নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩২ পিএম, ২১ অগাস্ট, ২০১৮
রাত পেরোলে ঈদ। তবে এরই মধ্যে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। ঈদ আনন্দকে নিজ নিজ আঙ্গিনায় আবদ্ধ করতে ব্যস্ত প্রত্যেকেই। কিন্তু, আমাদের চারপাশে এমন অনেকেই আছে, যাদের ঈদ আছে কিন্তু আনন্দ নেই। এতিম শিশুদের কথা বলছি। কেননা, ঈদের আনন্দ নতুন জামায় নয়, নয় হাজারো মজাদার খাবারের সমারোহে। পরিবার ছাড়া ঈদ আনন্দের সার্থকতাই বা কোথায়? এই সমাজে আমরা প্রত্যেকেই যেন আত্মকেন্দ্রিক আমরা। একবার কি ভেবে দেখেছি, পিতা-মাতা হারিয়ে এসব অসহায়, নিঃস্ব এতিমরা কীভাবে ঈদের দিন কাঁটায়?
সারা বছরই দু’বেলা পেট ভরে খেতে পাওয়াই তাঁদের এক পরম সৌভাগ্য। সেখানে তাদের কাছে নতুন জামা স্বপ্নেরই মতো। এদের কাছে ঈদ যেন নতুন চাঁদ দেখার মাঝেই সীমাবদ্ধ। ঈদের দিন আর বছরের অন্যান্য দিন এদের কাছে প্রায় একই।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এতিমখানা ঘুরে দেখা যায় একই চিত্র। এতিমরা জানেই না ঈদ আনন্দ কি। পরিবারের সদস্যরা ছাড়া তাদের ঈদ আনন্দ যেন পোলাও-মাংস খাওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধও। কেননা শুধুমাত্র খাওয়া-দাওয়া ছাড়া তাদের কাছে বছরের অন্য দিনের চেয়ে এদিন খুব বেশি ভিন্ন নয়। বরং, ঈদের দিনটা কেন যেন তাদের কাছে বিষাদের মতো। অন্যদের পরিহিত নতুন জামা, পরিবারের সঙ্গে কাটানো যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তাদের অপ্রাপ্তির নিয়তিকে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ছিদ্দিকিয়া এতিমখানায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় এখানকার আবাসিক ছাত্ররা আগামীকালের গরু কোরবানির চাপাতি-ছুরি ধার দিতেই ব্যস্ত। কথা হয় মাদ্রাসার এতিম আবাসিক ছাত্র মোঃ রহমত উল্লাহর সঙ্গে। তার কাছে ঈদ আনন্দ যেন গরুর মাংস খাওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ। ঈদের নতুন জামার ব্যাপারে সে জানায়, ‘ভালা মতন কাপড়ডা ধুইয়া ইস্ত্রি করলেই সব জামাই আমাগো কাছে নতুন।’ ঈদের আনন্দ নিয়ে তার চোখে-মুখে নেই কোন বাড়তি উৎসাহ-উদ্দীপনা। ঈদের দিনের পরিকল্পনার কথা জিজ্ঞাসা করলে জানায়, সকালে নাস্তা করে গরু কোরবানি দিতে বের হবে। কোরবানি শেষে বের হতে হবে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহে। কখন ফিরবে ঠিক নাই। ঠিক এমনটাই বক্তব্য বাকি এতিম ছাত্রদেরও।
ঈদের দিনে এতিমদের খাবারের ব্যাপারে ছিদ্দিকিয়া এতিমখানার সিনিয়র শিক্ষক মো. মাহবুব আলম জানান, ঈদের দিনে এতিমদের জন্য ভালো খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। দুপুরে খাসি ও রাতে গরুর মাংসের ব্যবস্থা রেখেছে তারা। এতিম ছাত্রদের সুযোগ সুবিধার কথা জানতে তিনি জানান, সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তর থেকে মাত্র ২৮ জন ছাত্রের জন্য সাহায্য পান ছাত্রপ্রতি এক হাজার টাকা। কিন্তু, ছাত্র আছে ৮০ জন। প্রতি মাসেই টাকার ঘাটতি পড়ে। কিছু আজীবন দাতা সদস্য ও মিলাদ-খতমের টাকা দিয়েই টিকে আছেন তারা।
এদের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে থাকছেন রাজধানীর আদাবরের জামিয়া আরাবিয়া আহসানুল উলূম এতিমখানার এতিমরা। ৫’শ এতিমের আবাসিক ব্যবস্থা আছে এখানে। ডাল-ভাতের ব্যবস্থা করতেই রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। কেননা, শুধুমাত্র দাতা সদস্য ও এলাকাবাসীর সাহায্যের উপরেই টিকে আছে এ প্রতিষ্ঠান। দিনে ৫০ কেজির তিন বস্তা চালের প্রয়োজন হয় এত বিপুল ছাত্রের ক্ষুধা মেটাতে। মাসে তাদের খরচ হয় প্রায় নয় লাখ টাকা। মাসের পর মাস বেতন নিচ্ছেন না শিক্ষকরা, বরং এতিমখানার মাসিক খরচ নিজেদের কাঁধে ঋণ হিসাবে বয়ে বেড়াচ্ছেন।
ঈদের পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয় জামিয়া আরাবিয়া আহসানুল উলূম এতিমখানার ছাত্র মো. আরিফুর রহমানের সঙ্গে। আরিফ জানায়, কোরবানির গরু জবাই ও চামড়া সংগ্রহেই ঈদ আনন্দ তাদের। অন্য সব এতিমদের নিয়েই সে তার পরিবার বানিয়েছে। কে বলে তার কেউ নেই? এতিমরা অল্পতেই তুষ্টও। যতটুকু পাচ্ছে যদিও পর্যাপ্ত নয় কিন্তু তাতেই খুশি সে। নতুন জামার ব্যপারে সে জানায়, কোরবানির ঈদে কেউ জামা-কাপড় সাহায্য হিসাবে দেয় না, দেয় রোজার ঈদে। এতিমখানা কর্তৃপক্ষের তো আর প্রত্যেকের নতুন জামা কিনে দেয়ার সামর্থ্য নাই, তাই সে সহ বাকি এতিমরা এ ব্যাপারে কোন প্রত্যাশাও রাখে না।
এরপর কথা হয় জামিয়া আরাবিয়া আহসানুল উলূম এতিমখানার প্রিন্সিপাল মুফতী মোহাম্মদ আমির হুসাইনের সঙ্গে। তিনি জানান, শুধুমাত্র এলাকাবাসীর সাহায্যেই এখানকার এতিমরা কায়ক্লেশে দিন কাটাচ্ছে। সরকারীকরণের জন্য তিনি কয়েকবারই সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরে ধরনা দিয়েছেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। শেষমেশ ধৈর্য্য হারিয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
এমন দৃশ্য রাজধানীসহ সারা দেশের এতিমখানার শিশুদের। এভাবেই কাটে তাদের ঈদ। কেটেই তো যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। কেউই নেই এসব এতিমখানার এতিমদের চাঁপা আর্তনাদ শোনার। আমাদের সমাজের উচ্চ শ্রেনির মানুগুলো যদি তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, এমনকি তারা যদি শুধুমাত্র তাদের যাকাত-ফিতরাও সঠিকভাবে দেয়, তবে এসব এতিমদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে, ভুলে যাবে পিতা-মাতা হারানোর কষ্ট।
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
এভিয়েশন শিল্প যুক্তরাজ্য বিমান মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারত পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা লোকসভা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
সরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এবার জাতীয় সংসদে তোপের মুখে পড়লেন সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন। কারও নাম উল্লেখ্য না করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু অভিযোগ করেছেন একজন সদস্য সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে গিয়ে ৩৪৯ জন এমপির জন্য মর্যাদাহানিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ জন্য তিনি স্পিকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
ভারতে এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে। এই লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী ৪ জুন জানা যাবে নতুন সরকার কারা গঠন করছে। নির্বাচন নিয়ে চলছে অনিশ্চয়তা। বিজেপির কপালে ভাঁজ। কিন্তু এর মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা সফরে আসছেন। দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতেই বিনয় মোহন কোয়াত্রার এই বাংলাদেশ সফর বলে কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দেশে সরকারি মালিকানাধীন ২৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান লোকসানে চলছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। তিনি জানান, লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) অধীন চারটি, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন ১৫টি এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীন নয়টি কোম্পানি রয়েছে।
আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে উপজেলা নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ না থাকলেও স্থানীয় পর্যায়ে এই নির্বাচন নিয়ে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিএনপিকে ছাড়াও বাংলাদেশের গণতন্ত্র যে অব্যাহত থাকতে পারে এবং নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ থাকতে পারে- সেটি প্রমাণের নির্বাচন উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হারানোর কিছু নেই। অর্জন করবার আছে অনেক কিছুই। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনের জন্য তিনটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন।