কালার ইনসাইড

সৃজিত মুখার্জীঃ টালিগঞ্জের বাজিকর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০২ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০


Thumbnail

 

একটা সময় কলকাতার বাংলা সিনেমা আটকে গিয়েছিলো বিশেষ কিছু গল্পের চোরাবালিতে। ধনী গরীবের অসম প্রেমের গল্প, পিতার হত্যাকারীকে বছরের পর বছর ধরে খুঁজে চলার গল্প, দক্ষিনী সিনেমার ফ্রেম টু ফ্রেম কপি আর বি গ্রেডের রগরগে যৌনতা নির্ভর গল্পের ভার যেন আর সইতে পারছিলো না কলকাতার সিনেমাপ্রেমী দর্শকেরা।

সময়টা ২০০৮ কিংবা ২০০৯ হবে। প্রেসিডেন্সী কলেজ আর জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে অর্থনীতি আর পরিসংখ্যানের কর্মজীবনকে পেছনে ঠেলে এক যুবক আসলেন কলকাতার সিনেমা পাড়ায়। মনের মধ্যে বাংলা সিনেমার অংকের হিসেব বদলে দেবার ইচ্ছে নিয়ে ঘুরতে লাগলেন প্রয়োজকদের দ্বারে দ্বারে। অথচ গল্প শুনিয়ে প্রযোজকদের মন জয় করতেই পারছিলো না ছেলেটি। অর্থনীতির ছাত্রের সিনেমার গল্পে নাকি বাণিজ্য খুঁজে পাচ্ছিলেন না প্রযোজকগণ। তার গল্পে নাকি কমার্শিয়াল বিষয়টা ঠিক নেই। অবশেষে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের শ্রীকান্ত মোহতা শুনলেন সেই যুবকের গল্প। দুই বছর ধরে এই গল্পের সাথে বাস করতে থাকা ছেলেটি সেদিন তার গল্পের আকর্ষণে আকৃষ্ট করেছিলেন তাকে। গল্প শুনে মোহতা যখন ওই গল্পের পরিচালনা কে করবেন প্রশ্নটি করেছিলেন, সেদিন ওই যুবক দৃপ্ত কন্ঠে বলেছিলেন যদি পৃথিবীর কেউ এই গল্পটি বলতে পারে সেটি একমাত্র আমি। কলকাতার সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রির ভার অনেকটা একা বয়ে চলা নায়ক প্রসেনজিত এর ক্যারিয়ারে তখন বলতে গেলে এক রকমের ভাটা চলছিলো। সত্যজিৎ রায়ের “নায়ক” আর ইংরিদ বারিমানের “ওয়াইল্ড স্ট্রবেরিজ” থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রসেনজিত চ্যাটার্জিকে নিয়ে ধরলেন এক বিশাল বাজি। তৈরী করলেন “অটোগ্রাফ”। ঐ এক বাজিতেই বদলে গেলো টালিগঞ্জের সিনেমার ধারা, শুরু হলো নতুন এক যুগের। হ্যা সেই বাজি ধরা ছেলেটির নাম সৃজিত মুখার্জী, টালিগঞ্জের বাজিকর।

যুগে যুগে সিনেমায় বাণিজ্যের দরকার ছিলো। মূলত আপনি আপনার সিনেমাকে কিভাবে বেচবেন এটা নির্ভর করবে আপনার দর্শকের রুচি আর জ্ঞানের উপর নির্ভর করে। ওই সময়কার কলকাতার দর্শককের মধ্যে এক ধরণের বিবর্তন নিয়ে এসেছিলেন সৃজিত মুখার্জী। গল্পই ছিলো তার সিনেমার মূল অস্ত্র। সেই সাথে এক্সপেরিমেন্টাল মাইন্ড দিয়ে অসাধারণ সব অভিনেতা আর হৃদয় জুড়িয়ে দেওয়া গানে যেন বদলে দিলেন গোটা একটা ইন্ড্রাস্ট্রির সিনেমার ধারাকেই।

পরের বছর সৃজিত বাঙ্গালীকে ডুবালেন এক ঘোর লাগা থ্রিলারের দুনিয়াতে। “বাইশে শ্রাবণ”! সৃজিত মুখার্জীর দ্বিতীয় সিনেমায় পর্দায় আনলেন পরমব্রতকে। সেইসাথে বদ্ধ ঘরের চার দেয়ালের মাঝে নিজের সাথে নিজে দাবা খেলে যাওয়া উন্মাদ পুলিশ অফিসার রুপে আবির্ভূত হলেন অটোগ্রাফের বদৌলতে প্রসেনজিত চ্যাটার্জি থেকে প্রসেনজিত বাবুতে বদলে যাওয়া চরিত্র “প্রবির রায় চৌধুরী”। বাঙ্গালি মুগ্ধ হলো, থ্রিলারের এই রুপ বাঙ্গালী আগে দেখেনি। বাজিমাত করলেন সৃজিত মুখার্জী।

বাঙ্গালী ভাবতেও পারেনি আত্মহত্যা প্রতিরোধের জন্য কোনো কোচিং সেন্টার থাকতে পারে, আবার সেই গল্প থেকে আস্ত একটা বাংলা সিনেমা হতে পারে। হ্যা হয়েছিলো, সৃজিত নির্মাণ করলেন “হেমলক সোসাইটি” নামের অদ্ভুত কন্টেন্ট এর এক সিনেমা। যা অনেক মানুষকেই বুঝিয়েছে যে “আত্মহত্যা কোনো সমাধান হয়”।

এরপর একে একে কাকাবাবু, মিশর রহস্য, জাতিস্মর দিয়ে সৃজিত নিজের জাত চিনিয়েছেন কলকাতার দর্শকদের। যার ফলস্বরূপ ৬১ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতে নেয় সৃজিতের জাতিস্মর।

ডায়লগ যে একটা সিনেমাকে কতোটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে সেটির প্রতিফলন দেখালেন “চতুস্কোন” সিনেমাতে। চতুর্ভুজ প্রেম নিয়েও যে টুইস্টে ভরপুর থ্রিলার নির্মাণ সম্ভব তা দেখালেন সৃজিত মুখার্জী। সৃজিতের অদ্ভুত এক ক্ষমতা আছে, যে সকল অভিনেতারা অনেকদিন অভিনয় থেকে দূরে আছেন তাদের কাজ করার ক্ষুধাকে কাজে লাগিয়ে মাস্টারপিস তৈরী করেন তিনি। ৬২ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে জিতে নেন সেরা পরিচালক ও সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরস্কার।

সৃজিতের ক্যারিয়ারের সবথেকে বড় মাস্টারপিস ছিলো সম্ভবত “নির্বাক” নামের সিনেমাটি। অঞ্জন দত্তের নির্বাক হাসির সাথে মর্গের ড্রয়ার থেকে ধোঁয়ার সাথে সাথে উড়ে আসা প্রেম আর সমুদ্রের মাঝে মৃত লাশকে সিনেমার পর্দায় যেন জীবন্ত রুপ দিয়েছিলেন সৃজিত মুখার্জী।

বড় একটি ঘটনার ইমপ্যাক্ট যে ছোট একটি ব্রোথেলেও এসে পড়তে পারে এবং এই ঘটনা থেকেও যে সিনেমা নির্মান সম্ভব তা কলকাতাবাসীর সামনে আনলেন সৃজিত। নির্মাণ করলেন দেশভাগের ঘটনা নিয়ে “রাজকাহিনী” যা পরবর্তীতে হিন্দিতে “বেগমজান” নামেও তিনি নির্মাণ করেছিলেন। এরপর একে একে নির্মাণ করেন জুলফিকার, ইয়েতি অভিযান, উমা, শাহজাহান রিজেন্সি, এক যে ছিলো রাজা, ভিঞ্চিদা।

নেতাজী শুভাস বোস এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সৃজিত নির্মাণ করলেন “গুমনামী”, যা সৃজিতের রাজনৈতিক চিন্তার গভীরতার ছাপ রেখেছে। সৃজিত মুখার্জীর সিনেমাতে যেমন মুগ্ধ থাকেন সাধারণ দর্শকেরা, তেমনি সমালোচকদের মুগ্ধতাও কুড়িয়ে নেন গল্প আর কন্টেন্ট এর জোরে। সৃজিতের মধ্যে খুব জটিল সিনেমার প্লটকেও পাড়ার চায়ের দোকানের উঠতি যুবকদের আড্ডার টপিকে পরিণত করার গুণ রয়েছে। সাবলিল ভাষায় কোনো ভাঁড়ামি ছাড়া ডায়লগ কিভাবে মানুষের মন ছুঁয়ে যেতে পারে এটির বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে সৃজিতে মুখার্জীর সিনেমাগুলো। সামনে তিনি হাজির হচ্ছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিনের বিখ্যাত বই অবলম্বনে “রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি” নিয়ে। যা দুই বাংলার দর্শকদের রহস্যময় চরিত্র “মুশকান জুবেরি” তে বুদ করবে বলে দেওয়া যায়।

টালিগঞ্জে সৃজিত সেই ২০১০ এ যে বাজি ধরেছিলেন সেই বাজি না ধরলে হয়তো কলকাতার দর্শকরা সেই ম্যাড়মেড়ে প্রেমের গল্প আর বি গ্রেড যৌনাচার দিয়েই মন ভরাতো। হয়তো সৃজিত নামের বাজিকরের কারণেই আজ কলকাতা পেয়েছে স্মার্ট দর্শকশ্রেনী। টালিগঞ্জের এই বাজিকরের আজ ৪৩ তম জন্মদিন। সৃজিত মুখার্জী তার নিত্য নতুন সিনেমা দিয়ে মুগ্ধ করে রাখুক বাঙ্গালীকে। বাংলা ভাষার দর্শকদের ডাল ভাত আর বিরিয়ানির পার্থক্য বুঝতে শেখানো টালিগঞ্জের বাজিকরকে জানাই শুভ জন্মদিন।



মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

বাংলাদেশের 'নীল জোছনা' সিনেমায় পাওলি দাম

প্রকাশ: ১০:২২ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের সরকারি অনুদানের 'নীল জোছনা' সিনেমায় অভিনয় করবেন ভারতের অভিনেত্রী পাওলি দাম। 

মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজি বিষয়ক উপন্যাস 'নীল জোছনার জীবন' অবলম্বনে নির্মিত হবে সিনেমাটি।

সিনেমার প্রধান নারী চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী পাওলি দামকে। তার বিপরীতে কে থাকছেন সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) পাওলির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেন নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খান।

তিনি বলেন, 'প্রায় ৬ বছর আগে 'নীল জোছনা' সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম। এরপর ২০১৯ সালে করোনা এবং আমার আরেকটি সিনেমার কারণে কাজটি বন্ধ ছিল।

এরপর আবার গত বছরের শুরু থেকে কাজ শুরু করি। সিনেমার দৃশ্যধারণ শুরু হবে মে মাসের শেষ দিকে।' 


পাওলি দাম   নীল জোছনা  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসির সামনে মানববন্ধন

প্রকাশ: ১০:২৪ এএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর নারকীয় হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সাংবাদিকরা।

গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে বিএফডিসি'র টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বিএফডিসি'র সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন বক্তৃতা রাখেন বিএফইউজে'র সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজের নব-নির্বাচিত অন্যতম সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু, সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রব, বাচসাস'র সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।

এসময় বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানাক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করে তাদের আমরা মননশীল করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন নারকীয় এই হামলার নেতৃত্ব দেওয়া জয় চৌধুরী শিবা শানু, ও আলেকজান্ডার বো'সহ জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতি থেকে সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান মানববন্ধন থেকে বক্তারা।

মানববন্ধনে আরও অংশ নেয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকালে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বো'র নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪ জন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিনোদন সাংবাদিকসহ নানা বিটে কর্মরত সাংবাদিকরা।

এদিকে, ঘটনার তদন্তের জন্য ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচজন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান। দশ জনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয়, আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল, রত্না।


সাংবাদিকদের ওপর হামলা   এফডিসি   মানববন্ধন  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

এবার বিয়ে ও বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন জয়া

প্রকাশ: ০৯:৪৯ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। ইতোমধ্যে ঢালিউড-টালিউড মাতিয়ে অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন বলিউডেও। পর্দায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে ফুটিয়ে তোলেন এই নায়িকা। সাবলীল অঙ্গভঙ্গি আর অভিনয় দক্ষতায় বরাবরই দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যান তিনি।

কাজের পাশাপাশি এই অভিনেত্রীর ঘরের খবর পেতেও মুখিয়ে থাকেন দর্শক। কবে বিয়ে করছেন, কেন একা থাকেন এসব জানার খুব শখ তাদের। বরাবরই তিনি মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। তবে এবার সবকিছু নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে জয়া কথা বলেছেন বিয়ে ও বিচ্ছেদ নিয়ে।

বিয়ে নিয়ে জয়া বলেন, বর্তমান জীবন খুবই এনজয় করছি। দেখুন, পরিবার তো শুধু স্বামী-স্ত্রীকেই ঘিরে নয়, অথবা পার্টনার হলেই হয় না, পরিবারে আরও অনেকেই আছে। পরিবারে মা-বাবা আছেন, আমার বাড়িতে যেসব লোক কাজ করেন, তারা আছেন। আমি খুবই এনজয় করি।

একাকী জীবনযাপন নিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, আমি তো কোনোকিছু পরিকল্পনা করি না। যদি মনে করি যে সিঙ্গেল থেকে ডাবল হতে চাই, দরকার আছে, তখনই হবো। তবে এই মুহূর্তে আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ, আমি খুবই ভালো আছি, শান্তিতে আছি চারদিকে। আমার আপাতত কোনো প্ল্যান নেই।

এদিকে প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজে কাজ করতে যাচ্ছেন জয়া। এটি নির্মাণ করবেন মহানগর খ্যাত নির্মাতা আশফাক নিপুণ।


জয়া আহসান  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

কবে আসছে ‘অ্যানিমাল-২, জানালেন সিনেমাটির নির্মাতা

প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বহুল আলোচিত সিনেমা 'অ্যানিমাল' দেখেনি এখন খুব কম মানুষ আছে। সেই ছবিতে রণবীর কাপুরের অভিনয় মুগ্ধ করেছে সকলকেই। এই ছবির শেষেই পরিচালক দেখিয়েছিলেন যে এই সিনেমার সিক্যুয়েল আসছে। অনেকেই মুখিয়ে আছেন এই সিক্যুয়েলের জন্য, যার নাম 'অ্যানিমাল পার্ক'।

সম্প্রতি সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা জানিয়েছেন কবে আসছে সেই ছবি। সাম্প্রতিক অ্যাওয়ার্ড শোতে সিনেমাটির পরিচালক শেয়ার করেছেন, ২০২৬ সালে রণবীর কাপুর-অভিনীত 'অ্যানিমাল'-এর সিক্যুয়েলের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি সন্দীপ রেড্ডি সিনেমাটিক ইউনিভার্সের সম্ভাবনার কথাও বলেছেন।

পুরস্কার গ্রহণ করার সময় হোস্টরা তাকে রণবীর কাপুর-অভিনীত 'অ্যানিমাল' সিক্যুয়েল 'অ্যানিমাল পার্ক' সম্পর্কে কিছু বিশদ প্রকাশ করতে বলায় তখনই তিনি জানান, ছবিটি ২০২৬ সালে ফ্লোরে যাবে।

তিনি আরও যোগ করেছেন, 'অ্যানিমাল পার্ক' আসলে 'অ্যানিমাল'-এর চেয়ে বড় এবং আরও বন্য একটি সিনেমা হবে। যদিও এমন দাবি তিনি আগেও করেছিলেন।


অ্যানিমাল   রণবির কাপুর   বলিউড   সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

আদালতের রায়: অভিভাবকত্ব পেয়ে ইতিহাস গড়লেন বাঁধন

প্রকাশ: ০৩:১১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আবারও আদালত প্রাঙ্গণে সগর্বে উচ্চারিত হলো অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের নাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র মা, যিনি সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছেন। বাঁধনের আগে এবং পরে এখনো কোনো নারী সন্তানের অভিভাবকত্ব পাননি।

গত সোমবারের (২২ এপ্রিল) নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কমিটিকে নীতিমালা দাখিল করতে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবারের (২২ এপ্রিল) রুলসহ এই আদেশ দেন।

অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯(খ) ধারা অনুসারে কোনো নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কারো পক্ষে সেই নাবালকের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ নেই।

আইনটির এই ধারা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এক রুলে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এর পরই আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আইনজীবী সারা হোসেন।

তিনি বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটা অর্জন। বাংলাদেশে যদিও নারীরা সন্তানদের হেফাজত (কাস্টডি) পাচ্ছেন, একটি ঘটনা ছাড়া আর কাউকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তাঁর সন্তানের অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। এর বাইরে বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো উদাহরণ নেই যে নারীরা সন্তানের অভিভাবকত্ব পাচ্ছেন।’

উচ্চ আদালতের এই রুল জারির পর ভীষণ উচ্ছ্বসিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ অভিনেত্রী। আজ থেকে ছয় বছর আগে (২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল) ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র কন্যাসন্তান মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছিলেন বাঁধনকে।

বাঁধন বলেন, ‘আইনটা পরিবর্তনের একটা প্রক্রিয়া শুরু হলো, এটা সবচেয়ে আনন্দের। যাঁরা আপিল করেছেন তাঁদের সাধুবাদ জানাই। আমার অর্জনটা শুধু আমারই থাকুক তা চাই না, আমি চাই বাংলাদেশের সব মেয়ের অধিকার থাকুক তাঁর সন্তানের ওপর।’

তবে, ছয় বছর আগে যখন কন্যা সায়রার অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন, তখনো এই রায়ের মাহাত্ম্য পুরোপুরি বুঝতে পারেননি বাঁধন। সময়ের সঙ্গে এই রায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন তিনি।

বাঁধন বলেন, ‘আমার পক্ষে যখন রায় এলো, তখন এর গুরুত্ব এতটা বুঝতে পারিনি। বাচ্চাটাকে কাছে রাখতে চেয়েছি, যেহেতু ওর সম্পূর্ণ ভরণ-পোষণ আমিই করতাম, আমি কেন ওর অভিভাবক হতে পারব না! বাচ্চার বাবা কোনো দায়িত্বই কখনো পালন করেননি। আদালতে সেটা প্রমাণও করতে পারেননি, তার জন্য আমাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয়েছিল।’

অভিভাবকত্ব আইন নিয়ে দীর্ঘ লড়াই করেছিলেন তিনি। অধিকার আদায়ে লড়াই করে অর্জন করেছেন দীর্ঘ অভিজ্ঞতাও। এই আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উনি (আইনজীবী সারা হোসেন) কিন্তু উল্লেখ করেছেন, সাধারণত মাকে কাস্টডি দেওয়া হয়, শারীরিক জিম্মা যেটাকে বলে। বাবা বেঁচে থাকতে মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয় না। যদি বাবা না পান সে ক্ষেত্রে দাদা-চাচা, এমনকি নানা-মামারা অভিভাবকত্ব পান। অনেক পরে আসে মায়ের নাম। যে কারণে আমারটা ব্যতিক্রমী একটা রায় ছিল। আমাদের প্রচলিত আইনে একটা লুপ হোল কিন্তু আছে, মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া যাবে, তবে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে সেটা খুবই কঠিন। কাস্টডি আর অভিভাবকত্ব এক নয়। অভিভাবকত্ব পুরো ডিফারেন্ট একটা বিষয়। আমাদের আইনে বাবা ন্যাচারাল গার্ডিয়ান, অভিভাবকত্বের প্রশ্নে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত মায়ের অস্তিত্ব নেই আসলে। এসব জায়গায় অনেক সংশোধনী আনা প্রয়োজন।’

ক্লাস ফাইভের ছাত্রী সায়রা সারাক্ষণ মায়ের আশপাশেই থাকে। প্রায়ই মা-মেয়ে একসঙ্গে দেশ-বিদেশ ঘুরতে বেরিয়ে পড়ে। মেয়েকে ঘিরেই কাজের শিডিউল করেন বাঁধন। মেয়ে এখন বড় হচ্ছে, মায়ের এই অর্জন সম্পর্কে তার কি কোনো ধারণা আছে? বাঁধন বলেন, ‘ও বুঝতে পারে।

তবে এত কিছু ওর ধারণায় নেই। শুধু জানে, ওর মা ওকে কাছে রাখার জন্য লড়াই করেছে এবং জিতেছে। এটাও জানে, তাকে কাছে রাখার জন্য তার মা সমাজ ও আইনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। তার মা একজন ফাইটার, এটা সে এখন ভালোই বোঝে। টিচাররা, আশপাশের সবাই যখন ওর সামনে এসব বলে, তখন ও বুঝতে পারে মা ওর জন্য কী করেছে। তবে বিষয়টার গুরুত্ব ওর বোঝার জন্য অনেক কঠিন। সেই ক্ষমতা এখনো তার হয়নি।’


উচ্চ আদালত   আজমেরী হক বাঁধন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন