ইনসাইড বাংলাদেশ

হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে লুটপাটের পাঁয়তারা

প্রকাশ: ১১:০৮ এএম, ২৮ মার্চ, ২০২২


Thumbnail হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে লুটপাটের পাঁয়তারা

হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে অভিযোগের যেনো শেষ নেই। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা মানেই যেনো পুকুরচুরির মতো অবস্থা। ২ টাকার যন্ত্রের দাম ১০ টাকা দেখানো, এখন একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। এই পালে হাওয়া লাগিয়েছে সম্প্রতি হাসাপাতালের যন্ত্রপাতি কেনার অনিয়মের খবরে। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে আবারও লুটপাটের পাঁয়তারা চলছে। প্রায় দ্বিগুণ দামে কেনা হচ্ছে সব যন্ত্রপাতি। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে একই যন্ত্রপাতি যে দামে কেনা হয়েছে ঠিক সেই একই যন্ত্রপাতি এবার দ্বিগুণ দামে কেনার বিষয়টি খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতরে বহুল আলোচিত হচ্ছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে হচ্ছে টা কি?

হাসপাতালের জন্য আগে সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) মাধ্যমে কেনা হলেও এবার স্বাস্থ্য অধিদফতর নিজেরাই প্রায় ২০৪ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কিনছে। মোট ৪০৪ কোটি টাকার বাকি অর্ধেক কিনবে সিএমএসডি। অন্যদিকে মহা-লুটপাটের বিষয়টি বুঝতে পেরে তৎপর হয়ে উঠেছে একাধিক সংস্থা। শিগগিরই এসব তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট বা এইচএসএম সংক্রান্ত হাইটেক যন্ত্রপাতিগুলো আগে সিএমএসডির মাধ্যমে কেনা হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে স্বাস্থ্য অধিদফতর বার্ষিক কেনাকাটার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরির পর তা দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪০৪ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) থেকে ইজিপির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ২৪টি প্যাকেজের আওতায় কেনাকাটা করার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। তবে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করলেও কিছু যন্ত্রপাতির বৈশিষ্ট্য এমনভাবে চাওয়া হয়েছে, যাতে নির্দিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কেউ সেটি সরবরাহ করতে না পারে। 

স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের বিভিন্ন নথিপত্রে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার যে প্রকিউরমেন্ট পলিকল্পনা  তৈরি করেছে, সেখানে একটি মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের জন্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা বাজেট ধরা হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর স্বাস্থ্য অধিদফতর সেই একই মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কেনার জন্য ৮ কোটি টাকা বাজেট ধরেছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর মাসেই কেন্দ্রীয় ঔষধাগার ২৩৪টি আইসিইউ বেড কেনে প্রতিটি ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা করে। চলতি বছরও ৫০টি আইসিইউ বেড কেনা হবে, তবে প্রতিটি আইসিইউ বেডের জন্য বাজেট ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করে। এছাড়া গত বছরের তুলনায় প্রতিটি আইসিইউ ভেন্টিলেটরের ক্ষেত্রে প্রায় ৪ লাখ টাকা করে বাড়তি দাম ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে গত বছরের আগস্টে সিএমএসডি যেসব পেশেন্ট মনিটর কিনেছিল ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা করে, এই বছর একই পেশেন্ট মনিটর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ দাম ধরেছে ৬ লাখ টাকা করে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ গত ৯ মার্চ চারটি আলট্রাসনোগ্রাম, ফোরডি কালার ডপলার কেনার দরপত্র আহ্বান করেছে। প্রকিউরমেন্ট পরিকল্পনায় এই যন্ত্র কিনতে বাজেট ধরা হয়েছে প্রতিটি ৭০ লাখ টাকা করে। কিন্তু গত বছরই সিএমএসডি এই যন্ত্র কিনেছিল ৩৪ হাজার ডলার করে। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য ছিল মাত্র ২৯ লাখ টাকা। এসএস সায়েন্টিফিক করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই যন্ত্র সরবরাহ করেছিল। গত বছর আনিফকো হেলথকেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইকোকার্ডিওগ্রাফি ফোরডি ডপলার কিনেছিল ৫০ লাখ টাকা করে, এই বছর তা কেনার জন্য বাজেট করা হয়েছে ৭০ লাখ টাকা। একইভাবে গত বছর যে সিরিঞ্জ পাম্প কেনা হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা করে, এ বছর তা কেনার জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গত বছর ইনফিউশন পাম্প কেনা হয়েছিল ৮৫ হাজার টাকা দরে, এ বছর বাজেট করা হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা করে। গত বছর যন্ত্রপাতি কেনাকাটার নথিপত্রে দেখা গেছে, জুলাই মাসে সিএমএসডি ধানমন্ডির ট্রেড হাউস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সিঙ্গেল ব্লাড ব্যাগ প্রতিটি ১২০ টাকা, ডাবল ব্লাড ব্যাগ প্রতিটি ১৮০ টাকা ও ট্রিপল ব্লাড ব্যাগ প্রতিটি ২৭৭ টাকা করে কিনেছিল। এ বছর সিঙ্গেল ব্লাড ব্যাগ ২০০, ডাবল ব্লাড ব্যাগ ২৫০ ও ট্রিপল ব্লাড ব্যাগ ৩৫০ টাকা করে বাজেট করা হয়েছে। চলতি বছর মোট ৬ লাখ ৪২ হাজার ব্লাড ব্যাগ কেনার পরিকল্পনা করেছে সিএমএসডি।

নথিপত্র বলছে, গত বছরের জুলাইয়ে সিএমএসডি জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের মাধ্যমে একটি ডায়ালাইসিস বেড কেনা হয় ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা করে। এ বছর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ টাকা করে। গত বছর ল্যাপ্রোস্কোপি (গাইনি) কেনা হয় ৫০ লাখ টাকা করে। এ বছর ৬০ লাখ টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। চলতি বছর মোট ২০টি ল্যাপ্রোস্কোপি মেশিন কেনা হবে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকার মেসার্স ডিয়ামেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সিএমএসডি চারটি প্লাজমা ফ্রিজার কিনেছিল, যার প্রতিটির দাম ছিল ১১ লাখ টাকা করে। এ বছর প্রকিউরমেন্ট পরিকল্পনায় প্রতিটির বাজেট ধরা হয়েছে ১৬ লাখ টাকা করে। একই প্রতিষ্ঠান সিএমএসডিকে রেফ্রিজেরেটেড সেন্ট্রিফিউজ মেশিন (৪ ব্লাড ব্যাগ) দিয়েছিল ২১ লাখ টাকায়, চলতি বছর তা কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা বাজেট করেছে সিএমএসডি। 

নথিপত্রে দেখা গেছে, সিএমএসডি এসএস সায়েন্টিফিক করপোরেশনের কাছ থেকে মডার্ন পোস্টমর্টেম ইকুইপমেন্ট কিনেছিল ২৪ লাখ টাকা করে। এবার প্রতিটির জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা করে। এ ছাড়া গত বছর সিএমএসডি ৫০টি ওটি লাইট (ওটি লাইট, সেলিং মাউন্টেড, ডাবল ডোম, এলইডি) কেনে। যার প্রতিটি কেনা হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৯ লাখ টাকা করে। এ বছর তা কেনার বাজেট ধরা হয়েছে ২০ লাখ টাকা করে। চলতি বছর আরও ৩০টি ওটি টেবিল কেনা হবে। জানা গেছে, পছন্দের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে অভিনব কৌশল নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও সিএমএসডির ক্রয় কমিটি। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের লাইন ডিরেক্টর মাজহারুল ইসলাম তপন এই ক্রয় কমিটির প্রধান। এ ছাড়া তিনি টেকনিক্যাল কমিটিতেও আছেন। এমনকি সিএমএসডির ক্রয় কমিটিতেও রাখা হয়েছে তাকে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ হাসপাতাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কেনার জন্য যেসব টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন বা যন্ত্রের বিবরণ দিয়েছে, তার সঙ্গে ইকোডাস নামে ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রের বিবরণের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি সিএমএসডি ব্লাড ইরেডিয়েটর কেনার জন্য একটি দরপত্র আহ্বান করে। ওই দরপত্রে বিদেশি প্রতিষ্ঠান রেড সোর্স এক্স-রে এর ‘আরএস ৩৪০০ মডেলের’ ব্লাড ইরেডিয়েটরের টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন তুলে দেওয়া হয়েছে। যাতে রেড সোর্সের বাংলাদেশি এজেন্ট ছাড়া অন্য কেউ এই যন্ত্র সরবরাহ করতে না পারে সে জন্যই কৌশলে এটি করা হয়েছে। জানা গেছে, সারা দুনিয়ায় ইউএস এফডিএ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনেস্ট্রেশন) অনুমোদিত ব্লাড ইরেডিয়েটর তৈরি করে মাত্র তিনটি কোম্পানি। 

এসব বিষয়ে জানতে গত সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের লাইন ডিরেক্টর মাজহারুল হক তপনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সিএমএসডির পরিচালক মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশনের ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি এলে এ বিষয়ে সাধারণত পুনরায় বৈঠক করে পুনর্বিবেচনা করা হয়। আমরা প্রত্যেকটা বিষয় আমলে নিয়ে কাজ করছি। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে স্পষ্টতই প্রমাণিত হচ্ছে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে আবার লুটপাটের পাঁয়তারা চলছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা নামে যা করছে এটি আসলে মেনে নেওয়া যায় না। এগুলোতে আরও বেশি নজরদারী করতে হবে এবং দেশের মানুষের টাকা যেনো দেশের উপকারে লাগে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। 

হাসপাতালের যন্ত্রপাতি   লুটপাট   স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: স্টেশন মাস্টারসহ বরখাস্ত ৩, তদন্তে ২ কমিটি

প্রকাশ: ০৩:১৪ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজীপুরের জয়দেবপুরে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় স্টেশন মাস্টারসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৩ মে) গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

আরও পড়ুন: গাজীপুরে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত বহু

আরও পড়ুন: দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বিজিবি

এদিকে ঘটনার পর থেকে জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে অন্তত ৬টি ট্রেন।

জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া বলেন, ‘আজ পৌনে ১১টার দিকে টাঙ্গাইল কমিউটার ও তেলবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। রেললাইনের পয়েন্টের ভুলের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে তেলবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। কমিউটার ট্রেনটিতে যাত্রী কম থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ’।

তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আপঘুন্টি স্টেশন মাস্টার হাশেম ও পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম হোসেনসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বগি উদ্ধারের জন্য ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এরই মধ্যে রেলের সব বগি তল্লাশি করা হয়েছে। তবে ভেতরে কেউ আটকা নেই। ট্রেনের চালক ও সহকারী চালকসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিগন্যাল ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন যাত্রা বিরতি করা হয়েছে। দ্রুত উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

এরআগে, শুক্রবার (০৩ মে) বেলা ১১টার দিকে জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগনালে যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে একটি তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

তিনি জানান, রেল দুর্ঘটনায় দুই ট্রেনের চালক ও সহকারীরা আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রেল দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে কমলাপুর রেলস্টেশনে আটকা পড়েছেন ৪-৫টি ট্রেনের যাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে এসে গাজীপুর হয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগনালে পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তবে টাঙ্গাইল কমিউটারে খুব বেশি যাত্রী ছিল না।

একজন উদ্ধারকর্মী জানান, শুক্রবার টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি বন্ধ থাকে। অন্যান্য দিন ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনে থামে। আজ বন্ধ থাকায় এটির থ্রোপাস করার কথা। আর অপরদিকে ঢাকা থেকে আসা তেলবাহী ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল। এখানে আপলাইন ও ডাউনলাইন আছে, কিন্তু কী কারণে ট্রেন দুটি মুখোমুখি হল সে বিষয়ে তদন্তের পর জানা যাবে।

আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

এর আগে, গতকাল রাজবাড়ীতে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন এসে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে। রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটি সকালে ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় লাইনচ্যুত হয়। তখন এ রুটে সব রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে। বর্তমানে রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় মালবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে মেইন লাইন ব্লক হয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে তিন ঘণ্টা পর ট্রেনটি উদ্ধার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রাজবাড়ীর সঙ্গে স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল।


দুই ট্রেন সংঘর্ষ   স্টেশন মাস্টার   তদন্তে কমিটি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বিজিবি

প্রকাশ: ০২:৪৬ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ পরবর্তী উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে দুই প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজীবাড়ি এলাকায় মালবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্ধার কাজের সহায়তায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন।

তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টায় জয়দেবপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে আউটার সিগন্যালে পৌঁছানোর পর লাইন ক্রসিং করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা জয়দেবপুর আউটার সিগন্যালের কাজীবাড়ি ছোট দেওড়া এলাকায় একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।

এ ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকসহ আহত ৪জনকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আরও আহত থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।


ট্রেন সংঘর্ষ   বিজিবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

১০ টাকায় টিকিট কেটে চোখ পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০১:২১ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাধারণ রোগীদের মতো ১০ টাকার টিকিট কেটে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিজের চোখ পরীক্ষা করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৩ মে) সকালে প্রধানমন্ত্রী ওই হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী। তারপর লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেই টিকিট সংগ্রহ করেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী সাধারণ রোগীদের মতোই নিজের চোখ পরীক্ষা করান। সরকারি হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঘটনা দেখে উপস্থিত অনেকেই উচ্ছ্বাস ও আনন্দ প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কারামুক্ত হলেন মাওলানা মামুনুল হক

প্রকাশ: ১২:১৯ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

জামিনে মুক্তি পেয়েছেন হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। শুক্রবার (০৩ মে) সকাল ১০টার দিকে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।

পরে রিজার্ভ গার্ডে তাকে বসিয়ে রাখা হয় এবং বেলা ১১টার দিকে কারাগারের মূল ফটক থেকে তিনি বের হয়ে যান। গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার মামুনুল হকের জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মাওলানা মামুনুল হককে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, মামুনুল হকের জিম্মাদার অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী আসতে দেরি হওয়ায় তাকে প্রায় এক ঘণ্টা রিজার্ভ গার্ডে বসিয়ে রাখা হয়। পরে বেলা ১১ টার দিকে সাদা রঙের একটি গাড়িতে করে তিনি কারাগারের মূল ফটো থেকে বের হয়ে যান।

এ সময় মামুনুল হকের সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে জিসান ও ভাগিনাসহ আরো কয়েকজন। এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে মামুনুল হক কারাগার থেকে মুক্ত পাবেন, এমন খবরে আলেম-ওলামারা কারা ফটকে ভিড় করেন। সন্ধ্যার পর থেকেই কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ভিড় করতে শুরু করেন মামুনুল হকের সমর্থকরা।  


মাওলানা মামুনুল হক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচন: উঠান বৈঠকে বদির বিরুদ্ধে ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ

প্রকাশ: ১২:১৪ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

কক্সবাজারের টেকনাফের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আলমের উঠান বৈঠকে তার সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার জন্য সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ১০টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্ষং পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। 

উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, আমি বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আমার নির্বাচনী এলাকার হোয়াইক্ষং পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়ায় আমার একটি উঠান বৈঠক ও আলোচনা সভা ছিল। সেখানে হঠাৎ সাবেক এমপি বদি (আব্দুর রহমান বদি) চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলমকে সঙ্গে নিয়ে আমার অনুষ্ঠানস্থলে এসে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেন।

তখন ভয়ে আমার সমর্থকরা পালিয়ে যায়। আমি জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়েছি। পরে সেখান থেকে বের হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি। সাবেক এমপি বদি আমার সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। যাতে কেউ আমার বিরুদ্ধে কাজ না করে। আমার জনপ্রিয়তা বদি সাহেব মেনে নিতে পারছেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলম বলেন, গুলি ছোড়ার ঘটনা পুরাপুরি মিথ্যা। উল্টো নুরুল আলম আমার এক সমর্থককে ধরে নেওয়ার খবর শুনে আমি আর বদি ভাই (সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি) সেখানে যাই।

টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গনী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলমের একটি অনুষ্ঠানে ফাঁকা গুলি ছোড়ার ঘটনা শুনেছি। খবর পেয়ে আমাদের পুলিশের টিম সেখানে গিয়েছে। এ ঘটনায় নুরুল আলম একটি অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।


উপজেলা নির্বাচন   উঠান বৈঠক   অভিযোগ   সাবেক এমপি   আব্দুর রহমান বদি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন