গণপরিবহন সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী না হওয়া এবং যানজট এড়াতে গণপরিবহনের বিকল্প হিসেবে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এই তথ্য জানায়।
৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবোদনে বলা হয়, প্রায় ২৫ লাখ মানুষের মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। কারণ মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই মোটরসাইকেল দূরের যাত্রায় কোনোভাবেই গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কিশোর-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন এবং অন্যদের আক্রান্ত করছেন।
মোটরসাইকেল উৎপাদন ও আমদানির ক্ষেত্রে সরকার নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, ফলে দেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়ছে। এটা সরকারের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার মোটরসাইকেলের ব্যবসা করতে যেয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার জনসম্পদ নষ্ট হচ্ছে। সরকারের উচিত গণপরিবহন উন্নত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে এবং রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণ করে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা।
এছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্করা যাতে মোটরসাইকেল চালাতে না পারে সে জন্য কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা-সহ এ বিষয়ে পারিবারিক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।
মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই প্রচারণার দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণে চটকদার বিজ্ঞাপন নির্মাণ ও প্রচার বন্ধ করতে হবে বলেও জানায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৪ দিনে (২৫ এপ্রিল-৮ মে) দেশে ২৮৩ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৬ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫০০ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৩৮ জন ও শিশু ৫১ জন।
এই ১৪ দিনে ১২৮ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫৬ জন। দুর্ঘটনায় ৫৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৯ জন। এই সময়ে ৭ টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১৭ টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৮৩ টি দুর্ঘটনায় ১০৬ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৭ টি দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৯ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং নাটোর জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৮ জন নিহত হয়েছেন। শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, নড়াইল, ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও এবং নেত্রকোনা এই ৬ টি জেলায় সামান্য সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের ঈদুল ফিতরে রাজধানী ঢাকা থেকে কম-বেশি ৯০ লাখ মানুষ ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় গেছেন। দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৩ কোটি মানুষ যাতায়াত করেছেন। ঈদের আগে-পরে যথেষ্ট ছুটি থাকায় এবং সরকারের কিছুটা তৎপরতার কারণে ঈদযাত্রা তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক ছিল। তবে গণপরিবহনের টিকেট কালোবাজারি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও পথে-ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের করের টাকায়, বৈদেশিক ঋণে আমাদের সড়ক নির্মাণ করা হয়। এই সড়কে চাঁদাবাজি করা হয় কিসের অধিকারে, কোন নৈতিকতায় প্রশ্নটির উত্তর জরুরি।
এর আগে গত বছরের ঈদুল ফিতরের চেয়ে এ বছরের ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৮ দশমিক ৪১ ভাগ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭৪ ভাগ।
মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা করেছেন ২৫ লাখ মানুষ
মন্তব্য করুন
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইফতেখার রাফসান
মন্তব্য করুন
পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার মিতু হত্যা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সরকারি সফর যুক্তরাষ্ট্র সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন