯৪ সালে তিনি একুশে পদক পেয়েছিলেন। এবং সেই সময় ড. এমাজুদ্দিন স্যার সহ অনেকেই পেয়েছিলেন। তাদের ব্যক্তিগত পরিচয় আমরা জানি। এবং অনেক বছর পরে প্রথম বার কিন্তু যেমনটি আপনাদের প্রতিবেদনে এসেছে তেমনটি আমরাও কিন্তু রিপোর্ট করেছি। এবার ১৮ জনের মধ্যে ১৬টি পদক ঘোষণা করা হয়েছে। এবং তাঁর পরে দুজনের নাম ঘোষণা এটাও কিন্তু একটু ব্যতিক্রমী এটি কাইন্ড অফ আমাদের ওই গ্রেস দিয়ে পাশ করানো কিংবা পড়ে রেজাল্ট ঘোষণা করার মতো ব্যাপার কিনা এই কারণে আমাদের কাছে একটু চোখে ঠেকেছে। এবং আমরা রিপোর্টটি করেছি। বাংলাদেশের পরপর দুই জন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার নেওয়া এটা কিন্তু সৌভাগ্যবান ব্যক্তিরই ব্যাপার। মোজাম্মেল বাবু একটি অনুষ্ঠানে বলছিলেন ২০০৬ সালে যখন আমরা সৎ ও যোগ্য প্রার্থী আন্দোলন নামে যারা সক্রিয় চিলেন আমাদের পেশাজীবী মানুষের মধ্যে তাদের মধ্যে কিন্তু শাইখ সিরাজ সাংবাদিক হিসেবে একজন প্রথিতযশা ও অগ্রগণ্য মানুষ ছিলেন। যখন মাইনাস টু ফরমুলা দিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা নেবার নাম আসছিল সেখানেও অনার নাম সামনের দিকে আসছিল। অর্থাৎ তাঁর মানে তিনি সেইরকম সর্বজন গ্রাহ্য মানুষ জাকে আওয়ামীলীগের লোকজন পছন্দ করে, বিএনপির লোকজন পছন্দ করে, আওয়ামীলীগ-বিএনপির দুই নেত্রীকে মাইনাস করতে চায় এইরকম লোকজনও পছন্দ করে। এরকম বিরল ব্যক্তিত্বের মানুষ নিশ্চয়ই বাংলাদেশের কম। কিন্তু একটি তথ্য আমি দিতে চাই যেটা শাইখ সিরাজ ভাই বলেছেন যে সকলের কাছে সমাদৃত হতেই পারেন। কিন্তু ব্যতিক্রমী ঘটনা হলো উনি আমাদের এটিসিও এর নেতা ছিলেন, আমরা জানি কতগুলো প্রতিষ্ঠান যেমন এফবিসিসিআই এটিসিও তে সাধারণত যারা দায়িত্বে থাকেন সেই সময় সরকারের অন্তত মতের অথবা আদর্শের কাছাকাছি মানুষগুলো না থাকলে সংগঠনগুলো পরিচালনা কঠিন হয়। শাইখ সিরাজ কিছু দিন আগেও বিনপির আমলে এটিসিও’ র মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন। যেটার প্রধান আহ্বায়ক ছিলেন জনাব মোসাদ্দেক হোসেন ফালু। আওয়ামী লীগ শাসনামল শুরু হবার পর অনেকদিন এটিসিও নিষ্ক্রিয় ছিল। এখন এটিসিও র সদস্যরা বসে মিটিং করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করেছে। আজকে নতুন প্রেসিডেন্ট হচ্ছে জনাব সালমান রহমান এবং সিনিয়র সভাপতি হচ্ছে জনাব মোজাম্মেল বাবু আরেকে জন সহ সভাপতি হচ্ছে জনাব আরিফ সাহেব দেশ টিভির। ফলে এই বাস্তবতায় আমরা জানি বাংলাদেশের সরকার কি ভাবে চলে। অর্থাৎ কতগুলো প্রতিষ্ঠানকে চলার ক্ষেত্রে মানুষের বিশ্বাস ভাজন আস্থার কাছাকাছি মানুষগুলো থাকে। এই কারণেই পুরষ্কার বিতরণের এই জায়গাটা নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত আলোচনা। এই ১৮ জনের মদ্যে সেখানে কিন্তু আরও একজন বিশেষ পুরষ্কার পেয়েছেন। বীর উত্তম এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ। ওনার মুক্তিযুদ্ধের অবদানের কথা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলে নাই। তাকে যখন সামনের সারিতে দেখি আমাদের গর্বে বুক ভরে যায়। কারণ তিনি জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। সেই জায়গায় অন্যদের নামটা যখন পাশাপাশি আসে তখন মনে প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক।
বাংলা ইনসাইডার/ডিজি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সেনাপ্রধান মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া
মন্তব্য করুন
আগামী মে মাসে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ সামরিক মহড়া হতে পারে বলে চীনা গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। আগামী মে মাসে এই মহড়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও পিপলস ডেইলি। এরকম একটি সামরিক মহড়া এই অঞ্চলে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ফেলবে তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।
চীনের তথ্য অনুযায়ী, দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতেই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এর একটি কন্টিনজেন্ট যৌথ মহড়ায় যোগ দিতে আগামী মে মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশে আসবে। আর এই বিষয়ে গতকাল দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালকে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন যে, প্রতিবেশী দেশ কিংবা উন্নত এই ধরনের মহড়ার ওপর ভারত সবসময়ই দৃষ্টি রাখে।
গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ নিয়ে চীনের অতি আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটে সহায়তা করার জন্য যেমন তারা আশ্বাস দিচ্ছে, তেমনই নানা ধরনের প্রকল্প প্রস্তাব নিয়েও চীন আগ্রহ দেখাচ্ছে।
চীনের সঙ্গে ভূরাজনীতিতে ভারতের কৌশলগত বিরোধ রয়েছে। এমন এক সময়ে চীন বাংলাদেশে এই যৌথ সামরিক মহড়া করতে যাচ্ছে যে সময় ভারতের নির্বাচন হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এখন ভারতের নীতি নির্ধারক এবং সকলের দৃষ্টি নির্বাচনের দিকে। আর একারণেই এখন চীনের এই সামরিক মহড়ার যৌক্তিকতা এবং এর প্রভাব এই উপমহাদেশের শান্তি এবং নিরাপত্তায় কীভাবে পড়বে তা নিয়ে নানা রকম আলাপ আলোচনা চলছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, মালদ্বীপ হারানোর পর ভারতের এই অঞ্চলে কৌশলগত একমাত্র মিত্র হল বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে নানা বাস্তবতার দিক থেকে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন এবং সেভেন সিস্টারে শান্তি ও অখণ্ডতা সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতও বাংলাদেশকে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। গত নির্বাচনে ভারতের সহযোগিতার কথা আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। আর দুই দেশের সম্পর্ক ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর যখন নতুন মাত্রায় উত্তীর্ণ হবে ভাবা হচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এই যৌথ সামরিক মহড়ার বিষয়টি সামনে এসেছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন যে, তিনি প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে যাবেন ভারতে। আবার প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরেও ভারতে যাওয়ার কথা। নির্বাচনের পরপর এরকম একটি সফর হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানানও হয়েছে। কিন্তু যখন দুই দেশের সম্পর্ক একটি নতুন মাত্রা স্পর্শ করছে তখন ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের চীনপ্রীতি এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ অমূলক নয় বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে ভারত, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিনটি প্রধান দেশেরই আগ্রহ রয়েছে।
বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের পর চীনকে অনেক আগ্রাসী কূটনীতিতে দেখা যাচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। এমনকি যে সমস্ত মন্ত্রীরা ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত, তাদের সাথেও চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে চীনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ নগদ অর্থ বা ঋণ এর দায় মেটানোর জন্য চীনের কাছে হাত পাততে পারে এমন গুঞ্জনও রয়েছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ যে এতদিন ধরে ভারসাম্যের কূটনীতি রক্ষা করেছিল সেটি কতটা রক্ষা করতে পারবে সেটি এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। আর চীনের সাথে এই যৌথ সামরিক মহড়ার ফলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কোনদিকে যায় সেটাও দেখার বিষয় বলে অনেকে মনে করছেন।
বাংলাদেশ ভারত চীন ভূরাজনীতি সামরিক মহড়া
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এদিন দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠকের পর পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি ছাড়াও একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র (এলওআই) স্বাক্ষরিত হয়।
বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা সুবিধায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।
বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের। দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।
এদিন বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সেই সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান আয়তন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেন এবং শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজিকরণ এবং ব্যবসা সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। সরকারপ্রধান বলেন, আমি থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে, বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।
এদিন বৈঠকে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বিমসটেক মোট ১.৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান অর্জনের জন্য বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সরকারপ্রধান দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ড বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
নরসিংদীর শিবপুরে প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে প্রেমিক সিফাত (১৯) নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। প্রেমিকার মৃত্যুর ১৯ দিন পর ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে প্রেমিক সিফাত পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেল আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি। কারও সঙ্গে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না সবাই দোয়া কইরো শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেন একসঙ্গে থাকতে পারি। আমার শেষ ইচ্ছা তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি পরিস্থিতির শিকার। আর আমার কোনো কিছুর জন্য
তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী না, এমনকি আমার কোনো ভাই-ব্রাদার বা বন্ধুও দায়ী
না। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতে হবে। সত্যি বলতে আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নাই। আমাকে যদি
কেউ বাঁচিয়েও নেয় আমি পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করব। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা
কইরো না। বেঁচে থেকে আর কি হবে, যার জন্য বাঁচার কথা ছিল সে তো আর নেই।’
সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আমারে কথা দিছিলো যদি বাঁচি তো একসঙ্গে বাঁচমু
আর যদি মরতে হয় তো একসঙ্গে মরমু। আমি তানহারে এই কথাটাই দিছিলাম। কিন্তু একটা চরিত্রহীন
জানোয়ার আমাদের সুখে থাকতে দিল না। ওদের অত্যাচারে তানহা আত্মহত্যা করল। এক প্রকার
তারা তানহারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করল। জানোয়ারের পরিবারকেই আমি খুনি বলে দাবি করি।
আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে জানোয়ারের পরিবার স্বাধীনভাবে চলবে, ওদের কোনো সাজা হবে না।
আর অন্যদিকে আমার তানহা শেষ, আমি অর্ধেক শেষ আমার পরিবারও শেষ। আমি আর কষ্ট সহ্য করতে
পারছি না (প্রমাণ হয়ে যাক দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসতাম) আর আমি চরিত্রহীন জানোয়ারের
পরিবারের সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এমন সাজা দেওয়া হোক অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন
এমন না হয়। আর যেন কারও প্রাণ না ঝরে। কেউ যেন ব্ল্যাকমেইলের শিকার না হয়। আমার শেষ
একটাই ইচ্ছে- আমরা দুজনে সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম, বাস্তবে তা হলো না। তাই
আমার মৃত্যুর পর তানহার কবরের পাশে যেন আমার কবর দেওয়া হয়। আমি আঙ্গুররে মারছি শুধু
একটা কারণে, হেয় তানহার হাতে ধরছিল। তানহারে খারাপ প্রস্তাব দিছিল। আমি সহ্য করতে পারি
নাই। তাই হেরে কোবাইছি। আমরা প্রেম করছি এটাই কি অপরাধ ছিল। আমাদের জীবন শেষ করে দিল।
ভালো থাকুক আঙ্গুর আর আঙ্গুরের পরিবার।
এদিকে সিফাতের বাবা ইব্রাহিম জানান, প্রতিবেশী চাচাতো বোন খলিলের
মেয়ে তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার ছেলে সিফাতের। গত ৩ এপ্রিল দিবাগত
রাত ২টার সময় তানহা ঘরের ভেতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দেখে
ফেলে একই এলাকার রাজুর ছেলে আঙ্গুর (২৫)।
এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কুপ্রস্তাবে
রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে টাকা দাবি করে। পরে সে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে
কুপিয়ে আহত করে। মারামারির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। লোকলজ্জায় গত ৬ এপ্রিল রাতে
তানহা নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এসব বিষয়ে গ্রামীণ সালিস দরবার হওয়ার কথা ছিল। সালিস দরবারে আমাকে
ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। দরবারে গেলে
জমির দলিল নিয়ে যেতে বলতো। এসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে
ছেলে সিফাত। আমি এর বিচার দাবি করছি।
শিবপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ
উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো
হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মন্তব্য করুন
আগামী মে মাসে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ সামরিক মহড়া হতে পারে বলে চীনা গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। আগামী মে মাসে এই মহড়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও পিপলস ডেইলি। এরকম একটি সামরিক মহড়া এই অঞ্চলে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ফেলবে তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।