জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ট্রেলারে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুর পুরো জীবনের এক ঝলক। 'মুজিব' বায়োপিকের ট্রেলারটি ৭৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে উন্মুক্ত করা হয়েছে।
৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই ছবিটির ট্রেলার প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় সমালোচোনার ঝড়। অনেকেই বলছেন বাজেটের তুলনায় ছবির মান খারাপ। আবার অনেকেই বলছেন ছবির ভিএফক্সয়ের কাজ নিম্ন মানের। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে নায়ক আরেফিন শুভকে বেমানান লাগছে বলে অনেকেই মন্তব্য জানিয়েছেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে ছবির নির্মাতা ও অভিনেতা শুভ নিজ নিজ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এবার সেই কাতারে সামিল হলেন ‘মুজিব’ ছবির বাংলাদেশ অংশের লাইন প্রডিউসার মোহাম্মাদ হোসেন জেমী। তিনি রয়েছেন বর্তমানে আমেরিকায়। সেখান থেকেই সমালোচনার আঁচ লেগেছে তার গায়ে।
তারই জবাব দিলেন ফেসবুকে। তিনি দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘অনেক পুরনো কথা এটি। বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে গোটা বইকে বিচার করা ঠিক নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনী ভিত্তিক চলচ্চিত্র মুজিব, একটি জাতির রূপকার এর ট্রেলার সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিশিষ্টজনরা এই সমালোচকদের দুই ভাগে ভাগ করেছেন। এক ভাগ করছেন গঠনমূলক সমালোচনা। অন্য ভাগ করছেন সমালোচনার জন্য সমালোচনা। যেখানে সৃষ্টি আছে সেখানে সমালোচনা থাকবেই। গঠনমূলক সমালোচনা যে কোনো সৃষ্টির জন্য ইতিবাচক। যারা শুধু সমালোচনা করার জন্য সমালোচনা করেন তাদের উচিত হবে মুক্তির পরে ছবিটি সম্পূর্ণ দেখা।
যার জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র তার ভূমিকায় অভিনয় করা শিল্পীকে হুবহু যে তারই মত দেখতে হবে এমনটি ঠিক নয়। গান্ধী চলচ্চিত্রে গান্ধীর চরিত্রে রূপদানকারী বেন কিংসলে প্রায় গান্ধীর মতোই দেখতে ছিলেন। এই বিষয়টি ব্যতিক্রম একটি উদাহরণ। অনেক চলচ্চিত্র আছে, যার জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র তার সাথে রূপদানকারী শিল্পীর চেহারা এবং শারীরিক গঠনের মিল নেই। যেমন আমেরিকার নেইশন অফ ইসলামের নেতা ম্যালকম এক্স এর জীবনী ভিত্তিক চলচ্চিত্রে ম্যালকম এর চরিত্রে রূপদানকারী ডেনজেল ওয়াশিংটন এর সাথে ম্যালকম এক্স এর তেমন কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Invictus ছবিতে ম্যান্ডেলার চরিত্রে রূপদানকারী মরগান ফ্রিম্যান এর সাথে ম্যান্ডেলার চেহারা এবং শারীরিক গঠনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। বিখ্যাত জ্যাজ সিঙ্গার রে' চার্লস এর বায়োপিকে রে চার্লসের চেহারার সাথে অভিনয়শিল্পী জেমি ফক্স এর তেমন কোনো মিল নেই। বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের জীবনী ভিত্তিক চলচ্চিত্র 'সঞ্জু'তে সঞ্জয়ের বাবা সুনীল দত্তের চরিত্রে রূপদানকারী অভিনয় শিল্পী পরেশ রাওয়ালের বিন্দুমাত্র মিল নেই। এভাবে আরো অনেক উদাহরন দেওয়া যায়। এখানে চেহারার মিল এবং শারীরিক গঠন মুখ্য নয়। যার জীবন নিয়ে চলচ্চিত্র তার প্রকৃত জীবন ইতিহাস, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি অভ্যাসগুলো বিশ্বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা হচ্ছে সেই চরিত্রে রূপদানকারী শিল্পীর মূল কাজ।
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে রূপদানকারী আরিফিন শুভ'র সাথে বঙ্গবন্ধুর কতটা মিল অমিল সেই নিয়ে সমালোচকরা ব্যস্ত হয়ে গেছেন। এখানে মূলত দেখা উচিত আরিফিন শুভ তার অভিনয় শৈলী দিয়ে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রকে কতটা সার্থক রূপ দিতে পেরেছেন।
ট্রেলারের অনেক কারিগরি অংশের সমালোচনাও ভিত্তিহীন এবং সিনেমা না বোঝার অপরিপক্কতা। ট্রেলারে অডিও এবং ভিডিও প্রিল্যাব এবং ওভারল্যাপ করা হয়। সময়কে সংকুচিত করার জন্য এক জায়গার অডিও অন্য জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে দেখা এবং শোনার পরিধি বেড়ে যায় সংকুচিত সময়ের মধ্যে। মুজিব চলচ্চিত্রের ট্রেলারে এমনটি হয়েছে বেশ কয়েকবার। এই কৌশলটি শুধু মাত্রই ট্রেলার এর জন্য। এটা বুঝতে না পেরে অনেক সমালোচক ছবি এবং শব্দের মিল না পেয়ে মনে করছে ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। অপেক্ষা করুন ছবিটি মুক্তি পর্যন্ত। তারপর ছবিটিকে মন দিয়ে দেখুন।
একটি গড় হিসেবে দেখা গেছে, হলিউডের চলচ্চিত্রে যদি প্রতি মিনিটে $1,000 এর উৎপাদন বাজেট থাকে, তাহলে সম্ভবত VFX এর জন্য প্রতি মিনিটে $2000-$5000 খরচ করা হয়। খুব চোখ ধাঁধানো এবং বিশ্বাসযোগ্য ভিএফএক্স এ ভরপুর চলচ্চিত্রে মোট প্রোডাকশন খরচের দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি খরচ করা হয় শুধুমাত্র ভিএফএক্সের জন্য। এই হিসাবের নিরিখে মুজিব চলচ্চিত্রের মোট বাজেট এবং তার জন্য ভিএফএক্সের খরচের উপর নির্ভর করছে গুণগত মান।
তাই সবার জন্য আহ্বান থাকবে চলচ্চিত্রটি মুক্তির পরে এক বা একাধিকবার দেখে চলচ্চিত্রটির গঠনমূলক সমালোচনা করার জন্য। আমি বিশ্বাস করি, দর্শকদের অধিকার আছে যে কোন চলচ্চিত্রের মুক্ত সমালোচনা করার। এই ছবিটির ক্যামেরার পেছনের আমি একজন অংশীজন ছিলাম। চিত্রনাট্য নিয়ে বিশেষজ্ঞদের গবেষণা এবং প্রতি মুহূর্তে যতটা নির্ভুল সম্ভব বাস্তবতাকে তুলে ধরার কোন ঘাটতি এখানে ছিল না।
গান্ধী ছবিতেও অনেক ডিটেইলে ভুল রয়ে গেছে। যেগুলো ইতিহাস বিকৃতির পর্যায়ে পড়ে। এছাড়াও ছবির কন্টিনিউটিতে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভুল। ১৯৪৭ সনে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির সময় পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলনের দৃশ্যে পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত ব্যাকগ্রাউন্ডে সংযোজিত হয়েছিল। অথচ সেই সংগীতটি তৈরি হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। এরপরও সব ভুল ছাপিয়ে গান্ধী চলচ্চিত্রকে একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ধরা হয়। মুজিব চলচ্চিত্রে কিছু ভুল থাকতেই পারে। আমার বিশ্বাস সেগুলো অতিক্রম করে বাঙালির চেতনা এবং মননে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যে গভীর শ্রদ্ধা আছে সেটা সমুন্নত থাকবে বায়োপিক দেখার পরেও।
আশা করছি মুজিব, একটি জাতির রূপকার চলচ্চিত্রটি সবার মনকে ছুঁয়ে যাবে। সেই দিনের অপেক্ষায় আছি। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বায়োপিক আরেফিন শুভ রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে ও বিচ্ছেদ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেছেন ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলী এই নায়কের দুই সাবেক স্ত্রী হলেও বাবা হিসেবে দুই সন্তান আব্রাম ও শেহজাদের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তবে এবার নতুন সম্পর্কের পথে হাঁটতে চলেছেন ঢালিউড কিং।
নায়কের পরিবারের মতে, অতীত ভুলে সংসারী হয়ে উঠুক শাকিব খান। আর এ কারণেই শাকিবের পরিবারে চলছে বিয়ের তোড়জোড়। খুব শিগগিরই বিয়ে করবেন অভিনেতা। এর জন্য শাকিবের সম্মতিতে পাত্রী দেখাও শুরু হয়েছে।
গুঞ্জন চলছে, যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসা বিষয়ে লেখাপড়া করে দেশে ফেরা এক ডাক্তার মেয়ের সঙ্গে বিয়ের আলোচনা এগোচ্ছে শাকিবের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাকিবের পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, যখনই সিনেমা মুক্তির সময় আসে তখনই আলোচনায় থাকতে সাক্ষাৎকারে শাকিব প্রসঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন অপু ও বুবলী। এতে শাকিব খান যেমন বিব্রত হন, তেমনি তার পরিবারকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। আর এ কারণেই শাকিবের পরিবার তাকে বিয়ে দিচ্ছে।
শাকিবের পরিবারের ওই সদস্য আরও বলেন, দুজনই এখন শাকিবের অতীত। অথচ তারা এখনও শাকিবের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে দাবি করছেন। আমরা তাই বেশ বিরক্ত।
এদিকে শাকিবের বাড়িতে যাওয়ায় নিষেধ রয়েছে অপু ও বুবলীর। এ ছাড়া তারা দুজন যদি কোনো সাক্ষাৎকারে শাকিবকে নিয়ে কোনো মিথ্যাচার করেন তবে সে বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে শাকিবের পরিবারের।
শোনা যাচ্ছে, দুবার নিজের পছন্দে বিয়ে করে জটিলতায় পড়েছেন শাকিব। আর তাই এবার পরিবারের পছন্দেই সম্মতি দিয়েছেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জমকালো আয়োজনে চলতি বছরের শেষের দিকেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন ঢালিউড কিং।
মন্তব্য করুন
এবার অস্ট্রেলিয়ায় স্টেজ শো করেছেন জায়েদ খান। রোববার মেলবোর্নের টাউন হলে এই অনুষ্ঠানটি হয়েছে। সেখানকার বাঙালি দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন ‘সোনার চর’ সিনেমার এই নায়ক। স্টেজ থেকে ‘শিরায় শিরায় রক্ত, আমরা জায়েদ খানের ভক্ত’ বলে শ্লোগান দিচ্ছিলেন দর্শকরা। বিষয়টিতে বেশ মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জায়েদ খান।