ইনসাইড বাংলাদেশ

গুণগতমানের মৎস্য রপ্তানির পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৩:৪৩ পিএম, ১৫ মার্চ, ২০২২


Thumbnail গুণগতমানের মৎস্য রপ্তানির পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী গুণগতমানের মৎস্য রপ্তানির লক্ষ্যে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। 

গতকাল সোমবার (১৪ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে গ্লোবাল সি ফুড অ্যালায়েন্স আয়োজিত সি ফুড এক্সপো নর্থ আমেরিকা (SENA) এর অন্যতম ইভেন্ট 'রিভাইটালাইজিং ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প' শীর্ষক উপস্থাপনা ও আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, "বাংলাদেশে মৎস্যসম্পদের অধিক উৎপাদন ও গুণগতমান নিশ্চিতের জন্য সরকারের উদ্যোগে অবকাঠামো উন্নয়ন, রোগমুক্ত পোনা সরবরাহ, আন্তর্জাতিক মানের মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি স্থাপন ও পরিচালনা, প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হচ্ছে। মৎস্য ও মৎস্য পণ্য (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন ২০২০ শিরোনামে সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। বাগদা চিংড়ির গুণগতমান নিশ্চিতের জন্য রোগমুক্ত চিংড়ি পোনা উৎপাদন ও সরবরাহ, বিজ্ঞানসম্মত উত্তম মৎস্যচাষ পদ্ধতি অনুসরণ ও আইনের কঠোর প্রয়োগসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। চিংড়ি চাষ ও প্রক্রিয়াকরণে 'ফিশ এন্ড ফিশারি প্রোডাক্টস অফিসিয়াল কন্ট্রোল প্রটোকল' ও 'অ্যাকুয়াকালচার মেডিসিনাল প্রোডাক্টস নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা' প্রণয়ন ও অনুসরণ করা হচ্ছে। এছাড়া চিংড়ি চাষিদের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং চিংড়ি চাষে গুচ্ছ চাষ পদ্ধতির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে"।



এ সময় মন্ত্রী আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ির উচ্চমূল্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে চিংড়ির থার্ড পার্টি সার্টিফিকেশন প্রবর্তনের জন্য গ্লোবাল সি ফুড অ্যালায়েন্সসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সহযোগিতা কামনা করেন।

আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। পরে মন্ত্রী 'রিভাইটালাইজেশন অব ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প কমিউনিটি' নামক একটি ওয়েব পোর্টালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।



এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, গ্লোবাল সি ফুড অ্যালায়েন্সের সভাপতি জর্জ চেম্বারলিন, বাংলাদেশ চিংড়ি ও মৎস্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহমুদুল হক প্রমুখ।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী   শ ম রেজাউল করিম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাগেরহাটে ট্রাক চাপায় নিহত ৩

প্রকাশ: ০১:০৩ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail বাগেরহাটে ট্রাক-ভ্যান সংঘর্ষ

বাগেরহাটের রামপালে ট্রাকের চাপায় ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের ৩ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুইজন। শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৮টার দিকে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের চেয়ারম্যান মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।  

এ ঘটনায় নিহতরা হলেন, রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া এলাকার রেজ্জাক মোড়লের ছেলে সাঈদ মোড়ল, একই এলাকার এখলাস মোড়লের ছেলে আজাদ মোড়ল এবং গাববুনিয়া কুমলাই এলাকার মকবুল মল্লিকের ছেলে মোহাম্মদ মনি মল্লিক।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মোহাম্মদ বাবুল আক্তার জানান, ‘মোংলাগামী একটি ট্রাক পেছন দিক থেকে ইঞ্জিনচালিত একটি ভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোঃ সাইদ মোড়ল নামে এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। আহত হয় চালকসহ চারজন। আহতদের উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে আরও দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’

তিনি আরও বলেন, মরদেহগুলো রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সাথে জড়িত ট্রাকটি কাটাখালী হাইওয়ে থানা পুলিশ আটক করেছে।

এ ছাড়া মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।


দূর্ঘটনা   ট্রাক চাপা   সড়ক দূর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচন: এমপি-মন্ত্রী সবার দৃষ্টি এখন গণভবনে

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে যেসব এমপি-মন্ত্রীরা পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের প্রার্থী করেছেন তাদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত আসে তা জানতে দৃষ্টি সবার গণভবনে। 

৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা সাতটায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হবে। গণভবনে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের বৈঠকে ১৬টি এজেন্ডা রাখা হয়েছে।  

জেলা নেতা থেকে শুরু করে উপজেলা ভোট করছেন এমন একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। 

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজনদের প্রার্থী হতে নিষেধ করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। দলের সভানেত্রীর এই নির্দেশনা অমান্য করে প্রথম ধাপে কমপক্ষে ১৪ জন এমপি-প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন প্রার্থী রয়েছেন। পরবর্তী ধাপের নির্বাচনগুলোয়ও মাঠে আছেন আরও অনেক এমপি-মন্ত্রীর স্বজন। নিজেদের বাঁচাতে এমপি ও তাদের স্বজনরা নানা যুক্তি সামনে আনছেন। এতে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। নির্দেশনা অমান্য করা এমপি-মন্ত্রী এবং তাদের স্বজনদের তালিকা তৈরি করছেন তারা। 

কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সাংগঠনিক সম্পাদকরা রিপোর্টে এ তালিকা তুলে ধরবেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক এ তথ্য জানিয়েছেন। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা যারা মানবেন না তাদের দল করার প্রয়োজন আছে কি না প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ, দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। দলীয় প্রধানের আনুকূল্য নিয়েই তারা দলের এমপি-মন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় নেতা হয়েছেন। তারা সভানেত্রীর নির্দেশনা মানবেন না- এটা হতে পারে না। সে কারণে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেন ভবিষ্যতে আর কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে সাহস না দেখায়। 

দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলছেন, দলের নির্দেশনা অমান্য করে যেসব এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করছেন, তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এগুলো তারা ৩০ এপ্রিল দলীয় সভানেত্রীর সামনে উপস্থাপন করবেন। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে যে নির্দেশনা দেবেন, সেই মোতাবেক তারা তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।


উপজেলা নির্বাচন   এমপি   মন্ত্রী   গণভবন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

'হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা মানুষের জন্য বড় সুযোগ'

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গরিব কিংবা সাধারণ মানুষের জন্য বিশাল একটি সুযোগ বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে নগরের হোটেল সৈকতের পারকি হলে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সম্মেলন ও গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এটি আল্লাহর প্রদত্ত সুযোগ। আপনারা এই সুযোগ গ্রহণ করে গরিব মানুষের সেবার করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করবেন। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন, পাশাপাশি আপনারাও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় যা কিছু হয়েছে, এই সরকার করেছে। আপনাদের আরও যদি দাবি থেকে এগুলো আমাকে দিন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার প্রতি যে আমার বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে, তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করছি। আমি নিজেও এই চিকিৎসা গ্রহণ করি।

চিকিৎসকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বলেন, হোমিওপ্যাথিক বইগুলো আপনাদের ভালো করে পড়তে হবে। এ ব্যাপারে ব্যাপক জ্ঞান রাখতে হবে। মাঝেমধ্যে দেখা যায় গ্রামগঞ্জে অনেকে অল্পস্বল্প লেখাপড়া করে চিকিৎসা করে, তারা হয়তো অনেক সময় সঠিকভাবে চিকিৎসা করতে পারেন না। যার কারণে পুরো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ওপর প্রভাব পড়ে। তাই এ বিষয়ে আপনাদের আরও সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী, বিডিডিএ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শেখ মো. ইফতেখার উদ্দিন, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলের কন্ট্রোলার অব এক্সামিন মো. শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন ম্যানু. অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. এসএএম রেজাউর রহিম, হোমিও হিতৈষী লায়ন ডা. মৃদুল বড়ুয়া চৌধুরী প্রমুখ।


হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা   প্রতিমন্ত্রী   নজরুল ইসলাম চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

টানা তাপদাহে পুড়ছে দেশ, ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড

প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের ইতিহাসে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। চলতি মাসে ২৩ দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। ফলে ১৯৪৮ সাল থেকে এক বছরের হিসাবে তাপপ্রবাহের দিনের রেকর্ড ভেঙেছে । 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৪৮ থেকে তাদের কাছে বিভিন্ন স্টেশনের আবহাওয়ার তথ্য-উপাত্ত আছে। তবে সব বছরে সব স্টেশনের উপাত্ত নেই। উপাত্তগুলো একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে আছে ১৯৮১ সাল থেকে। তারপরও আগের স্টেশনগুলো বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, ১৯৪৮ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তাপপ্রবাহ হয়েছে এবারের এপ্রিল মাসে।

টানা অন্তত দুই দিন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকলে তা তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে চতুর্থ দফায় জারি করা হিট অ্যালার্ট বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা শেষ হচ্ছে আজ শনিবার। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহের তীব্রতা আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিদিন বাড়বে। তারপর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মে মাসের প্রথমার্ধে সিলেট এবং পার্শ্ববর্তী হাওরাঞ্চল পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আবারও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে চুয়াডাঙ্গা। পশ্চিমের এ জেলায় ২৭ দিন ধরে ‘মরুভূমির লু হাওয়ার’ মতো পরিস্থিতি। চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ। সেখানে ‘অনুভূত’ তাপমাত্রা ছিল ৪৬ ডিগ্রি। এর আগে গত শনিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল যশোরে। ওই দিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদী ও রাজশাহীতে ৪২ দশমিক ৪, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪১ দশমিক ৮, যশোর ও বগুড়ায় ৪০ দশমিক ৮, টাঙ্গাইলে ৪০ দশমিক ৬ ও বাগেরহাটের মোংলায় তাপমাত্রা উঠেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৪৮ সাল থেকে তাদের কাছে বিভিন্ন স্টেশনের আবহাওয়ার তথ্য-উপাত্ত আছে। তবে সব বছরে সব স্টেশনের উপাত্ত নেই। উপাত্তগুলো একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে আছে ১৯৮১ সাল থেকে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ১৯৪৮ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তাপপ্রবাহ হয়েছে এবারের এপ্রিল মাসে। এর আগে ২০১০ সালে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ২০ দিন তাপপ্রবাহ ছিল, তবে তা টানা ছিল না। কিন্তু এবার টানা ২৭ দিন তাপপ্রবাহ হলো।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, ১৯৪৮ সালের পর এই ভূখণ্ডে এটাই সর্বোচ্চ টানা তাপপ্রবাহ। তবে এই ২৭ দিনের পুরো সময়ে সারা দেশের সর্বত্রই সমান হারে তাপপ্রবাহ বয়ে যায়নি। ৩১ মার্চ থেকে শুরু করে ১১ এপ্রিলের পর্যন্ত দেশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। সে সময় তা খুব বেশি এলাকায় ছড়িয়ে যায়নি। এরপর ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কয়েকটি অঞ্চলে তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে। ১৬ এপ্রিল থেকে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়, যা দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে টানা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতে ব্যাপ্তিকাল কম থাকায় তাপপ্রবাহ বড় সমস্যার কারণ হয়ে ওঠেনি। আগামী বছরগুলোতে ক্রমান্বয়ে তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল ও প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত ৪৩ বছরের মধ্যে যশোরে তাপপ্রবাহ সবচেয়ে বেশি দিন ঘটেছে। এর পরই আছে ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গা।

আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এবারের তাপপ্রবাহ দেশের ৭৫ ভাগেরও বেশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, যা নজিরবিহীন। ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গায় এপ্রিল মাসে টানা ২৩ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। গত বছর এপ্রিলে টানা ১৬ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। তখন তাপপ্রবাহ এত ব্যাপক পরিসরেও ছিল না। ১৯৬৪ সালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস যশোরে। আর ১৯৮৯ সালে বগুড়ার তাপমাত্রা হয়েছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত বছর সারা দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে। সে বছরের ১৭ এপ্রিল সেখানে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এর আগের ৮ বছরে অতি তীব্র তাপমাত্রার রেকর্ড নেই। তবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯৭২ সালের ১৯ মে। সেদিন রাজশাহীতে ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।

গত ১০ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বছরের যে কোনো মাসের চেয়ে এপ্রিল তুলনামূলক অনেক বেশি উষ্ণ ছিল। ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে সাতবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এপ্রিল মাসে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে ২৯ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৮ দশমিক ৫, ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাজশাহীতে ৪০ ডিগ্রি, ২০২০ সালের ১০ এপ্রিল রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি ও ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এরপর ২০২২ সালে আবারও এপ্রিলের ১৫ তারিখে রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। গত ২০ এপ্রিল জেলাটিতে তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের স্থানিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে সূর্যের কাছে থাকে, যে কারণে সূর্যের তাপ বেশি পড়ে। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে সূর্য সাধারণত একদম খাড়া অবস্থায় চলে আসে। সূর্য যত খাড়াভাবে আলো দেবে, তত বেশি তাপ অনুভূত হবে।

তিনি বলেন, দেশে পশ্চিমা বাতাস আসলে আর্দ্রতা কমে যায়। অন্য দিকে দক্ষিণ-পশ্চিমা বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। ঢাকা ও খুলনার দিকে আর্দ্রতা কম থাকে। আর বেশি থাকে চট্টগ্রাম ও বরিশালের দিকে। দেশের ওপরের দিকে যত যাবে, আর্দ্রতা তত কমে যাবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

টানা অন্তত দুদিন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকলে তা তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।

এদিকে, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় হিটস্ট্রোকে রাসেদুল ইসলাম নামে এক সংবাদপত্র বিক্রেতার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল উপজেলার চামটাহাট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তার বাড়ি হাতীবান্ধা উপজেলায়। স্থানীয়রা জানান, রাসেদুল দুপুরে চামটারহাটে একটি হোটেলে দুপুরের খাবার শেষে আচমকা মাটিতে লুটে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে তিনি মারা যান। এ ছাড়া নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় হিটস্ট্রোকে ইয়াসিন নামে দেড় বছরের এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের সওদাগরকান্দির এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শিশু ইয়াসিন উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের সওদাগরকান্দি গ্রামের প্রবাসী এনামুল হকের ছেলে।

হাওরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা: মে মাসের প্রথমার্ধে পাহাড়ি ঢলে হাওরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, একটি শক্তিশালী পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে মে মাসের ৩ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশিরভাগ জেলার ওপর দিয়ে শক্তিশালী কালবৈশাখী, তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপটির প্রভাবে মে মাসের ৩ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো এবং মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি ও আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার ওপরে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল অনুযায়ী এমন ধারণা করছি।

তিনি জানান, সম্ভাব্য এ বৃষ্টির পুরোটাই সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদনদীতে প্রবাহিত হয়ে সিলেট বিভাগের নিচু হাওর এলাকাগুলোকে প্লাবিত করবে। অন্যদিকে মে মাসের ৫ তারিখের পর থেকে পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট বিভাগ ও কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার এবং বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টি হতে পারে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে।

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, পূর্বাভাসের উদ্দেশ্য হলো, মানুষ যেন দুর্যোগ সম্পর্কে আগে থেকে সচেতন হন। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলার প্রথম ধাপ এটি। এরপর যদি পূর্বাভাস শতভাগ সঠিক না-ও হয়, তাতে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু দুর্যোগের প্রস্তুতি না থাকলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা মোকাবিলা করতে হাওরবাসীর প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।


তাপপ্রবাহ   রেকর্ড   ভাঙল ৭৬ বছরের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা সংকটের কারণে উচ্চ মাত্রার খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কক্সবাজার


