বছরের একটা দিন সবাই প্রাণের আড্ডায় মশগুল হবেন, মিলনমেলায় শামিল হবেন—এমন প্রত্যাশা থাকে চলচ্চিত্র শিল্পীদের মধ্যে। এ প্রত্যাশার মধ্যেই শনিবার (১৪ জানুয়ারি) নরসিংদীর মাধবদীতে অবস্থিতি একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বনভোজন।
করোনা মহামারির দীর্ঘ দুই বছর এবং নির্বাচনের নানা নাটকীয়তার পর আয়োজিত হয়েছে এ বনভোজন। সবারই প্রত্যাশা ছিল বিগত দিনের তুলনায় এবার বরেণ্য অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের নেতৃত্বে ভিন্ন এক বনভোজন উপহার পাবেন শিল্পীরা। তবে সেই আশায় গুঁড়ে বালি। বনভোজনে গিয়ে অনেকেই অন্তর্জালে চরম অব্যবস্থাপনার কথা জানিয়েছেন।
গেল কয়েক বছরের বনভোজনে দেশের সিনিয়র শিল্পী থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মের অনেক শিল্পীদের দেখা গেলেও এবার দেখা গেছে ভিন্ন এক চিত্র। এবারের আয়োজনে কমিটি থেকে উপস্থিত ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন, অঞ্জনা রহমান, ফেরদৌস, নিপুণ, রিয়াজ, সাইমন, ইমন ও জেসমিন। তবে ছিলেন না বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও রুবেল, কার্যকরী পরিষদ সদস্য আলীরাজ, অরুণা বিশ্বাস, সুচরিতা, অমিত হাসান, মৌসুমী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী।
শিল্পী শূন্য সমিতি উল্লেখ করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা নূতন লিখেন, সাংগঠনিক দক্ষতা সবার হয় না। সবাই তা নিয়ে জন্মায় না। অর্থ দিয়েও তা পাওয়া যায় না। তা ভালোবাসা দিয়ে অর্জন করতে হয়। এই দক্ষতার অভাবেই চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পিকনিক তার নিজস্বতা হারিয়েছে। এভাবেই আস্তে আস্তে একনায়কতান্ত্রিকতার কারণে শিল্পী শূন্য সমিতি হবে। শুধু করার জন্য আর বলার জন্য কোন কিছু না করাই ভালো। জ্যেষ্ঠ এই অভিনেত্রীর স্ট্যাটাসে স্পষ্ট বর্তমান কমিটির অদক্ষতা।
করোনার আগে সর্বশেষ বনভোজনও তারকায় পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর পর বনভোজন হলেও ছিল না ‘উল্লেখযোগ্য’ তারকা শিল্পী। বিগত দিনের বনভোজনে গুণী অভিনয়শিল্পী সোহেল রানা, উজ্জ্বল, ফারুক, সৈয়দ হাসান ইমাম, আলমগীর, ববিতা, সুচন্দা, সুচরিতা, ডিপজল, জাভেদ, রোজিনা, মিশা সওদাগর, শিল্পী, আনোয়ারা, নূতন, মুক্তি, আলেকজান্ডার বো, শাকিব খান, আসিফ ইকবাল, অপু বিশ্বাস, আরিফিন শুভ, বিদ্যা সিনহা মিম, পরীমণি, বুবলী, বিপাশা কবির, আঁচলদের মতো তারকাদের সরব দেখা গেলেও এবার তারা কেউই ছিলেন না। চিত্রনায়ক জায়েদ খানও উপস্থিত হননি।
শুধু তারকাদের উপস্থিতি কম নিয়েই প্রশ্ন উঠেনি প্রশ্ন উঠেছে বনভোজনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়েও। বিগত দিনের বনভোজনে দেশের তারকা শিল্পীরা বিভিন্ন ধরণের পারফর্ম করতে দেখা যেত। তবে এবারের আয়োজনে তা দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, অনেকেই বিরক্ত হয়েছে ইউটিউবারদের কারণে। শিল্পী সমিতির এমন আয়োজনে নায়ক-নায়িকাদের উপস্থিত না দেখা গেলেও বহিরাগতদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পাশাপাশি উঠেছে খাবার নিয়েও নানা অভিযোগ। অনেকেই বলেছেন সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার ও বিকেলের নাস্তা পরিবেশনে ছিলো গাফিলতি। অনেকেই খাবার না খেয়েও ছিলো।
তবে এ আয়োজনে সশরীরে না থেকেও ছিলেন প্রয়াত তারকা শিল্পীরা। সে তালিকায় ছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক, কবরী, ওয়াসিম, বুলবুল আহমেদ, রোজি আফসারী, হুমায়ুন ফরীদি, খলিল, সোহেল চৌধুরী, দিতি, এটিএম শামসুজ্জামান, সালমান শাহ, মান্না, দিলদার, রাজীব, জসিম, টেলি সামাদ প্রমুখ।