ইনসাইড আর্টিকেল

বাংলার ‘ভাষা আন্দোলন’ এবং তরুণ শেখ মুজিব

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন মূলত একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন হলেও সেটা ছিল বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক আন্দোলনের উৎস। আর সেই সংগ্রামের উৎস ধরে ১৯ বছরের রক্তপথ পেরিয়ে ১৯৭১ সালে তার সমাপ্তিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। এর ফলে বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়; সার্থক হয় রক্তস্নাত একুশে ফেব্রুয়ারির স্বপ্ন।

আর এই একুশে ফেব্রুয়ারির স্বপ্ন বাস্তবায়নে সম্মুখসারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যিনি সর্বপ্রথম কারাবরণ করেছিলেন, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যা আজকের প্রজন্মের অনেকেরই অজানা। অধিকাংশের ধারণা, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে শহিদ রফিক, শফিক, বরকত, সালাম, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই আন্দোলনের সফলতা। এছাড়াও ইতিহাস বিকৃতিকারীদের ঘনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষকতায় সৃষ্টি হয়েছিল নানা বিতর্ক। প্রকৃত ইতিহাস এবং সত্য কালোমেঘে আচ্ছাদিত হয়েছিল ষড়যন্ত্রের নিবিড় পর্যবেক্ষণে।   

কিন্তু মাতৃভাষা আন্দোলনের এই সফলতা একদিনে আসেনি। ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কুমিল্লার বাঙালি প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ইংরেজি ও উর্দুর সঙ্গে বাংলাকে পরিষদের ব্যবহারিক ভাষা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংশোধনী প্রস্তাব করলে মুসলিম লীগের নেতাদের বিরোধিতায় তা বাতিল হয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ তারিখের সভায় সিদ্ধান্ত হয়-ভাষার দাবিতে ৭ মার্চ ঢাকায় ও ১১ মার্চ দেশের সর্বত্র ধর্মঘট পালন করা হবে।

তীব্র আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল ১৯৪৮-এর ১১ মার্চ। এদিন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক ‘বাংলা ভাষা দিবস’ ঘোষণার পাশাপাশি এইদিনে পরিষদের ডাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সর্বাত্মক সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। এটাই ছিল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে তথা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এ দেশে প্রথম সফল হরতাল। এই হরতালে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সুদূর গোপালগঞ্জ হতে ১০ মার্চ ঢাকায় আসেন, নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে গ্রেফতার হন।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮-এর ১১ মার্চের আন্দোলনে সেদিন অন্তত শ’দুয়েক ভাষাপ্রেমী গুরুতরভাবে আহত হন এবং বঙ্গবন্ধুসহ গ্রেফতার হন ৬৯ ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। বন্দিদের মধ্যে কয়েকজন কিশোরও ছিল, যা বঙ্গবন্ধু তার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে উল্লেখ করেছেন। (সূত্র: অসমাপ্ত আত্মজীবনী, শেখ মুজিবুর রহমান)।

১১ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো। ১০ মার্চ রাতে ফজলুল হক হলে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের একটি সভা বসল। সভায় আপোষকর্মীদের ষড়যন্ত্র শুরু হলো। রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের আহ্বায়কসহ অনেকেই তখন দোদুল্যমানতায় ভুগছে, আপস করতে চাইছে সরকারের সঙ্গে। একটি বজ্রকণ্ঠ সচকিত হয়ে উঠল, ‘সরকার কি আপোষের প্রস্তাব দিয়েছে? নাজিমুদ্দিন সরকার কি বাংলা ভাষার দাবি মেনে নিয়েছে? যদি তা না হয়ে থাকে তবে আগামীকাল ধর্মঘট হবে, সেক্রেটারিয়েটের সামনে পিকেটিং হবে। ছাত্রনেতা শেখ মুজিবকে সমর্থন দিলেন অলি আহাদ, তোয়াহা, মোগলটুলীর শওকত সাহেব, শামসুল হক সাহেব। আপোষকামীদের ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেল। এ সম্পর্কে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে অলি আহাদ বলেছিলেন-‘সেদিন সন্ধ্যায় যদি মুজিব ভাই ঢাকায় না পৌঁছতেন তাহলে ১১ মার্চের হরতাল, পিকেটিং কিছুই হতো না’। ১১ মার্চ হরতাল হয়েছিল, পিকেটিং হয়েছিল সেক্রেটারিয়েটের সামনে, সেখান থেকে ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হয়েছিলেন, তাঁর অপর সাথী অলি আহাদ, শামসুল হক সাহেব, শওকত সাহেব এবং অন্যদের সঙ্গে। (সূত্র : ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, গাজীউল হক)।

১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হরতাল, পিকেটিংয়ের কারণে সাথীদের সাথে গ্রেপ্তার হলেও খুব সহজেই ছাড়া পেয়ে যান। কারণ এটিই ছিল তার জীবনের প্রথম গ্রেপ্তার।  ছাড়া পেয়েই আবারও আন্দোলনকে বেগবান করতে ঝাপিয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। (সূত্র: মোনায়েম সরকার সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান : জীবন ও রাজনীতি’)।  

১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চের ঘটনা সম্পর্কে তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরিতে যে বিবরণ পাওয়া যায়, তা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের সবচেয়ে বস্তুনিষ্ঠ বিষয় বলে গণ্য করা হয়। তিনি লিখেছেন  ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বেলা দেড়টায় সভা শুরু হলো। মুজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করলেন। সংশোধনীগুলি গৃহীত হলো। যদিও সংগ্রাম কমিটির কোনো কর্মসূচি ছিল না, তবু এসেম্বলি হাউস অভিমুখে ছাত্রদের একটা বিক্ষোভ মিছিল পরিচালিত হলো এবং সরকারি দলের এমএলএ-দের নিন্দা করে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করল। এএসই মেইন হোস্টেলের একটা রুমে মিলিত হলাম। পাঁচটা পর্যন্ত সেখানে থাকলাম। পরে ছাত্রদের এমএলএ-দের ‘ধর ধর’ শব্দে রুম থেকে বের হলাম। এর ফলে এসেম্বলি হল থেকে সরকারি দলের অনেক এমএলএ বের হলো না। ঠিক সন্ধ্যা সাতটায় মি. গফুর ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহমতুল্লাহর নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে ছাত্রদের ওপর লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল। তারা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরেও গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল। লাঠিচার্জে ১৯ জন মারাত্মকভাবে আহত হলো। শওকত তাদের অন্যতম। (সূত্র: তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি- ১৯৪৭-১৯৪৮, প্রথম খণ্ড, পৃ. ২৩১।)

ভাষাসৈনিক অলি আহাদ তার ‘জাতীয় রাজনীতি : ১৯৪৫ থেকে ১৯৭৫’ গ্রন্থে বলেন, ‘১১ মার্চের হরতাল কর্মসূচিতে যুবক শেখ মুজিব এতটাই উৎসাহিত হয়েছিলেন যে, এ হরতাল ও কর্মসূচি তার জীবনের গতিধারা নতুনভাবে প্রবাহিত করে।’ মোনায়েম সরকার সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান : জীবন ও রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘স্বাধীন পাকিস্তানের রাজনীতিতে এটিই তার প্রথম গ্রেপ্তার।’ পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে ১৯৪৯ সালের ১৫ অক্টোবর খাদ্যের দাবিতে ভুখা মিছিলে নেতৃত্বদানের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পুনরায় গ্রেপ্তার হন এবং মুক্ত হন ’৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি।

অর্থাৎ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বিস্ফোরণ পর্বে বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন। ফলে স্বাভাবিক কারণেই ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে রাজপথে থেকে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। ব্যক্তিগতভাবে আন্দোলনে অনুপস্থিত থাকলেও জেলে থেকেই আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন শেখ মুজিব এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। (সূত্র : ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, গাজীউল হক)।

ঐতিহাসিক বাংলা ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু উদ্বুদ্ধ হয়ে যথাযথ নেতৃত্ব প্রদান করেছেন, পুলিশি নির্যাতন সহ্য করে কারাবরণ করতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। শুধু তাই নয়, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের বিস্ফোরণ মুহূর্তে জেলে বসে অনশন ধর্মঘট করে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে মৃত্যু পথযাত্রী হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিব, যা বাংলা ভাষার আন্দোলনকে করেছিল বেগবান।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের বিস্ফোরণের পর এর চেতনাকে কাজে লাগিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের একজন মন্ত্রী হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সমকালীন রাজনীতি এবং বাংলা ভাষার উন্নয়নে অবদান রাখেন। ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু বাংলা একাডেমিতে একটি সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘ভাষা-আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আমি ঘোষণা করছি, আমার দল ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকেই সকল সরকারি অফিস-আদালত ও জাতীয় জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলা চালু হবে’ (সূত্র : দৈনিক পাকিস্তান, ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১)। ১৯৭২ সালের সংবিধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে গ্রহণ করেন।

এটাই ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বাংলা ভাষায় প্রণীত সংবিধান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের মূল নায়ক ও স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ভাষা আন্দোলনেরই সূদুরপ্রসারী ফলশ্রুতি।’ (সূত্র: দৈনিক সংবাদ, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫)।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমৃত্যু বাংলা ভাষার একনিষ্ঠ সেবক হিসেবে বাংলা ভাষার উন্নয়ন বিকাশে ও সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের সফল, সার্থক ও যোগ্য নেতা ছিলেন বলেই ভাষা সমস্যার সমাধানের ভার তার উপর অর্পিত হয়েছিল। এই মহান নেতা বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আদায় এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাভাষাভাষীদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। আর তাই ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে তিনি যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন, তা ইতিহাসের পাতায় চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বিশ্বসভায় বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার এটাই ছিল প্রথম সফল উদ্যোগ। শুধু তাই নয়; ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসমুদ্রে বাংলা ভাষায় বঙ্গবন্ধু যে অগ্নিঝরা ভাষণ প্রদান করেন, তা শুধু ভাষণই ছিল না; ছিল এক মহাকাব্য, ছিল সাড়ে সাত কোটি মানুষেকে উজ্জীবিত করে বাংলাকে স্বাধীন করার মূলমন্ত্র।

বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেক্ষিতে কিছুদিন পরে নিউজউইক (Newsweek) পত্রিকা তাকে দ্য পয়েট অব পলিটিক্স (‘The Poet of Politics’) বলে আখ্যায়িত করে। ৭ মার্চের ভাষণ শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয়, ছিল সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুধু ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছিল, তা নয়; বরং এই ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বের সব অবহেলিত ও বঞ্চিত জাতি-গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা জোগিয়েছে এবং জোগাতে থাকবে।


বাংলা   ভাষা আন্দোলন   তরুণ শেখ মুজিব   ১৯৫২  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

পরীক্ষার ফলাফলে কেন ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে?

প্রকাশ: ০৮:০৩ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

একটি জাতির মেরুদণ্ড হল শিক্ষা। যা কিনা জাতি গঠনের প্রধান উপাদান। স্বমহিমায় নিজেদের উদ্ভাসিত করতে কেবল শিক্ষত জাতিই পারে। বিবেকবান মানুষ, সুনাগরিক, কর্তব্যপরায়ণ, দায়িত্ববান ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে শিক্ষার বিকল্প নেই। সে জন্য প্রয়োজন শিশুকাল থেকেই শিক্ষা অর্জন। স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেকেই পারি দেন বিদেশে।

শিক্ষার সূচনা পরিবারের থেকে হলেও জ্ঞান অর্জনের বাল্যকালের বিশেষ ধাপ মনে করা হয় প্রাইমারি থেকে এসএসসি পর্যন্ত। আর এই এসএসসি পরিক্ষার ফলাফলে চলতি বছরে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পাসের গড় হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪। যা গতবারের (২০২৩ সালে) চেয়ে বেড়েছে। গেল বছর পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। কিন্তু এবারের এসএসসি তে মোট পাসের হারের মধ্যে ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪.৪৭ আর অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৮১.৫৭ শতাংশ। এর নেপথ্যের কারণ কি? কেনইবা ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাসের হার এগিয়ে?

রোববার (১২ মে) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর এক সংবাদে সম্মেলনে পরিক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলেদের সংখ্যা কম দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন ছেলেরা পিছিয়ে তা জানতে শিক্ষা বোর্ড প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ অনুযায়ী এসএসসি ফলাফলে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা কেন এগিয়ে তার কিছু সুনির্দিষ্ট দিক থেকে শিক্ষার্থীদের বেড়ে উঠা, তাদের প্রতি পরিবারে দায়িত্ব ইত্যাদি নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি যে..

সাধারণত পড়াশোনার ক্ষেত্রে ছেলেদের পিছিয়ে পড়ার পেছনে মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত সময় ব্যয় করা প্রধানত দায়ী হতে পারে। ছেলেরা বাইরে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি বাসায় ফিরে মোবাইল ফোনে ডুবে যাচ্ছে। স্কুলপড়ুয়ারা অতি মাত্রায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করায় পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারছে না। এমনকি  ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা মোবাইল ফোন ব্যবহারের বেশি সুযোগ পাচ্ছে। পাশাপাশি কিশোর অপরাধে জড়িয়ে পড়াও ছেলেদের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। ছাত্রীদের মধ্যে তারা পড়াশোনায় বেশি আগ্রহ দেখছেন। আর ছেলে সন্তানদের চেয়ে মেয়েরা পড়াশোনায় আগ্রহী হয়ে ওঠায় তাদের পড়াশোনায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বাবা-মাও। এমনকি মেয়েদের লেখাপড়ায় অভিভাবকরা বেশি ব্যয় করতেও দ্বিধা করছেন না।

সচেতন মহল মনে করছেন, স্কুলপড়ুয়া ছেলেটার হাতে বাবা-মা মোবাইল তুলে দিচ্ছে। কিন্তু মেয়েটার হাতে দিচ্ছে না। হয়তো অন্য কোনো চিন্তা থেকে দিচ্ছে না। তাতে মেয়েটা পড়াশোনায় মনোযোগ দিচ্ছে। আর ছেলেটা ফেসবুক, গেমিংয়ে সেটা ব্যবহার করছে। এভাবে ছেলেরা পড়ালেখায় ক্রমে চরম অমনোযোগী হয়ে পড়ছে।’ অতি মাত্রায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে।

মেয়েরা কেন এগিয়ে 

মেয়েরা পড়ালেখায় মনোযোগি হতে পারে কারণ তারা আগ্রহশীল, সাহায্যকারী, মনোযোগী, এবং সমর্থনশীল হতে পারেন। তাদের প্রকৃতি বিশেষভাবে পড়াশোনার ক্ষেত্রে উত্সাহী এবং অনুশাসিত হয়। মেয়েদের পড়ালেখায় মনোযোগের আরও  কিছু কারণ হতে পারে, যেমন..

সামাজিক প্রতিফলন: সাধারণ সমাজে শিক্ষার প্রতিফলন মেয়েদের হাতেই। তাই তারা নিজেকে সমাজের মধ্যে সাবাস করার জন্য শিক্ষালোভী হতে চায়।

প্রতিযোগিতামূলক: মেয়েদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষার আগ্রহ অনেক। আর তাই তারা শিক্ষা অর্জন ও পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে।

সামর্থ্য ও উদারতা: মেয়েদের অনেকে সামর্থ্য ও উদারতা দেখানোর চাপে থাকে, যা তাদের পড়ালেখায় মনোযোগিতা বৃদ্ধি করে।

পরিবারের সমর্থন: পরিবারের সদস্যরা মেয়েদের উত্সাহ দিয়ে পড়ালেখায় মনোযোগিতা বৃদ্ধি করে। এতে করে মেয়েদের ফলাফল আসে সাফল্যের।

এছাড়াও সম্পূর্ণ সমাজে মেয়েদের উপলব্ধি ও প্রতিযোগিতামূলক স্বাধীনতা দেওয়া উচিত, যা তাদের পড়ালেখায় আরও মনোযোগিতা বৃদ্ধি করে। এই সমস্ত কিছু কারণে মেয়েদের পড়ালেখায় মনোযোগিতা বৃদ্ধি হয় তার তাই তারা পরিক্ষার ফলাফলে অর্জন করে সাফল্য।

সাধারণত আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য হিসেবে আমরা জানি: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকা, নিয়মিত পড়াশোনা করা, সহপাঠদের (জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণী নির্বেশেষে) সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা, নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলা, মাদক থেকে দূরে থাকা, প্রলোভন থেকে বিরত থাকা, এমনকি সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকা।

যা করা উচিৎ

সম্প্রসারণ ও সমর্থন: পরিবারের সদস্যরা ছাত্রদের শিক্ষামূলক প্রক্রিয়ার সমর্থক করতে হবে এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রশংসা ও সমর্থন প্রদান করতে হবে।

প্রোত্সাহন ও সমর্থন: পারিবারিক সদস্যরা ছাত্রদের এমন কার্যকলাপে উৎসাহিত করতে হবে যা ছাত্রদের শিক্ষামূলক ও ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ছাত্রদের প্রেরণা ও মনোনিবেশ: ছাত্র প্রোত্সাহন ও প্রেরণা প্রদানের মাধ্যমে তারা উচ্চ লক্ষ্য স্থাপন করতে পারে এবং নিজেদের উন্নতিতে মনোনিবেশ করতে পারে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ:

এছাড়া ছাত্র-ছাত্রী উভয়কেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন ক্যারিয়ার প্লানিং, দারিদ্র্য সহায়তা, নৈতিক শিক্ষা, ব্যক্তিগত উন্নতি ইত্যাদির জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। কেননা পারিবারিক শিক্ষাব্যবস্থা সামাজিক, মানসিক ও ব্যাক্তিগত উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্থ ও সমৃদ্ধ রেখে তাদের পড়ালেখা করতে উৎসাহিত করে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরে মেধা বৃদ্ধি হতে পড়াশোনায় মনোযোগি হবে। এবংকি পরিক্ষার ফলাফল অগ্রগতি হবে। জাতি হবে শিক্ষিত। প্রজন্ম গড়বে শিক্ষিত মেধাযুক্ত।


পরীক্ষা   ছেলে   মেয়ে  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

বাড়ছে ‘ভার্চুয়াল অ্যাডিকশন’, তরুণীদের সচেতনতা কোথায়?

প্রকাশ: ১০:৪২ এএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বর্তামানে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনকে করেছে সহজ থেকে সহজতর। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করেই জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি বা ‘শিল্প বিপ্লব’ গড়ে উঠেছে। জ্ঞানের সমৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও ব্যবহার তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধাটি যখন একদল অসৎ ও অপরাধপ্রবণ ব্যক্তির দ্বারা নেতিবাচকভাবে ব্যবহৃত হয় তখনই এর অপব্যবহারে বিপন্ন হয় সমাজ তথা প্রজন্ম।

প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় ক্রমেই তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে তরুণীরা। যুগের বিবর্তন এবং সরকারের সুক্ষ পরিকল্পনায় একদিকে তরুণীরা যেমন তাদের স্বাধীনা অর্জন করেছে অন্যদিকে সেই স্বাধীনতা রক্ষা করার নামে এই তরুণীদের অনেকেই বিষর্জন দিচ্ছে তাদের অস্তিত্ব ব্যক্তিত্ব কিংবা স্বতিত্ব।

জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন পুরুষ, ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন তরুণী। যেখানে পুরুষের চেয়ে তরুণীদের সংখ্যা বেশি সেখানে তরুণীদের সমাজের সচেতনতা অবলম্বন করে তাদের স্বাধীনতা রক্ষা করা জরুরী।

তরুণীরা ভার্চুয়াল ব্যবহারে সচেতন না হলে পড়তে পারে বিপদজনক পরিস্থিতিতে। অনলাইনে যদি কোন সম্পর্কে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে হলে প্রাইভেসি নিশ্চিততা হানির ঝুঁকি থাকে। এটি তরুণীকে নিজের গোপনীয়তা সংরক্ষণ না করে বিপদে ফেলতে পারে। অনলাইনে যে সম্পর্ক এবং বার্তা পাঠানো হয়, তা যদি নিয়মিত হয় তাহলে মনের অপরিচিত মানুষের সাথে সমস্যা হতে পারে। যেমন, অবাঞ্ছিত মেসেজ বা ব্লক করা প্রবলেম হতে পারে। এছাড়াও অনলাইনে অসময়ে নেগেটিভ বা হানিকর কোনও সম্পর্কে পড়তে পারে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এমনকি ঝুঁকি থাকতে পারে অপরাধী হানির। অপরাধী হানির শিকার হতে পারে কিছু তরুনী, যেমন সাইবার বুলিং, অনলাইন নির্যাতন, কাইবার সাথে পার্সনাল তথ্যের অপসারণ ইত্যাদি।

এদিকে বিবিএস জানায়, এক দশকে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৯১৯ জন। সর্বশেষ ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭। ক্রমাগত ভাবে বৃদ্ধি হচ্ছে দেশের জনসংখ্যা। সরাকারের নানান উদ্যেগ বাল্যবিবাহ থেকে পরিবার পরিকল্পনার নির্দেশনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হলেও বেশিভাগই হচ্ছে না তরুণীসচেতনতা অবলম্বন না করাতে।

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার কিংবা ‘ভার্চুয়াল অ্যাডিক্টেড’ এর অসচেতনার ফলে সময় অপচয় হয় পর্যাপ্ত পরিমাণ। অনলাইনে সময় অপচয় একটি বিশেষ ধরণের সমস্যা কেননা দৈনন্দিন জীবনের কাজে অসুবিধা তৈরি করতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অহেতুক পদ্ধতিতে সময় ব্যায় করা। প্রত্যেক তরুণীকেই নিজের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সংরক্ষণস্বার্থে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, বর্তমান প্রজন্মের তরুণী কিংবা তরুণীরাই পরিবর্তন করতে পারে দেশ কিংবা জাতীকে।

যুগের বিবর্তনে প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের পরিবর্তন হওয়াটা যেমন স্বাভাবিক, তেমনি সেই পরিবর্তনের ফলে যুগের মহিমায় পৃথিবীতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে পুরুষদের মতে তরুণীদেরও ভূমিকা চোখে পড়ার মতো। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুরুষরা তরুণীদেরকে কর্মস্থলে তাদের সমান অবস্থানে রাখা জরুরী। এতে তৈরি হবে কর্মবন্ধন, সম্পূর্ণ হবে প্রযুক্তির উদ্দেশ্যের সফলতা আর পরিপূর্ণতা পাবে সমাজ, সংস্কৃতি, রাষ্ট্র, এবং তরুণীদের সঠিক অধিকার।


ভার্চুয়াল অ্যাডিকশন   তরুণী   সচেতনতা   প্রজন্ম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

প্রেম মানে না বয়সের গণ্ডি

প্রকাশ: ০৭:৫৬ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রেমের কোনো বয়স হয় না। গল্প, উপন্যাস ও বাস্তব জীবনে এর আগে বহুবার তা প্রমাণ হয়েছে। আরও একবার সে কথা মনে করিয়ে দিল নিউইয়র্কের বাসিন্দা হ্যারল্ড টেরেন্স (১০০) ও জেনি শার্লিনের (৯৬) প্রেমকাহিনি। তাদের এই প্রেম পরিণতিও পেতে চলেছে। কিছু দিন পরেই দুজনে সংসার পাতবেন। তারই প্রস্তুতি চলছে।

হ্যারল্ড বিমানবাহিনীতে কাজ করতেন। এখন অবসরপ্রাপ্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পড়াশোনা চলাকালীন বিমানবাহিনীতে যোগ দেন হ্যারল্ড। তখন হ্যারল্ডের বয়স ২০। চাকরি সূত্রে ইংল্যান্ড পাড়ি দেন। কয়েক বছর সেখানেই ছিলেন। হঠাৎই ইংল্যান্ড ছেড়ে যাযাবর হয়ে যান।

ইউক্রেন, বাগদাদ, তেহরানসহ বিভিন্ন দেশে ঘুরে কাজ করতে থাকেন। বেশ কয়েক বছর এভাবে চলার পর জীবনে থিতু হতে চান তিনি। তাই আবার আমেরিকায় ফিরে আসেন। নিজের মাটিতে ফিরে নতুন জীবনও শুরু করেন। সংসার পাতেন দীর্ঘ দিনের বন্ধু থেলমার সঙ্গে।

বছর দুয়েকের মধ্যে দুই সন্তান আসে। স্ত্রী, সন্তানকে ছেড়ে কাজে ফেরার ইচ্ছা ছিল না হ্যারল্ডের। কিন্তু স্ত্রীর জোরাজুরিতেই আবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। হ্যারল্ড চলে যাওয়ার পর সংসার ও সন্তানের সমস্ত দায়িত্ব গিয়ে পড়ে থেলমার ওপর। দায়িত্ব পালনে অবশ্য কোনো ত্রুটি রাখেননি তিনি। সন্তানরাও বড় হয়ে নিজেদের মতো জীবন গুছিয়ে নেয়।

জীবনের অধিকাংশ সময় পরিজনদের সঙ্গ পাননি। জীবনের শেষটা এমন হোক, তা চাননি হ্যারল্ড। তাই ২০২১ সালে চাকরি থেকে পুরোপুরি অবসর নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।  কিন্তু নিয়তিতে যা লেখা থাকে, তার অন্যথা হওয়ার জো নেই। হ্যারল্ড বাড়ি ফেরার মাসখানেকের মধ্যে মারা যান থেলমা। দুই ছেলে কাজের সূত্রে ভিন দেশে।

স্ত্রীর মৃত্যুর পর আবার একা হয়ে যান বৃদ্ধ হ্যারল্ড। তার এই নিঃসঙ্গ জীবনে হঠাৎই আলাপ জেনির সঙ্গে। জেনি অবিবাহিত ছিলেন। মনের মতো কাউকে পাননি, তাই সংসারও পাতা হয়নি। ৯৬ বছর বয়সে হ্যারল্ডের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর জেনির মনে হয়েছিল, এই মানুষটির জন্যই অপেক্ষা করছিলেন।

