নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১১ পিএম, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৮
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলে নতুন মুখের আর্বিভাব হচ্ছে। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির হাই কমান্ডের পক্ষ থেকে বেশ কিছু তরুণ এবং উদীয়মানকে মাঠে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এদের মধ্যে বেশির ভাগই রাজনৈতিক নেতাদের ছেলে-মেয়ে রয়েছেন। এছাড়া খেলোয়াড়, অভিনয় শিল্পী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং ব্যারিস্টারও আছেন এ তালিকায়। ক্ষমতাসীন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছে রয়েছে জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজার। নড়াইল সদর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। ইতিমধ্যে দলের হাই কমান্ড থেকে তাঁকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকায় গণসংযোগও করছেন এ ক্রিকেট তারকা। গোপালগন্জ এর মুকসেদপুর থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন ঢালিউডের সুপার ষ্টার তারকা শাকিব খান। তাঁর এ ইচ্ছের কথা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কানে দেওয়া হয়েছে। শাকিব চান হাইকমান্ড তাকে সবুজ সংকেত দিলে গণসংযোগ শুরু করবেন। বর্তমানে এখানে সংসদ সদস্য আছেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্ণেল (অব.) ফারুক খান।
নওগাঁ থেকে নির্বাচন করতে চান আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিল এর ছেলে ব্যারিস্টার জন জলিল। এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন তিনি। বাবার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য হতে চান তিনি। রাজনীতিবিদদের উত্তরসূরি হিসেবে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে,এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শ্যামা ওবায়েদ রিংকু ফরিদপুরের নগরকান্দা আসন থেকে নির্বাচন করবেন। দল তাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে। গত নির্বাচনে জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কাছে স্বল্পতম ভোটে পরাজিত হন শ্যামা ওবায়েদ। শ্যামা ওবায়েদ বর্তমানে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। একইসাথে টকশোর পরিচিত মুখ। এদিকে, একই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেতে চান তারেক জিয়ার আর্শিবাদপুষ্ট বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক ছাত্রনেতা শহীদুল ইসলাম বাবুল। বাবুল নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। একই আসনে মা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অসূস্থতাজনিত কারণে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করার অভিপ্রায় নিয়ে কাজ করছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলু। ওই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া। অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া এক সময় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। ২০ দলীয় জোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) থেকে কুমিল্লার লাংগলকোট থেকে নির্বাচন করবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদের মেয়ে জয়া কাজী। কাজী জয়া নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ করছেন। জানা গেছে, বিএনপি থেকে তাঁকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। বিএনপি থেকে নির্বাচন করার জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন যুদ্ধাপরাধী মামলায় ফাঁসি হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। রাউজান থেকে নির্বাচন করবেন হুম্মাম কাদের। চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নওফেল চৌধুরী। তাঁর এ মনের অভিপ্রায় ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন তিনি। বাগেরহাট ২ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালউদ্দিন এমপির ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়। সুদর্শন এবং হাস্যেজ্জ্বল এবং সুবক্তা হিসেবে তন্ময় ইতিমধ্যে সবার দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। বাবা শেখ হেলাল বাগেরহাট ১ আসনের সংসদ সদস্য থাকায় তন্ময়কে বাগেরহাট ২ আসনের জন্য প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। জানা যায়, শেখ তন্ময় লন্ডন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে ব্যবসা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর আরেক নিকটাত্মীয় সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সদর থেকে নির্বাচন করার জন্য মাঠে কাজ করছেন। সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে ইতিমধ্যে সাদিক আব্দুল্লাহ মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা-চরভদ্রাসন-সদরপুর আসন থেকে বিএনপির টিকেট চান সাবেক মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইবনে ইউসুফ। এক সময় তার চাচা চৌধুরী আকমল ইবনে ইউসুফ এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে ঐ আসনের সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্মীয় নিক্সন চৌধুরী। চৌধুরী নায়াব ইবনে ইউসুফ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। বাবার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। যশোর ২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য মাঠে দৌড়ঝাঁপ করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ঢাকার পাশ্ববর্তী কেরানীগঞ্জ থেকে নির্বাচন করতে চান বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মেয়ে নিপুন রায় চৌধুরী। নিপুন রায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটিরি নিবার্হী সদস্য।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকসাইটে রাজনীতিবিদদের উত্তরসূরিরা এলাকায় নানামুখী কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।