Thumbnail

রোহিঙ্গাদের কারণে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে কক্সবাজারে। ফলে মানবিক বিপর্যয়ের আশংকা করছেন বিশ্লেষকেরা।

 

কক্সবাজার জেলা ২০১৭ সাল থেকে একটি বড় খাদ্য সংকট হিসেবে জিআরএফসি প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গত বছর জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর পাশাপাশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ খাদ্য সহায়তা বাড়ানো হয়েছে।  

 

বৈশ্বিক খাদ্যসংকট নিয়ে ফুড সিকিউরিটি ইনফরমেশন নেটওয়ার্কের (এফএসআইএন) প্রকাশিত প্রতিবেদন ২০২৪-এ বলা হয়েছে, গত বছর বাংলাদেশে নিষ্ফলা মৌসুমে প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার উচ্চ মাত্রার ঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে থাকতে পারে, যার ৬৫ শতাংশই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। 

 

সংস্থাটির মতে, এসব মানুষের তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় বিশেষভাবে প্রভাব রেখেছে প্রতিকূল আবহাওয়া, বৈশ্বিক যুদ্ধ সংঘাত ও উচ্চ মাত্রায় দেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্য মূল্যস্ফীতি।

 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্ব জুড়েই গত বছর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। ওই বছর ২৮ কোটি ২০ লাখের মতো মানুষ সংঘাত, বিশেষ করে গাজা ও সুদানে লড়াই চলার কারণে তীব্র খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়।

 

বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে রেকর্ড খাদ্য শস্য উৎপাদন ও ২০২৩ সালে খাদ্যের সহজলভ্যতার উন্নতি হলেও বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ধাক্কায় খাদ্য পণ্যের দাম বাড়তিই রয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি পৌঁছায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশে। অক্টোবরের শেষ নাগাদ তা এসে দাড়ায় ১২ দশমিক ৬ শতাংশে।

 

রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে জ্বালানি, গমের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য শস্য, সার ও গবাদিপশুর খাবার আমদানিতে বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা মূল্যস্ফীতিতে ভূমিকা রেখেছে। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এসব পণ্যের আমদানি ব্যাহত হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় টাকার ব্যাপক অবমূল্যায়ন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া। ফলে একদিকে খাদ্য শস্যের আমদানি কমার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ খাদ্য শস্যের উৎপাদন খরচ বাড়ে।  

 

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অব্যাহত উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য সুবিধা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এসব মানুষের আয় ক্রমেই কমেছে ও তাদের খাদ্য পণ্য কেনার খরচ বেড়েছে।  

 

২০২২ সালে ৭০ লাখের বেশি মানুষ অস্বাভাবিক মৌসুমি বন্যার শিকার হন এবং প্রধানত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গৃহহীন হন ২০ লাখের বেশি মানুষ। এতে তাদের সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এ কারণে ২০২৩ সালের অর্থনৈতিক ধাক্কা মোকাবিলা করার সক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে তাদের। আগস্টে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী মৌসুমি বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধস সৃষ্টি হয়। এর শিকার হন ১৩ লাখ মানুষ।  

 

ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষের মধ্যে ছয় লাখ মানুষের খাবার, সুপেয় পানি, ঔষুধ ও বিদ্যুতের মতো মৌলিক সেবার বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়। একই সময় রাজশাহীতে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ দেখা দেয় এবং দেশে ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটে। মৌসুমভিত্তিক কর্মসংস্থানের প্রভাব এবং খাদ্যসুবিধা ও প্রাপ্যতার ওপর পুনঃপুনন বিপর্যয় মানুষের মধ্যে বড় ধরনের পুষ্টির ফারাক তৈরি করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দুটি রেশন কাট ছাঁট খাদ্য গ্রহণের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেছিল। রেশন কাট ছাঁটের কারণে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিবারের গ্রহণযোগ্য খাদ্য গ্রহণের স্কোর ছিল, যা ২০২২ সালে ছিল ৫৬ শতাংশ।  


রোহিঙ্গা সংকট   খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি   এফএসআইএন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন