ছোট
পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুতে দেশের মিডিয়াপাড়া বেশ সরগরম। এ মৃত্যুর কারণ
জানতে উদগ্রীব মিডিয়াকর্মী থেকে সাধারণ মানুষ সবাই। ঘটনার তদন্তে প্রেমিক উরফি জিয়াকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। পাশাপাশি
আরেক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি উঠেছে শোবিজ অঙ্গন থেকে। সেই ব্যক্তি হলেন মেকআপ আর্টিস্ট মিহির মোহন।
গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু মারা গেছেন। এ সময় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান মেকআপ আর্টিস্ট মিহির মোহন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এর আগে ২০১৮ সালের ২২ মে দুপুর ১২ টার দিকে নিজ উত্তরার বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। তাকেও হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন মিহির। হাসপাতালে নেওয়ার কিছু সময় পর তার মৃত্যু হয়।
পরবর্তী সময়ে অভিনয় শিল্পী সংঘ জানতে পারে ঘটনাটি সাদামাটা ছিল না। কারণ, তাজিনকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে রেখে কেউ একজন পালিয়ে যায়। জানা যায়, তাজিনের সঙ্গেও সেদিন তাঁর এক বন্ধু ও মিহির ছিলেন। তবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তাজিন ও হিমুর এমন অসহায় অনাকাঙ্খিত মৃত্যু নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। কেননা কাকতালীয়ভাবে এ দুই অভিনেত্রীর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের পাশে ছিলেন মেকআপম্যান মিহির। এমনকি দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসকের মৃত ঘোষণা পর্যন্ত সঙ্গে ছিলেন মিহির। এককথায় তাদের পুরো মৃত্যুর ঘটনাটি দেখেছেন মেকআপম্যান মিহির।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ মৃত্যুর আগে উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন। তার মেকআপ আর্টিস্ট ছিলেন এই মিহির। অভিনেত্রীর সঙ্গেই থাকতে দেখা যেত তাকে। তেমনি হুমায়রা হিমুও থাকতেন উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে। তার মা মারা যাওয়ার পর মিহিরই তাকে দেখাশোনা করতেন। অভিনেত্রীর বাড়িতেই থাকতেন এই মেকআপম্যান। তবে শেষ সময়ে দুজনেরই পাশে ছিলেন মিহির।
মিডিয়ায় অনেক অভিনেত্রীর আস্থাভাজন মিহির। বিশেষ করে নারী অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক বেশি। অনেকের ধারণা, অভিনেত্রী হিমুর মৃত্যুর সাথে মিহিরের যুক্ততা রয়েছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিল্পী জানান, বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখছি— মিহির নিঃসঙ্গ অভিনয়শিল্পীদের পাশে থাকে। তাদের যে কোনও বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ান। তাজিন ও হিমুর সব তথ্য, জীবনের কষ্ট- সব কিছু মিহির জেনে থাকতে পারে।
জানা যায়, মিহিরের বাড়ি সিলেট। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি মেকআপ আর্টিষ্ট হিসেবে কাজ করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে দুইবার বিয়ে করেছেন। তবে তার দুই স্ত্রী-ই আত্নহত্যা করেছেন বলেও জানা গেছে। এছাড়াও মেকআপ আর্টিস্ট মিহির মিডিয়াপাড়ায় পরিচিত নাম। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি এ অঙ্গনে কাজ করছেন। মেকআপম্যান হিসেবে তার বেশ নামডাক রয়েছে। তবে একাধিক শিল্পীর ব্যক্তিগত মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
মিহির সম্পর্কে উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মেকআপ আর্টিস্ট মিহির একসময় অভিনেত্রী শ্রাবন্তীর ব্যক্তিগত মেকআর্টিস্ট ছিল। আমরা তখন নিয়মিত কাজ করতাম। শ্রাবন্তী তখন প্রথম সারির নায়িকা। শ্রাবন্তী যখন মিহিরকে নিত তখন মিহিরের অনেক দাপট ছিল। শ্রাবন্তীর পরিবর্তনের সাথে সাথে মিহিরেরও অবস্থান পরিবর্তন হয়। তারপর মিহিরকে দেখা যায় তাজিন আপার সঙ্গে।’
তিনি আরও জানান, ‘তাজিন আপার মৃত্যুর ঘটনার সময়ও মিহির ছিল। একইভাবে হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায়ও মিহির ছিল।। হিমুর সমস্ত তথ্য, জীবনের যাপনের কষ্ট, সব কিছু মিহির জানে। মিহিরকে ডিবি বা পুলিশের ইন্টারোগেশনে আসা উচিত। তাকে জিজ্ঞাসা করলেই সব তথ্য পাওয়া যাবে এটা কি অপমৃত্যু, না অন্য কিছু।’
অভিনেত্রী দীপা খন্দকার বলেন, ‘তাজিনের বাসায় ছিল মিহির। সে মারা যাওয়ার পরে হোমায়রা হিমুর বাসাতেও সে থাকত। দুজনের মৃত্যু হলো। এটা অবশ্যই মনে একটা প্রশ্ন তৈরি করে। অনেকেই বলছে, হিমুর জীবন যাপন একটু অন্য রকমের ছিল। আমাদের যুক্তি হচ্ছে, একটা মানুষ শৃঙ্খলার বাইরে জীবন যাপন যদি করেও এর মানে এই না যে কারও তাকে মেরে ফেলার অধিকার আছে। মিহির এবং ওর সঙ্গে আরেকজন যে ছিল, শুনেছি সে তার বয়ফ্রেন্ড। এখন যেই হোক না কেন, আমার ভাষ্য, একটা বাসায় দুটো মানুষ ছিল। তাদের উপস্থিতিতে একটা মানুষ আত্মহত্যা করে বসল। দরজা খোলা ছিল, একটা মানুষ বলছেও সুইসাইড করে ফেলবে, অথচ তারা কিছুই দেখতে পেল না। মেয়েটা মরেই গেল। এটা আমার কাছে রিয়েলিস্টিক মনে হচ্ছে না।’
দীপা বলেন, ‘মিহিরকে আমি মেকআপশিল্পী হিসেবেই বেশি পেয়েছি। পারসোনালি খুব একটা মিশিনি। পরিচয় থাকার কারণে সে অনেক সময়ই ফোন করে বলেছে, ভালো নেই, খেতে পায় না। শুনেছি, এটা–ওটার অভ্যাস আছে। বিভিন্ন সময় টাকা ধার চেয়েছে। অনেকেই তো অনেক সময় হেল্প করি, সেভাবেই মিহিরকেও হেল্প করেছি। কিন্তু তাজিন ও হিমুর বাসায় মৃত্যুর আগে থাকাটা সন্দেহজনক, স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। বলতে তো পারব না কে দোষী।’ সব শেষে দীপা খন্দকার জানান, মিহিরকে তিনি অনেক দিন থেকেই চেনেন। বিভিন্ন সময় তাঁর কাছ থেকে সহযোগিতাও নিয়েছেন।
এদিকে মৃত্যুর আগে হিমু নিজেকে সবকিছু থেকে কিছুটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন অভিনেত্রী তাহমিনা সুলতানা মৌ। মিহিরকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতীতের বিভিন্ন ঘটনার ক্ষেত্রে উনার(মিহির) নাম বারবার আসছে। এটা একটু তদন্ত করে দেখা উচিত। আমার তার সঙ্গে তেমন একটা কাজ করা হয়নি। তিনি(মিহির) হিমুর সঙ্গে ক্লোজ ছিলেন, তাজিন আপার সঙ্গে ক্লোজ ছিলেন। আমার মনে হয় তার সঙ্গে কথা বললে জানা যাবে বিষয়টা আসলে কি? যেহেতু তার নাম বারবার উঠে আসছে। বিষয়টি তদন্ত করা উচিত।
এদিকে মেকআপম্যানদের সংগঠন ‘মেকআপ আর্টিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানানো হয়, মিহির একবার তাদের সংগঠনের ফরম পূরণ করেছিল কিন্তু পূর্ণ সদস্যপদ গ্রহণ করেনি। এমনকি পরে যোগাযোগও করেননি। তাই মিহির সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।
অভিনেতা রওনক হাসান বলেন, ‘এই আত্মহত্যার ঘটনাটা আমাদের কাছে একটু ধোঁয়াশা তৈরি করছে। এ ছাড়া হিমুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এখন পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ছাড়া কিছুই বলা যাবে না।’
অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম বলেন, ‘হোমায়রা হিমু কিছুদিন কাজ করেননি। কিছুটা বিরতির পর সম্প্রতি সে দু–তিনটা ধারাবাহিকে নাম লিখিয়েছিল। এই বছরের শুরুর দিকে আমাদের শিল্পীদের বড় আয়োজন ছিল। সেখানে তার প্রাণবন্ত উপস্থিতি ছিল। কিন্তু তার সঙ্গে অনেকেরই যোগাযোগ ছিল। এমন না যে তার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ ছিল বা কাজ পাচ্ছিল না। অনেকেই বলছেন, কেউ মারা গেলেই তাকে সবাই স্মরণ করেন, বিষয়টা এমন না। কেউ দূরে থাকলে অন্যদের কী করার আছে?’
হোমায়রা হিমুর বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। তাঁর মা–বাবা কেউ বেঁচে নেই। এসব নিয়ে মাঝে মধ্যে তাঁর মধ্যে একাকিত্ব পেয়ে বসত বলে জানান তাঁর সহকর্মীরা। এ জন্য অনেকটা নিজের মতো করেই চলতে পছন্দ করতেন। অনলাইনে তাঁর সক্রিয় থাকা কথা জানা গেছে। কেউ না থাকায় মৃত্যুর পরে তাঁর সব দায়িত্ব পালন করেছেন অভিনয় শিল্পী সংঘ। তখন তারা স্বাভাবিক মৃত্যু মনে করেই পাশে ছিল। কিন্তু এবার মনে সন্দেহ জাগায়।
নাসিম আরও বলেন, ‘এর আগেও একইভাবে তাজিনকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে একজন পালিয়ে যায়। এবারও হিমুকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে একজন পালিয়ে যায়। পরে জানা যায়, তার বাসায় সেই মিহিরই ছিল। এই নিয়ে ঘটনা কী, কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, সেটা পোস্টমর্টেম হওয়ার পরেই জানা যাবে। কেউ দায়ী থাকলে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলব। কিন্তু এখন আমরা কোনো কিছু বলতে পারছি না।’
হুমায়ারা হিমুর মামা ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক পরিচালক মঈন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হিমুর বাবা-মা কেউই বেঁচে নেই। হিমু বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা প্রকৌশলী সানা উল্লাহ গত আগস্ট মাসে মারা যান। তার মা শামীম আরা চৌধুরী ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। হিমুর মরদেহ তার মায়ের কবরের পাশেই সমাহিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে তাজিন আহমেদের মা দিলারা জলির প্রোডাকশন হাউস ছিল। তার হাত ধরেই মিডিয়ায় যাত্রা শুরু অভিনেত্রীর। দীর্ঘদিন থিয়েটারেও কাজ করেছেন। তার সর্বশেষ অভিনীত মঞ্চ নাটক ‘ময়ূর সিংহাসন’।
ঘটনার দিন হিমুকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান জিয়াউদ্দিন। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকার বংশাল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিয়াউদ্দিনের বিষয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উঠে আসে, হিমুর সঙ্গে জিয়াউদ্দিনের ৯ বছর ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তাঁরা একসঙ্গে থাকতেন। তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। তাঁদের মধ্যে নিয়মিত ঝগড়া হতো।
এদিকে, হুমায়রা হিমুকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় গ্রেফতার মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফি ওরফে উরফি জিয়ার কাছ থেকে নানা ধরণের তথ্য পেয়েছে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হিমুর প্রেমিক উরফি জানিয়েছেন, তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন এবং তাকে মাদক এনে দিতেন হিমুর বাসায় থাকা মিহির।
র্যাব বলছে, মিহিরের সঙ্গে মাদকের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও তদন্ত করা হবে। মিহির অন্য অভিনয়শিল্পীদেরও মাদক দেয় কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। হিমুর প্রকৃত মৃত্যুর রহস্য জানতে তাই আরও তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
হুমায়রা হিমু আত্মহত্যা তাজিন শাহরিয়ার নাজিম জয় মিহির
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন পিয়া জান্নাতুল
মন্তব্য করুন
প্রথমবার সেন্সর বোর্ডের জালে আটকা
পড়ে গেলেন তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফি। তার নির্মিত ওয়েব ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’ সিনেমাটির
গল্প বাস্তবের সঙ্গে মিল থাকায় আটকে গেছে সেন্সর বোর্ডে। ওয়েব ফিল্মটিতে বিভিন্ন চরিত্রে
অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ, তানজিকা আমিন, রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ। গত ক’বছর ধরে প্রেক্ষাগৃহ
আর ওটিটি, দুই মাধ্যমেই সফলতা পেয়েছেন এই নির্মাতা।
গত ২৪ এপ্রিল (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র
সেন্সর বোর্ড থেকে চূড়ান্ত রায় জানানো হয়, ছবিটি দর্শকদের সামনে প্রদর্শনযোগ্য নয়।
তবে ৩০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন
‘অমীমাংসিত’ নির্মাতা রায়হান রাফী। নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সিনেমা বাস্তবের সাথে মিলে
গেছে তাই এটা মুক্তি দেওয়া যাবে না! সিনেমা হতে হবে অবাস্তব! ওয়েব ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’
সেন্সর বোর্ডে আটকে দেয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বিষয়টা তাহলে এমন, কোনো সিনেমায় কোনো
সাংবাদিক দম্পতি খুন হতে পারবে না? কাল্পনিক কাহিনি উল্লেখ করার পরেও যদি কোনো ঘটনার
সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে ব্যাপারটা এমন, ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাই না টাইপ।’
রাফি আরও লেখেন, ‘অমীমাংসিত’ সিনেমায়
কোনো কিছুই প্রমাণ করা হয়নি, কেবল বিভিন্ন জনের ধারণা দেখানো হয়েছিল, তারপরও এই সিনেমা
আটকে দেওয়াটা সত্যি দুঃখজনক!’
সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘সিনেমায় কোনো
খুন দেখানো যাবে না, কোনো ধর্ষণ দেখানো যাবে না, কোনো অপহরণ দেখানো যাবে না, কোনো গুম
দেখানো যাবে না। আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে। এখানে কোনো খুন হয় না, কোনো গুম
হয় না, কোনো ধর্ষণ হয় না। এভাবেই হাত পা বেঁধে সাঁতার কাটতে হবে আমাদের দেশের সিনেমাকে।’
‘অমীমাংসিত’কে দর্শকের সামনে অপ্রদর্শনযোগ্য
বলে রায় দিয়ে যে কারণগুলো দেখানো হয়েছে সেগুলো হলো, ১) চলচ্চিত্রটিতে নৃশংস খুনের দৃশ্য
রয়েছে। (২) কাল্পনিক কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তু বাস্তবতার সাথে মিল রয়েছে।
(৩) এ ধরনের কাহিনি বাস্তবে ঘটেছে এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
(৪) চলচ্চিত্রটির কাহিনি/বিষয়বস্তু বিচারাধীন মামলার সাথে মিল থাকায় ভুল বার্তা দিতে
পারে এবং তদন্তের বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
মন্তব্য করুন
ইরাকে এক নারী টিকটক তারকাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বাসসের
খবর অনুযায়ী স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) মোটরসাইকেলে নিয়ে আসা এক বন্দুকধারী
ওই নারীকে গুলি করে হত্যা করেন। ওই নারীর নাম ওম ফাদাহ।
ইরাকের সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি অনেক প্রভাবশালী এবং সুপরিচিত
ছিলেন। বাগদাদে তার বাড়ির বাইরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা
এএফপি’কে এই কথা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, অজ্ঞাতনামা
এক হামলাকারী জায়উনা জেলায় ওম ফাহাদকে তার গাড়িতে গুলি করে। অন্য এক নিরাপত্তা সূত্র
জানায়, ওই হামলাকারী খাবার ডেলিভারি দেওয়ার ভান করে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওম ফাহাদ আঁটসাঁট পোশাক পরে ইরাকি সঙ্গীতে তার নাচের টিকটক ভিডিওগুলোর
জন্য পরিচিত হয়েছিলেন।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি আদালত ‘শালীনতা এবং জনসাধারণের নৈতিকতাকে
ক্ষুন্ন করে এমন অশালীন বক্তৃতা সম্বলিত ভিডিও’ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার
জন্য তাকে ছয় মাসের কারাদ- দেয়।
ইরাকের জনসাধারণের ‘নৈতিকতা এবং ঐতিহ্য লঙ্ঘন করে এমন বিষয়বস্তু
সম্বলিত কন্টেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য গত বছর দেশটির সরকার
অভিযান শুরু করে।
টিকটক, ইউটিউব এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোতে পোস্টকৃত আক্রমণাত্মক
বিভিন্ন ক্লিপ চিহ্নিত করে তা সরিয়ে ফেলার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন
করে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, এরপর থেকে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৮ সালে বন্দুকধারীরা বাগদাদে প্রভাবশালী মডেল তারকা ফারেসকে গুলি করে হত্যা করে।
মন্তব্য করুন
চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর সঙ্গে ঢালিউড
সুপারস্টার শাকিব
খান দাম্পত্য
সম্পর্কের ইতি টেনেছেন অনেক আগেই। তবে এখনও মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন মিডিয়ায় শাকিবের সঙ্গে
তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন দুই নায়িকাই।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শাকিবের সঙ্গে দাম্পত্য জীবনের অনেক খুঁটিনাটি
ফাঁস করেছেন বুবলী। যা নিয়ে বর্তমানে দর্শকমহলে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে এবার কথা বলেছেন অপু বিশ্বাস।
সাক্ষাৎকারে বুবলী বলেছিলেন, ‘আইনগতভাবে আমি এখনও শাকিব
খানের বৈধ স্ত্রী।’ আবার বলছেন, ‘আমি শাকিবের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম পার করি, আমাদের
সন্তান অনেক সময় সে সুযোগটাও করে দেয়।’
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বুবলীর সেসব কথার প্রেক্ষিতে
কথা বলেছেন অপু
বিশ্বাস।
বুবলীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে হেসে দেন অপু। হাসতে
হাসতে তিনি বলেন, ‘শাকিবকে নিয়ে তার এত এত মন্তব্যে আমি ভাষা হারাচ্ছি, আবেগাপ্লুত
হচ্ছি। আমি কী বলব, বুঝতে পারছি না।’
অপু বলেন, ‘আমি একজন নারী হিসেবে বলব, উনি যথার্থ সম্মানীয় মানুষ।
প্রতিটি মানুষের তার নিজের কাছে সম্মানের জায়গা খোঁজেন। তিনিও এতটা সময় ধরে তার ক্যারিয়ারের
ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে আমার মনে হয় নিজের প্রচারের স্বার্থে অন্যকে ব্যবহার করে
নিজের ব্যক্তিত্ব বিলিয়ে দেওয়াটা বুদ্ধিমানের লক্ষণ নয়। আর যদি এটাই সে মনে করে, তাহলে
তার উপযুক্ত চিকিৎসার দরকার।’
অপু আরো বলেন, ‘শাকিবকে নিয়ে তার এত এত মন্তব্যে আমি ভাষা হারাচ্ছি,
আবেগে আপ্লুত হচ্ছি। আমি কী বলব, বুঝতে পারছি না। এই যে উনি শাকিবের একের পর এক হাঁড়ির
খবর দিচ্ছেন, কিন্তু আমি কোনো হাঁড়ি খুঁজে পাচ্ছি না। কিন্তু মজার মজার খবর পাচ্ছি
তার মুখ থেকে। এ ব্যাপারে আর কি-ই বা বলব। ওনার মনে হয় ডাক্তার দেখানো উচিত।’
বুবলীকে ইঙ্গিত করে নাম প্রকাশ না করে অপু আরও বলেন, ‘এখন আমরা একটা জায়গায় চলে এসেছি। আমাদের কথাবার্তা যেন যথাযথ হয়, খেয়াল রাখতে হবে। এখন এসব কথা হাস্যকর মনে হয়। অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ। আমি মনে করি উনাকে সুস্থ থাকা দরকার।’
অপু বিশ্বাস শবনম বুবলী ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান
মন্তব্য করুন
ভারতের স্বাধীনতা দিবসে বড়সড় ধামাকা আসতে চলেছে। মুক্তি পেতে
যাচ্ছে ‘পুষ্পা: দ্য রুল’। মুক্তির চার মাস আগে থেকেই এই সিনেমা শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত প্রচার শুরু হয়নি সিনেমার। তা সত্ত্বেও, খবরের শিরোনাম দখল করে নিচ্ছে
‘পুষ্পা’। কেন জানেন?
শোনা যাচ্ছে, প্রচারের আগে, মুক্তির অনেক আগেই ১০০০ কোটির ব্যবসা
করে ফেলেছে এই সিনেমা। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এমন ঘটনা এটিই প্রথম। অনন্য নজিরটি গড়ল
আল্লু অর্জুন অভিনীত এই সিনেমা।
১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত শক্তি সামন্ত পরিচালিত ‘অমর প্রেম’ সিনেমায়
শর্মিলা ঠাকুরের কান্না দেখে রাজেশ খান্না বলেছিলেন ‘পুষ্পা, আই হেট টিয়ার্স’। কাট
টু, ২০২১ সালে, ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ সিনেমায় দক্ষিণের সুপারস্টার আল্লু অর্জুন বললেন,
‘পুষ্পা, ম্যায় ঝুঁকে গা নেহি সালা…’।
পুষ্পাকে কেন্দ্র করে দুই সংলাপে আকাশ-পাতালের তফাত। তফাত সোয়্যাগে।
এক পুষ্পা (‘অমর প্রেম’ সিনেমায় শর্মিলা ঠাকুর অভিনীত চরিত্রের নাম ছিল পুষ্পা) কান্নাকাটি
করে ভাসায়। ১৯৭২ সাল থেকে দর্শকের মনে বদ্ধমূলভাবে গেঁথে গিয়েছে– ফুলের মতো নাজুক পুষ্পারা
কেবল কাঁদতেই পারে। ফোঁস করতে পারেন না।
২০২১ সালে আল্লু অর্জুন প্রথম দেখালেন, পুষ্পাদের কাঁটাও আছে। ফোঁস
করতেও পারে। পুষ্পার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করলেন এই বলে যে, সে মাথা নোয়াতে রাজি নয়, ‘পুষ্পা
ঝুঁকে গা নেহি!’ সোয়্যাগে পরিপূর্ণ ডায়ালগ ডেলিভারি, থুতনির নিচ দিয়ে আঙুলগুলো কায়দা
করে নিতে-নিতে পুষ্পা বলে ‘ঝুঁকে গা নেহি সালা’!
এই সিনেমায় অভিনয় করে প্রকৃত অর্থেই শোরগোল ফেলে দিলেন দক্ষিণ ভারতীয়
তারকা আল্লু অর্জুন। যিনি অতীতে কেবল নিজের ঘরের মাঠেই গোল দিয়েছেন। কখনও ‘দেসামুদুরু’,
কখনও ‘পারুগু’ তো কখনও ‘ইয়েভাদু’ সিনেমায়। রাতারাতি প্যান ইন্ডিয়া স্টারের তকমা পেয়ে
গেলেন আল্লু। হয়ে উঠলেন গোটা দেশের ঘরের ছেলে।
গ্ল্যামারের মোড়ক থেকে আগাগোড়া বেরিয়ে, রোদে পোড়া চেহারা নিয়ে ক্যামেরার সামনে এসে দাঁড়ালেন পুষ্পারূপী আল্লু অর্জুন। পাখির চোখ করলেন গোটা দেশের দর্শককে। ‘মহাভারত’ মহাকাব্যের বীরের মতো লক্ষ্যভ্রষ্ট ছিলেন না বলেই পুষ্পার সিক্যুয়েল নিয়ে এখন থেকেই এত হাঙ্গামা শুরু হয়ে গেছে।
ইতিহাস ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ বলিউড
মন্তব্য করুন
সম্প্রতি আইনজীবীর পোশাকে পিয়া জান্নাতুল এর একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। আর তার ঠিক পেছনে দাঁড়িয়ে সেই কথা শুনে লাবণ্যময়ী হাসি দিচ্ছেন মডেল, অভিনেত্রী ও আইনজীবী পিয়া জান্নাতুল। ব্যস্, এই হাসিতেই ঘায়েল নেটিজেনরা। বিভিন্ন গানের সঙ্গে ভিডিওটি জুড়ে দিয়ে তৈরি হচ্ছে রিলস ও মিম।
প্রথমবার সেন্সর বোর্ডের জালে আটকা পড়ে গেলেন তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফি। তার নির্মিত ওয়েব ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’ সিনেমাটির গল্প বাস্তবের সঙ্গে মিল থাকায় আটকে গেছে সেন্সর বোর্ডে। ওয়েব ফিল্মটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ, তানজিকা আমিন, রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ। গত ক’বছর ধরে প্রেক্ষাগৃহ আর ওটিটি, দুই মাধ্যমেই সফলতা পেয়েছেন এই নির্মাতা।