কালার ইনসাইড

টাঙ্গাইলের আসলাম থেকে মান্না হয়ে উঠার গল্প

প্রকাশ: ০১:৫৯ পিএম, ১৪ এপ্রিল, ২০২২


Thumbnail টাঙ্গাইলের আসলাম থেকে মান্না হয়ে উঠার গল্প

বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মান্না। একাধারে তিনি নায়ক, প্রযোজক ও সংগঠক ছিলেন। দুই যুগেরও বেশি সময় বাংলা সিনেমায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন প্রয়াত এই চিত্রনায়ক। চলচ্চিত্র থেকে সিনিয়র শিল্পীরা যখন দূরে ছিলেন। সেই সময়ে অনেক গুণী সিনিয়র অভিনয় শিল্পীকে তিনি চলচ্চিত্রে ফিরিয়ে এনেছিলেন। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির খারাপ সময়ে একাই হাল ধরে বহু হিট, সুপার হিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন মান্না। ইন্ডাস্ট্রির মানুষ এখনও নায়ক মান্নাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।



বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) এই প্রয়াত অভিনেতার জন্মদিন। বাংলা ইনসাইডারের পক্ষ থেকে রইলো জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

১৯৬৪ সালের এই দিনে তিনি টাঙ্গাইল জেলায় জন্ম নেন।মান্না অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘পাগলি’। ১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের মাধ্যমে চলচ্চিত্র অঙ্গনে পা রাখেন আসলাম তালুকদার। টাঙ্গাইলের এস এম আসলাম তালুকদার নামের সেই কিশোর হয়তো তখনো জানতেন না যে তিনিই একদিন হয়ে উঠবেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক।শুধু তা-ই নয়, ঢাকাই চলচ্চিত্রের একজন নির্ভরযোগ্য নায়ক হবেন তিনি।

‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমে সুযোগ পেয়েই কিন্তু আসলাম থেকে নায়ক মান্না হতে পারেননি তিনি। এর জন্য অনেক ত্যাগ, অনেক কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছে তাঁকে। এফডিসির অফিস পাড়ায় ঘোরাঘুরি আর নিয়মিত পরিচালকদের কাছে ধরনা দিতে হতো। যে রাজ্জাককে দেখে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের স্বপ্ন দেখার শুরু, সেই রাজ্জাকই এক সময় তাঁকে সুযোগ করে দেন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের।

১৯৮৬ সালে ‘নায়করাজ’ রাজ্জাকের এক বন্ধুর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিত ‘তওবা’ সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ ঘটে মান্নার। আর এভাবেই শুরু হয় নায়ক মান্নার চলচ্চিত্র জীবনের যাত্রা। চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে এস এম আসলাম তালুকদার নাম বদলিয়ে হয়ে ওঠেন মান্না। শুরুতে একের পর এক অ্যান্টি হিরো হিসেবে অভিনয় করেছেন। কিন্তু সে সময় তেমন কোনো সাফল্য আনতে পারেননি।

আশির দশকে মান্না যখন ছবিতে অভিনয় শুরু করেন, সে সময় রাজ্জাক, আলমগীর, জসীম, ফারুক, জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চনের নায়ক হিসেবে বেশ দাপট। সেই দাপুটে অভিনেতাদের মাঝেও ‘তওবা’, ‘পাগলী’, ‘ছেলে কার’, ‘নিষ্পাপ’, ‘পালকি’, ‘দুঃখিনী মা’, ‘বাদশা ভাই’-এর মতো ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন মান্না। দুঃখজনক হচ্ছে, এসব ছবির কোনোটিতেই মান্না প্রধান নায়ক ছিলেন না। তাই সাফল্যের ভাগীদার খুব একটা হতে পারতেন না।


মান্না অভিনীত প্রথম ছবি ‘তওবা’ হলেও প্রথম ছবি হিসেবে যে ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল তার নাম ‘পাগলী’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাশেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে সুযোগ পেয়েছিলেন মান্না। এ ছবিটি সুপার-ডুপার হিট হওয়ার কারণে একের পর এক একক ছবিতে কাজ করার সুযোগ পান মান্না। এরপর কাজী হায়াতের ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ ছবির কারণে তাঁর একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। এরপর আরও কয়েকটি ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন মান্না। দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘গরীবের বন্ধু’ ছবির পর একটু ধীরে এগোতে থাকেন মান্না। সে সময় মান্নাকে নিয়ে সবার আগ্রহ তৈরি হয়। সবাই তাঁকে নিয়ে ছবি বানাতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। চলচ্চিত্রের প্রযোজক-পরিচালকেরাও তাঁর কাছে নির্ভরতা খুঁজে পান।

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে নাঈম-শাবনাজ, সালমান-শাবনূর, সানী-মৌসুমি জুটি বেশ সফল। তাঁদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যান মান্না। মমতাজুর রহমান আকবর, কাজী হায়াত, নুর হোসেন বলাই, নাদিম মাহমুদ, এম এ মালেক, এফ আই মানিক, মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, এ জে রানা, বেলাল আহমেদের মতো পরিচালকের ছবি দিয়ে মান্না নিজেকে প্রমাণ করতে থাকেন। পরিচালকেরা তাঁর প্রতি আস্থা অর্জন করতে শুরু করেন।

১৯৯৬ সালে সালমান শাহের হঠাৎ মৃত্যুতে প্রযোজক-পরিচালকেরা দিশেহারা হয়ে যান। কারণ সে সময় সালমান শাহের ওপর বিনিয়োগ ছিল অনেক বেশি। এ সময়ে পরিচালকদের চোখে একমাত্র আস্থার নায়ক হিসেবে ধরা দেন মান্না। মান্নাও পুরো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার মতো কঠিন দায়িত্বটি নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করেন।

১৯৯৭ সালে নায়ক থেকে প্রযোজনায়ও আসেন মান্না। মান্নার প্রথম ছবি ‘লুটতরাজ’ সুপারহিট ব্যবসা করে। এরপর বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে শুরু হয় মান্না-অধ্যায়। একের পর এক মুক্তি পেতে থাকে মান্না অভিনীত বেশ কয়েকটি ছবি। বেশির ভাগ ছবিই দর্শকপ্রিয়তা পাওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায়িক সফলতাও পায়। সবাই মান্নাকে নিয়ে একের পর এক ছবি বানাতে থাকেন। প্রযোজক-পরিচালকরা তাঁর মধ্যে খুঁজে পান নতুন আশার আলো।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র-বিষয়ক নানা কর্মকাণ্ডেও মান্নার ছিল অগ্রণী ভূমিকা। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে হঠাৎ অশ্লীলতা জেঁকে বসলে হাল ধরেন মান্না। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্ধকার কাটতে থাকে তাঁর দৃঢ় ভূমিকার কারণে। সে সময় একমাত্র নায়ক মান্নার ছবিগুলোই ছিল প্রযোজক ও পরিচালকদের আশার আলো, ব্যবসায় টিকে থাকার সাহস। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মান্না একাই লড়ে গেছেন।

আশির দশকে সুনেত্রা, নিপা মোনালিসা থেকে শুরু করে চম্পা, দিতি, রোজিনা, নূতন, অরুণা বিশ্বাস, কবিতার মতো সিনিয়র নায়িকাদের সঙ্গে অভিনয় করে যেমন সফল হয়েছিলেন, তেমনি মৌসুমি, শাবনূর, পূর্ণিমা, মুনমুন, সাথী, স্বাগতা, শিল্পী, লিমাদের সঙ্গে তাঁর ছবি ব্যবসায়িক সফলতা পেয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে তাঁর নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অভিনয়, সংলাপ বলার ধরন দিয়ে নিজস্ব একটা স্টাইল দাঁড় করিয়েছিলেন তিনি। তাঁর অভিনীত এমন কিছু ছবি আছে যার জন্য তিনি চিরদিনের জন্য দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। একটা সময় ছিল, যখন ছবিতে শুধু মান্না আছেন‍- এ কারণেই দর্শক হলে ছুটে গেছেন, তাঁর কারণেই ছবি ব্যবসাসফল হয়েছে। মান্না যে ছবিতে দুর্দান্ত, সেই ছবির কাহিনি যত গতানুগতিকই হোক না কেন, সেই ছবি ব্যবসা করবেই তাতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটনির্ভর ছবিতেও মান্না ছিলেন অনবদ্য।

২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে নায়ক মান্না মৃত্যুবরণ করেন। বাংলা চলচ্চিত্র ইতিহাসে মান্না নামটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।


নায়ক   মান্না   জন্মদিন  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

বাবা হচ্ছেন বিশ্বখ্যাত পপ তারকা জাস্টিন বিবার

প্রকাশ: ১২:৪৮ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল, অন্তঃসত্ত্বা হেইলি বিবার। বাবা হতে চলেছেন জাস্টিন বিবার। তবে এ প্রসঙ্গে একটা শব্দও বলেননি এই তারকা জুটি। এর আগেও একাধিকবার হেইলি বিবারের মা হওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়েছিল।

তবে এবার আর গুঞ্জন নয়। বাবা হতে চলেছেন বিশ্বখ্যাত পপ তারকা জাস্টিন বিবার। জাস্টিন ও হেইলির সুখের সংসারে আসতে চলেছে নতুন সদস্য।

বাবা হওয়ার সংবাদটি নিজেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করলেন পপতারকা জাস্টিন বিবার। স্ত্রীর বেবিবাম্পের ছবি পোস্ট করে অনুরাগীদের দিলেন সুখবর। শুধু তাই নয়, খ্রিস্টান সংস্কৃতি মতে আবারও ফাদারের সামনে বিয়ে করলেন জাস্টিন ও হেইলি।

বেশ কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে হেইলি জানিয়েছিলেন, তাঁদের দাম্পত্যজীবন কাটছে সিনেমার মতো। তিনি আরও বলেন, জাস্টিনের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া খুব ভাল বলেই আপাতত সুখে সংসার করছেন তাঁরা। ২০১৮ সালে অনেকটা চুপিসারেই বিয়ে করে নেন জাস্টিন-হেইলি।

বিয়ের খবর কেউই প্রকাশ্যে আনেননি। এরপর বিয়ের চার বছর পূর্তিতে তাঁদের বিবাহের কথা স্বীকার করেন তারকা জুটি। আর বিয়ের ৬ বছর পর অবশেষে পিতৃত্বের স্বাদ পেতে যাচ্ছেন জাস্টিন।

দীর্ঘ ৮ বছরের সম্পর্কের পর বিচ্ছেদ হয় সেলেনা গোমেজ ও জাস্টিন বিবারের। তারপরই ২০১৮ সালে মার্কিন মডেল হেইলির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন জাস্টিন। গোমেজ ভক্তদের দাবি, সেলেনা গোমেজের কাছ থেকে জাস্টিনকে ছিনিয়ে এনেছেন হেইলি। জাস্টিন-গোমেজ সম্পর্ক ভাঙার মুল কারিগর তিনিই। জাস্টিনের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে হেইলির সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করে দেন গোমেজ।

একে অপরের মুখও দেখেননি। তবে সম্প্রতি দুজনকে একসঙ্গে দেখা গেছে। তাদের মাঝে তিক্ততার বরফও গলতে শুরু করেছে। গোমেজও মিডিয়ায় জানিয়ে দিয়েছেন, হেইলির সঙ্গে তার কোনো বিবাদ নেই। 


বাবা   জাস্টিন বিবার  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

চিত্রনায়ক সোহেলের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বিরোধ: নেপথ্যের কাহিনী

প্রকাশ: ১১:৩৫ এএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

খুনের ঠিক পাচ মাস আগে আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে প্রচণ্ড ঝগড়া হয় অভিনেতা সোহেল চৌধুরীর। ঘটনাস্থল বনানীর ট্রাম্প ক্লাব। সোহেল চৌধুরী এর জের ধরে ওই রাতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে হত্যার হুমকি দেন। কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে মারধরের চেষ্টা করেন সোহেল। আজিজ মোহাম্মদ ট্রাম্প ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের কক্ষে ঢুকে যান। একপর্যায়ে তিনি বাথরুমে পালিয়েও থাকেন। পরে বান্টি ইসলাম ও ক্লাবের ব্যবস্থাপকের হস্তক্ষেপে সে দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনার পর আজিজ মোহাম্মদ ভাই, বান্টি ইসলাম ও ব্যবসায়ী আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এই মামলার সাক্ষীদের আদালত ও পুলিশের দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরীন বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খুন হওয়ার কয়েক মাস আগে বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর প্রচণ্ড বিরোধ হয়। সেই বিরোধের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও বান্টি ইসলামরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে সোহেলকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে।’

২৫ বছর আগে সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আবদুল আজিজ, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তারা তিনজনই পলাতক। বাকি ছয় আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী এই রায় ঘোষণা করেন। খালাস পাওয়া ছয়জন হলেন আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, তারিক সাঈদ মামুন, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, সেলিম খান ও ফারুক আব্বাসী। রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, সোহেল চৌধুরী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সাক্ষীরা সত্য গোপনের চেষ্টা করেছেন। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর পূর্বশত্রুতা ছিল, সেটা প্রমাণিত হয়েছে।

আসামি ও সাক্ষীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির তথ্য বলছে, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী খুন হন ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর। এর সাড়ে পাঁচ মাস আগে  তিনি চার থেকে পাঁচজন বন্ধুকে নিয়ে বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে যান। রাত তখন ২টা। ক্লাবের এক কোনায় বন্ধুদের নিয়ে বসে ছিলেন সোহেল। ক্লাবের অন্য প্রান্তে বান্ধবীদের নিয়ে চেয়ারে বসে ছিলেন আজিজ মোহাম্মদ। একপর্যায়ে আজিজ মোহাম্মদ তাঁর পূর্বপরিচিত রাবেয়া মাহফুজ ওরফে সোনালীকে গান গাইতে বলেন। তিনি আজিজ মোহাম্মদকে কয়েকটি হিন্দি গান শোনাতে থাকেন। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী রাবেয়াকে গান গাইতে নিষেধ করেন।

সোহেল চৌধুরী খুন হওয়ার পর রাবেয়া মাহফুজ ১৯৯৯ সালের ১৮ মার্চ সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। সেই জবানবন্দিতে তিনি আদালতকে বলেন, ‘আমার স্বামীসহ ট্রাম্প ক্লাবে নাচগান করি। এভাবে রাত দুইটার মতো বেজে যায়। ওই সময় হঠাৎ দেখি আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে। তাঁর সঙ্গে একজন বিদেশি বন্ধু ছিল। আর ছিল তিনজন বান্ধবী। আমি তখন আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে সালাম দিই। ভাই তখন আমাকে তাঁর টেবিলে বসতে বলেন। তখন আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমাকে গান গাইতে বলেন। আমি তিন থেকে চারটা হিন্দি গানের অংশবিশেষ গাই। গান গাওয়ার একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী চিৎকার করে বলেন, গান থামাও।’

রাবেয়া মাহফুজ আদালতকে আরও বলেন, ‘সোহেল চৌধুরীর চিৎকারে আমি একটু ভয় পাই। তৎক্ষণাৎ সোহেল চৌধুরী আমাদের টেবিলের সামনে আসেন। তখন আমার পাশে বসা আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বান্ধবী ফারজানার উদ্দেশে সোহেল চৌধুরী বলেন, তুমি আমার সঙ্গে আসো। ফারজানা আগে সোহেলের বান্ধবী ছিল। তবে ফারজানা সোহেলের সঙ্গে যেতে রাজি হন না। তখন সোহেল চৌধুরী আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে ও ফারজানাকে গালিগালাজ করেন। ক্রমান্বয়ে সোহেল উত্তেজিত হতে থাকেন। একপর্যায়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাই বান্টি ইসলামের অফিসের বাথরুমে যান। তখনো সোহেল চৌধুরী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের উদ্দেশে বলেছিলেন, আজ ওকে ছাড়ব না।’

মামলার আরও কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দিতে ওই রাতের এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ উঠে এসেছে। সোহেল চৌধুরী ওই রাতে আজিজ মোহাম্মদের কাছ থেকে যে নারীকে চলে আসতে বলেছিলেন, সেই ফারজানা ইউসুফ এ মামলায় পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। তিনি বলেছিলেন, সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল আগে। পরে আজিজ মোহাম্মদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।

ফারজানা পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, ‘১৯৮৩ সালে আমার বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পর থেকে স্বামীর সঙ্গে আমার মনোমালিন্য চলতে থাকে। এরপর ১৯৯৬ সালে সোহেল চৌধুরীর বোনের ননদ পাপিয়ার গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে যাই। সেদিন সোহেলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। পরে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আমি কয়েকবার সোহেল চৌধুরীর বাসায় যাই। এরপর ১৯৯৮ সালে জুথি নামের এক মেয়ের একটি অনুষ্ঠানে আমি গিয়েছিলাম। সেখানে প্রথম আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়।’

ফারজানা বলেন, ‘১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই আমার বান্ধবী সাথীকে সঙ্গে নিয়ে বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, আজিজ মোহাম্মদ ভাই কয়েকজন মেয়েবন্ধু, ছেলেবন্ধুসহ একত্রে বসে আছেন। আমি আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চেয়ারের পাসে বসি। ক্লাবের বারের কাছে সোহেল চৌধুরী, কালা নাসিরসহ আরও পাঁচ থেকে সাতজন ছেলে সেখানে ছিল। এমন সময় সোনালীকে (রাবেয়া মাহফুজ) গান গাইতে বলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। সোনালী গান গাওয়া শুরু করেন। তখন সোহেল চৌধুরী, কালা নাসির ও তাঁর বন্ধুরা গান বন্ধ করার জন্য চিৎকার শুরু করেন।’

ফারজানা জবানবন্দিতে আরও বলেন, ‘তখন সোহেল চৌধুরী আমাকে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের কাছ থেকে তাঁর টেবিলে আসতে বলেন। আমি না যাওয়ায় তিনি আমাকে গালিগালাজ করেন। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকেও গালিগালাজ করতে থাকেন। তখন আজিজ মোহাম্মদ ভাইও সোহেল চৌধুরীকে বকাবকি করতে থাকেন। তখন আমি ভয়ে পাশে গিয়ে দাঁড়াই। আর আজিজ মোহাম্মদ ভাই দৌড়ে বান্টি ইসলামের অফিসের বাথরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।’

ফারজানা আরও বলেন, ‘এ সময় হোটেলের ম্যানেজার (ব্যবস্থাপক) সোহেল চৌধুরী ও তাঁর বন্ধুদের নিচে নামিয়ে দেয়। তখন বান্টি ইসলাম ক্লাবে আসেন। সোহেল চৌধুরীর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে ক্লাবের ভেতরে আসেন। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। ভোররাত পাঁচটার দিকে সোহেল চৌধুরী চলে গেলে আমি আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গাড়িতে করে বাসায় ফিরি।’

কেবল রাবেয়া মাহফুজ কিংবা ফারজানা নন, সোহেল চৌধুরীর মা নূর জাহান বেগমও আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধের কথা আদালতকে বলেছিলেন। সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে নূর জাহান বেগম বলেন, ‘১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই আমার ছেলে সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে ট্রাম্প ক্লাবে খুব ঝগড়াঝাঁটি হয়। মারামারি হওয়ার উপক্রমও হয়। এরপর বান্টি ইসলাম এবং বোতল (আশীষ রায় চৌধুরী) নামের এক ব্যক্তির সঙ্গেও আমার ছেলের গুরুতর ঝগড়া হয়। ঝগড়ার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়। আমার ছেলেকে ট্রাম্প ক্লাবে যেতে নিষেধ করে। মৃত্যুর ১৫ থেকে ২০ দিন আগে বান্টি ইসলাম ও আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের লোকেরা আমার ছেলেকে “মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে এসেছে” বলে হুমকি দিয়েছিল।’

সোহেল চৌধুরীর মা নূর জাহান বেগম আদালতকে আরও বলেন, ‘আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে (১৯৯৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর) আজিজ মোহাম্মদ ভাই ব্যাংককে যান। এর তিন দিন পর আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়। আমার নিশ্চিত বিশ্বাস, আজিজ মোহাম্মদ ভাই, বান্টি ইসলাম ও তাঁদের লোকজনেরা আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যা করেছে।’

সোহেল চৌধুরীর মা আরও বলেন, ট্রাম্প ক্লাবে অনেক অবৈধ কাজকারবার হতো। ওই ক্লাবের পাশে বড় জামে মসজিদ। মুসল্লিরা ক্লাবের অসামাজিক ও অন্যায় কাজকর্মের বিষয়ে অনেক প্রতিবাদ করেছেন, বাধা দিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প ক্লাব কর্তৃপক্ষ কোনো বাধা মানেনি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু চৌধুরী গোলাম মোহম্মদ ওরফে ওমর চৌধুরীও সে দিনের ঘটনার বিষয়ে প্রায় একই রকমের বক্তব্য পুলিশের কাছে দিয়েছিলেন। মামলার অভিযোগপত্রে রাবেয়া মাহফুজ, ফারজানা ইউসুফ, নূর জাহান বেগম ও ওমর চৌধুরী এ হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ছিলেন। অবশ্য সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরীনের তথ্যমতে, এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী সোহেল চৌধুরীর মা নূর জাহান বেগম বিচার চলাকালে মারা যান। বাকিরা বিচার চলাকালে সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির হননি।

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী খুনের প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন তাঁর বন্ধু আবুল কালাম। তিনিও সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি পুলিশ ও আদালতের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর জবানবন্দিতে উঠে আসে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ। আবুল কালাম বলেন, ‘১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত ১টার সময় সেলিম ভাইয়ের অফিসে গিয়ে কাবাব ও হুইস্কি খাই। এরপর ট্রাম্প ক্লাবে যাই। সেখানে সোহেল চৌধুরীকে পাই। এরপর তাঁর সঙ্গে আবার তাঁর বাসায় যাই। আবার সেখানে বিয়ার পান করি। পরে সোহেল চৌধুরী আমাদের নিয়ে ট্রাম্প ক্লাবে যাওয়ার আগে টেলিফোনে বান্টি ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন।’

সোহেল চৌধুরীর বন্ধু আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা ট্রাম্প ক্লাবের গেট ও লিফটের কাছে পৌঁছলে সাত থেকে আটজন লোক আমাদের লক্ষ্য করে রিভলবার ও পিস্তল দিয়ে গুলি শুরু করে। আমি পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যাই। দৌড়ে আমি ওমর ভাইয়ের (সোহেল চৌধুরীর বন্ধু) বাসার সামনে গিয়ে পড়ে যাই এবং জ্ঞান হারাই। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হই। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর ট্রাম্প ক্লাবে গিয়ে জানতে পারি, নীরব ও দাইয়্যান (ট্রাম্প ক্লাবের কর্মচারী) সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক আব্বাসী ও আদনান সিদ্দিকী সেদিন গাড়িতে করে ক্লাবের গেটে আসেন। সোহেল চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। এরপর তিনি মারা যান।’


চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা   আজিজ মোহাম্মদ   আদালত  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

এবার মেয়ের মা হলেন পরীমণি!

প্রকাশ: ০৮:২৮ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ঢাকাই চলচ্চিত্রের লাস্যময়ী অভিনেত্রী পরীমণি। ভালোবেসে বিয়ে করেন অভিনেতা শরিফুল রাজকে। যদিও সে সংসার বেশি দিন টেকেনি। তবে বিচ্ছেদের পর এখন ছেলে পুণ্যকে নিয়ে নিজের মতো করে জীবনযাপন করছেন এই অভিনেত্রী। সব ব্যস্ততাও তাকে ঘিরে।

এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। এতে তিনি জানিয়েছেন, ছেলে পুণ্যের পর এবার মেয়ের মা হয়েছেন তিনি।

পরী লিখেছেন, আমার মেয়ে এলো ঘরে। আমার মেয়ে, সাফিরা সুলতানা প্রিয়ম। এই নামেই বিশ্ব চিনবে ওকে। ছেলের পরে মেয়ে! কী যে আনন্দ! পৃথিবীতে আসার ছদিন হলো ওর। আমার ঘরে ছেলের পাশে আলো হয়ে আছে। আমি ওকে দত্তক নিয়েছি। নিয়ম মেনে সই করার সময় মনে হলো আল্লাহ আবার আমার জন্য কিছু করলেন। জীবনে কোনোদিন কিছু নিয়ম অনুযায়ী বা পরিকল্পনা করে করিনি আমি। তাই আল্লাহ আমার জন্য যা যা চেয়েছেন, তাই মাথা পেতে নিয়েছি। ও পরীর মতোই আমার কোলে চলে এলো। কোলে যখন নিই, মনে হয় আমার নাভি কেটেই ও এসেছে। ওর ছবি এখন দিচ্ছি না। কেউ রাগ করবেন না! মা তো...আর কিছু দিন যাক।

তিনি লিখেছেন, ছেলে আসার পর থেকে বাড়ি ও বাইরের সব দায়িত্ব নিজে সামলাচ্ছি। কী করে যে পারি! ছবির কাজ একটানা করতে পারছি না। কিন্তু আমাকে তো এবার আরও কাজ করতে হবে, ছেলে আর মেয়ের জন্য। খুব শিগগিরি ‘প্রীতিলতা’র কাজ শেষ করতে হবে। ওটা আগে করতে চাই। সেই জন্য আগের চেহারায় ফিরতে হবে।

পরীমণি আরও বলেন, আমি যা মন থেকে চাই তাই করি। কে কী বলল সে সব নিয়ে কোনও দিন ভাবিনি। কে বলেছে বাবা ছাড়া সন্তান মানুষ করা যায় না? কে বলেছে জন্ম দেওয়া বাবা-মা ছাড়া সন্তান মানুষ হয় না? এই সব নিয়ম সমাজের তৈরি। এই তো আর কয়েক দিনের মধ্যেই মাতৃ দিবস নিয়ে হইচই হবে। কিন্তু সেখানেও তো পিতৃতন্ত্রের আদলে তৈরি করা মেয়েদের জয়গান। এ সব কিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে কাজ আর সন্তানদের নিয়ে বাঁচব আমি। এখন রাতের দিকে সব শান্ত হয়ে আসার পরে এক দিকে ছেলে আর এক দিকে ঘুমন্ত মেয়ের মাঝে যখন চোখ খুলে দেখি তখন মনে হয় পরীমণির আকাশটা বড় হয়ে আসছে।

উল্লেখ্য, হাতে একগুচ্ছ কাজ পরীমণির। ব্যস্ত রয়েছেন টলিউডের একটি ছবি নিয়ে। ‘ফেলু বক্সী’ নামের একটি ছবিটিতে কাজ করছেন তিনি। সেখানে তার সঙ্গে আছেন সোহম চক্রবর্তী ও মধুমিতা সরকার। এটি নির্মাণ করছেন দেবরাজ সিনহা।

পরীমণি   অভিনেতা শরিফুল রাজ  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

রায় শুনে যা বললেন নায়ক সোহেল চৌধুরীর মেয়ে লামিয়া

প্রকাশ: ০৪:১২ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

নব্বই দশকের চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ ৩ জনকে যাবজ্জীবন, ৬ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তীর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া অপর আসামিরা হলেন, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকী।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, ও আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।

এদিকে এ রায় শুনে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সোহেল চৌধুরীর কন্যা লামিয়া চৌধুরী। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন,.আমার বাবা তো ফেরত আসবে না। উনারা (অপরাধীরা) যেটা করেছেন, সেটার জবাব উনাদেরই দিতে হবে। উনাদের যাবজ্জীবন হোক কিংবা যেটাই হোক বাবার মৃত্যু আমার জীবনে যে প্রভাব ফেলেছে, সেটা কোনোভাবেই পরিবর্তন হবে না। রিয়েলিটি নিয়েই আমাকে থাকতে হবে। এখন তাদের বিচারে আমাদের কোনো কিছুই পরিবর্তন হয়নি, হবেও না।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান।

মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর ২০০৩ সালে মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

ওই বছরই আসামি আদনান সিদ্দিকী হাইকোর্টে রিট করেন। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন।

পরে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয় এবং হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়।

নায়ক সোহেল চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

বলিউড ভাইজান সালমানের বিপরীতে রাশমিকা মান্দানা

প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

গুঞ্জন সত্যি হলো। আর সারপ্রাইজ নয় অবশেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা চলে আসলো। বলিউডের নতুন জুটি হতে যাচ্ছেন বলিউড ভাইজান সালমান খান ও দক্ষিণ ভারতীয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা। 

সালমান খানের পরবর্তী সিনেমা ‘সিকান্দার’-এ অভিনেতার বিপরীতে দেখা যাবে দক্ষিণের এই তারকাকে। সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা প্রযোজিত এবং এ আর মুরুগাদোস পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তি পাবে আগামী বছরের ঈদে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ বৃহস্পতিবার ( ৯ মে) সকালে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে। যেখানে সালমান আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলেন।

এরপর রাশমিকার নাম প্রকাশ করে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে এই নায়িকা লিখেছেন, ‘অনেকদিন ধরেই সবাই আমার নতুন কাজের খবর জানতে চেয়েছিলেন। খবর ছিল না দেখে আমি কিছুই জানাতে পারছিলাম না। এবার জানাচ্ছি। আপনাদের জন্য এটাই ছিল বড় চমক। ‘সিকান্দার’-এ আমি সালমান খানের বিপরীতে কাজ করছি। এমন একটি দুর্দান্ত কাজে আমাকে যুক্ত করার জন্য আমি কৃতজ্ঞ এবং সম্মানিত।’ সিনেমার শুটিং শুরু হবে এ বছরের শেষের দিকে। 

বর্তমানে রাশমিকা তার ‘পুষ্পা ২’ সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই সিনেমার কাজ শেষ হওয়ার পরেই তার নতুন সিনেমার শুটিং শুরু হবে।

 


বলিউড   রাশমিকা মান্দানা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন