মলিউড কিংবা মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ছবিগুলো দর্শকদের আলাদা নজড় কাড়ে অনবদ্য প্লটের কারণে। বলিউড যেখানে নতুন বোতলে পুরোনো মদ এবং রিমেকের জোয়ারে হাবুডুবু খাচ্ছে, ঠিক সেখানেই নতুন প্লট ও ছবি দর্শকদের উপহার দিয়ে মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি চিন্তার মননে জোয়ার এনে দিচ্ছে। আর এই কাজটি যারা করে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো মলিউডের বরপুত্র পৃথ্বীরাজ সুকুমারান। অভিনয়ের মাঠে একের পর এক ছক্কা পেটাবার জন্য অসাধারণ সব প্লট এবং চরিত্র বেছে নেন তিনি। 

কিছুদিন আগেই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এমাজন প্রাইমে মুক্তি পেলো পৃথ্বীরাজ অভিনীত ‘কুরুথি’ নামের পলিটিক্যাল থ্রিলার-ড্রামা ছবিটি। ছবিটি দেখবার পর দর্শকদের মনে বেশ কিছু চিন্তার জন্ম জাগে। বিশেষ করে বর্তমান বিশ্বে যে ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়িয়ে পড়ছে, মানবতাবোধ ভুলে মানুষ যে অনর্থক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে, তার চমৎকার একটি পোট্রেয়াল হলো কুরুথি। 

ছবিতে প্রথমেই দেখা যায় ইব্রাহিম একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে তার স্ত্রী এবং কন্যাকে হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বারংবারই ফ্ল্যাশব্যাকে স্ত্রী-কন্যাকে দেখে তার মন খারাপ হয়। এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী সুমা ইব্রাহিমের প্রতি কিছুটা অনুরক্ত। তার বাড়িতে এসে রান্না করে দিয়ে যায় সুমা। আবার ইব্রাহিমকে বিয়ে করার জন্যও সে তাকে অনুরোধ করে। কিন্তু ধর্মের বাঁধা নিষেধ উপেক্ষা করে ইব্রাহিম ভালো লাগা সত্ত্বেও সুমাকে ঘরে তুলতে পারে না। সুমা তাকে বলে একটু ফাঁকা জায়গা পেলেই সে পূজা-অর্চনার কাজ করতে পারবে। কেউ দেখবে না। ইব্রাহিম তবুও তার কথায় মনকে মানাতে পারে না। 

ইব্রাহিমের ভাই রসুল মুসলিমদের আপন সত্ত্বায় বিশ্বাস করে। এজন্য বাড়িতে রান্না করে দিয়ে যাওয়া সুমাকে মন থেকে মেনে নিতে পারে না। ধর্মকে কীভাবে উন্নীত করা যায়, এজন্য সে দিনমান চিন্তা করতে থাকে। বাড়ি থেকে দূরে ক্যারাম খেলার আড্ডায় সে শুনতে থাকে বিশ্বরাজনীতির নানা বিষয়। গোপনে সে উগ্রবাদীদের সাথেও যোগ দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে, এমন একটি আভাস আমরা ছবিতে দেখতে পাই। এদিকে বাড়ির অশীতিপর বৃদ্ধ মুসা। তার অভিযোগের কোনো শেষ নেই। 

এমনই নিস্তরঙ্গ দিনগুলোতে তাদের ঘরে আসে একজন পুলিশ, সাথে একজন হিন্দু অপরাধী। রাতটা কাটাতে চায় তারা ইব্রাহিমের ঘরে। দোনোমনা করলেও তারা রাতে থাকার জায়গা পায়। এদিকে অপরাধীকে খোঁজার জন্য ইব্রাহিমের ঘরে হানা দেয় লাইক। বিষ্ণুকে হত্যা করার উন্মত্ত নেশায় তার চোখজোড়া চকচক করে ওঠে। ইব্রাহিম বাঁধা দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করে লাইককে। কিন্তু প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত লাইক ইব্রাহিমকে বারবার বোঝাতে যায় ইসলাম ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের কথা। 

ছবিতে সবচেয়ে টার্নিং পয়েন্ট আসে তখন, যখন সুমা ইব্রাহিমকে প্রশ্ন করে, আমাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে যদি কেউ আঘাত করে, তাহলে আমরা বসে থাকবো কিনা? আমাদেরও তো পাল্টা আঘাত করার অধিকার আছে। তখনই মূলত মানবতাবোধকে ছাপিয়ে ধর্মীয় বিষয়টাই মূল উপজীব্য হয়ে ওঠে এবং সুমা যে ইব্রাহিমকে ভালোবাসে, তা ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব কিংবা উগ্রবাদ প্রমাণের জায়গায় এসে ফিকে হয়ে যায়। 

বিষ্ণু, সুমা এবং সুমার ভাই পালাতে থাকে। তাদের পিছু নেয় লাইক, ইব্রাহিম, মুসা এবং রসুল। মানবতাবোধকে ছাপিয়ে ধর্মীয় দিকটাই তখন ছবিতে হয়ে ওঠে মূল উপজীব্য বিষয়। চরিত্র কম, কিন্তু বর্তমান রাজনীতি ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই কয়েকটি চরিত্রই যে চমৎকার দৈন্য দিকটি ফুটিয়ে তুলল, তা এককথায় লা জওয়াব। 

আমাদের বর্তমান বিশ্বেও ঠিক একইচিত্র যেন আমরা দেখতে পাই। মানবতাবোধকে ছাপিয়ে সবাই যার যার ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশে মত্ত। এজন্য হাতে ছোরা, আগ্নেয়াস্ত্র নিতেও কেউ দ্বিধাবোধ করছে না। ছবিতে রসুল কিংবা বিষ্ণু যখন একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিশোধের নেশায়, তখন যেন আমরা আজকের দুনিয়ার নগ্ন চিত্রটাই তাদের চোখে দেখতে পাই। একদম শেষ দৃশ্যে আমরা যখন দেখতে পাই রসুলের হাতে লাইক ছুরি তুলে দিচ্ছে, তখন যেন নতুন প্রজন্মের হাতে পুরোনো প্রজন্ম হানাহানি আর রক্তারক্তির লিগ্যাসিটা তুলে দিচ্ছে, এমন একটি আভাসই আমরা পাই। মানবতা থাকবে, একইসাথে পাশাপাশি চলবে ধর্মীয় উন্মত্ততা। কেউ কাউকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না, বরং সমান্তরাল রেখায় আলোর বিপরীতে অন্ধকারের মতো অবস্থান করবে সদর্পে।

ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে ও বিচ্ছেদ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেছেন ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলী এই নায়কের দুই সাবেক স্ত্রী হলেও বাবা হিসেবে দুই সন্তান আব্রাম ও শেহজাদের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তবে এবার নতুন সম্পর্কের পথে হাঁটতে চলেছেন ঢালিউড কিং।

নায়কের পরিবারের মতে, অতীত ভুলে সংসারী হয়ে উঠুক শাকিব খান। আর এ কারণেই শাকিবের পরিবারে চলছে বিয়ের তোড়জোড়। খুব শিগগিরই বিয়ে করবেন অভিনেতা। এর জন্য শাকিবের সম্মতিতে পাত্রী দেখাও শুরু হয়েছে।
 
গুঞ্জন চলছে, যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসা বিষয়ে লেখাপড়া করে দেশে ফেরা এক ডাক্তার মেয়ের সঙ্গে বিয়ের আলোচনা এগোচ্ছে শাকিবের।
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাকিবের পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, যখনই সিনেমা মুক্তির সময় আসে তখনই আলোচনায় থাকতে সাক্ষাৎকারে শাকিব প্রসঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন অপু ও বুবলী। এতে শাকিব খান যেমন বিব্রত হন, তেমনি তার পরিবারকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। আর এ কারণেই শাকিবের পরিবার তাকে বিয়ে দিচ্ছে।
 
শাকিবের পরিবারের ওই সদস্য আরও বলেন, দুজনই এখন শাকিবের অতীত। অথচ তারা এখনও শাকিবের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে দাবি করছেন। আমরা তাই বেশ বিরক্ত।

এদিকে শাকিবের বাড়িতে যাওয়ায় নিষেধ রয়েছে অপু ও বুবলীর। এ ছাড়া তারা দুজন যদি কোনো সাক্ষাৎকারে শাকিবকে নিয়ে কোনো মিথ্যাচার করেন তবে সে বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে শাকিবের পরিবারের।
 
শোনা যাচ্ছে, দুবার নিজের পছন্দে বিয়ে করে জটিলতায় পড়েছেন শাকিব। আর তাই এবার পরিবারের পছন্দেই সম্মতি দিয়েছেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জমকালো আয়োজনে চলতি বছরের শেষের দিকেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন ঢালিউড কিং।