তাই সময় নষ্ট না করে নিজেই মনের কথা খুলে বলেন হ্যারল্ডকে। একা থাকতে আর কে চায়! তাই আর দেড়ি করেননি, জেনির সঙ্গে জীবনের বাকি দিনগুলো হেসেখেলে কাটিয়ে দিতে চেয়ে আবার নতুন করে শুরু করেন।


প্রেম   বয়স   গণ্ডি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তপ্ত জায়গায় যেভাবে থাকে মানুষ

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

এইতো কয়েকদিন পূর্বেও ৪৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার ফলে নাভিশ্বাস উঠেছিল সারা দেশের মানুষের। সারা দেশব্যাপী হিট অ্যালার্ট জারি করা থেকে শুরু করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা- কত কিছুই না হয়েছে এই তীব্র তাপদাহের কারণে। তবে পৃথিবীতে এমন স্থানও রয়েছে যেখানে তাপমাত্রা থাকে ১২৭ ডিগ্রী ফরেনহাইট।

স্থানটি হচ্ছে ডেথ ভ্যালি। নাম শুনেই নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, স্থানটি কতটা ভয়ংকর। বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানের মধ্যে অন্যতম স্থান এটি। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম স্থানের তকমা অর্জন করে ডেথ ভ্যালি। সবচেয়ে উষ্ণতম মাসের রেকর্ড হিসেবে, ওই বছরের একটানা চার দিন ১২৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা ধরা পড়ে। যা তাপমাত্রার সর্বোচ্চ রেকর্ড।

ডেথ ভ্যালি ক্যালিফোর্নিয়া এবং নেভাদা সীমান্তে অবস্থিত। বিশ্বের সবচেয়ে তাপমাত্রা বিরাজ করে ডেথ ভ্যালির মরুভূমিতে। এটি বিশ্বের অন্যতম উষ্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকাতে কেবল কয়েকটি মরুভূমি আছে। যেখানে গ্রীষ্মে তাপমাত্রায় শীর্ষে পৌঁছায়।

ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে কাজ করেন ব্রান্ডি স্টুয়ার্ট। পার্কের কমিউনিকেশন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তিনি। তিনি বলেন, ‘এখানে এখন যেরকম গরম পড়েছে, আমরা সবাই আমাদের ধৈর্য হারিয়ে ফেলছি। আপনি যখন বাইরে যাবেন, মনে হবে যেন আপনার মুখে অনেকগুলো হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাস এসে পড়ছে।’

তিনি আর বলেন, ‘এখানে এত গরম যে, আপনার গায়ে যে ঘাম হচ্ছে তা আপনি টেরই পাবেন না। কারণ খুব দ্রুত এটি বাষ্প হয়ে উবে যাচ্ছে। ঘামে যখন কাপড় ভিজে যায়, সেটা টের পাওয়া যায়, কিন্তু গায়ের চামড়ায় ঘাম শুকিয়ে যায় খুব দ্রুত। এই বিষয়টিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে আমার সময় লেগেছে।’

ডেথ ভ্যালি এক বিস্তীর্ণ মরুভূমি। মাঝে মাঝে বালিয়াড়ি আর গভীর খাদ রয়েছে। পার্শ্ববর্তী রাজ্য নেভাডা পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশ্বের উষ্ণতম জায়গা হওয়ার পরও এই জায়গাতে থাকে কয়েকশ’ মানুষ। মিজ স্টুয়ার্ট তাদের একজন।

মিজ স্টুয়ার্ট বলেন, গ্রীস্মের সময় তাদের বেশিরভাগ সময় ঘরের ভেতরেই কাটে। তবে অনেকে পাহাড়ের দিকে চলে যায়, যেখানে তাপমাত্রা একটু কম। যখন লোকে এতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন এটা স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। তখন তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) নীচে নামলে সেটাকেই মনে হয় খুব ঠান্ডা।

ডেথ ভ্যালির লোকজনের বাড়িতে এয়ার কন্ডিশনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। এটি তাদের ঘর ঠান্ডা রাখে। কাজেই ঘুমাতে অসুবিধা হয় না। তবে বিদ্যুৎ যদি চলে না যায়। যখন প্রচণ্ড গরম পড়ে, তখন সবাই সারাক্ষণ এয়ারকন্ডিশনিং চালিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করে। তখন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা তৈরি হয়।

ডেথ ভ্যালির বেশিরভাগ মানুষ থাকেন এবং কাজ করেন ফার্নেস ক্রীকে। এখানেই সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এই জায়গাটা সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ২৮০ ফুট নীচু একটা বেসিনের মতো। চারিদিকে উঁচু এবং খাড়া পাহাড় দিয়ে ঘেরা।

জেসন হেসার এই ফার্নেস ক্রীকেই থাকেন। তার আসল বাড়ি মিনেসোটাতে। কাজ করেন এখানকার একটি গলফ কোর্সে। এটি বিশ্বে সমুদ্র সমতল থেকে সবচেয়ে নীচু কোনো গলফ কোর্স। সামরিক বাহিনীর এই সাবেক সদস্য বলেন, ‘আমি দুবার ইরাকে ছিলাম। যদি ইরাকে থাকতে পারি, তাহলে ডেথ ভ্যালিতেও থাকা যায়।’

জেসন গলফ কোর্সে কাজ শুরু করেন ভোর পাঁচটার একটু আগে এবং দুপুর একটা পর্যন্ত কাজ করে যান। তিনি বলেন, ‘ওরা আমাদের জানিয়েছে, যখন গরম আরও বেশি পড়বে, তখন আমাদের আরও ভোরে কাজ শুরু করতে হবে। একেবারে ভোর চারটায়। আর সেই ভোরেও কিন্তু তাপমাত্রা প্রায় ১০০-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৭ দশমিক ৭ হতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।’

হেসার এখানে এসেছিলেন ২০১৯ সালে। তিনি তার কাজটা বেশ পছন্দ করে ফেলেছেন। আরও কয়েক বছর তিনি এখানে থাকার পরিকল্পনা করছেন। অবসরে তিনি গলফ কোর্সে গলফ খেলতে পছন্দ করেন। তবে সেজন্য উঠতে হয় বেশ সকালে এবং খেলা শুরু করতে হয় সকাল সাতটায়। কারণ এরপর গরম খুবই অসহনীয় হয়ে উঠে।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন এখানে এসেছি, তখন তাপমাত্রা বেশ ভালোই ছিল। শর্টস আর পোলো শার্ট পরে একটা কোল্ড বিয়ার বা কোল্ড সোডা। আপনার সাথে যদি ঠান্ডা পানীয় থাকে, আপনাকে আগে সেটা পান করে নিতে হবে। নইলে গলফের মাঠ থেকে ফিরে কিন্তু দেখবেন সেটা আর ঠান্ডা নেই। আর আগে পান করে নিলে গলফ খেলাটাও জমে ভালো।’

ক্রিসটোফার বার্ট আবহাওয়া বিষয়ক ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন। ১৯১৩ সালে ডেথ ভ্যালিতে রেকর্ড করা তাপমাত্রা নিয়ে কেন এই সংশয়, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ঐ এলাকার আশেপাশের অন্যান্য এলাকার রেকর্ডের সঙ্গে এটি মিলছিল না। ফার্নেস ক্রীকের তাপমাত্রা আশে-পাশের এলাকার চেয়ে প্রায় দু্ই বা তিন ডিগ্রি বেশি ছিল।

কেউ কেউ যুক্তি দেন যে, ডেথ ভ্যালির চেয়েও হয়তো বেশি গরম পড়ছে বিশ্বের আরো অন্য কোনো জায়গায়। কিন্তু আবহাওয়ার ওপর যারা নজর রাখেন, তারা এই দাবিকে গুরুত্ব দেন না। কারণ এসব জায়গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করার জন্য নির্ভরযোগ্য কোনো আবহাওয়া কেন্দ্র নেই।


তীব্র তাপদাহ   গরম   ডেথ ভ্যালি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

'এপ্রিল ফুল' এর ট্র্যাজেডিতে কি জড়িয়ে আছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এপ্রিল মাসের প্রথম দিনটি পশ্চিমা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ ঘটা করে পালন করা হয়। এদিনে একে অপরকে চমকে দিয়ে 'বোকা বানাতে' চায়। যদিও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে এই প্রচলন খুব একটা দেখা যায় না।

পহেলা এপ্রিল পশ্চিমা দেশগুলোতে অনেকে কিছুটা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে। অন্যথায় কারো না কারো কাছে তাকে বোকা হিসেবে পরিচিত হতে হবে এবং এটি নিয়ে হাস্যরস তৈরি হতে পারে।

এ দিনটিকে তাই বলা হয় অল ফুলস ডে, বাংলায় বোকা বানানোর দিনও বলতে পারেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে ভুয়া ও ভুল সংবাদ ছাপায়। পরদিন অবশ্য সেটার সংশোধনী দিয়ে জানিয়ে দেয় খবরটা আসলে এপ্রিল ফুল ছিল।

একই সাথে এদিন পরিবারের ছোটরা সাধারণত বড়দের সাথে নানাভাবে মজা করে বোকা বানানোর চেষ্টা করে। আবার বন্ধু বা কলিগরাও একে অন্যের সাথে মজা করে। তবে যাকে বোকা বানানো হয়, তাকে শেষে সবাই মিলে চিৎকার করে জানিয়ে দেয় 'এপ্রিল ফুল'।

ধারণা করা হয়, ইউরোপে এপ্রিল ফুলের প্রসার ফ্রেঞ্চ জাতির মধ্যে। ফ্রেঞ্চরা ১৫০৮ সাল, ডাচরা ১৫৩৯ সাল থেকে এপ্রিল মাসের প্রথম দিনকে কৌতুকের দিন হিসেবে পালন শুরু করে। ফ্রান্সই প্রথম দেশ হিসেবে সরকারিভাবে নবম চার্লস ১৫৬৪ সালে এক ফরমানের মাধ্যমে ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন । অর্থাৎ তিনি এটি করেন ১৫৮২ সালে ইতালীয়ান পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী প্রবর্তিত গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে প্রচলন হওয়ারও আগে। পাশাপাশি ১ এপ্রিল বন্ধুদের উপহার আদানপ্রদানের প্রথা বদলে যায় ১ জানুয়ারি। কারণ তখন বিভিন্ন দেশে জুলিয়ীও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নিউইয়ার পালিত হত ১ এপ্রিলে। অনেকেই এই পরিবর্তনকে মেনে নিতে না পেরে এদিনই তাদের পুরনো প্রথাসমূহ চালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু ১ জানুয়ারির পক্ষের লোকজন এদেরকে ফাঁকি দিতে ১ এপ্রিলে ভুয়া উপহার পাঠানোর প্রথা চালু করে।

ফ্রান্সে কাউকে বোকা বানালে বলা হত এপ্রিল মাছ (April fish), ফ্রেঞ্চ ভাষায় poisson d’avril. এই্ নামকরণের কারণ, রাশিচক্র অনুযায়ী স্বর্গের কাল্পিক রেখা অতিক্রম করলে এপ্রিলে সূর্যকে মাছের মত দেখায়। এইদিনে তারা ছুটি কাটাত এবং মরা মাছ এনে তাদের বন্ধুদের পেছনে সেটে দিয়ে মজা করত।

ডাচদের আরও কারণ রয়েছে। স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ ১৫৭২ সালে নেদারল্যান্ড শাসন করতেন। যারা তার শাসন অমান্য করেছিল তারা নিজেদেরকে গুইযেন বা ভিখারী বলে পরিচয় দিত । ১৫৭২ সালের এপ্রিলের ১ তারিখে গুইযেন বা বিদ্রোহীরা উপকূলীয় ছোট শহর ডেন ব্রিয়েল করায়ত্ব করে ফেলে। তাদের এই সফলতায় বিদ্রোহের দাবানল দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। শেষমেষ স্প্যানিশ সেনাপ্রধান বা দ্যা ডিউক অব অ্যালবা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন। সেই থেকে দিনের প্রচলন।

মুসলমানদের জন্য ট্র্যাজেডির?

বাংলাদেশে একটা প্রচলিত ধারণা এপ্রিল ফুলের সঙ্গে আসলে মুসলমানদের বোকা বানানোর ইতিহাস জড়িয়ে আছে।

অনেকেই মনে করেন ১৫শতকের শেষ দিকে স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটান রাজা ফার্দিনান্দ ও রানি ইসাবেলা। তারা স্পেনের মুসলিম অধ্যুষিত গ্রানাডায় হামলা করেন এবং পরাজিত অসংখ্য মুসলিম নারী, পুরুষ ও শিশুকে মসজিদে আটকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারেন। আর সেদিনটি ছিল পহেলা এপ্রিল।

কিন্তু এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।

"এটি আমরাও শুনেছি এবং এটি একরকম আমাদের বিশ্বাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আমি ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে যখন স্পেনের ইতিহাস পড়েছি, দেখেছি যে সেসময় গ্রানাডার শাসক ছিলেন দ্বাদশ মোহাম্মদ। তার কাছ থেকেই ফার্দিনান্ড ও ইসাবেলা গ্রানাডা দখল করে নেন। আর এ ঘটনাটি ঘটেছিল জানুয়ারি মাসের ২ তারিখে। কোন কোন সূত্র বলে জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ। এবং এটি দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠনিক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে হয়েছিল।"

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলছেন, সেসময় ফার্দিনান্ড ও ইসাবেলা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করেছে, ইহুদিদের উপরও করেছে, কিন্তু এপ্রিল ফুলের যে ট্র্যাজেডির কথা বলা হয় সেটার সাথে তার কোন সত্যতা পাওয়া যায় না।

"ইতিহাসে আমরা যে বইগুলো পড়েছি সেখানে কোথাও ঐ বর্ণনা পাইনি। আমাদের কাছে মনে হয় এই ঘটনা নিয়ে একটা মিথ তৈরী করা হয়েছে, যার সাথে কোন ঐতিহাসিক সংযোগ নেই।"

মি. ছিদ্দিক বলেন অন্যদিকে গূরুত্ব দিয়ে অবশ্য মুসলমানরা এটি উদযাপন নাও করতে পারে। কারণ ইসলাম ধর্ম মিথ্যা বলা, প্রতারিত করা বা কাউকে বোকা বানানো সমর্থন করে না।

মজা আনন্দের জন্য তো কোনো বিশেষ দিন আমাদের না হলেও চলে। সেখানে কোনো ছক কষে কাউকে ঘাবড়ে, কোনো কঠিন পরিস্থিতির মুখে ফেলে দিয়ে আনন্দ নেওয়াটা সুস্থ মানসিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিতেই পারে।

মজা করে কাউকে বোকা বানাতে চাইলে সেটা বিশেষ কোনোদিনেই করতে হবে এমনটা তো নয়। মজা করুন, তবে সেটা বোকা বানিয়ে নিজের বিমলানন্দ নেওয়ার মাধ্যমে নয়। কারণ আপনি যাকে বোকা বানাতে চান, সে যে আপনাকে কখনো বোকা বানানোর চেষ্টা করতে না, এটা ভাববেন না। আর এই বোকা বানাতে গিয়ে আপনার স্বভাব, সম্পর্কগুলো যে নষ্টের দিকে যেতে পারে, সেটাও তো আপনাকে ভাবতে হবে। 


এপ্রিল ফুল   পহেলা এপ্রিল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন