নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৭ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭
বাঙালি জন্মগতভাবেই রসিক। দৈনিন্দিন জীবনে গ্রাম বাংলার মানুষেরা কথায় কথায় মজার মজার ছড়া কেটে আনন্দ করতে অভ্যস্ত। বাংলার চিরায়িত রসবোধ ঠাঁই করে নিয়েছে গল্প, নাটক ও সিনেমায়। বিশেষ করে চলচ্চিত্রে এসব রসবোধ শৈল্পিক মর্যাদা পেয়েছে। যার বেশিরভাগ কৃতিত্ব কৌতুকশিল্পীদের। ৮০-৯০ দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রে কৌতুকশিল্পীরা ছবির নায়ক-নায়িকার চেয়ে অধিক জনপ্রিয় ছিলেন। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছেন হাসমত, রবিউল, খান জয়নুল, আশীষ কুমার লৌহ, আনিস, লালু, বেবী জামান, টেলি সামাদ ও দিলদার। সেই সময়ের কিছু কৌতুকশিল্পী সম্পর্কে জানা যাক-
দিলদার
একসময় ঢাকাই চলচ্চিত্রে দিলদার মানেই দম ফাটানো হাসি! কৌতুক অভিনেতা হিসেবে একচেটিয়া বাংলা সিনেমায় দাপুটে অভিনয় করে গেছেন তিনি। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি মানেই দম ফাটানো হাসির রোল। দর্শক পর্দায় তাঁর অঙ্গভঙ্গি দেখে হেসে গড়াগড়ি খেতো। মুহূর্তে কাঁদিয়েও ফেলতে পারতেন এই জাত অভিনেতা। ১৯৪৫ সালে চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন দিলদার। ১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কেন এমন হয়’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ধীরে ধীরে অপ্রতিদ্বন্দ্বী কৌতুক অভিনেতার আসন দখল করে নেন তিনি।
দিলদারের জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে ছিল যে, তাকে নায়ক করে `আব্দুল্লাহ` নামে একটি ছবিও নির্মাণ করা হয়। ওই ছবিতে একজন লোক হাসানো মানুষের খোলস ছেড়ে তিনি হাজির হয়েছিলেন অন্যরূপে। ছবিতে দর্শক তার অভিনয় দেখে যেমন মুগ্ধ হয়েছেন, তেমনি চরিত্রের বৈচিত্রও দেখিয়েছেন অভিনেতা দিলদার। তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ‘বিক্ষোভ’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘কন্যাদান’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘সুন্দর আলী জীবন সংসার’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে ২০০৩ সালে ‘তুমি শুধু আমার’ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন দিলদার।
রবিউল
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের প্রথম দিকের সফল কৌতুক অভিনেতা রবিউল। শতাধিক ছবিতে তার হাস্যরস সৃষ্টির প্রতিভা খুঁজেপাওয়া যায়। তাঁর কৌতুকে শারীরিক নানান অঙ্গভঙ্গি ফুটে উঠত। বিশেষ করে, সংলাপ বলার সময় কান দুটোকে তালে তালে নাচাতে পারতেন তিনি। ছুটির ঘণ্টা সিনেমায় রাজ্জাক-শাবানার সঙ্গে তাঁর অভিনয় সেসময় দারুণ প্রশংসিত হয়। রবিউলের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘ছুটির ঘণ্টা’,‘গুন্ডা’, ‘আলোর মিছিল’, ‘চৌধুরী বাড়ি’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘আকাশ আর মাটি’ অন্যতম।
টেলি সামাদ
প্রকৃত নাম আবদুস সামাদ। বাংলাদেশ টেলিভিশনের এক সময়ের ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন তাঁর নামকরণ করেন টেলি সামাদ। তখন থেকে তিনি টেলি সামাদ নামে দর্শকদের কাছে পরিচিত। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের শক্তিশালী ও জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা। মঞ্চেও কাজ করেছেন বহুদিন। নিজের অভিনয় শৈলী দিয়ে দর্শকদের হাসিতে মাতিয়ে রাখতেন টেলি সামাদ। ১৯৪৫ সালের ২০ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের নয়াগাঁও এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন ৭০ দশক থেকে। ১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তবে ‘পায়ে চলার পথ’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। চার দশকে ৬০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সংগীতেও রয়েছে এই গুণী অভিনেতার পারদর্শিতা। অভিনয়ের বাইরে প্রায় ৫০টির বেশী চলচ্চিত্রে তিনি গান করেছেন। ‘মনা পাগলা’ ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি। গুন্ডা, সুজন সখী, জয় পরাজয়, অশিক্ষিত, নাগরদোলা তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। সর্বশেষ তাঁকে অনিমেষ আইসের ‘জিরো ডিগ্রি’ ছবিতে দেখা যায়।
আফজাল শরিফ
জন্ম ১৯৫৯ সালে। অভিনয়ে আসেন ১৯৮৪/৮৫ সালের দিকে। মূলত মঞ্চ দিয়ে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু। ঢাকার আরামবাগে ট্রুপ থিয়েটারে প্রথম অভিনয় শুরু করেন আফজাল শরীফ। মঞ্চে তিনি খতবিক্ষত, জমিদার দর্পন, সাত ঘাটের কানাকড়ি, রাক্ষুসী এবং মহাপুরুষ ইত্যাদি নাটকে অভিনয় করেন। মঞ্চ থেকে পরবর্তীতে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে আসেন। ১৯৮৮ সালে হুমায়ূন আহমেদ রচিত ও পরিচালিত টিভি ধারাবাহিক ‘বহুব্রীহি’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ছোটপর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৯২ সালে গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। আফজাল শরিফের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে আবদার, নতজানু ও বাংলার বউ। কমেডি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।
আনিস
পুরো নাম আনিসুর রহমান। তাঁকে বলা হত হাসির রাজা। বাংলাদেশের মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের অন্যতম পরিচিত অভিনেতা। কৌতুক চরিত্রে বেশী অভিনয় করেছেন বলে তিনি কৌতুক অভিনেতা আনিস হিসেবে বেশী পরিচিত। আনিসের জন্ম ১৯৪২ সালে জলপাইগুড়িতে। ১৯৬০ সালে উদয়ন চৌধুরীর `বিষকন্যা` ছবিতে তার প্রথম অভিনয়। কিন্তু ছবিটি মুক্তি পায়নি। ১৯৬৩ সালে মুক্তি পায় আনিস অভিনীত প্রথম ছবি জিল্লুর রহমান পরিচালিত `এইতো জীবন`। এর আগে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ভ্রাতৃদ্বয় এহতেশাম ও মুস্তাফিজের লিও দোসানী ফিল্মসে সহকারী সম্পাদক ও পরিচালক ছিলেন তিনি। এ দুই নির্মাতার মাধ্যমেই এক সময় অভিনয়ে নিয়মিত হন আনিস। চার শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। বড় বাড়ির মেয়ে, গুন্ডা, কোটি টাকার কাবিন তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
বাংলা ইনসাইডার/ এফএইচপি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে ও বিচ্ছেদ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেছেন ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলী এই নায়কের দুই সাবেক স্ত্রী হলেও বাবা হিসেবে দুই সন্তান আব্রাম ও শেহজাদের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তবে এবার নতুন সম্পর্কের পথে হাঁটতে চলেছেন ঢালিউড কিং।
নায়কের পরিবারের মতে, অতীত ভুলে সংসারী হয়ে উঠুক শাকিব খান। আর এ কারণেই শাকিবের পরিবারে চলছে বিয়ের তোড়জোড়। খুব শিগগিরই বিয়ে করবেন অভিনেতা। এর জন্য শাকিবের সম্মতিতে পাত্রী দেখাও শুরু হয়েছে।
গুঞ্জন চলছে, যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসা বিষয়ে লেখাপড়া করে দেশে ফেরা এক ডাক্তার মেয়ের সঙ্গে বিয়ের আলোচনা এগোচ্ছে শাকিবের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাকিবের পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, যখনই সিনেমা মুক্তির সময় আসে তখনই আলোচনায় থাকতে সাক্ষাৎকারে শাকিব প্রসঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন অপু ও বুবলী। এতে শাকিব খান যেমন বিব্রত হন, তেমনি তার পরিবারকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। আর এ কারণেই শাকিবের পরিবার তাকে বিয়ে দিচ্ছে।
শাকিবের পরিবারের ওই সদস্য আরও বলেন, দুজনই এখন শাকিবের অতীত। অথচ তারা এখনও শাকিবের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে দাবি করছেন। আমরা তাই বেশ বিরক্ত।
এদিকে শাকিবের বাড়িতে যাওয়ায় নিষেধ রয়েছে অপু ও বুবলীর। এ ছাড়া তারা দুজন যদি কোনো সাক্ষাৎকারে শাকিবকে নিয়ে কোনো মিথ্যাচার করেন তবে সে বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে শাকিবের পরিবারের।
শোনা যাচ্ছে, দুবার নিজের পছন্দে বিয়ে করে জটিলতায় পড়েছেন শাকিব। আর তাই এবার পরিবারের পছন্দেই সম্মতি দিয়েছেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জমকালো আয়োজনে চলতি বছরের শেষের দিকেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন ঢালিউড কিং।
মন্তব্য করুন
এবার অস্ট্রেলিয়ায় স্টেজ শো করেছেন জায়েদ খান। রোববার মেলবোর্নের টাউন হলে এই অনুষ্ঠানটি হয়েছে। সেখানকার বাঙালি দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন ‘সোনার চর’ সিনেমার এই নায়ক। স্টেজ থেকে ‘শিরায় শিরায় রক্ত, আমরা জায়েদ খানের ভক্ত’ বলে শ্লোগান দিচ্ছিলেন দর্শকরা। বিষয়টিতে বেশ মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জায়েদ খান।