মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গোলাগুলির বিষয়ে চলমান পরিস্থিতি ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছে সরকার।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকার কূটনীতিকদের ব্রিফিং করা হয়।
ঢাকার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সদের ব্রিফিং করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার অ্যডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাড়া, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ভারত, রাশিয়া প্রভৃতি দেশের কূটনীতিকরা।
কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার অ্যডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আমরা সীমান্তের পরিস্থিতি কূটনীতিকদের জানিয়েছি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের গোলা এসে আমাদের এখানে এসে পড়বে। আমাদের জানমালের ক্ষতি করবে। আমাদের লোকরা ধান ক্ষেতে যেতে পারবে না। গরু-বাছুর নিয়ে বাইরে যেতে পারবে না। এটা তো চলতে দেওয়া যায় না। সে কারণে আমরা কূটনীতিকদের জানিয়েছি- মিয়ানমার এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে যেন কোনো ধরণের ফায়দা লুটতে না পারে।
তিনি বলেন, কূটনীতিকদের বলেছি- আমরা যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। সীমান্তের এখানে কাজে জড়িত হতে চাই না। জড়িত হলে মিয়ানমার আর একটা সুযোগ পাবে। সংঘাত তৈরি করে রোহিঙ্গা না নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে কোনো সুযোগ আমরা দিতে চাই না।
এক প্রশ্নের উত্তরে খুরশেদ আলম বলেন, কূটনীতিকরা আমাদের অবস্থানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বিষয়টি তাদের ক্যাপিটালে অবহিত করবেন বলেও জানিয়েছে তারা।
সূত্র জানায়, ব্রিফিংয়ে সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারী কামানের গোলা এবং মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে এ ঘটনায় তলবের বিষয়টিও জানানো হয়।
এর আগে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের কূটনীতিকদের ব্রিফিং করা হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে একাধিকবার মর্টার শেল এসে পড়ছে। এ ঘটনায় একজন রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অনেকেই।
সীমান্তে মর্টারশেল ও স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে আবার আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ আর মাঝে মধ্যে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনায় এপারের বাসিন্দাদের ভয় এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকেই। সীমান্তের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।