রাজশাহীর গোদাগারীতে শিক্ষককে মারধর সহ সাম্প্রতিক সময়ে দেশে শিক্ষক নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ ও উপযুক্ত বিচারের দাবীতে শাহবাগে সমাবেশ করেছে "নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ।" সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের প্রগতিশীল বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহ।
সমাবেশে বক্তারা বাংলাদেশে সমসাময়িক সময়ে চলা দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক নিপীড়ন ও লাঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার জন্য সরকার এবং প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান।
এর আগে, ২০২২ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকরা নিজ ছাত্রদের হাতে বা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা লাঞ্চনা, অপমানের শিকার হয়েছেন। সমাবেশের বক্তারা বাংলাদেশের সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া শিক্ষক লাঞ্চনার ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা ও বিচারের দাবী জানিয়ে বলেন, "এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের মূল্যবোধ আরও ভেঙ্গে পরবে।"
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবায়েদা নাসরিন কনা এবং রুবাইয়াত ফেরদৌস। আরও বক্তব্য রাখেন লেখক ও প্রকাশক রবীন আহসান, উদীচীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা মানবেন্দ্র দেব, যুব ইউনিয়নের নেতা খান আসাদুজ্জামান মাসুম, সংগঠক আকরামুল হক সহ আরো অনেকে।
তারা আরও বলেন, মৌলবাদীরা দেশে বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু, আদিবাসী নির্যাতন সহ বিভিন্ন ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত করে দেশের অস্থিতিশীল সমাজকে উস্কে দেয়, বিভাজন সৃষ্টি করে। শিক্ষক লাঞ্চনা ও নির্যাতনও জাতিকে বিজ্ঞান বিমুখী করতে তাদের পরিকল্পনার অংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষক নির্যাতন ও আক্রমনের ঘটনাকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শিক্ষক বুদ্ধিজীবীদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথে তুলনা করে, বাংলাদেশকে আবার মেধা শূণ্য করার একটি প্রক্রিয়া হিসাবে অবহিত করেন।
বাংলাদেশ শিক্ষক নির্যাতন সমাবেশ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।