ইনসাইড বাংলাদেশ

আবারো বাড়তে পারে সয়াবিন তেলের দাম

প্রকাশ: ০৬:১৭ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail আবারো বাড়তে পারে সয়াবিন তেলের দাম

আবারো সয়াবিন তেলের দাম বাড়তে পারে। লিটারপ্রতি ২০ টাকা বাড়াতে চায় ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মালিকদের সংগঠন। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্য সমন্বয়ের জন্য এ প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

ট্যারিফ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা আছে। এর মধ্যে প্রায় ১৮ লাখ টন আমদানি হয়।   

জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) দেওয়া এক চিঠিতে লিটারপ্রতি ২০ টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন তেলের দাম ১৮৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১৬৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮০ এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৯১০ থেকে ৯৬০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী ভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে বা সমন্বয় করতে কোম্পানিগুলো ট্যারিফ কমিশনকে প্রস্তাব দেয়। এরপর কমিশন তা পর্যালোচনা করে। সে অনুযায়ী নির্ধারণ হয় তেলের মূল্য। দেশে মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, টি কে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানির পর পরিশোধন করে বাজারে ছাড়ে। কেউ কেউ সয়াবিন বীজ আমদানি করে তেল উৎপাদন করে।

সর্বশেষ গত ২১ জুলাই সয়াবিন তেলের দাম কমিয়ে সমন্বয় করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। যা এখন পর্যন্ত কার্যকর আছে। ওই দাম অনুযায়ী, এখন প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৬৬ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা এবং ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯১০ টাকা নির্ধারণ আছে আর পাম তেলের দাম ১৫২ টাকা।



সয়াবিন তেল   মূল্যবৃদ্ধি   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিএনপির সঙ্গে দেখা করছেন তো ডোনাল্ড লু!

প্রকাশ: ১০:০১ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ ঢাকা সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটিই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কোন কর্মকর্তার প্রথম সফর।

ডোনাল্ড লু’র এই সফরকে ঘিরে কয়েকদিন থেকেই বেশ সরব রয়েছে দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পাড়া। তবে জানা গেছে, এবারের সফরে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কোন বৈঠক করবে না মার্কিন এই কর্মকর্তা। 

অবশ্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস সচিব বেদান্ত প্যাটেল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করেন। 

সোমবার (১৩ মে) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস সচিব বেদান্ত প্যাটেল বিএনপসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সফররত মার্কিন সহকারী সচিব লু’ কোন বৈঠক করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্যাটেল বলেন, আমাদের সরকারি কর্মকর্তারা কাদের সঙ্গে মিলিত হবেন বা হবেন না, তার মধ্যে অনেকগুলো কারণ রয়েছে- এর মধ্যে সফরের সময়সূচিসহ অন্যান্য অনেক বিষয় থাকে।

তিনি আরও বলেন, সহকারী সেক্রেটারি লু দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ – বিশেষ করে ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশে যাচ্ছেন। তিনি প্রতিটি দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার এবং একটি মুক্ত, উন্মুক্ত এবং সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মার্কিন সমর্থনের বিষয়টি প্রদর্শন করছেন।

বাংলাদেশে তিনি সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের নেতা এবং অন্যান্য নাগরিকের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সহযোগিতাকে কীভাবে আরও গভীর করার যায় সে বিষয়ে কথা বলবেন। যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করা সহ জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় আমরা আরও সহযোগিতা করতে পারব।

উল্লেখ্য, ডোনল্ড লু এর আগে গত বছরের জুলইয়ে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে আসেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এবং মার্কিন ভিসানীতিসহ নানামুখী তৎপরতার মধ্য দিয়ে সেই সফরটি আলোচিত ছিল।

ডোনাল্ড লু’র এই সফর নিয়ে আবারও রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা। আওয়ামী লীগ বলছে, এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। অন্যদিকে এই সফর নিয়ে তাদের কোন আগ্রহ নেই বলে দাবি করেছে বিএনপি। 

তবে তার এবারের সফর যতটা না রাজনৈতিক তার চেয়েও বেশি কূটনৈতিক বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এই সফরে জলবায়ু সংকট ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন লু।


বিএনপি   ডোনাল্ড লু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আজ ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু

প্রকাশ: ০৯:৩০ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে দুইদিনের সফরে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) ঢাকায় আসছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। 

গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরটি হতে যাচ্ছে উচ্চপর্যায়ের প্রথম সফর।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ডোনাল্ড লু আজ দুইদিনের সফরে ঢাকায় আসবেন। এ সফরে তিনি সরকারি ও বেসরকারি নানা পর্যায়ে কয়েকটি বৈঠক ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন।

দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর চারবার বাংলাদেশ সফর করেছেন লু। এর আগে গত জুলাইতে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সঙ্গী হয়ে ঢাকায় আসেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এবং মার্কিন ভিসানীতিসহ নানামুখী তৎপরতার মধ্য দিয়ে সেই সফরটি আলোচিত ছিল

এই সফরকে ঘিরে আবারও সরগরম রাজনৈতিক অঙ্গন। আওয়ামী লীগ বলছে, দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে এ সফর গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ডোনাল্ড লু'র এই সফর নিয়ে কোনো আগ্রহই নেই, এমন দাবি বিএনপির।

তবে তার এবারের সফর যতটা না রাজনৈতিক তার চেয়েও বেশি কূটনৈতিক বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। আলোচনা হবে জলবায়ু সংকট ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি।

ঢাকা সফরের সময় ডোনাল্ড লু পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা রয়েছে লু’র।


ঢাকা   ডোনাল্ড লু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দীর্ঘ অপেক্ষার পর, ঘরে ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা

প্রকাশ: ০৮:৪৭ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার একমাস পর দেশে পৌঁছালো বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। দীর্ঘ যাত্রা শেষে সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে জাহাজটি। 

মঙ্গলবার(১৪ মে) সব প্রক্রিয়া শেষ করে জাহাজটির ২৩ নাবিকের ঘরে ফেরার কথা রয়েছে।

কুতুবদিয়ায় চুনাপাথরের কিছু চালান খালাস করে জাহাজটি ১৫ মে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছাবে। সেখানে বাকি মালামাল খালাস করার পর বন্দর জেটিতে আসবে এমভি আব্দুল্লাহ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, 'এমভি আবদুল্লাহ বর্তমানে কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে। জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত নাবিকদের লাইটার জাহাজে মঙ্গলবার সরাসরি সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে নিয়ে আসা হবে। সেখানেই তাদের বরণ করা হবে। নাবিকদের জেটিতে বরণ করার জন্য কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। নাবিকদের স্বজনদের কেউ কেউ এসময় জেটিতে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে। তারা  নাবিকদের বরণ করে নেবেন।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয় এমভি আবদুল্লাহ। ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এই জাহাজ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। মুক্তিপণ দিয়ে ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। এ হিসাবে আমিরাত থেকে ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছাল।

এর ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা। এর পরই সেটি সোমালিয়া উপকূল থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। টানা এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে ২১ এপ্রিল বিকেলে জাহাজটি আল হামরিয়াহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।


এমভি আবদুল্লাহ   নাবিক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে নয়নাভিরাম শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা

প্রকাশ: ০৮:২৭ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন। পূর্ববঙ্গের প্রথম প্রজন্মের শিল্পীদের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশে চিত্রশিল্প বিষয়ক শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন তিনি।

খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। পাখির বাসা, পাখি, মাছ, গরু-ছাগল, ফুল-ফল এঁকে মা-বাবাকে দেখাতেন। ছেলেবেলা থেকেই শিল্পকলার প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল। মাত্র ষোল বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি বন্ধুদের সাথে কলকাতায় গিয়েছিলেন শুধু গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস দেখার জন্য। আর্টস স্কুল ঘুরে আসার পর সাধারণ পড়াশোনায় জয়নুল আবেদিনের মন বসছিল না। তাই ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগেই স্কুলের পড়ালেখা বাদ দিয়ে কলকাতায় চলে যান এবং মায়ের অনুসমর্থনে গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস-এ ভর্তি হন। তাঁর মা জয়নুল আবেদিনের আগ্রহ দেখে নিজের গলার হার বিক্রি করে ছেলেকে কলকাতার তখনকার আর্ট স্কুলে ভর্তি হতে সাহায্য করেন। জয়নুল আবেদিন ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতার সরকারি আর্ট স্কুলে পড়েন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের স্মৃতি ধারণ করে ময়মনসিংহ শহরে ব্রহ্মপুত্রের নদের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা। ৭০ টি চিত্রকর্ম নিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ এপ্রিল এর শুভসূচনা হয়৷ বর্তমানে এ সংগ্রহশালায় ৬২ চিত্রকর্ম ও ৬৯ টি স্মৃতিময় নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদ, নদের পাড়ে উদ্যান ও পাশেই চিত্রকর্মের শৈল্পিক সৌন্দর্যে আপনি মুগ্ধ হবেন।

ত্রিশের দশকে পাশ্চাত্য ধারায় আঁকা নিসর্গের জল রং চিত্র, চল্লিশের দশকে প্রকাশবাদী বাস্তবতার ধারায় আঁকা দুর্ভিক্ষের স্কেচ, পঞ্চাশের দশকে আধুনিক বাঙালি ঢং এ কাগজে টেম্পারা মাধ্যমে আঁকা বিভিন্ন চিত্র এবং বাস্তবধর্মী আঙ্গিকে আঁকা জল রং চিত্র, ষাটের দশকে আঁকা নবান্ন ও সত্তর দশকে আঁকা মনপুরা-৭০ জয়নুল আবেদীনের মেধা ও মননের অসাধারণ সৃষ্টি। 

এ সংগ্রহশালায় আপনি দেখতে পাবেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ। সেই শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ ও শম্ভুগঞ্জ ঘাটের ছবি এঁকেছেন জয়নুল আবেদীন। এছাড়া বাস্তুহারা, মহিষের বাচ্চা, কংকালসার, কাজী নজরুল ইসলাম, সাপুড়ে মেয়ে, জীবন সংগ্রাম, চিন্তা, মনপুরা-৭০, স্নান শেষে, কলসী কাঁখে, প্রতীক্ষা (ঘাটে), মা ও শিশু-১, ২, ৩, রমনী-১,২, তিন রমণী, বাস্তুহারা, দুটি মুখ, দুটি গরু, পত্রহীন বৃক্ষ, মেক্সিকান রমণী, মেষ পালিকা, গাঁদার পিঠে, অপেরা হাউজ, মেক্সিকো, প্রতিকৃতি (মোস্তফা), মেক্সিকান, জাপানি মেয়ের মুখ, প্রতিকৃতি (কায়রো), আলফাত্তা, স্কেচ (জর্ডান-১,২), মুখ, দুর্ভিক্ষ-৫, ৪, ৩, ২, ১ প্রভৃতি শিল্পকর্ম আপনার মননে নতুন ভাবনার পুলক জাগাবে। চিত্রকর্মের বাইরে রয়েছে শিল্পাচার্যের ব্যবহার্য জিনিসপত্রের প্রদর্শনী।

বিশ্বের প্রাচীনতম ও সর্ববৃহৎ ব্রিটিশ নিলামকারী প্রতিষ্ঠান বনহামসে তার স্কেচ বিক্রয় হয়েছে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের সবচেয়ে বড় খেতাব হেলাল-ই-ইমতিয়াজ, ১৯৬৮ সালে ঢাকা আর্ট কলেজের ছাত্রদের তরফ থেকে 'শিল্পার্চায' উপাধি এবং ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে জাতীয় অধ্যাপক সম্মান লাভ করেন। 

ঢাকার পাশে ময়মনসিংহ শহরে গেলে আপনি নিঃসন্দেহে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গড়ে উঠা শিল্পাচার্যের সংগ্রহশালায় বেড়িয়ে আসতে পারেন। তুলির আঁচড়ে জীবনের রং বদলের ভাবনা জাগবে হৃদয়ে।


ব্রহ্মপুত্র   নয়নাভিরাম   শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলা সাহিত্যের প্রথিতযশা শওকত ওসমান

প্রকাশ: ০৮:১৬ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলা সাহিত্যের প্রথিতযশা তিনি। বাঙালি সংস্কৃতির একনিষ্ঠ সমর্থক। রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও তিনি রাজনৈতিক মতামত প্রকাশে ছিলেন স্পষ্টভাষী। বাস্তববাদী লেখনিতে তার নামটিই যেন সবার আগে নিতে হয়। আজ সেই বাস্তববাদী লেখক শওকত ওসমানের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৮ সালের এই দিনে তিনি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন।

শওকত ওসমান নামেই সবার কাছে পরিচিত হলেও তাঁর প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান। একাধারে তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক, রম্যরচনা, স্মৃতিকথা, অনুবাদ এবং শিশুতোষ গ্রন্থ রচনা করেছেন। তবে ঔপন্যাসিক হিসেবেই তার পরিচয়টা বেশি পরিচিত।

শওকত ওসমান ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা শুরু করলেও পরবর্তীকালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও অর্থনীতি বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ১৯৪১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ করেন শওকত ওসমান। আইএ পাস করার পর তিনি কিছুদিন কলকাতা করপোরেশন এবং বাংলা সরকারের তথ্য বিভাগে চাকরি করেন। এমএ পাস করার পর ১৯৪১ সালে তিনি কলকাতার গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে লেকচারার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অব কমার্সে যোগ দেন এবং ১৯৫৮ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে স্বেচ্ছা অবসরে যান।

চাকরি জীবনের প্রথমদিকে কিছুকাল তিনি 'কৃষক' পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশ বিভাগের পর তিনি চলে আসেন পূর্ববঙ্গে। তার রচনাসমূহের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য উপন্যাস হলো- 'জননী', 'ক্রীতদাসের হাসি', 'জাহান্নাম হইতে বিদায়', 'দুই সৈনিক', 'নেকড়ে অরণ্য'। গল্পগ্রন্থ 'জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প', 'ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী', 'মনিব ও তাহার কুকর'; প্রবন্ধগ্রন্থ 'সংস্কৃতির চড়াই-উতরাই', 'আমলার মামলা', 'পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা'। শিশুতোষ গ্রন্থ- 'ক্ষুদে সোশালিস্ট', 'ওটেন সাহেবের বাংলো', 'পঞ্চসঙ্গী'; রম্যরচনা 'নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত' প্রভৃতি।

তার স্মৃতিকথামূলক রচনাবলি হলো- 'কালরাত্রি খন্ডচিত্র', 'মুজিবনগর', 'সোদরের খোঁজে স্বদেশের সন্ধানে', 'মৌলবাদের আগুন নিয়ে খেলা', 'স্বজন সংগ্রামে' ইত্যাদি। অনূদিত গ্রন্থের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য- 'বাগদাদের কবি', 'টাইম মেশিন', 'স্পেনের ছোটগল্প', 'পাঁচটি কাহিনি' (লিও টলস্টয়), 'পাঁচটি নাটক' (মলিয়ার), ইত্যাদি। শওকত ওসমানের রচনাসমূহ, মননশীলতা ও প্রগতি চেতনায় এক অনন্য সাহিত্য সম্ভার।

একুশে পদক, বাংলা একাডেমি ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শওকত ওসমানের লেখায় যেমন উঠে এসেছে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতা, অনাচার-অবিচার, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, প্রতিবাদের ভাষ্য, ঠিক তেমনি এসেছে জীবনবোধ, সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার অনন্ত অনুপ্রেরণা। জীবনের ছোট ছোট সংঘর্ষ থেকে যে বড় পরিবর্তন আসতে পারে, তিনি তাঁর লেখায় তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন।

নিজেকে তিনি পরিচয় দিতেন ‘ঝাড়ুদার’ বলে। সমাজের ঝাড়ুদার। সমাজের সব জঞ্জাল, অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। তাঁর আধুনিক আর বাস্তবধর্মী লেখনী সমাজের কথা বলত। তিনি নির্দ্বিধায় বলতেন সত্য আর সুন্দরের কথা।

বাংলার চিরায়ত সমাজের চালচিত্র, সমকালীন রাজনৈতিক পটভূমি, মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি তার রচনার অনুষঙ্গ হয়েছে। ব্যক্তিজীবনে শওকত ওসমান ছিলেন প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক আন্দোলনের সমর্থক। দেশের যে কোনো সংকটকালীন সময়ে তিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী।

শওকত ওসমান বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আকাদেমী সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ শওকত ওসমানকে বলতেন, অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ। আমাদের কথাসাহিত্যের ইতিহাসের একটি পরিচিত নাম শওকত ওসমান। দেশভাগের পরেই নয় পূর্বে থেকেই বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের কাল শুরু এবং শওকত ওসমান ছিলেন শুরু থেকেই।

সেই বিবেচনায় বলা যায়, ইতিহাস পরম্পরায় এই সুদীর্ঘ সময়ে রাজনৈতিক, সামাজিক, আর্থনীতিক ও সাংস্কৃতিক সবক্ষেত্রের ঘটনাবর্তের এক নির্মম সাক্ষী ও অংশীদার ছিলেন তিনি।


বাংলা সাহিত্য   শওকত ওসমান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন