মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ
কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা হায়দার আকবর খান রনোর
জানাজা ও দাফন আজ
সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে বীর
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার দেওয়া
হবে। সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ
রাখা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ
মিনারে।
সিপিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকাল ১০ টায় হায়দার আকবর খান রনোর মরদেহ প্রথমে রাজধানীর পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তিভবনে আনা হবে। সেখানে দলের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
মুক্তিভবনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শোক র্যালি নিয়ে আকবর খান রনোর মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে বেলা সাড়ে ১১ টায় তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। এরপর সেখানে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ রাখা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হায়দার আকবর খান রনোর জানাজা বেলা দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাঁকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
হায়দার আকবর খান রনোর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ দেশব্যাপী শোক পালন করবে সিপিবি। এর অংশ হিসেবে তাদের দলীয় কার্যালয়গুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হবে। পাশাপাশি আকবর খান রনোর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিক হায়দার আকবর খান রনো। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও নেতা। একাধিক বইয়ের লেখক তিনি।
হায়দার আকবর খান রনো ১৯৪২ সালের ৩১ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে।
মন্তব্য করুন
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও
তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের পর জনগণ ছিল হতবাক ও দিশেহারা । পরে চার জাতীয়
নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানও গ্রেপ্তার হন।
ফলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা তখন বলতে গেলে ছিলেন দিকনির্দেশনাহীন। তখনকার পরিস্থিতি
এতটাই ঘোলাটে আর বিপজ্জনক ছিল যে, আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীর জীবন ছিল বিপদাপন্ন
। সে সময় আওয়ামী লীগেও চলছিল দুটি ধারা। একটি ছিল আদর্শের প্রগতিশীল ধারা। আর অন্যটি
মিজান চৌধুরীর নেতৃত্বে রক্ষণশীল ধারা। এ রকম বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের নৌকার বৈঠা ধরার
এক বলিষ্ঠ নেতার অনুধাবন করেন দলের নেতাকর্মীরা। এমন অনুধাবন থেকে তারা বঙ্গবন্ধু কন্যা
শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনাকে
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী করার বিষয়টি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন দলের অন্যতম সিনিয়র
নেতা আব্দুর রাজ্জাক।
শেখ হাসিনা এবং ওয়াজেদ মিয়া যখন ভারতে অবস্থান করছিলেন, তখন ১৯৭৯ ও ১৯৮০ - এই দু'বছরে কয়েকজন সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা বিভিন্ন সময় দিল্লি যান তাদের খোঁজ-খবর নিতে। এম এ ওয়াজেদ মিয়া তাঁর বইতে লিখেছেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক কাবুল যাওয়ার সময় এবং সেখান থেকে ফেরার সময় তাদের সাথে দেখা করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমান, আব্দুস সামাদ আজাদ, তৎকালীন যুবলীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তৎকালীন আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দিল্লিতে যান। তাদের সে সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিতে রাজি করানো।
এ প্রসঙ্গে ওয়াজেদ মিয়া তার বইতে লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগের উপরোল্লিখিত নেতাদের দিল্লিতে আমাদের কাছে আসার অন্যতম কারণ ছিল ঢাকায় ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের ব্যাপারে হাসিনার সঙ্গে মতবিনিময় করা। তাদের সবাই এবং হাসিনার চাচি (বেগম নাসের), ফুফু আম্মারা এবং ফুফাতো ভাইয়েরা চাচ্ছিলেন যেন হাসিনা আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হন। আমি এ প্রস্তাবে কখনোই সম্মত ছিলাম না।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘আমি তাদের সকলকে বলেছিলাম যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অকল্পনীয় মর্মান্তিক ঘটনার পর বঙ্গবন্ধুর আত্মীয়স্বজনদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করা উচিত হবে না। অন্তত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত।’
তবে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতেই ঘোষণা করা হয় দলের সভানেত্রী হিসেবে। ড. মিয়ার বইতে ওই বিবরণ আসে এভাবে : ‘১৬ ফেব্রুয়ারি (১৯৮১) তারিখের সকালে লন্ডন থেকে ফোনে সংবাদ পাওয়া যায় যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে হাসিনাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর শেখ সেলিমও হাসিনাকে ফোনে একই সংবাদ দেন। এরপর ঢাকা ও লন্ডন থেকে আরো অনেকে টেলিফোনে হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।’
এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল মালেক উকিল,
ড. কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, আব্দুল মান্নান, আব্দুস সামাদ, এম কোরবান
আলী, বেগম জোহরা তাজউদ্দীন, স্বামী গোলাম আকবার চৌধুরীসহ বেগম সাজেদা চৌধুরী, আমির
হোসেন আমু, বেগম আইভি রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ দিল্লী
পৌঁছান। সেখানে নব নির্বাচিত সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং আওয়ামী
লীগের রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। আলোচনায় মে মাসে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ১৩ মে আবদুস সামাদ ও এম কোরবান আলী আবার দিল্লীতে যান শেখ
হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন চূড়ান্ত করতে। এভাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের
প্রস্তুতি এগোতে থাকে।
শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের পর জনগণ ছিল হতবাক ও দিশেহারা । পরে চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানও গ্রেপ্তার হন। ফলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা তখন বলতে গেলে ছিলেন দিকনির্দেশনাহীন। তখনকার পরিস্থিতি এতটাই ঘোলাটে আর বিপজ্জনক ছিল যে, আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীর জীবন ছিল বিপদাপন্ন । সে সময় আওয়ামী লীগেও চলছিল দুটি ধারা। একটি ছিল আদর্শের প্রগতিশীল ধারা। আর অন্যটি মিজান চৌধুরীর নেতৃত্বে রক্ষণশীল ধারা। এ রকম বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের নৌকার বৈঠা ধরার এক বলিষ্ঠ নেতার অনুধাবন করেন দলের নেতাকর্মীরা। এমন অনুধাবন থেকে তারা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী করার বিষয়টি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন দলের অন্যতম সিনিয়র নেতা আব্দুর রাজ্জাক।