ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ব্যাপারে তুরস্কের এখন আগ্রহ বাড়ছে কেন?

প্রকাশ: ০২:০৯ পিএম, ১০ জানুয়ারী, ২০২২


Thumbnail বাংলাদেশের ব্যাপারে তুরস্কের এখন আগ্রহ বাড়ছে কেন?

সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তা এবং মাদক পাচার রোধে বাংলাদেশ এবং তুরস্ক একসাথে কাজ করতে রাজি হয়েছে। সেই সঙ্গে সন্ত্রাস দমন এবং সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দেশ পরস্পরের সঙ্গে নিরাপত্তা তথ্য বিনিময় করবে। 

শনিবার (০৮ জানুয়ারি) রাতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তুর্কী সরকার এ নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছেন, এই সমঝোতা চুক্তির অধীনে মূলত বাংলাদেশের পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবে তুরস্ক।

কর্মকর্তারা বলেছেন, এই সমঝোতা চুক্তি আগেই হবার কথা ছিল, কিন্তু মহামারির কারণে সেটা আগে হতে পারেনি।

এখন এমওইউ স্বাক্ষরের পর দুই দেশে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি হবে। তখন কী ধরণের ট্রেনিং বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রয়োজন সেটা ঠিক করবে ওই কমিটি, এরপর টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস কী হবে--সেসব ঠিক করা হবে। তারপরই এ নিয়ে বিস্তারিত কাজ শুরু হবে।

এছাড়া মাদক চোরাচালান ঠেকানোর ক্ষেত্রে কিভাবে প্রশিক্ষণ এবং তথ্য বিনিময় করা হবে সেটিও ঠিক করা হবে তখন।

কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে?

কর্মকর্তারা বলেছেন, মূলত প্রশিক্ষণটি হবে সামরিক। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাহিনী যেমন সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের এই তালিকায় রাখা হয়নি। তবে তালিকায় রয়েছে র‍্যাব, যেটি বাংলাদেশে পুলিশের এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত এবং যেটির ছয়জন কর্মকর্তার ওপর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

তবে ঠিক কী ধরণের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কর্মকৌশল ঠিক হয়নি। সেটি নির্ধারণের জন্য দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি কাজ করার পর তা ঠিক হবে---আর তার পরেই শুরু হবে সে প্রক্রিয়া।

মূলত দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করা হবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ ধরণের চুক্তি এবং সমঝোতা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া সন্ত্রাস দমন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য পরস্পরের সঙ্গে শেয়ার করার পাশাপাশি সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং মাদক চোরাচালান ঠেকানোর ক্ষেত্রেও তথ্য বিনিময় করার কথা দুই দেশের।

বাংলাদেশের ব্যাপারে তুরস্কের এখন আগ্রহ বাড়ছে কেন?

বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবার পেছনে প্রধান কারণ উভয় দেশের জাতীয় স্বার্থ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে এক ধরণের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, যার ফলাফল এ ধরণের সহযোগিতা।

তিনি বলেন, "কোন একটি দেশের কিংবা একটি ব্লকের ওপর নির্ভর না করে মাল্টিপল (একাধিক) দেশ ও ব্লকের সঙ্গে কাজ করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে যেমন সামরিক সহযোগিতার চুক্তি আছে তেমনি তুরস্কের সাথেও সন্ত্রাস দমনের অংশ হিসেবে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করবে বাংলাদেশ।"

এছাড়া ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশের গুরুত্বের বিষয়টিও বড় অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিগুলোর আগ্রহের কারণ তৈরি করেছে।

অধ্যাপক ইয়াসমিন বলছেন, এর বাইরে তুরস্কের কাছ থেকে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কিনছে, সেটাও বাংলাদেশের প্রতি তুরস্কের আগ্রহের আরেকটি কারণ।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ এর প্রেসিডেন্ট, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব) এএনএম মুনীরুজ্জামান বলছেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশেরও আগ্রহের কারণ রয়েছে।
তিনি বলছেন, "তুরস্কের সামরিক বাহিনী বেশ আধুনিক, ফলে দেশটি থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়া এবং সমরাস্ত্র কেনা---দু'দিক থেকেই লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ।"

এছাড়া মুসলিম বিশ্বে তুরস্কের অবস্থান শক্ত করাও একটি বড় লক্ষ্য তুরস্কের কাছে। মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সমর্থন এখানে চাইতে পারে তুরস্ক।

আর মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির নেতৃত্ব এবং ন্যাটোর অংশীদার হিসেবেও সক্ষমতা বাড়ছে তুরস্কের, ফলে একটি প্রভাব বলয় তৈরি করবার প্রচেষ্টা রয়েছে দেশটির।

এখন বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এর সঙ্গে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হবার কারণে বাংলাদেশের একটা খ্যাতি আছে, সেই সঙ্গে আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ একটি অবস্থান নিতে পেরেছে, যেটি তুরস্কের আগ্রহের অন্যতম কারণ হতে পারে।

তুরস্ক বাংলাদেশ সম্পর্কের ওঠানামা

দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্কের ইতিহাস ছিল। কিন্তু ২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কে এক ধরণের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়।

এমনকি সেসময় ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিয়েছিল দেশটি।

কিন্তু ২০১৬ সালে তুরস্ক এবং বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে বদলে যেতে শুরু করে। সেসময় দেশটিতে সংঘটিত একটি ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের সরকার তার নিন্দা জানিয়ে একটি বার্তা পাঠিয়েছিল। তারপরই বরফ গলতে শুরু করে তুরস্ক সরকারের।

এরপর দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আদান-প্রদানের বেশ কয়েকটি ঘটনা পরপর ঘটে। ২০২০ সালে সেপ্টেম্বরে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন উদ্বোধন করা হয়। এমনকি রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর তুরস্ক দ্রুততার সাথে বাংলাদেশের সমর্থনে এগিয়ে আসে।

এরপর ২০২১ সালে তুরস্কের কাছ থেকে সমরাস্ত্র কেনার জন্য একটি চুক্তি করে বাংলাদেশ। কয়েকদিন আগে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আঙ্কারায় একটি পার্কের নামকরণ করা হয়েছে।  সুত্র: বিবিসি বাংলা 

তুরস্ক   রোহিঙ্গা   এরদোগান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১১:৪৯ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৫ মে) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘আইসিপিডি থার্টি গ্লোব্যাল ডায়ালগ অন ডেমোগ্রাফিক ডাইভার্সিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভলডমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

 

 

বিস্তারিত আসছে...


প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা   হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাচ্ছেন ১৮০ জন পুলিশ সদস্য

প্রকাশ: ১১:৪৩ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের ১৮০ সদস্য। আগামী এক বছরের জন্য প্রেষণে তারা শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করবেন।

মঙ্গলবার (১৪ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-২ শাখার উপসচিব সিরাজাম মুনিরা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কাজ করার জন্য পুলিশ বাহিনীর ১৮০ জন সদস্য এবং ১৯ জন সদস্যকে বিকল্প হিসেবে তাদের যোগদানের প্রকৃত তারিখ থেকে এক বছরের জন্য প্রেষণে নিয়োগের সরকারি মঞ্জুরি জ্ঞাপন করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার, পুলিশ পরিদর্শক, উপপরিদর্শক (এসআই), উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই), কনস্টেবল, চিকিৎসা কর্মকর্তা, গাড়িচালক, সুইপার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদে কর্মরতরা রয়েছেন।


বাংলাদেশ পুলিশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১১:১২ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ সংগ্রামের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতির পিতার নেওয়া পদক্ষেপ অনুসরণ করে সকলের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে নতুন জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ মে) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘আইসিপিডি থার্টি গ্লোব্যাল ডায়ালগ অন ডেমোগ্রাফিক ডাইভার্সিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভলডমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আমরা সরকারে ছিলাম না। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। আমাদের দেশের মানুষ প্রাথমিক যে স্বাস্থ্য সেবা পাবে সেই সুযোগটা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে আমাদের জনসংখ্যা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে আসে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশেষ করে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছানোর জন্য সারা দেশে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন কাজ শুরু করি। সেই সময় জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচি গ্রহণ করি। নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে আমরা বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করি। নারী শিক্ষা বিস্তার এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে ছিল আমাদের আন্তরিক প্রয়াস’।  

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার নির্দেশে ’৭৩-৭৮ সাল পর্যন্ত প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়। তিনি একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ন্যাশনাল কাউন্সিল কমিশন গঠন করেন। জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে এদেশে অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর সমস্ত অর্জনগুলো একে একে নষ্ট করে দেওয়া হয়।


প্রান্তিক জনগোষ্ঠী   স্বাস্থ্যসেবা   কমিউনিটি ক্লিনিক   প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কে হচ্ছেন পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব?

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলতি বছরের ৫ ডিসেম্বর বর্তমান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হবে। এরপর মাসুদ বিন মোমেনের উত্তরসূরি কে হবেন তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

এ মুহূর্তে পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী, লন্ডনে নিযুক্ত হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম, ভারতে নিযুক্ত হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, চীনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন ও নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ।

পরবর্তী পররাষ্ট্র সচিব হওয়ার দৌড়ে জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের মধ্যে রয়েছেন, ১০তম ব্যাচের কূটনীতিক এম আল্লামা সিদ্দিকী। ১৯৯১ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন তিনি। অবশ্য নিয়ম অনুযায়ী, সিদ্দিকীর চাকরির মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর। বর্তমান পররাষ্ট্র সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষের চার দিন আগে অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে যাওয়ার কথা রয়েছে তার। জ্যেষ্ঠ এ কূটনীতিককে পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব করতে হলে তার অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে যাওয়ার কয়েক মাস আগেই নিয়োগ দিতে হবে। এরপর পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে তার চাকরির চুক্তি বাড়াতে হবে।

পররাষ্ট্র সচিব হওয়ার দৌড়ে আছেন ১১তম ব্যাচের দুই পেশাদার কূটনীতিক সাঈদা মুনা ও মোস্তাফিজুর রহমান। এদের মধ্যে ব্যাচের প্রথম সাঈদা মুনা তাসনিম ১৯৯৩ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। মুনার চাকরির মেয়াদ শেষ হবে এ বছরের ২৬ ডিসেম্বর। বর্তমান পররাষ্ট্র সচিবের চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার ২১ দিনের মাথায় তার অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে যাওয়ার কথা। এক্ষেত্রে মুনাকে পরবর্তী পররাষ্ট্র সচিব করতে গেলে তার অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে যাওয়ার কয়েক মাস আগেই তাকে নিয়োগ দিতে হবে। এরপর পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে তার চাকরি চুক্তিতে বাড়াতে হবে।

স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোনো নারী পররাষ্ট্র সচিব পায়নি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে সরকার প্রথম কোনো নারীকে পররাষ্ট্র সচিবের পদ দিতে চাইলে হয়তো দায়িত্ব পেতে পারেন হাইকমিশনার সাঈদা মুনা। সাঈদা মুনা থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও লন্ডনে বাংলাদেশ মিশনসহ বিভিন্ন গুরুত্ব পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘ ও বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মুনা।

একই ব্যাচের আরেক পেশাদার কূটনীতিক মোস্তাফিজুর রহমানের চাকরির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর। সাঈদা মুনার পাঁচদিন পর তার অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে যাওয়ার কথা। মোস্তাফিজকে মাসুদ বিন মোমেনের উত্তরসূরি করতে হলে একই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

এরপরে তালিকায় রয়েছে ১৩ ব্যাচের কূটনীতিক জসিম উদ্দিনের নাম। বেইজিংয়ে বর্তমানে ঢাকার হয়ে দূতিয়ালি করা জসিমের চাকরির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর।

এছাড়া, আলোচনায় রয়েছেন পেশাদার কূটনীতিক রিয়াজ হামিদুল্লাহ। ১৫তম ব্যাচের মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া হামিদুল্লাহর চাকরির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৯ সালের সেপ্টেম্বর। রাষ্ট্রদূত হামিদুল্লাহকে এরইমধ্যে নেদারল্যান্ডস থেকে ঢাকায় ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এদিকে, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ঝামেলা না নিতে চাইলে সরকার হয়তো জ্যেষ্ঠদের বাদ দিয়ে নতুন কোনো মুখকে নিয়ে আসতে পারেন পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্বে। এক্ষেত্রে হয়তো বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন রিয়াজ হামিদুল্লাহ। তাছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে তাকে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্তে হামিদুল্লার পররাষ্ট্রসচিব হওয়ার সম্ভবনা দেখছেন কোনো কোনো কূটনীতিক। অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর হামিদুল্লাহ দিল্লিতে পড়াশোনা করেছেন। তিনি বিদেশের মাটিতে কূটনীতিক হিসেবে দ্বিতীয় অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন দিল্লির বাংলাদেশ মিশনে।

এ পাঁচ কূটনীতিকের মধ্যে দিল্লিতে নিযুক্ত হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানকে পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে রাখছেন অনেক কূটনীতিক। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, দিল্লিতে হাইকমিশনারের দায়িত্বে থাকায় বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন মোস্তাফিজুর। কূটনীতিক মোস্তাফিজ দিল্লিতে হাইকমিশনার হওয়ার আগে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনি প্যারিস, নিউ ইয়র্ক ও জেনেভাতেও কর্মরত ছিলেন। এছাড়া, তিনি সিঙ্গাপুরে রাষ্ট্রদূত এবং কোলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবেও কাজ করেছেন।

ঢাকার কূটনৈতিক অঙ্গনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান পররাষ্ট্র সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হতে এখনও সাত মাসের বেশি সময় বাকি। তবে, স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী মাসুদ বিন মোমেনের চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে উত্তরসূরি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার কথা সরকারের।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যে দুই-তিনটি সচিবের সিদ্ধান্ত সরকারের শীর্ষ পযায় থেকে হয়ে থাকে, তার মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব একটি। সরকার যদি মনে করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ধারা অব্যাহত থাকবে, তাহলে মোস্তাফিজুর রহমান বা সাঈদা মুনা এই পদ পেতে পারেন। এই দুজনের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানের সম্ভবনা বেশি থাকবে। আর সরকার যদি মনে করে, নিয়মিতকরণের মধ্য দিয়ে যাবে,তাহলে জসিম উদ্দিন ও রিয়াজ হামিদুল্লাহ আছেন।

জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, নিয়মিত চাকরিতে যারা আছেন, এমন কূটনীতিককে বাদ দিয়ে সাবেক কূটনীতিককে চুক্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্তটা রাজনৈতিক। যাদের চাকরির মেয়াদ বেশিদিন নেই, তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে না— এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। আবার সরকার যে কোনো জুনিয়রকে নিয়ে আসতে পারবে না, এমনটাও নয়। সরকার চাইলে যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।


পররাষ্ট্র   সচিব  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

যে কারণে এমপি হাফিজকে তলব করল ইসি

প্রকাশ: ০৯:৪০ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গত ৮ মে প্রকাশ্যে ভোট দিয়ে নির্বাচনী অপরাধ করেছেন বরিশাল-৬ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ মল্লিক। যে কারণে তাকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। 

বুধবার (১৫ মে) দুপুর ১২টায় নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে ইসি।

এর আগে সোমবার (১৩ মে) নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ বিষয়ে এমপি আবদুল হাফিজ মল্লিককে চিঠি পাঠান।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৮ মে অনুষ্ঠেয় বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন আপনি ৪৭ নং মঙ্গলসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করেছেন। যার ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিসহ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়েছে। 

প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করে ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা না করা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৭৮ এর বিধান অনুসারে শাস্তিযোগ্য নির্বাচনী অপরাধ। এ অপরাধের কারণে আপনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও পদ্ধতিগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্পিকারের কাছে কেন পত্র প্রেরণ করা হবে না, সে বিষয়ে বুধবার (১৫ মে) দুপুর ১২টায় নির্বাচন কমিশনে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

এই অবস্থায়, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে উল্লিখিত তারিখ ও সময়ে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।


বরিশাল-৬ আসন. এমপি হাফিজ মল্লিক   নির্বাচন কমিশন   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন