বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কামারখালী কে এস ইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত চার দিনে পরীক্ষার হলে হঠাৎ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে ১২ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক জলিলুর রহমান আখন্দ। তিনি জানান, চার দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে এই ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে আজ (সোমবার) ৭ জন ছাত্রী, গতকাল (রোববার) একজন, গত শনিবার ৩ জন এবং গত বৃহস্পতিবার একজন ছাত্রী পরীক্ষার হলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরা নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রী।
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলছে। আর যারা অসুস্থ হচ্ছেন তারা সবাই বিকেলের শিফটের পরীক্ষার্থী। অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের প্রথম উপসর্গ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তাদের সবাইকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আমি শিক্ষার্থীদের সাথে বরিশালে এসেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গরমে ছাত্রীদের শরীরের লবনের মাত্রার ঘাটতি দেখা দেওয়ায় শ্বাসকষ্টসহ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ছাত্রীরা ভালো আছে।
জলিলুর রহমান বলেন, একই ক্লাসে ছাত্ররাও পরীক্ষা দেয় কিন্তু শুধু ছাত্রীরা অসুস্থ হচ্ছে। পরীক্ষার হলে ফ্যানও রয়েছে। তারপরও অতিরিক্ত গরম হওয়ায় এই ঘটনা ঘটছে বলে মনে হয়। যেহেতু পরীক্ষার ভবনটি টিনশেড এ কারণে অত্যাধিক গরম লাগে।
তবে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেছেন, এই কয়দিনে কমপক্ষে পঞ্চাশজন ছাত্রী পরীক্ষার হলে গিয়ে শ্বাসকষ্ট অনুভব করে অসুস্থ হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে পরীক্ষা গ্রহণের ওই ঘরটি আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
মন্তব্য করুন
আজ বুদ্ধ পূর্ণিমা। বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এটি। এই দিনে ভগবান বুদ্ধ আবির্ভূত বা বৌধি প্রাপ্তি হন আর তাই তার এই মহা নির্বাণের স্মৃতিকে স্মরণ করতেই মূলত আজকের
দিনটিকে ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ হিসেবে পালন করেন বুদ্ধ ভক্তবৃন্দরা।
পৃথিবীতে যখন অস্থিরতা, মূল্যবোধের অবক্ষয়, যখন সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকা মানুষের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক তখনই বুদ্ধ আমাদেরকে শিক্ষা দেয় পঞ্চশীলের। প্রাণী হত্যা না করা, ব্যভিচার থেকে বিরত থাকা, চুরি না করা, মিথ্যাকে প্রশ্রয় না দেয়া, মাদক গ্রহণ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদির মাধ্যমে সৎ জীবন যাপনের শিক্ষা দেয় বুদ্ধ। বুদ্ধ শব্দের অর্থ যিনি পরম শাশ্বত জ্ঞান লাভ করেছেন। অর্থাৎ যিনি নিজের জ্ঞানের ঊর্ধ্বে। বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থে এমন ২৮ জন বুদ্ধের উল্লেখ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গৌতম বুদ্ধ ২৮তম।
ধারণা করা হয় গৌতম বুদ্ধের জন্ম আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে। ৬২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নেপালের কপিলাবস্তুর লুম্বিনী নামক স্থানে তার জন্ম হয়। তার পিতার নাম উদ্বোধন। যিনি ছিলেন শাক্যগণের রাজা। মাতা ছিলেন মায়া দেবী। গৌতম বুদ্ধের জন্মগত নাম অবশ্য সিদ্ধার্থ গৌতম। সিদ্ধার্থের জন্মের ৭ দিনের মাথায় তার মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর ভগবান বুদ্ধ তার বিমাতা গৌতমীর কাছে লালিত পালিত হয়। সে কারণে তিনি তার নামের সাথে গৌতম নামটি ধারণ করেন।
কথিত আছে, সিদ্ধার্থের জন্মের পর তার পিতা সিদ্ধার্থের ভবিষ্যৎ গণনার জন্য আট জন জ্ঞানী লোককে ডাকেন। এদের মধ্যে একজন ভবিষ্যদ্বাণী করেন, রাজপুত্র হয় বিরাট সম্রাট হবেন নয়তো মহাজ্ঞানী সন্ন্যাস হবে। রাজা উদ্বোধন সবসময় চাইতেন তার ছেলে যেন সম্রাট হন। তিনি মনে করতেন সিদ্ধান্ত যদি কোন দুঃখ বা কষ্ট পান তবে সে বৈরাগ্য জীবনে উৎসাহিত হবেন। তাই রাজা সবসময়ই সিদ্ধার্থকে আনন্দে আর আভিজাত্যে রাখার চেষ্টা করতেন। এই উদ্দেশ্যে সিদ্ধার্থের ১৮ কিংবা ১৯ বছর বয়সে তাকে বিবাহ দেন সিদ্ধার্থের পিতা। কিন্তু যার অদৃষ্টে আছে মহাজ্ঞান, জীবের উদ্ধার তাকে আটকানো কার সাধ্য!
জনশ্রুতি আছে, একদিন সিদ্ধার্থ বাগানে হাট ছিলেন। এ সময় তিনি প্রথমে একজন বৃদ্ধকে দেখতে পান, এরপর এক অসুস্থ, এবং পরে একজন মৃতকে দেখতে পান যাকে ঘিরে আত্মীয়-স্বজনরা বিলাপ করছিল। এই ঘটনার বৃত্তান্ত তিনি তার সাহচর্য চণ্যকে কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এসবই নিয়তি। আবার, এমনই একদিন বাগানে হাঁটার সময় সিদ্ধার্থ দেখতে পাই একজন সাধু জীর্ণ বস্ত্র পরে হাঁটছে। এ বিষয়ে তিনি চণ্যকে জিজ্ঞেস করলে চণ্য বলেন, এই সাধু নিজের জীবন ত্যাগ করেছে মানুষের সুখের জন্য।ধারণা করা হয়, সেদিন রাতেই সিদ্ধার্থ তার স্ত্রী সন্তানকে রেখে বেরিয়ে পড়েন জ্ঞানের সন্ধানে। মানুষের দুঃখ ও দুঃখের কারণ জানার উদ্দেশ্যে।
এরপর দীর্ঘ ৮০ বছর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে তিনি তার কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্যে সফল হন। সিদ্ধার্থ গৌতম থেকে হয়ে যান গৌতম বুদ্ধ। কথিত আছে, বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তার বোধ প্রাপ্তি বা মহানির্বাণ হয়। তাই এই তিথিকে 'বুদ্ধ পূর্ণিমা' বলা হয়।
গৌতম বুদ্ধ আমাদের শিক্ষা দেয় অহিংসার, ত্যাগের এবং সুন্দর ও সৎ জীবন যাপনের। গৌতম বুদ্ধের জীবনী বা শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সম্রাট অশোক যদি কঠিন যুদ্ধবাজ থেকে একজন আগাগোড়া অহিংস মানুষের পরিণত হতে পারে তাহলে আমরাও গৌতম বুদ্ধের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনের কাঙ্ক্ষিত সৎ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। হয়ত বৌদ্ধ ধর্ম দর্শন অনুসারে ৫০০০ বছর পর অন্য কোন বুদ্ধ আসবেন, কিন্তু গৌতম বুদ্ধ যে শিক্ষা মানুষের মাঝে রেখে গেছেন তার স্থায়ী হয়ে থাকবে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্বায়নের এ যুগে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। এক দেশ থেকে আরেক দেশে নানা প্রয়োজনে ছুঁটছে মানুষ। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের অনেক তরুণ তরুণী উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমাচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কেউ কেউ শিক্ষা জীবন শেষে দেশে ফিরলেও খাপ খাওয়াতে না পেরে ভুগছে হতাশায়। অনেকেই আবার উচ্চশিক্ষা থেকে থেকে যাচ্ছে বিদেশে। ফলে একদিকে যেমন মেধাবী শিক্ষার্থীদের হারাচ্ছি আমরা, অন্যদিকে তারাও দেশকে দিতে পারছেন না শিক্ষার ফসল।