টাইগার’খ্যাত সালমান খান, পাঠান’খ্যাত শাহরুখ খান, কবীর’খ্যাত হৃতিক রোশন। বলিউডের তিন জেমসবন্ড হিসেবে খ্যাত তারা। তিন হিরোকে দক্ষ স্পাই এজেন্ট করে বড়পর্দায় জনপ্রিয় করে তোলার নেপথ্যে রয়েছে যশরাজ ফিল্মসের স্পাই ইউনিভার্স। মুক্তির তৃতীয় দিনেই ২০০ কোটির বেশি আয় করেছে সালমান খান অভিনীত যশরাজ ফিল্মসের ‘টাইগার-৩’। শাহরুখের ‘পাঠান’ এবং ‘জওয়ানের’ পর তৃতীয় সিনেমা হিসেবে মাত্র দুই দিনেই ১০০ কোটি রুপির বেশি আয় করে সিনেমাটি।
এগুলোর মধ্যে শাহরুখের ‘পাঠান’ ও সালমানের ‘টাইগার ৩’ উভয় সিনেমাই আদিত্য চোপড়ার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান যশরাজ ফিল্মসের। এছাড়াও ২০১৯ সালে ‘ওয়ার’ সিনেমাও তৈরি করে তারা। ‘ওয়ার’ মুক্তির পর ৪৭৫ কোটি রুপি ব্যবসা করে। অন্যদিকে চলতি বছর মুক্তি পাওয়া ‘পাঠান’ বক্স অফিস থেকে আয় করে এক হাজার কোটি রুপির বেশি। গত ৩ দিনে ‘টাইগার ৩’ আয় করেছে ২০০ কোটি রুপি। যশরাজ স্পাই ইউনিভার্সের এই সিনেমার সবগুলো ব্লকবাস্টার। কিন্তু এই স্পাই ইউনিভার্সের পরিকল্পনা কিভাবে কার মাথা থেকে আসলো?
২০১৯ সালে ‘ওয়ার’ সুপারহিট হওয়ার পরই মূলত যশ রাজ স্পাই ইউনিভার্সের কথা ভাবতে শুরু করে। ব্যাপক ব্যবসাসফল দুই সিনেমার অভিনেতা ও পরিচালকদের নিয়ে অনেক কথা হয়। কিন্তু আড়ালে থেকে যান নেপথ্যের মানুষটি। তিনি সিনেমার নেপথ্যের কারিগর শ্রীধর রাঘবন। তিনি ভারতের জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকারদের একজন। ‘ওয়ার’, ‘পাঠান’ ও ‘টাইগার ৩’ এর চিত্রনাট্য তাঁরই লেখা। বলা হয়,
যশ রাজের এই স্পাই ইউনিভার্সের ধারণা তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত।
ভারতীয় গণমাধ্যম ডিএনএ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১১ সালে মুক্তি পায় ‘টাইগার’ সিনেমাটি। তবে তখন স্পাই ইউনিভার্স যে হবে, তেমন কোনো ভাবনার কথা শোনা যায়নি। ‘পাঠান’ ও ‘টাইগার ৩’-এর গল্প লেখার পরই শ্রীধর মাধবনের মাথায় দুই চরিত্রকে একসঙ্গে হাজির করার আইডিয়া আসে। পরে মনে হয়, সঙ্গে ‘ওয়ার’-এর কবিরকে যুক্ত করলেও মন্দ হয় না। শাহরুখের ‘পাঠান’ সিনেমায় টাইগার চরিত্রে সালমানের ক্যামিও, সালমানের ‘টাইগার ৩’–এ শাহরুখ ও কবির চরিত্রে হৃতিক রোশনের অন্তর্ভুক্তি এসেছে সেই চিন্তা থেকেই। এভাবেই বিভিন্ন চরিত্রের ক্রসওভারের পরিকল্পনা করে তৈরি হয় স্পাই ইউনিভার্স।
প্রযুক্তিগতভাবে, স্পাই ইউনিভার্স ২০১১ সালের টাইগার ফ্র্যাঞ্চাইজির ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ দিয়ে শুরু হয়েছিল। সালমান খান এবং ক্যাটরিনা কাইফ জুটির ‘এক থা টাইগার’ ব্যবসায়িক সফলতা পাওয়ার পাঁচ বছর পর মুক্তি পায় এর সিক্যুয়াল ও ব্যবসাসফল সিনেমা ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’।
আর ‘টাইগার ৩’ পাইপলাইনে থাকার সময়ই প্রযোজক আদিত্য চোপড়া ‘পাঠান’ বানানোর পরিকল্পনা করেন। এর সঙ্গে স্পাই ইউনিভার্সের অংশ হিসেবে টাইগার এবং পাঠান চরিত্রের বিকাশ ঘটানোর কথাও ভেবেছিলেন তিনি। টাইগার ৩’ এবং ‘পাঠান’–এর প্লট আদিত্য চোপড়া নিজে লিখেছিলেন। পরে এই দুই সিনেমার চিত্রনাট্যের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে দেন শ্রীধর রাঘবনকে। যিনি এরই মধ্যে ‘ওয়ার’–এর চিত্রনাট্য লিখে ফেলেছিলেন। হৃতিক রোশন অভিনীত এই সিনেমা মুক্তি পায় ২০১৯ সালে। ফলে রাঘবন একমাত্র ব্যক্তি যিনি ‘ওয়ার’ সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলো সম্পর্কে আগে থেকেই ভালোভাবে জানতেন।
সেই কারণেই যখন রাঘবন ‘পাঠান’–এর চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করেন, তখন তিনি ‘ওয়ার’ থেকে কয়েকটি চরিত্র ধার করেছিলেন এবং পাঠানের চিত্রনাট্যে সেগুলো যুক্ত করেন। ‘টাইগার-৩’ এর সঙ্গে তিনি একইভাবে ‘পাঠান’ ও ‘ওয়ার’–এর চরিত্রগুলোকে ‘থ্রিকুয়েলে’ যুক্ত করেন,
যার ফলে একটি স্পাই ইউনিভার্স তৈরি হয় যা যশরাজের তিনটি আইকনিক স্পাইকে এক পর্দায় এনেছে।
উল্লেখ্য, শ্রীধর রাঘবন সিনেমা জগতে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। ২০০৪ সালে অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘দিওয়ার’ সিনেমার চিত্রনাট্যও তাঁর লেখা। তাঁর লেখা অন্য সিনেমার মধ্যে আছে ‘অপহরণ’, ‘ব্লাফমাস্টার’, ‘চাঁদনি চক টু চায়না’। তুমুল জনপ্রিয় টিভি শো ‘সিআইডি’রও সৃজনশীল প্রযোজকও ছিলেন শ্রীধর। এ ছাড়া ওটিটির আলোচিত দুই সিরিজ ‘দ্য নাইট ম্যানেজার অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস’ ও ‘দ্য নাইট ম্যানেজার’-এরও লেখক তিনি।
এছাড়াও শ্রীধর রাঘবনের আরেকটি পরিচয় হলো তিনি পরিচালক শ্রীরাম রাঘবনের ভাই। শ্রীরাম রাঘবন থ্রিলার সিনেমা নির্মাণের জন্য খ্যাত। আগে ‘বদলাপুর’, ‘জনি গাদ্দার’, ‘আন্ধাধুন’ ইত্যাদি সিনেমা বানিয়েছেন। এক ভাই চিত্রনাট্যকার অন্য ভাই নির্মাতা হলেও দুজনকে সেভাবে একসঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়নি।
সালমান খান ‘টাইগার ৩ শাহরুখ খান পাঠান ওয়ার হৃতিক রোশন ক্যাটরিনা কাইফ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বলিউড স্টার সালমান খানের জীবন থেকে শনির দশা কাটছেই না। এই তো
গত এপ্রিলের ১৪ তারিখ তার বান্দ্রার ফ্ল্যাটে হামলা চালান বিষ্ণোই-গ্যাংয়ের সদস্যরা।
দুটি গুলি অভিনেতার ফ্ল্যাটের বাইরের দেওয়াল প্রায় ভেদ করে দিয়েছে।
বলিউড ভাইজান খ্যাত সালমান খানের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে হামলা চালায়
বিষ্ণোই-গ্যাংয়ের সদস্যরা। দুটি গুলি অভিনেতার ফ্ল্যাটের বাইরের দেওয়াল প্রায় ভেদ করে
দিয়েছে।
গত মাসের রোববার (১৪ এপ্রিল) সালমানের বাড়িতে হামলা চালাতে বন্দুকবাজদের
অস্ত্র সরবরাহ করেছেন সোনু বিষ্ণোই ও অনুজ থাপন নামে দুই ব্যক্তি। ঘটনার পাঁচ দিনের
মাথায় দুজনকেই গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। এরপর মঙ্গলবার সকালে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন
আত্মহত্যার চেষ্টা করেন অনুজ। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা
করেন। মুম্বাইয়ের সেন্ট জর্জ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে অনুজের।
সালমনের ফ্ল্যাটে গুলি চালিয়েছিলেন সাগর পাল ও ভিকি গুপ্ত নামে
দুজন। ঘটনার দুদিন পরই গুজরাতের ভূজ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদেই
উঠে আসে সোনু ও অনুজের নাম। জানা যায়, দশ রাউন্ড গুলি চালানোর নির্দেশ পেয়েছিলেন অভিযুক্তরা।
গুলিকাণ্ডের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছেন সালমান খান। উদ্বেগে দিন পার করছেন অভিনেতার পরিবারসহ তার অনুরাগীরাও। শোনা গেছে বান্দ্রার ফ্ল্যাট ছেড়ে পানভেলের খামারবাড়িতে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেছেন সালমান খান।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন