নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০২০
একজন মন্ত্রী জনপ্রশাসন সচিবকে ফোন করেছেন। ফোন করে তার মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবের একজন সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন; ওই সচিব তার কথা শুনে না। এবং তার নির্দেশ প্রতিপালিত হয় না। তাকে না জানিয়েই অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে। দেখা গেছে যে সচিব কোনো ভুল করেনি। বরং মন্ত্রী জোর করে অনেক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। যেটি সচিব গ্রহণ করেননি। এটি একটি মন্ত্রণালয়ের ঘটনা।
একটু খুঁজলে দেখা যাবে যে, সরকারের অনেকগুলো মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী এবং সচিবের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হচ্ছে। একটু কান পাতলেই শোনা যাবে অনেক এমপি বলছেন; আমাদের কোনো কাজ নেই , আমরা কি করব?। এলাকায় জনগনের কাছে যেয়ে আমরা কি বলব,কি দিবো। তা নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। সামনের নির্বাচনে তারা কি নিয়ে জনগণের কাছে যাবেন এ নিয়ে তাদের ভাবনার শেষ নেই।
এটি যেমন দৃশ্যপটের একদিক আবার উল্টোদিকও আছে। একজন নবীন মন্ত্রী এবং একজন নেতৃস্থানীয় আমলাদের নেতা সচিব দুজনের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে মতবিরোধ হল। মন্ত্রী সচিবকে নির্দেশ দিলেন যে তার কথা প্রতিপালন করতেই হবে। শেষ পর্যন্ত এ বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত গেল এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পুরো বিষয়টি বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখলেন যে; মন্ত্রী সঠিক ছিলেন সচিব বাড়াবাড়ি করেছেন। সচিবকে সতর্ক করা হলো এবং সেই সচিব এখন অবসরে গেছেন।
আবার করোনার সময় দেখা গেল; একজন এমপি তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় পড়ে ছিলেন। জনগণের দুঃখ-কষ্ট দেখেছেন। জনগণের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন; নগদ সহায়তা দিয়েছেন। সেখানে জেলা প্রশাসন এমপির ওপর নির্ভরশীল এমনকি ওই জেলায় যে সচিবকে তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তিনিও ওই এমপির পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন রকম কর্মকাণ্ড করেন, সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
ওই নির্বাচনী এলাকায় এমপির জনপ্রিয়তা এত বেশি এবং জনগণের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা এতো প্রবল যে জেলা প্রশাসক কিংবা জেলায় দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিব চাইলেও তাকে উপেক্ষা করতে পারেন না।
এ দুটি ঘটনার উল্লেখ করা হলো এ কারণেই, সাম্প্রতিক সময়ে একটি কথা উঠছে যে এমপি এবং মন্ত্রীদের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে। তাদেরকে পুতুল বানিয়ে রাখা হয়েছে। দৃশ্যত তারা কিছুই করতে পারছেন না।
কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা কী সে রকম নাকি মন্ত্রী-এমপিদের যোগ্যতার অভাবের কারণে তারা কর্তৃত্ব নিতে পারছেন না ।
একজন সংসদ সদস্য হলেন নির্বাচিত প্রতিনিধি । তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং তার ক্ষমতার উৎস হলো জনগণ। অন্যদিকে একজন আমলা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং রাষ্ট্রের সংবিধিবদ্ধ আইন অনুযায়ী তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত। এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় থাকাটা যেমন জরুরি। তেমনি এই দুইয়ের মধ্যে তিনি প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবেন যিনি যত বেশি জনবান্ধব এবং জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং যত বেশি নিজস্ব ব্যক্তিত্ব এবং দক্ষতা দিয়ে সবকিছুর উপর প্রভাব স্থাপন করতে পারবেন।
যে সমস্ত নির্বাচনী এলাকায় এমপিরা জনপ্রিয় এমপিদের জনপ্রিয়তা রয়েছে তারা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন না। এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করেন সে সমস্ত এলাকায় এমপিদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের দ্বন্দ্ব খুবই কম। দ্বন্দ্ব যে হয় না তা না সেখানে দ্বন্দ্ব হয় অন্যরকম।
জেলা প্রশাসক যদি কোনো উন্নয়ন বিমুখ কর্মকান্ড করেন তিনি যদি কাজ না করেন তাহলে জনগণের প্রতীক হিসেবে জনপ্রতিনিধিরা জেলা প্রশাসকের মুখোমুখি অবস্থায় দাঁড়ায়। তবে তেমন ঘটনা খুবই কম ।
কিন্তু যে সমস্ত জায়গায় এমপিদের সঙ্গে জনগণ নেই যারা নিজস্ব তল্পিবাহক বাহিনী নিয়ে এলাকায় ঘুরেন এবং বিভিন্ন টেন্ডার এবং উন্নয়ন প্রকল্পের চাঁদার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মুখিয়ে থাকেন। তাদের সঙ্গে এলাকার মাঠ প্রশাসনের নানারকম দ্বন্দ্ব এবং জটিলতা তৈরি হয়।
একইভাবে মন্ত্রিসভায় যে সমস্ত মন্ত্রীরা আন্তরিকভাবে কাজ করেন যারা কাজ বুঝে নিয়েছেন; তিনি নতুন হোক পুরাতন কাজ বুঝে নিয়েছেন। তাদের মন্ত্রণালয়ের প্রধান নিবার্হী হতে কারো দেন দরবার বা তদবিরের দরকার হয় না । কিন্তু যারা দায়িত্ব পালনে অক্ষম। সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সব কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকেন। তাদের ওপরেই সচিবরা ছড়ি ঘোড়ান।
তাই পুরো ব্যাপারটি আসলে নিজস্ব যোগ্যতা এবং দক্ষতার উপর। একজন যোগ্য ব্যক্তি যদি এমপি হন বা মন্ত্রী হন তাহলে তার উপর মাঠ প্রশাসন কখনোই হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।
বরং দুজনার মধ্যে যদি দ্বন্দ্ব-সংঘাত হয় সেখানে জনপ্রতিনিধির জয়ই সুনিশ্চিত। আবার যদি একজন মন্ত্রী দায়িত্ব পালনে সক্ষম হন সেখানে সচিব কখনো মন্ত্রীর চেয়ে প্রভাবশালী হয়ে উঠতে পারে না। তাই মন্ত্রী-এমপিরা ক্ষমতাহীন কী ক্ষমতাহীন নয় সেটি নির্ভর করে তার যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা এবং দক্ষতার উপর।
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা সারাবিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। দেশের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের কিছুটা প্রভাব আসতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
বুধবার (৮ মে) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতা, বাজার ব্যবস্থাপনায় অসামঞ্জস্যতা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সূত্রে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়ার শঙ্কা থাকে। এছাড়া, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পণ্য সরবরাহের সাপ্লাই-চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূলত ইরান বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পরিবহন খরচ বাড়তে পারে। এতে পণ্য তৈরি ও সরবরাহ ব্যয় বাড়ায় রপ্তানিকারকরা কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারেন।’
মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের আশঙ্কার বিষয়ে দেশের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্দেশ দিয়েছি যাতে প্রত্যেকে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ঘটনাপ্রবাহের ওপর নজর রাখে এবং এ বিষয়ে নিজ নিজ করণীয় নির্ধারণ করে। সংঘাত দীর্ঘ হলে কোন কোন সেক্টরে প্রভাব পড়তে পারে তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো সংঘাত বা সংঘাতের খবর জ্বালানি তেলের বাজারকে প্রভাবিত করে। এতে পণ্যের জাহাজ ভাড়া বাড়ে। যা আমদানি ব্যয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সার আমদানি ব্যয়ে প্রভাব পড়ে। এতে বিকল্প উৎস হিসেবে চীন, মরক্কো, তিউনেশিয়া, কানাডা, রাশিয়া ইত্যাদি দেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করা হবে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের সংকট আরও ঘনীভূত ও দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ
মন্তব্য করুন
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিনয় মোহন কোয়াত্রা
মন্তব্য করুন
গ্রেপ্তার কাচ্চি ভাই বেইলি রোড
মন্তব্য করুন
জাল ভোট নির্বাচনী কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা সারাবিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। দেশের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের কিছুটা প্রভাব আসতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’