নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২১ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
রাজধানী শহর ঢাকায় নাগরিকদের বিনোদনের জন্য যতগুলো পার্ক আছে তার মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান একটি। ইতিহাস-ঐতিহ্যের জ্বলন্ত সাক্ষী আর গাছ-পালা বেষ্টিত এই নগর উদ্যানে। প্রতিদিন কম করে হলেও দশ হাজার দর্শনার্থী আসেন এখানে ঘুরতে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ-তরুণী আর শিশুদের সংখ্যা বেশি হলেও নানা বয়সী মানুষই এখানে আসেন। ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে হয় কয়েক গুন। আজ মঙ্গলবার আশুরার সরকারী ছুটিতে দুপুরের পর থেকেই বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর সংখ্যা। অবকাশ বা সুস্থ্য বিনোদনের জন্যে আসা এসব দর্শনার্থীরা কি সন্তুষ্টি নিয়ে ঘরে ফিরতে পারছেন পার্ক দর্শণ শেষে?
সরেজমিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, টিএসসি এলাকা হয়ে উদ্যানের ভেতরে ঢোকার আগেই চোখে পড়ে মূল ফটকের দুই পাশে অস্থায়ী ভাতের হোটেলসহ চা, সিগারেট ও ভাঁজা-পোড়ার দোকান। এসব দোকান মাড়িয়ে উদ্যানের ভেতর প্রবেশ করাই যেন ছোট-খাট একটা যুদ্ধের সমান। ভেতরে ঢুকলেই বাতাসের সাথে নাকে এসে লাগবে দুর্গন্ধ। ডান পাশ ধরে হাটতে থাকলে কিছু দূর পরেই চোখে পড়বে মুক্তমঞ্চ। সেখানে দিন রাত মানুষ থাকে। মুক্ত মঞ্চের ভেতরে এসে দাড়াতেই নাকে লাগবে গাঁজার গন্ধ। বিভিন্ন দলে দলে ভাগ হয়ে সেখানে গাজা সেবন করছেন অনেকেই। এর মধ্যে এক দম্পতি তাদের ছোট্ট সন্তানকে ঘুরতে নিয়ে এসে সেখানে ঢুকে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়লেন বলে মনে হয়।
শুধু মুক্তমঞ্চের ভেতরে নয় বাহিরেও চলে অবাধে গাঁজা সেবন এবং সেখানে খুচরা গাঁজা বিক্রিও করা হচ্ছে দায়িত্বরত আনসার ও পুলিশের চোখ ফাঁকি। খোজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে এক সময় প্রকাশ্যেই গাঁজা বিক্রি করত মালতি নামে এক মহিলা। গাঁজা বিক্রির অপরাধে তাকে বেশ কয়েকবার জেলও খাটতে হয়েছে। জেল থেকে বেড়িয়ে এসে কিছুদিন ভালো ছিলেন তারপর আবার গাঁজা বিক্রি করেছেন।
এছাড়া কালী মন্দিরের পেছনটায়ও নিয়মিত নেশার আসর বসাসহ সংঘটিত হয় নানা অনৈতিক কর্মকান্ড। উদ্যানের ভ্রাম্যমান চা বিক্রেতা শরিফের সাথে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যা সাতটার পরে এখানে কোন দর্শনার্থী থাকা নিষেধ। তাই সন্ধ্যা হতে হতেই এই জায়গা খালি হয়ে যায়। তখন এক নতুন রুপে আবির্ভাব হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। শরীফ আরো জানান, সন্ধ্যার পরে কালী মন্দিরের পেছনে পতিতা নারীদের আনাগোনা শুরু হয় এবং খদ্দের পেলে সেখানেই করেন তারা অনৈতিক কর্মকান্ড।
এদিকে উদ্যান ঘুরে দেখা যায়, একুশে বই মেলার সময় অস্থায়ীভাবে তৈরী করা টয়লেটগুলো এখনো সেখানে রয়ে গেছে, নিয়ে যাওয়া হয়েছে শুধু টিনের কাঠামো। বাকি রিঙ, স্ল্যাব আর গর্ত রয়ে গেছে সেভাবেই। সেসব গর্তে দিনে এক-দুইজন দর্শনার্থী পড়ে আহত হন বা শুকনো মল গায়ে মেখে যাওয়ায় পড়েন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।
হাটতে হাটতে যখন আপনি শিখা চিরন্তনের সামনে গিয়ে পৌছুবেন ঠিক তার আগে বাম পাশে রাধাচূড়া,কৃষ্ণচূড়াসহ জারুল গাছের ছায়া বেষ্টিত বিশাল জায়গা চোখে পড়বে। সেসব গাছ থেকে নাম জানা,অজানা অনেক পাখির ডাক আপনাকে মুগ্ধ করবে। কিন্তু সেই ছায়া ঘেড়া নীবির পরিবেশে আপনি গিয়ে বসতে পারবেন না। ছায়া ঘেড়া সম্পুর্ন জায়গা জুরে ছোট ছোট ঢিবির মতো করে ফেলে রাখা হয়েছে লাল মাটি। ছায়া ঘেরা ওই জায়গার আগে আছে একটা বিশাল খাল। যেটায় ফেলা হয় ময়লা আর সারা দিন আগুন লাগিয়ে রাখা হয়। ময়লা পচা ও পোড়ার গন্ধে মাঝে মাঝে ওই খালের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। এবার ডান পাশে নজর দিলেই চোখে পড়বে অনেক বড় কিন্তু অগভীর পুকুর। সেই পুকুরের মাঝে সুউচ্চ গ্ল্যাস টাওয়ার। ওই গ্ল্যাস টাওয়ারকে বলা হয় স্বাধীনতা স্তম্ভ। ঠিক এই জায়গাটাতেই দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। এই স্মৃতি স্তম্ভ্য ঘিরে যে লেক করা হয়েছে সেটিতে দর্শনার্থীদের ফেলানো বিভিন্ন ময়লা পরিবেশ দূষণ করছে। স্বাধীনতা স্তম্ভের পাশেই রয়েছে স্বাধীনতা জাদুঘর। খুব অল্প মূল্যে সেখান টিকেট সংগ্রহে জেনে আসা যায় দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আদি-অন্ত।
শিখা চিরন্তন এলাকাটা বেশ পরিপাটি মনে হলেও তার পাশের টিলাতেই বসে নিয়মিত মাদকের আড্ডা। চোখে পরে পার্কে ঘুরতে আসা অনেকের উপরেই হিজড়ারা চালায় চাঁদাবাজি। ঘুরতে আসা প্রেমিক যুগল থেকে শুরু করে বিবাহিত দম্পতিরাও বাদ যায় না এদের হাত থেকে। পার্কে ঘুরতে আসা নব্য বিবাহিত আদনান-অন্তরা দম্পতি জানান, হিজড়াদের কারণে অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় মাঝে মধ্যেই। তারা অনেক টাকা দাবি করে বসে। না দিলে, বিভিন্নভাবে হেনস্থা করে। এরা একটা উৎপাতে পরিনত হয়েছে।
উদ্যানে সার্বক্ষনিক বেশ কিছু পুলিশ ও আনসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। এসব অনিয়ম ও দুর্ভোগ নিয়ে কথা হয় দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্যের সাথে। তিনি বলেন, আগের থেকে উদ্যানের পরিবেশ অনেক ভাল এখন। পরিবেশগত সমস্যার ব্যপারটায় আমরা কিছু করতে পারবো না। তবে, মাদক বিক্রির ব্যাপারটা আমাদের চোখে পড়ে না। চোখে পড়লে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবৈধভাবে বসা খাবার হোটেল ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব দোকান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অনুমতি নিয়ে বসানো হয়। মাস বা সপ্তাহে তাদের দেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিমান টাকা। তারাই প্রসাশনসহ অন্যান্যদের ম্যানেজ করে রাখে। এই জন্য কোন ঝামেলা হয় না।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সেনাপ্রধান মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া
মন্তব্য করুন
আগামী মে মাসে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ সামরিক মহড়া হতে পারে বলে চীনা গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। আগামী মে মাসে এই মহড়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও পিপলস ডেইলি। এরকম একটি সামরিক মহড়া এই অঞ্চলে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ফেলবে তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।
চীনের তথ্য অনুযায়ী, দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতেই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এর একটি কন্টিনজেন্ট যৌথ মহড়ায় যোগ দিতে আগামী মে মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশে আসবে। আর এই বিষয়ে গতকাল দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালকে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন যে, প্রতিবেশী দেশ কিংবা উন্নত এই ধরনের মহড়ার ওপর ভারত সবসময়ই দৃষ্টি রাখে।
গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ নিয়ে চীনের অতি আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটে সহায়তা করার জন্য যেমন তারা আশ্বাস দিচ্ছে, তেমনই নানা ধরনের প্রকল্প প্রস্তাব নিয়েও চীন আগ্রহ দেখাচ্ছে।
চীনের সঙ্গে ভূরাজনীতিতে ভারতের কৌশলগত বিরোধ রয়েছে। এমন এক সময়ে চীন বাংলাদেশে এই যৌথ সামরিক মহড়া করতে যাচ্ছে যে সময় ভারতের নির্বাচন হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এখন ভারতের নীতি নির্ধারক এবং সকলের দৃষ্টি নির্বাচনের দিকে। আর একারণেই এখন চীনের এই সামরিক মহড়ার যৌক্তিকতা এবং এর প্রভাব এই উপমহাদেশের শান্তি এবং নিরাপত্তায় কীভাবে পড়বে তা নিয়ে নানা রকম আলাপ আলোচনা চলছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, মালদ্বীপ হারানোর পর ভারতের এই অঞ্চলে কৌশলগত একমাত্র মিত্র হল বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে নানা বাস্তবতার দিক থেকে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন এবং সেভেন সিস্টারে শান্তি ও অখণ্ডতা সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতও বাংলাদেশকে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। গত নির্বাচনে ভারতের সহযোগিতার কথা আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। আর দুই দেশের সম্পর্ক ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর যখন নতুন মাত্রায় উত্তীর্ণ হবে ভাবা হচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এই যৌথ সামরিক মহড়ার বিষয়টি সামনে এসেছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন যে, তিনি প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে যাবেন ভারতে। আবার প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরেও ভারতে যাওয়ার কথা। নির্বাচনের পরপর এরকম একটি সফর হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানানও হয়েছে। কিন্তু যখন দুই দেশের সম্পর্ক একটি নতুন মাত্রা স্পর্শ করছে তখন ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের চীনপ্রীতি এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ অমূলক নয় বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে ভারত, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিনটি প্রধান দেশেরই আগ্রহ রয়েছে।
বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের পর চীনকে অনেক আগ্রাসী কূটনীতিতে দেখা যাচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। এমনকি যে সমস্ত মন্ত্রীরা ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত, তাদের সাথেও চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে চীনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ নগদ অর্থ বা ঋণ এর দায় মেটানোর জন্য চীনের কাছে হাত পাততে পারে এমন গুঞ্জনও রয়েছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ যে এতদিন ধরে ভারসাম্যের কূটনীতি রক্ষা করেছিল সেটি কতটা রক্ষা করতে পারবে সেটি এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। আর চীনের সাথে এই যৌথ সামরিক মহড়ার ফলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কোনদিকে যায় সেটাও দেখার বিষয় বলে অনেকে মনে করছেন।
বাংলাদেশ ভারত চীন ভূরাজনীতি সামরিক মহড়া
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এদিন দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠকের পর পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি ছাড়াও একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র (এলওআই) স্বাক্ষরিত হয়।
বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা সুবিধায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।
বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের। দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।
এদিন বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সেই সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান আয়তন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেন এবং শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজিকরণ এবং ব্যবসা সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। সরকারপ্রধান বলেন, আমি থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে, বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।
এদিন বৈঠকে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বিমসটেক মোট ১.৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান অর্জনের জন্য বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সরকারপ্রধান দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ড বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
নরসিংদীর শিবপুরে প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে প্রেমিক সিফাত (১৯) নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। প্রেমিকার মৃত্যুর ১৯ দিন পর ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে প্রেমিক সিফাত পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেল আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি। কারও সঙ্গে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না সবাই দোয়া কইরো শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেন একসঙ্গে থাকতে পারি। আমার শেষ ইচ্ছা তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি পরিস্থিতির শিকার। আর আমার কোনো কিছুর জন্য
তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী না, এমনকি আমার কোনো ভাই-ব্রাদার বা বন্ধুও দায়ী
না। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতে হবে। সত্যি বলতে আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নাই। আমাকে যদি
কেউ বাঁচিয়েও নেয় আমি পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করব। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা
কইরো না। বেঁচে থেকে আর কি হবে, যার জন্য বাঁচার কথা ছিল সে তো আর নেই।’
সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আমারে কথা দিছিলো যদি বাঁচি তো একসঙ্গে বাঁচমু
আর যদি মরতে হয় তো একসঙ্গে মরমু। আমি তানহারে এই কথাটাই দিছিলাম। কিন্তু একটা চরিত্রহীন
জানোয়ার আমাদের সুখে থাকতে দিল না। ওদের অত্যাচারে তানহা আত্মহত্যা করল। এক প্রকার
তারা তানহারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করল। জানোয়ারের পরিবারকেই আমি খুনি বলে দাবি করি।
আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে জানোয়ারের পরিবার স্বাধীনভাবে চলবে, ওদের কোনো সাজা হবে না।
আর অন্যদিকে আমার তানহা শেষ, আমি অর্ধেক শেষ আমার পরিবারও শেষ। আমি আর কষ্ট সহ্য করতে
পারছি না (প্রমাণ হয়ে যাক দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসতাম) আর আমি চরিত্রহীন জানোয়ারের
পরিবারের সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এমন সাজা দেওয়া হোক অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন
এমন না হয়। আর যেন কারও প্রাণ না ঝরে। কেউ যেন ব্ল্যাকমেইলের শিকার না হয়। আমার শেষ
একটাই ইচ্ছে- আমরা দুজনে সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম, বাস্তবে তা হলো না। তাই
আমার মৃত্যুর পর তানহার কবরের পাশে যেন আমার কবর দেওয়া হয়। আমি আঙ্গুররে মারছি শুধু
একটা কারণে, হেয় তানহার হাতে ধরছিল। তানহারে খারাপ প্রস্তাব দিছিল। আমি সহ্য করতে পারি
নাই। তাই হেরে কোবাইছি। আমরা প্রেম করছি এটাই কি অপরাধ ছিল। আমাদের জীবন শেষ করে দিল।
ভালো থাকুক আঙ্গুর আর আঙ্গুরের পরিবার।
এদিকে সিফাতের বাবা ইব্রাহিম জানান, প্রতিবেশী চাচাতো বোন খলিলের
মেয়ে তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার ছেলে সিফাতের। গত ৩ এপ্রিল দিবাগত
রাত ২টার সময় তানহা ঘরের ভেতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দেখে
ফেলে একই এলাকার রাজুর ছেলে আঙ্গুর (২৫)।
এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কুপ্রস্তাবে
রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে টাকা দাবি করে। পরে সে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে
কুপিয়ে আহত করে। মারামারির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। লোকলজ্জায় গত ৬ এপ্রিল রাতে
তানহা নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এসব বিষয়ে গ্রামীণ সালিস দরবার হওয়ার কথা ছিল। সালিস দরবারে আমাকে
ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। দরবারে গেলে
জমির দলিল নিয়ে যেতে বলতো। এসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে
ছেলে সিফাত। আমি এর বিচার দাবি করছি।
শিবপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ
উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো
হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মন্তব্য করুন
আগামী মে মাসে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ সামরিক মহড়া হতে পারে বলে চীনা গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। আগামী মে মাসে এই মহড়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও পিপলস ডেইলি। এরকম একটি সামরিক মহড়া এই অঞ্চলে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ফেলবে তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।