ইনসাইড বাংলাদেশ

বোন রেহানাকে জড়িয়ে ধরে ৭ মার্চের ভাষণ শুনলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:২৮ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০


Thumbnail

স্ক্রিনে চলছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। সেদিকে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ। বাবার বজ্রকন্ঠে ঘোষণা ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ।’

বোনকে জড়িয়ে ধরে বাবার কণ্ঠে শোনা মুক্তির আহ্বান। এমনই এক দৃশ্য দেখলো সবাই। যে আহ্বান শুনে জেগে উঠেছিলো বাংলাদেশের সকল স্তরের মানুষ। যেই কণ্ঠ শুনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সবাই। ৩০ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে রচিত হয় লাল-সবুজের বাংলাদেশের গল্প। সেই কণ্ঠ শুনে আবেগি চোখে তাকিয়ে থাকা।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা আর্ট সামিট আয়োজনের একটি অংশ সাজানো হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। আর্ট সামিট শেষ হয়ে গেলেও এখনো চলছে এই প্রদর্শনী। আর তা দেখতে ২১ ফেব্রুয়ারি শিল্পকলা একাডেমিতে বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে সম্পূর্ণ প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন তারা। এ সময় বঙ্গবন্ধুর একটি ছবির সামনে দাড়িয়ে সেলফিও তোলেন।

বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে চলা বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের বেশ কিছু পত্রিকার খণ্ডাংশ দেখে স্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। কিভাবে আন্দোলনে অংশ নিতেন বা আন্দোলনে অংশ নেয়ার ছবি পত্রিকার প্রকাশ হলে মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা ঘর থেকে বের হতে দিতেন না, এমন অনেক স্মৃতির কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শোনার সময় আবেগ ঝড়ে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর চোখে। বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে জড়িয়ে ধরে জাতির পিতার সম্পূর্ণ ভাষণ শোনেন তাঁরা।

বাঙ্গালির হৃদয়ে একটি বিশেষ জায়গা দখল করে আছে বঙ্গবন্ধু নামটি। এখনো বাঙ্গালিদের জীবনে অনুপ্রেরণা যোগায় বঙ্গবন্ধুর জীবনের গল্পগুলো। বঙ্গবন্ধুর জানা অজানা জীবনের গল্প নিয়েই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ‘লাইটিং দি ফায়ার অব ফ্রিডম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান` নামে বিশেষ এই প্রদর্শনী আয়োজন। যেখানে তথ্যগত সহায়তা প্রদান করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই)।

গত ৭-১৫ ফেব্রুয়ারি সিসমিক মুভমেন্ট নিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে ঢাকা আর্ট সামিটের আয়োজন করা হয়। ঢাকা আর্ট সামিট শেষ হয়ে গেলেও মুজিববর্ষের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে করা বিশেষ প্রদর্শনী ‘লাইটিং দি ফায়ার অব ফ্রিডম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

‘লাইটিং দি ফায়ার অব ফ্রিডম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান` নামের বিশেষ প্রদর্শনীটি মূলত মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করার জন্যই আয়োজন করা। এই বিশেষ প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গল্পগুলো তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ আয়োজনটিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চিত্রকর্ম, ব্যক্তিগত ছবি, সংবাদপত্রের কাটিং, ভিডিও ও ডিজিটাল বই। এ ছাড়াও এখানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণও দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন।

জীবদ্দশায় বঙ্গবন্ধু শোষিত বাংলার খেঁটে খাওয়া মানুষগুলোর জন্যই কাজ করে গেছেন । আর এ জন্যই ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগ, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬’র ৬ দফা, ’৭০ সালের নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ; সবখানেই বাংলার মানুষের অনুপ্রেরণায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু। একইভাবে যুদ্ধের পরেও দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপ্রাণ চেষ্টা এ দেশের মানুষকে এখনো অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে।

যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশকে নতুন করে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা এখনো বিশ্ব দরবারে সমাদৃত। জাতিসংঘে দেয়া তাঁর বাংলা ভাষণের কথা এখনো স্মরণ করা হয় শ্রদ্ধার সঙ্গে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তখন বাংলাদেশকে থমকে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেট থামিয়ে দেয় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে। সপরিবারে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয় তার নাম। কিন্তু কীর্তিমানের মৃত্যু নাই। আর সে কারণেই আজীবন মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন বঙ্গবন্ধু। তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও তার কীর্তি যে মানুষের হৃদয়ে যুগ যুগ বেঁচে থাকবে সেই সাক্ষ্য দিচ্ছে বিশেষ প্রদর্শনী ‘লাইটিং দি ফায়ার অব ফ্রিডম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান`।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘বাংলাদেশের কাছে থাইল্যান্ড সম্ভাবনাময় অংশীদার, চলতি বছরই হবে বাণিজ্য চুক্তি’

প্রকাশ: ১২:২৬ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য থাইল্যান্ডকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের কাছে থাইল্যান্ড একটি সম্ভাবনাময় অংশীদার। চলতি বছরই দেশটির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই হবে।

আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের কাছে থাইল্যান্ড একটি সম্ভাবনাময় অংশীদার। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সমুদ্র বন্দর কেন্দ্রিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সকালে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে যান শেখ হাসিনা। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানানো হয়।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই কুহ ফাহ বিল্ডিংয়ের সামনের লনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময় থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল কর্তৃক প্রদত্ত গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা পরে সরকারি ভবনের অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

বৈঠক শেষে সরকারি বাসভবন ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে, গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে থাইল্যান্ডে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছলে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেওয়া হয়। থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত মন্ত্রী পুয়াংপেট চুনলাইদ অভ্যর্থনা জানান।


থাইল্যান্ড   বাংলাদেশ   বানিজ্য চুক্তি   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

প্রকাশ: ১২:০৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে যান তিনি। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই কুহ ফাহ বিল্ডিংয়ের সামনের লনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময় থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল কর্তৃক প্রদত্ত গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

পরে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা পরে সরকারি ভবনের অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক নথিতে স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

বৈঠক শেষে সরকারি বাসভবন ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে থাইল্যান্ডে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছলে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেওয়া হয়। থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত মন্ত্রী পুয়াংপেট চুনলাইদ অভ্যর্থনা জানান।


থাইল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী   দ্বিপক্ষীয় বৈঠক   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মন্ত্রী এমপিদের প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত ডিসি এসপিরা

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপাররা (এসপি)। প্রভাব বিস্তারকারী মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হলে নির্বাচন কমিশন পাশে থাকবে কি না সে ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ এসব কর্মকর্তা। তাদের আশ্বস্ত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলেছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নেওয়া যে কোনো পদক্ষেপের সঙ্গে কমিশন অবশ্যই পাশে থাকবে।

ইসি বলেছে, উপজেলা পরিষদে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন দেখতে চায় কমিশন। বদলির ভয়ে কারও কাছে অবস্থান না বিকিয়ে প্রশাসন ও পুলিশকে নীতিতে অটল থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে ইসির এক সভায় এসব বিষয় উঠে আসে।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, আইজিপি, সব বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ কমিশনার (সংশ্লিষ্ট), রেঞ্জের ডিআইজি, ডিসি, এসপি ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেন। নির্বাচন ভবনে সকাল ১১টা থেকে টানা তিন ঘণ্টা এ সভায় সদস্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন, ইভিএম, নির্বাচনে ডিউটিরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভাতা, নির্বাচনী আচরণবিধি ও মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভা থেকে উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন করতে মাঠ প্রশাসনকে নানা দিকনির্দেশনা দেয় ইসি। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এ ছাড়া মোবাইল আর্থিক সেবা সার্ভিসের মাধ্যমে নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানো বন্ধে কীভাবে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে—সে বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠকের শুরুতে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা ব্যর্থ হবে। উপজেলা ভোট ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হতে পারে।

তিনি বলেন, দেশের নির্বাচনে আবেগ অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। এর মধ্যেও ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। যদি আমরা ব্যর্থ হই তাহলে আমাদের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, যেটার দৃষ্টান্ত আপনারা ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করেছেন সেটাও ক্ষুণ্ন হয়ে যেতে পারে।

সিইসির বক্তব্যের পর উপজেলা নির্বাচনের মাঠ পরিস্থিতি জানতে ডিসি-এসপিদের কাছ থেকে বক্তব্য আহ্বান করা হয়। এরপর দুজন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, ছয় থেকে সাতটি জেলার ডিসি ও এসপি, দুজন ডিআইজি ও দুজন বিভাগীয় কমিশনার তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন সচিব এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার মাঠ প্রশাসনের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, বক্তব্যে কয়েকজন ডিসি ও এসপি মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তোলেন। এক্ষেত্রে সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মন্ত্রী এমপিদের ভূমিকা ও বাড়াবাড়ি নিয়েও কথা বলেন কেউ কেউ। ফলে উপজেলা নির্বাচনে তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচনী আচরণবিধি মানাতে মাঠ প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেবে কি না, সে সম্পর্কে কমিশনের কাছে জানতে চান। কারণ দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে মন্ত্রী-এমপিদের অনেকেই নিজ স্বজনকে প্রার্থী করেছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে মাঠে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সঙ্গে প্রশাসনকে তাদের পরিবারের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন।

এ নিয়ে সভায় পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে আর্জি জানানো হয়। তারা বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের পক্ষে কাজ না করলে অনেক সময় বদলির হুমকি আসে। পদোন্নতিসহ সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হতে পারে।

কোনো কোনো ডিসি ও এসপি প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপিদের নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে কমিশন আমাদের পাশে থাকবে কি না, আশ্রয় দেবে কি না। নাকি মন্ত্রী এমপিরাই উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তদবির করে আমাদের বদলি করে দেবেন।

জবাবে সিইসি শঙ্কিত ডিসি-এসপিদের আশ্বস্ত করে বলেন, কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বদ্ধপরিকর। আপনাদের সবার আন্তরিক সহযোগিতা ও জোরালো ভূমিকার কারণে সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সরকারও ওই নির্বাচনে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করে কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।

এবারের উপজেলা নির্বাচনেও সরকার আমাদের পাশে রয়েছে। সেজন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে আপনারা যে ভূমিকা রাখবেন কমিশন সব সময় তার পাশেই থাকবে। নির্বাচন কমিশনের কথা শোনার কারণে উচ্চমহল থেকে নির্বাচনে দায়িত্বরত কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বদলির জন্য সুপারিশ এলে তা কমিশন যথাযথ যাচাইয়ের পর প্রমাণ সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেবে। এ জন্য দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

বরিশালের পুলিশ কমিশনার বলেন, আমাদের ওপর চাপ রয়েছে। জবাবে আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ভয়ের কিছু নেই। সর্বোচ্চ শাস্তি বদলি করবে। আরেক জায়গায় অর্থাৎ নতুন কর্মস্থলে চাকরি করবেন সমস্যা নেই, তবুও মাথা নত করা যাবে না। এ সময় সিইসিসহ সব কমিশনার এ বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেন।

তারা বলেন, বদলি কোনো শাস্তি নয়। এটা চাকরির অংশ। কারও কথায় আপনাদের বদলি করা হবে না। কমিশন নিজস্ব উৎস থেকে তদন্ত করবে। সিইসি আরও স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচনে চাপ থাকবে। চাপ সবার ওপরই থাকে। তদন্তে প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে কমিশনকে জানালে তাৎক্ষণিক সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

বৈঠকে কোনো কোনো বক্তা মাঠের চিত্র তুলে ধরে জানান, নির্বাচনে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থী যেসব উপজেলায় রয়েছেন, সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যে কটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপি বা জামায়াতের প্রার্থী রয়েছেন সেসব উপজেলায় এ আশঙ্কা আরও প্রকট। সেজন্য শুরু থেকেই এসব এলাকায় বিশেষ নজর দিতে হবে, যাতে বড় ধরনের কোনো কিছু না ঘটতে পারে।

বৈঠকে পার্বত্য এলাকার সর্বশেষ পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ওই এলাকার চারটি উপজেলা ভোট স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তারা। এ ছাড়া পুরো পাহাড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের পরামর্শ আসে বৈঠক থেকে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সেভাবে নেই। সেজন্য তারা এ নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে নানা ষড়যন্ত্র করতে পারে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় বিশেষ নজর রাখতে হবে।


সভায় জামালপুরের ডিসি তার এলাকার সব নির্বাচন ইভিএমে হচ্ছে জানিয়ে বলেন, কিছু ইভিএমে ত্রুটি রয়েছে। সেগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না। তার এ বক্তব্যের পর ইভিএমের চাহিদা দিলে নতুন করে তাকে ইভিএম সরবরাহ করা হবে বরণ জানায় কমিশন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন বাবদ বকেয়া টাকা দ্রুত পরিশোধেরও দাবি জানান এই ডিসি।

বৈঠকে কেউ কেউ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারে সহায়ক হিসেবে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে নিয়োজিত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং অফিসারদের দায়ী করে পাশের উপজেলা থেকে তাদের আনা যায় কি না সেটি বিবেচনার অনুরোধ জানান। একইভাবে গ্রাম পুলিশ বা আনসার বা চৌকিদার-দফাদার সদস্যদের নিয়েও প্রশ্ন তোলে তাদেরও পাশের ইউনিয়ন থেকে আনার অনুরোধ করেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে কমিশন সেটি নাকচ করে দেয়।

এ ছাড়া সকালে ব্যালট ও ইভিএম কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া নিয়ে বাড়তি খরচ দাবি করেন জেলা প্রশাসকরা। সেটিও নাকচ করে দেওয়া হয়। কুড়িগ্রামের ডিসি দুর্গম এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানোর দাবি জানান।

সভার পরে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ভোট সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করতে প্রতিটি উপজেলায় ২ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে। ইসি সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কী ধরনের প্রস্তুতি নেবে প্রশাসন, তাদের কী ধরনের সহযোগিতা করতে হবে এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিজ নিজ জেলার সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরেছেন কর্মকর্তারা।

অনেক জেলা থেকে অতিরিক্ত ফোর্স চাওয়া হয়েছে। সংসদ নির্বাচনে যেভাবে নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেভাবেই দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে দায়িত্বপালনরতদের দু-তিন দিনের পরিবর্তে পাঁচ দিনের ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।


মন্ত্রী-এমপি   উদ্বেগ   ডিসি   এসপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ফ্লোরিডায় কনসাল জেনারেল হলেন সেহেলী সাবরীন

প্রকাশ: ১১:৫৫ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ের জনকূটনী‌তি অনুবিভা‌গের মহাপ‌রিচালক ও মুখপাত্র সে‌হেলী সাবরীন‌কে যুক্তরা‌ষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত বাংলা‌দেশ দূতাবাসের কনসাল জেনা‌রেল হি‌সে‌বে নিয়োগ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে।

বৃহস্প‌তিবার (২৫ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের প‌রিচালক সংস্থাপন মো. আনিসুজ্জামানের সই করা এক প্রজ্ঞাপ‌নে এ আদেশ জা‌রি করা হ‌য়ে‌ছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুনরাদেশ না হওয়া পর্যন্ত সেহেলী সাবরীনকে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, ফ্লোরিডাতে কনসাল জেনারেল হিসেবে বদলির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। 

২০০৫ সালের ২ জুলাই ২৪তম বিসিএসের (পররাষ্ট্র) সদস্য হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন সেহেলী সাবরীন। 

২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রথম সচিব এবং ২০১৪-২০১৭ সালে জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০২১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মহাপরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন সেহেলী সাবরীন।


ফ্লোরিডা   কনসাল জেনারেল   সেহেলী সাবরীন   পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়   বাংলা‌দেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ওমরাহ হজ্জ করতে সৌদি পৌঁছেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী

প্রকাশ: ১০:৫৩ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পবিত্র ওমরাহ হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যে এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট নং বিজি-১৩৭ যোগে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মদিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি। রাতে সৌদি আরব পৌঁছান মন্ত্রী।

পাটমন্ত্রী মক্কায় পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ ও ওমরাহ পালন ছাড়াও মক্কা ও মদিনায় মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর স্মৃতিবিজরিত বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করবেন। 

ওমরাহ পালন শেষে আগামী ৪ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।


ওমরাহ হজ্জ   সৌদি আরব   বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন