নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৪ পিএম, ২০ অক্টোবর, ২০১৮
আইয়ুব বাচ্চু ও কুমার বিশ্বজিৎ, দুজনেই চট্টগ্রামের মানুষ এবং সংগীতেরও। তাই তাদের সখ্যতার শিকড় ছিলো অনেক গভীরে। কিন্তু, আচমকা সেই বন্ধু-বিরহের সংবাদে ভীষণ বিমর্ষ জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। শেয়ার করলেন আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে স্মৃতি। সেই কথাগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য…
বাচ্চুকে নিয়ে আমার স্মৃতির ‘ভার’ এতো বেশি- সেটা এখন আর বইতে পারছি না। কারণ, এতদিন আমরা ভাগাভাগি করে স্মৃতিগুলোকে বয়ে বেড়াতাম। আর আজ থেকে সব স্মৃতি ও আমার কাছে রেখে উড়াল দিলো। এই ভার কতটা ভয়ংকর, সেটা বলে প্রকাশ করা যাবে না।
‘ব্যান্ড ৭৭’ দিয়ে ও আমার সহযাত্রী। সে হিসেবে ৪১ বছরের পথচলা আমাদের। তারপর ৭৮ সালে ওকে আমি নতুন ব্যান্ড ‘ফিলিংস’-এ নিয়ে আসি। ৮২ সালে আমি ওকে ফেলে ঢাকায় চলে আছি। সলো ক্যারিয়ার শুরু করি। একই বছর ও জয়েন করে ‘সোলস’-এ। এরপর সেও ঢাকায় চলে আসে। এখানে এসে আবার আমরা একসঙ্গে। একই বাসায়, একই খাটে আমাদের সহস্র রাত-দিন কাটে।
দিন-রাত আমরা একসঙ্গে প্র্যাকটিস করছি। মিউজিক নিয়ে নানা স্বপ্ন নানা পরিকল্পনা আমাদের। আসলে ঢাকা-চট্টগ্রামের এমন কোনও জায়গা নাই অলি-গলি নাই যেখানে সুন্নতে খৎনা থেকে গায়ে হলুদের শো করিনি।
শুরু থেকেই বাচ্চুর মধ্যে যেটা প্রকট ছিল- খুব সহজে মানুষদের আপন করে নেওয়া। মিউজিক দিয়ে মানুষদের নিজের গ্রিপে নিয়ে আসা। একজন সিঙ্গারের জন্য এটা সবচেয়ে বড় গুণ। ও খুব তাড়াতাড়ি শ্রোতাদের আত্মীয় বানিয়ে ফেলতো। পারফরমেন্স দিয়ে। আমরা অনেকে মঞ্চে উঠে বলি না- কই হাততালি দেন। কিন্তু ওর বেলায় হচ্ছে অটোম্যাটিক। বলতে হতো না। মানুষ হাত তালি দিত তার কথায়-গানে-মিউজিকে মুগ্ধ হয়ে। মিউজিক দিয়ে মানুষকে সম্মোহন করার প্রচণ্ড পাওয়ার ছিল। মিউজিকের জন্য তার ডেডিকেশন, পরিশ্রম ও গান শোনা- সেটা আর কজন মিউজিশিয়ানের ছিল এবং আছে, আমার সন্দেহ হয়। সে যে পরিমাণ দেশি-বিদেশি গান শুনতো- সেটা ভাবাই যায় না।
আমরা শুরুর দিকে মূলত ইন্সট্রুমেন্টাল বাজাতাম। আমি কিবোর্ড, বাচ্চু গিটার। তখন তার হাতটা পিওর ওয়েস্টার্ন শেখে। তার মধ্যে দুটো ভার্সনই ছিল। সে কিন্তু দেশ ও ওয়েস্টার্ন ব্ল্যান্ডিংটা করতে পারতো। এটার প্রবর্তক বাংলাদেশে কিন্তু সে-ই। আমরা কেউ না। এই ফিউশনটাকে তখন বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য করা- এটা কিন্তু যেন-তেন ব্যাপার না। এটা খুবই কষ্টের। আমরা যে ইমোশনের জাতি- সেখানে এসব কাজ করা খুবই রিস্কি। সেই রিস্ক সে একাই পার করে দিয়েছে চোখের সামনে। এই কথাগুলো আমাদের সবার জানা দরকার। প্রজন্মকে জানানো দরকার।
আমাদের পরিচয় ৭৫ সালের দিকে। একই এলাকায় থাকতাম, জুবলি রোডে। ওর বাসা আমাদের বাসা ওয়াকিং ডিসটেন্স। আমাদের দুই পরিবারের কেউই চাইতো না গানবাজনা করি। কারণ, কেউ কখনও তার সন্তানকে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিতে চায় না। আমরা দুজনেই বাবা-মায়ের বড় ছেলে। তো কে চাইবে মিউজিক করে অনিশ্চিত ভাবিষ্যতে ঠেলে দিতে তার সন্তানকে? কিন্তু খালাম্মা আবার আমাকে খুব ট্রাস্ট করতো। আমি ওর বাসায় গেলে বলতেন, ঠিক আছে যাও। তুমি আবার ফেরত দিয়ে যাইবা। একইভাবে আমার মাও বাচ্চুকে ছেলের মতোই জানতো। সত্যি বলতে দুই পরিবারের দুজন মায়ের মমতার কারণে আমাদের দুজনের আজকের এই অবস্থান।
সেই সময়ে, আমরা যখন রাত্রি বেলায় শো করে ফিরতাম তখন বাসায় ঢোকা ছিল বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ। তখন মাগরিবের আগেই ঢোকার নিয়ম, অথচ আমরা রাতের দুইটা তিনটা বাজে ফিরতাম। তখন আমার মা রান্না করে বেড়ে আমাদের খাওয়াতেন। তখন থেকেই আমার মায়ের প্রতি বাচ্চুর আলাদা একটা টান ছিল। আমার মা বলতো, আমার দুইটা ছেলে। আর বাচ্চু বলতো তার দুইটা মা।
কয়েকদিন আগেও মা আমাকে বলেছেন, বাচ্চুকে একটু আসতে বলিস।
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে টেলিভিশনের স্ক্রল দেখে আমি প্রথমে ভাবলাম এটা অন্য কোনও আইয়ুব বাচ্চু। পরে যখন খেয়াল করে পড়লাম সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু- তখন চিৎকার করে বাচ্চাদের মতো কেঁদে উঠলাম। আমার স্ত্রী দৌড়ে এসে বললেন, কী হইছে কী হইছে...।
যাইহোক এভাবে তার মৃত্যুর খবর ঘুম ভেঙে শুনবো এত তাড়াতাড়ি- সেটা কল্পনাও করিনি। তার বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা ও শান্তি কামনা করি। পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা। সারাজীবন এত মানুষকে আনন্দ দিয়েছে, নিশ্চয়ই পরজনমে ও আনন্দেই থাকবে। বার বার আমার আজ এই কথাটাই মনে হচ্ছে।
সুখ এটুকুই, একটা সাকসেসফুল মিউজিক্যাল লাইফ পার করে গেছে আমার বন্ধু।
ভেবে দেখলাম, আমার চেয়ে ওর আপন শুরু থেকে এ পর্যন্ত আর একজনও নাই। আমরা পারলে এক বালিশে ঘুমিয়েছি। এক থালাতে খাইছি।
খুব মনে পড়ে। আমরা দুজন প্রথম ঢাকায় আসলাম ৭৮-৭৯ এর দিকে। ইন্টারকন্টিনেন্টাল (শেরাটন) হোটেলের পাশে সাকুরা বারে আমরা অডিশন দিতে আসলাম। মানে পরীক্ষায় পাশ করলে এই বারে নিয়মিত বাজানোর সুযোগ হবে। ঢাকায় এসে উঠলাম বাসাবোর একটা হোটেলে। দুই দিন গেল, তারপরও অডিশনে ডাকে না। দুজনের পকেট ফাঁকা। পরিবার থেকে তো ‘না’ বলে আসছি। এরপর এক রাতে হোটেলে বসে বাচ্চুকে বললাম, তোর পকেটে কত আছে? বললো- ৫ টাকা। আমার পকেটে হাত দিয়ে পেলাম ১০ টাকা। বললাম, তাইলে আমরা চট্টগ্রাম ফিরে যাবো ক্যামনে? বাচ্চু তো আবার বেশ মজার লোক। সে আমার এই টেনশনের কোনও পাত্তাই দিলো না। সে আবার বেশ ভোজন রসিক ছিল। বলে, ‘আগে খাইয়া নিই বেটা। পরে অন্য হিসাব।’
আমি পরে ডাক দিলাম বেয়ারাকে। বললাম, আচ্ছা কমের মধ্যে কী আছে নাস্তা (ডিনার)। বললো, পরটা আর ভাজি আছে। বললাম, দুইটা পরোটা আর একটা ভাজি নিয়ে আসো। বেয়ারা আনলো। তখন আবার এগুলা খবরের কাগজে মোড়ায়ে দিতো। দুই পরটা একটা পেপারে। আরেকটা পেপারের টুকরায় ভাজি। বেয়ারা আমাদের রুমে আনার সঙ্গে সঙ্গে ভাজির পেপার ভিজে ধপাস করে হোটেল রুমের ফ্লোরে পড়ে গেল!
আমি তখন বললাম, বাচ্চু রুটি-ভাজিও তোর কপালে নাই। কী আর করা। পানি খেয়ে শুয়ে পড়।
বাচ্চু বসা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বললো, আরে রাখ তোর কপাল। এই বলে সে ফ্লোর থেকে ভাজিটা তুলে নিলো আরেকটা কাগজে। এরপর দুজনে সেটা তৃপ্তি নিয়ে খেলাম।
আহারে বাচ্চু... তোর এইসব স্মৃতির ভার আমি আর বইতে পারছি না।
বাচ্চুর নিথর দেহ হাসপাতালে ফেলে এসে বাসায় ফিরে এসব ভাবি আর মনে হয়, আজকের ছেলেরা যে মসৃণ একটা পথ পেয়েছে সেটা এই বাচ্চুদের ঘামের বিনিময়ে তৈরি হয়েছে। এই কথাটা আমরা যেন ভুলে না যাই। এমন হাজার হাজার কষ্টের ঘটনা আছে আমার আর বাচ্চুর। যা বলে শেষ করা যাবে না।
সংগীতের জন্য আমাদের দুই বন্ধুর দু’একটা কষ্টের ঘটনা না বলেও পারছি না। এসব বলতে চাইনি কখনও। না ও, না আমি। তবে এখন বোধহয় বলার সময় এসেছে। কারণ, আমি এসব বলে হালকা হতে চাই। এত এত স্মৃতির ভার আমি একা একা আর বইতে পারছি না।
মনে পড়ে, তখন আমাদের একমাত্র মিউজিক করার ক্ষেত্র ছিল বিয়ে বাড়ি। ২০/৩০টা বাস ভরে মেহমান আসতো বিয়ে বাড়িতে। তাদের তো ঘুমানোর জায়গা দিতে পারতো না। তাই আমাদের গান দিয়ে অতিথিদের জাগিয়ে রাখতে হতো। আমরা টানা গাইতাম আগের দিন সন্ধ্যা ৮টা থেকে পরেরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত! এরমধ্যে হয়তো যার বিয়ে তার শ্বশুর বলেছে মোহাম্মদ রফির গান করার জন্য। আবার কেউ হয়তো আবদার করলো ‘মান্না দে’ গাইবার জন্য। যা বলছে যেমনে বলছে তাই আমাদের গাইতে হতো। একবার এমন একটা অনুরোধ রাখিনি আমরা। ভুলে গিয়েছি হয় তো। সকালে আমাদের ইনস্ট্রুমেন্টস গুছাতে গুছাতে বললাম- ভাই আমাদের পারিশ্রমিক? জামাই বললো, আপনারা তো আমার আব্বার অনুরোধের গানটা পরিবেশন করেন নাই। সরি ভাই, আপনাদের জিনিস-পত্র (গিটার-কিবোর্ড-ড্রামস) দিতে পারবো না। আপনারা চলে যান।
পরে ওসব ফেলে রিক্সা ভাড়া করে গ্রাম থেকে শহরে ফিরে আসি খালি হাতে। এই যে কষ্টগুলো। এই করুণ কাহিনি আমাদের জীবনে এসেছে।
আরেকটা বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা বলে শেষ করি। দুই বন্ধু মঞ্চে উঠে অনুষ্ঠান শুরু করে দিলাম। বেশ ফুরফুরে মেজাজ আমাদের। হঠাৎ দেখলাম একজন দা হাতে নিয়ে আমাদের দিকে ছুটে আসছে! আমরা সব ফেলে দৌড় দিলাম। দৌড়াতে দৌড়াতে তাকেই বললাম, ভাই কী হয়েছে? পেছন থেকে ঐ লোক বললো, আব্বা নামাজি মানুষ। উনি বলছে গান বাজনা হারাম। তোদেরকে আনছে কে। আজকে তোদের জবাই করে ফেলবো। ইত্যাদি। সঙ্গে গালাগালি তো আছেই।
এই কথা শুনে বাচ্চু একদিকে দৌড়াচ্ছে আমি আরেক দিকে। পায়ে একজনেরও স্যান্ডেল নাই। এরমধ্যে এই দৌড়ের সঙ্গে পেছনে যুক্ত হয়েছে বাড়ির দুই তিনটা কুকুরও। শেষ সম্বল ইন্সট্রুমেন্টও ফেলে এসেছি।
মিউজিকের জন্য এই যে কষ্ট, এই যে বাঁচার দৌড়- সেই দৌড় প্রতিযোগিতায় আমার বন্ধুটি ফার্স্ট হয়ে গেল আজ। বাচ্চু ছাড়া আমি একা, বন্ধুহীন, পরাজিত একজন। থেমে গেল আমাদের দৌড় প্রতিযোগিতা।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী গণভবন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ রেহানা
মন্তব্য করুন
মেট গালায় ২০২৪ এ ঝড় তুলেছে তারকাদের লুক। বলিউডের আলিয়া ভাট, ইশা আম্বানি থেকে শুরু করে হলিউডের মিন্ডি কালিং, জেনিফার লোপেজ...নজরকাড়া লুকে ঝলমল করছে 'মেট গালা'র রেড কার্পেট । তবে, তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি ভাইরাল হয়েছে মিন্ডি কালিং-এর 'মেট গালা' ড্রেস । যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে হলিউড নায়িকাকে নিয়ে চলছে ট্রোলিং।
২০২২ সালে বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই 'কান' উৎসবে যে পোশাক পরে গিয়েছিলেন, তার সঙ্গে দারুণ মিল পাওয়া গেছে হলিউড নায়িকা মিন্ডি কালিংয়ের 'মেট গালা'য় পরা জামাটির।
এ ঘটনার পর অনেকে মিন্ডি-কে 'কপি ক্যাট' বলতেও শুরু করেছেন ।
গত ৬ মে মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টের ভিতরে পা রাখেন কালিং। ফটোগ্রাফাররা তার লুকের প্রশংসা করলেও, সোশ্যাল মিডিয়া দেরি করেনি 'চুরি' ধরতে। ঠিকই তারা খুঁজে খুঁজে বের করেছেন, লুকিয়ে থাকা মিলগুলো।
মিন্ডি কালিং ভারতের গৌরব গুপ্তের ডিজাইন করা শ্যাম্পেন রঙের গাউনে মেট গালা ২০২৪-এ রেড কার্পেটে ঝড় তোলেন। 'গার্ডেন অব টাইম' থিম অনুসারে, গাউনটির পিছনে বানানো হয়েছিল ফুলের মতো কাঠামো। পোশাকের পিছনটা দেখলে কারও কারও মনে হবে, যেন কোনও ফুলের পাঁপড়ি। থরে থরে বিছিয়ে রাখা হয়েছে। মেট গালাতে সকলেই বাহবা জানান, কালিংয়ের ফ্যাশন স্টেটমেন্টকে।
কিছু ভারতীয় ফ্যাশন উৎসাহী ঐশ্বরিয়ার কান পোশাকের সঙ্গে এর অদ্ভুত মিল খুঁজে পান। আশ্চর্যজনকভাবে সে পোশাকটিও ডিজাইন করেছিলেন গৌরব গুপ্তই। গোলাপি এবং ব্লাশ রঙের আশ্চর্য মেলবন্ধন ছিল সেটি। যা তৈরি করতে সময় লেগেছিল ৩ হাজার ৫০০ ঘণ্টা। সে গাউনের কাট থেকে শুরু করে ভেইল, সবই যেন হুবহু এক।
এক নেটিজেন মিন্ডি কালিংয়ের পোশাক নিয়ে মন্তব্য করেন, 'আমি ভেবেই চলেছি কোথায় যেন দেখেছি… কোথায় যেন দেখেছি। এ যে কান থেকে আমাদের ঐশ্বরিয়া'। দ্বিতীয়জন লিখলেন, 'কালিংকে দেখতে সুন্দর লাগছে ঠিকই, তবে কানে ঐশ্বরিয়া যে পোশাক পরেছিলেন, তার থেকে লুকটা একটু অন্যরকম হতে পারত।'
মন্তব্য করুন
তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফি নির্মিত
‘তুফান’ সিনামাটি মুক্তির আগেই কুড়ালো নকলের দুর্নাম। সিনেমাটির টিজার প্রকাশ্যে আসতেই
আরেক দফা হাসাহাসি রাফির নির্মাণ নিয়ে। অবশ্য এই পরিচালকের বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ নতুন
কিছু নয়। তার ওপর আসা নকলের অভিযোগের ফর্দ বেশ লম্বা। ‘কপিরাজ’ শব্দটি যেন রায়হান রাফির
পদবী হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) ছবির অফিসিয়াল টিজার
ছবির নায়ক শাকিব খানের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। এর মেকিংয়ে ভারতীয় সিনেমা কেজিএফ
ও অ্যানিমেলের মিশ্রণ খুঁজে পেয়েছেন নেটিজেনরা। এরপরই রাফিকে একহাত নিচ্ছেন সিনেমাপ্রেমীরা।
রাহাত নামে একজন তো তুফানকে সরাসরিই
কেজিএফ ও অ্যানিমেলের কপি বলে ফেলেছেন। রাশেদ নামে একজন টিজার দেখে বলেছেন, মনে হচ্ছে
সাউথ ইন্ডিয়ান মুভির টিজার দেখলাম। তুফানে নায়কের পোশাক ও অভিব্যক্তিকে কেজিএফ স্টার
যশ ও অ্যনিমেল স্টার রণবীরের লুকের খিচুড়ি পাকিয়েছেন নির্মাতা রাফি। লুক, গেটআপ, সেট
ও মেকআপ সব কিছুতেই কেজিএফ সিনেমার কপির আলামত রেখেছেন এই পরিচালক। যদিও রাফির দাবি,
এই ছবির লুক ও অ্যাকশন নাকি একদমই আলাদা। তবে কেজিএফ সিনেমার বাজেট নকল করতে পারেননি
নির্মাতা। বড় বাজেট না থাকায় ছোট ছোট অস্ত্র সস্ত্র দিয়েই কেজিএফফের স্বাদ তুফানে মেটাতে
চেয়েছেন নির্মাতা। কপির অপবাদে অবশ্য নির্মাতা রাফির কিছু যায় আসে না।
এর আগেও এসব অপবাদ টলাতে পারেনি এই
কপিরাজ পরিচালককে। টিজার মুক্তির পর রাফি জানান, তুফান তার লাইফের একটা ড্রিম প্রজেক্ট।
দেশের একজন নির্মাতার স্বপ্ন ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে আমদানি হতে দেখে হেসেছেন
নেটিজেনদের অনেকে।
এর আগে, ওয়েব ফিল্ম ‘নিঃশ্বাস’-এর টাইটেল
ট্রাকের মিউজিক চুরির অভিযোগ উঠেছিল রাফির বিরুদ্ধে। অবশ্য তিনি সেটিকে নকল বলতে নারাজ।
অভিযোগ সামাল দিতে অভিধান ঘেঁটে ‘অনুপ্রাণিত’ শব্দটি এনে সে যাত্রায় পিঠ বাঁচিয়েছিলেন
তিনি। এছাড়া আফরান নিশো অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘সুড়ঙ্গ’-র বিরুদ্ধেও ব্যাকগ্রাউন্ড
মিউজিক নকলের অভিযোগ উঠেছে। এটিও রাফির নির্মাণ। নেটিজেনরা নকলের তথ্য-উপাত্ত হাজির
করলেও রাফি মেরুদণ্ড টান রেখেই জানিয়েছিলেন, তিনি যা করেছেন, সহি পদ্ধতিতেই করেছেন।
রাফি যে মিউজিক থেকেই অনুপ্রাণিত হন,
তা কিন্তু নয়। অন্যের পোস্টারও তাকে অনুপ্রাণিত করে। এর আগে তার নির্মিত ওয়েব ফিল্ম
‘ফ্রাইডে’র পোস্টারটিও নকল বলে চিহ্নিত করেছিল নেট নাগরিকরা। সেটি নাকি ছিল সাউথ কোরিয়ান
সিনেমা ‘প্যারাসাইটের নকল!
এবার তুফান সিনেমার টিজার বেরোতেই উঠল নকলের অভিযোগ। তবে শাকিবিয়ানরা তাদের পছন্দের নায়ককে এমন লুকে দেখ বেজায় আনন্দিত। ফলে সোশ্যাল মাধ্যমে দুর্নামের ঝড়টা বয়ে যাচ্ছে কেবল রাফির ওপর দিয়েই। আসছে ঈদ-উল-আজহায় মুক্তি পাবে তুফান। এ সিনেমায় আরও থাকবেন চঞ্চল চৌধুরী, মিমি চক্রবর্তী, নাবিলা অনেকে।
মন্তব্য করুন
পদ্মশ্রী পুরস্কার রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
মন্তব্য করুন
ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন টালিউট অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। সোমবার (৬ মে) নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে এক প্রকার বিপদে পড়েন এই অভিনেত্রী। প্রচারণাকালীন সময়ে তার গাড়ির সামনে ভেঙ্গে পড়ে গাছের ডাল। এতে অল্পের জন্য বেঁচে যান এই অভিনেত্রী। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচনে কঙ্গনার বিরুদ্ধে লড়তে চান রাখি সাওয়ান্ত
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, সোমবার ঝড়ের
মধ্যেই গাড়ি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন সায়নী। এরপর তৃণমূলের র্যালির সামনেই
ভেঙ্গে পড়ে গাছের ডাল। এসময় নেতা-কর্মীরা সতর্কতার সাথে সরিয়ে নেন অভিনেত্রীকে এবং
গাছের ডাল সরিয়ে আবারও প্রচারণায় বের হতে দেখা যায় তাদের।
উল্লেখ্য, ভারতে এবার লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে সাত দফায়। সে অনুযায়ী গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশটির ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১০২টি আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ভোট শুরু হয় ২৬ এপ্রিল। ৭ মে মঙ্গলবার তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছে। এ দফায় ভোট নেওয়া হচ্ছে ১০টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের মোট ৯৩টি কেন্দ্রে।
লোকসভা নির্বাচন সায়নী ঘোষ তৃণমূল
মন্তব্য করুন
মেট গালায় ২০২৪ এ ঝড় তুলেছে তারকাদের লুক। বলিউডের আলিয়া ভাট, ইশা আম্বানি থেকে শুরু করে হলিউডের মিন্ডি কালিং, জেনিফার লোপেজ...নজরকাড়া লুকে ঝলমল করছে 'মেট গালা'র রেড কার্পেট । তবে, তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি ভাইরাল হয়েছে মিন্ডি কালিং-এর 'মেট গালা' ড্রেস । যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে হলিউড নায়িকাকে নিয়ে চলছে ট্রোলিং।
তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফি নির্মিত ‘তুফান’ সিনামাটি মুক্তির আগেই কুড়ালো নকলের দুর্নাম। সিনেমাটির টিজার প্রকাশ্যে আসতেই আরেক দফা হাসাহাসি রাফির নির্মাণ নিয়ে। অবশ্য এই পরিচালকের বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তার ওপর আসা নকলের অভিযোগের ফর্দ বেশ লম্বা। ‘কপিরাজ’ শব্দটি যেন রায়হান রাফির পদবী হয়ে উঠেছে।